নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ব্যাংক লুটেরা, ঋণখেলাপি ও টাকা পাচারকারীদের সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সালমা ইসলাম বলেছেন, ‘সময় এসেছে ওদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। জাতীয় সংসদে এমন আইন পাস করতে হবে যাতে তারা বিমানে উঠতে না পারে, ট্রেনের টিকিটি না পায়। কোনো দামি গাড়িতে চড়া তো দূরের কথা—যেন কোনো রিকশাওয়ালা তাদের নিতে ঘৃণা প্রকাশ করে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ অনুরোধ করব, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি এবং অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হোক। একই সঙ্গে ওদের বাসা-বাড়ির সব ধরনের সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হোক।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সালমা ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘করোনার কঠিন সংকট প্রধানমন্ত্রী সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারলেও এখন তাঁকে বেশি হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর জন্য দায়ী একশ্রেণির দুর্নীতিগ্রস্ত ও অর্থ পাচারকারী ব্যাংক লুটেরা। যারা বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। যদিও সরকার এখন এসব রাঘব-বোয়ালদের শক্ত হাতে ধরা শুরু করেছে। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
ঋণখেলাপি এবং নানাভাবে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে কথা বলতে বলতে সবাই এখন ক্লান্ত দাবি করে সালমা ইসলাম বলেন, ‘কিন্তু খেলাপিরা ক্লান্ত হয়নি। মাঝেমধ্যে চুনোপুঁটিদের শাস্তি হলেও প্রভাবশালী খেলাপিরা আছেন বহাল তবিয়তে। বিশেষ করে প্রভাবশালীরা কখনো খেলাপি হন না। তাঁরা প্রভাব খাঁটিয়ে দফায় দফায় ঋণ পুনর্গঠন করে নেন। ফলে খেলাপির খাতায় তাঁদের নাম আর ওঠে না। এ ছাড়া নামে-বেনামে কারা মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে কীভাবে কোন পদ্ধতিতে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন তা অনেকেই না জানলেও কিছু লোক তো জানেন। কয়েকটি ব্যাংকের এক শ্রেণির পরিচালকেরা কীভাবে এসব ঋণের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সেটিও তদন্তের দাবি রাখে। এ জন্য ব্যাংক খেকোদের যদি আমরা আগে শাস্তি দিতে না পারি তাহলে দেশ আর ঠিক হবে না।’
ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের সরকার ভালো করে চেনে-জানে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার খুবই চৌকস। তাঁরা দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের চিনে না এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। এ ছাড়া সমাজে যত ধরনের সিন্ডিকেটসহ বাজিকরদের জন্ম হয়েছে তাদের হাঁকডাক ও দম্ভ চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। আর সরকার চাইলে সব পারে। এক রাতেই এসব ডাকাতদের লকাপে ঢোকাতে পারে। আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এমন সাহসী উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত দেখার অপেক্ষায় রইলাম। এই কঠিন কাজটা তিনি ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না।’
বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ এখন রাজনৈতিক সংকটের পাশাপাশি নানামুখী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করে চলেছে। যার বাইরে আমরাও নই। তবে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় আমরা ভীষণ বিপদে পড়ে গেছি। আমার মতে, বাংলাদেশ এখন কঠিন এক সংকটকালীন সময় পার করছে। কিন্তু আমি মনে করি, এ সংকট একদিনে হয়নি। এর অন্যতম কারণ লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থ পাচার। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় চলে এসেছে যে, সাধারণ মানুষ ছাড়াও ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। বেশির ভাগ ব্যাংকের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। প্রতিদিন তাঁরা ধারদেনা করে দিন পার করছে। ব্যবসায়ীদের এলসি খুলতে গিয়ে ডলার কিনতে করতে হচ্ছে বেশি দামে। দেশের একজন শিল্পপতি হিসেবে আমরা যারা পণ্য রপ্তানি করে ডলার আয় করছি, তাঁদের জন্য সমস্যা এখনো বেশি প্রকট না হলেও সামনের দিনগুলো খারাপ সংকেত দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে আমি বেশি শঙ্কিত বিদেশি ষড়যন্ত্র নিয়ে। নানা কারণে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ক্ষমতাধর বিদেশি মোড়লরা যে যার স্বার্থে আমাদের টুটি চেপে ধরার চেষ্টা করছে। যদিও এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা সাহস করে বেশ কিছু সত্য কথা জনসম্মুখে বলে দিয়েছেন। কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা এখন বেশি শঙ্কিত। কারণ এসব স্বার্থান্বেষী মহল যেখানে একবার হাতছানি দিয়েছে তাঁরা ছলেবলে সে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমি এ রকম অঘটনের শঙ্কা নিয়ে অনেকটা উদ্বিগ্ন। এখন ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুকে সামনে এনে বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে যে সামরিক শক্তির বলয় গড়ে তোলার অপচেষ্টা হচ্ছে তাতে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব। কুকি চিনসহ বেশ কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কিছু কর্মকাণ্ড আমাদের আরও বেশি ভাবিয়ে তুলেছে।’
সালমা ইসলাম বলেন, ‘রাজনীতি এবং কূটনীতিতে কেউ কখনো চিরস্থায়ী বন্ধু হয় না। যে যার স্বার্থ নানা কৌশলে আদায় করে নিতে চায়। ইতিমধ্যে আমরা এ রকম ফাঁদে যদি পা দিয়ে থাকি, তাহলে সামনে আমাদের সবার জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। বাস্তবে সবাই আমাদের ব্যবহার করছে। আমাদের কাছ থেকে অনেকে অনেক কিছু আদায় করে নিয়েছে। কিন্তু বিপরীতে আমরা কিছুই পাইনি। শুধু ঋণের ভারে দিন দিন জর্জরিত হচ্ছি। মাথাপিছু বিদেশি ঋণের পরিমাণ নিশ্চয় আগের তুলনায় অনেক বেশি। আজকে যে শিশু জন্ম নিচ্ছে তার ঘাড়েও ঋণের বোঝা যুক্ত হচ্ছে। ফলে আমি মনে করি জাতি হিসেবে আমাদের আরও সতর্ক, সাহসী ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিশেষ করে আমরা যদি দেশের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা জোরদার করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে না পারি, তাহলে ওরা আরও বেশি করে সুযোগ নেবে। তাই এখনো সময় আছে, দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সবার আগে দেশ।’
তিনি বলেন, ‘সামনে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আমাদের বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। অনেকের নজর এখন তিস্তার দিকে। কেউ চায় অস্ত্র বেচতে, কেউ চায় তিস্তা প্রকল্পের পুরো নিয়ন্ত্রণ, কেউ আবার বড় ঋণের ঝুলি নিয়ে বসে আছে। কিন্তু তাঁরাও এবার নিজেদের স্বার্থ ষোলোআনা উশুল না করে ঋণ অনুমোদন করবে না। ওদিকে সবচেয়ে এখন বড় সমস্যা হলো ডলার সংকটের কারণে আমরা অনেকগুলো বিদেশি পাওনা বা দায়দেনা পরিশোধ করতে পারছি না। কারণ, দিতে গেলে ডলারের স্থিতি আরও নিচে নেমে আসবে। কিন্তু পাওনাদাররাও বসে নেই। ঘন ঘন তাগাদা দিচ্ছে। এর মধ্যে তাঁরা পাওনা ডলারের জন্য চার্টার্ড বিমানে ঘুরেও গেছেন। ফলে পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। বর্গিরা সব চারদিকে ফণা তুলে ঘোরাফেরা করছে।’
সালমা ইসলাম বলেন, ‘এসব বোঝার জন্য এখন আর অর্থনৈতিক কিংবা কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়া লাগে না। একজন সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে। এর অন্যতম কারণ “স্মার্ট বাংলাদেশ”। সবার হাতে হাতে প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছেন। সেখানে ইউটিউব, ফেসবুক খুললেই সারা বিশ্বের তথ্য চলে আসে। এখন ঘরে বসেই সব খবর পাওয়া যায়। আর সবাই তো মিথ্যা কথা বলে না। অনেকে হাতে কলমে হিসেব কষে সব ফাঁস করে দিচ্ছে। তা ছাড়া মানুষ সংসার চালাতে গিয়ে নিজেই হালচাল সব বুঝতে পারছে। বাজেট তো ৩০ জুন পাস হয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো-এখন যে মানুষগুলো ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার আয় করেও মাস চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, তার বাজেটের পর কি হবে। নির্ঘাত বাজেটের পর আরও কয়েক দফা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়বে। বেড়ে যাবে যে কোনো সেবার দাম। কিন্তু যার আয় বাড়ানোর সুযোগ বা সক্ষমতা নেই তার কি হবে? বিশেষ করে যারা সাধারণ চাকরিজীবী। যাদের আয় বাড়ছে না। তাদের তো একেবারে পথে বসতে হবে। ফলে আমরা যারা সংসদে আছি, তাদের এ মানুষগুলোর কথা ভাবতে হবে। এমনভাবে বাজেট দিতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের ওপর নতুন করে খরচের বোঝা না বাড়ে।’
ব্যাংক লুটেরা, ঋণখেলাপি ও টাকা পাচারকারীদের সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সালমা ইসলাম বলেছেন, ‘সময় এসেছে ওদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। জাতীয় সংসদে এমন আইন পাস করতে হবে যাতে তারা বিমানে উঠতে না পারে, ট্রেনের টিকিটি না পায়। কোনো দামি গাড়িতে চড়া তো দূরের কথা—যেন কোনো রিকশাওয়ালা তাদের নিতে ঘৃণা প্রকাশ করে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ অনুরোধ করব, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি এবং অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হোক। একই সঙ্গে ওদের বাসা-বাড়ির সব ধরনের সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হোক।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সালমা ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘করোনার কঠিন সংকট প্রধানমন্ত্রী সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারলেও এখন তাঁকে বেশি হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর জন্য দায়ী একশ্রেণির দুর্নীতিগ্রস্ত ও অর্থ পাচারকারী ব্যাংক লুটেরা। যারা বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। যদিও সরকার এখন এসব রাঘব-বোয়ালদের শক্ত হাতে ধরা শুরু করেছে। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
ঋণখেলাপি এবং নানাভাবে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে কথা বলতে বলতে সবাই এখন ক্লান্ত দাবি করে সালমা ইসলাম বলেন, ‘কিন্তু খেলাপিরা ক্লান্ত হয়নি। মাঝেমধ্যে চুনোপুঁটিদের শাস্তি হলেও প্রভাবশালী খেলাপিরা আছেন বহাল তবিয়তে। বিশেষ করে প্রভাবশালীরা কখনো খেলাপি হন না। তাঁরা প্রভাব খাঁটিয়ে দফায় দফায় ঋণ পুনর্গঠন করে নেন। ফলে খেলাপির খাতায় তাঁদের নাম আর ওঠে না। এ ছাড়া নামে-বেনামে কারা মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে কীভাবে কোন পদ্ধতিতে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন তা অনেকেই না জানলেও কিছু লোক তো জানেন। কয়েকটি ব্যাংকের এক শ্রেণির পরিচালকেরা কীভাবে এসব ঋণের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সেটিও তদন্তের দাবি রাখে। এ জন্য ব্যাংক খেকোদের যদি আমরা আগে শাস্তি দিতে না পারি তাহলে দেশ আর ঠিক হবে না।’
ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের সরকার ভালো করে চেনে-জানে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার খুবই চৌকস। তাঁরা দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের চিনে না এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। এ ছাড়া সমাজে যত ধরনের সিন্ডিকেটসহ বাজিকরদের জন্ম হয়েছে তাদের হাঁকডাক ও দম্ভ চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। আর সরকার চাইলে সব পারে। এক রাতেই এসব ডাকাতদের লকাপে ঢোকাতে পারে। আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এমন সাহসী উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত দেখার অপেক্ষায় রইলাম। এই কঠিন কাজটা তিনি ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না।’
বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ এখন রাজনৈতিক সংকটের পাশাপাশি নানামুখী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করে চলেছে। যার বাইরে আমরাও নই। তবে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় আমরা ভীষণ বিপদে পড়ে গেছি। আমার মতে, বাংলাদেশ এখন কঠিন এক সংকটকালীন সময় পার করছে। কিন্তু আমি মনে করি, এ সংকট একদিনে হয়নি। এর অন্যতম কারণ লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থ পাচার। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় চলে এসেছে যে, সাধারণ মানুষ ছাড়াও ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। বেশির ভাগ ব্যাংকের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। প্রতিদিন তাঁরা ধারদেনা করে দিন পার করছে। ব্যবসায়ীদের এলসি খুলতে গিয়ে ডলার কিনতে করতে হচ্ছে বেশি দামে। দেশের একজন শিল্পপতি হিসেবে আমরা যারা পণ্য রপ্তানি করে ডলার আয় করছি, তাঁদের জন্য সমস্যা এখনো বেশি প্রকট না হলেও সামনের দিনগুলো খারাপ সংকেত দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে আমি বেশি শঙ্কিত বিদেশি ষড়যন্ত্র নিয়ে। নানা কারণে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় ক্ষমতাধর বিদেশি মোড়লরা যে যার স্বার্থে আমাদের টুটি চেপে ধরার চেষ্টা করছে। যদিও এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা সাহস করে বেশ কিছু সত্য কথা জনসম্মুখে বলে দিয়েছেন। কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা এখন বেশি শঙ্কিত। কারণ এসব স্বার্থান্বেষী মহল যেখানে একবার হাতছানি দিয়েছে তাঁরা ছলেবলে সে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমি এ রকম অঘটনের শঙ্কা নিয়ে অনেকটা উদ্বিগ্ন। এখন ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুকে সামনে এনে বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে যে সামরিক শক্তির বলয় গড়ে তোলার অপচেষ্টা হচ্ছে তাতে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব। কুকি চিনসহ বেশ কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কিছু কর্মকাণ্ড আমাদের আরও বেশি ভাবিয়ে তুলেছে।’
সালমা ইসলাম বলেন, ‘রাজনীতি এবং কূটনীতিতে কেউ কখনো চিরস্থায়ী বন্ধু হয় না। যে যার স্বার্থ নানা কৌশলে আদায় করে নিতে চায়। ইতিমধ্যে আমরা এ রকম ফাঁদে যদি পা দিয়ে থাকি, তাহলে সামনে আমাদের সবার জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। বাস্তবে সবাই আমাদের ব্যবহার করছে। আমাদের কাছ থেকে অনেকে অনেক কিছু আদায় করে নিয়েছে। কিন্তু বিপরীতে আমরা কিছুই পাইনি। শুধু ঋণের ভারে দিন দিন জর্জরিত হচ্ছি। মাথাপিছু বিদেশি ঋণের পরিমাণ নিশ্চয় আগের তুলনায় অনেক বেশি। আজকে যে শিশু জন্ম নিচ্ছে তার ঘাড়েও ঋণের বোঝা যুক্ত হচ্ছে। ফলে আমি মনে করি জাতি হিসেবে আমাদের আরও সতর্ক, সাহসী ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিশেষ করে আমরা যদি দেশের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা জোরদার করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে না পারি, তাহলে ওরা আরও বেশি করে সুযোগ নেবে। তাই এখনো সময় আছে, দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সবার আগে দেশ।’
তিনি বলেন, ‘সামনে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আমাদের বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। অনেকের নজর এখন তিস্তার দিকে। কেউ চায় অস্ত্র বেচতে, কেউ চায় তিস্তা প্রকল্পের পুরো নিয়ন্ত্রণ, কেউ আবার বড় ঋণের ঝুলি নিয়ে বসে আছে। কিন্তু তাঁরাও এবার নিজেদের স্বার্থ ষোলোআনা উশুল না করে ঋণ অনুমোদন করবে না। ওদিকে সবচেয়ে এখন বড় সমস্যা হলো ডলার সংকটের কারণে আমরা অনেকগুলো বিদেশি পাওনা বা দায়দেনা পরিশোধ করতে পারছি না। কারণ, দিতে গেলে ডলারের স্থিতি আরও নিচে নেমে আসবে। কিন্তু পাওনাদাররাও বসে নেই। ঘন ঘন তাগাদা দিচ্ছে। এর মধ্যে তাঁরা পাওনা ডলারের জন্য চার্টার্ড বিমানে ঘুরেও গেছেন। ফলে পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। বর্গিরা সব চারদিকে ফণা তুলে ঘোরাফেরা করছে।’
সালমা ইসলাম বলেন, ‘এসব বোঝার জন্য এখন আর অর্থনৈতিক কিংবা কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়া লাগে না। একজন সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে। এর অন্যতম কারণ “স্মার্ট বাংলাদেশ”। সবার হাতে হাতে প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছেন। সেখানে ইউটিউব, ফেসবুক খুললেই সারা বিশ্বের তথ্য চলে আসে। এখন ঘরে বসেই সব খবর পাওয়া যায়। আর সবাই তো মিথ্যা কথা বলে না। অনেকে হাতে কলমে হিসেব কষে সব ফাঁস করে দিচ্ছে। তা ছাড়া মানুষ সংসার চালাতে গিয়ে নিজেই হালচাল সব বুঝতে পারছে। বাজেট তো ৩০ জুন পাস হয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো-এখন যে মানুষগুলো ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার আয় করেও মাস চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, তার বাজেটের পর কি হবে। নির্ঘাত বাজেটের পর আরও কয়েক দফা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়বে। বেড়ে যাবে যে কোনো সেবার দাম। কিন্তু যার আয় বাড়ানোর সুযোগ বা সক্ষমতা নেই তার কি হবে? বিশেষ করে যারা সাধারণ চাকরিজীবী। যাদের আয় বাড়ছে না। তাদের তো একেবারে পথে বসতে হবে। ফলে আমরা যারা সংসদে আছি, তাদের এ মানুষগুলোর কথা ভাবতে হবে। এমনভাবে বাজেট দিতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের ওপর নতুন করে খরচের বোঝা না বাড়ে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে না বসলেও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নারীনেত্রী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা, ইউটিউবারসহ বিভিন্ন অংশীজনের মতামত নিতে সভা করবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। প্র
৭ ঘণ্টা আগেডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১০৭ জন রোগী।
১৩ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ‘কনফারেন্স অফ পার্টিস-২৯(কপ২৯)’ শীর্ষক বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে যোগদান শেষে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন।
১৩ ঘণ্টা আগেবিচারপতি এম এ মতিন বলেছেন, ‘জনগণের প্রতিনিধিদের নিয়ে দেশ পরিচালিত হবে—এটাই স্বাভাবিক, এর কোনো ব্যত্যয় হওয়া উচিত নয়। কিন্তু দেশের ন্যূনতম কোনো সংস্কার না করে রাজনীতিবিদদের হাতে ছেড়ে দেওয়া অনেকে নিরাপদ বোধ করছে না। ভালো নির্বাচন হলেও স্বৈরতন্ত্র আসবে না, তার গ্যারান্টি নেই
১৫ ঘণ্টা আগে