রাহুল শর্মা, ঢাকা
দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক সুরক্ষা দিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছে সরকার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচি এটি। কিন্তু চালুর পর বছর না পুরতেই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল সরকারের এ উদ্যোগ। বেঁকে বসেছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাঁদের জন্য চালু হওয়া পেনশন স্কিম বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে আজ সোমবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকেরা।
কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কর্মকাণ্ড পুরো অচল হয়ে পড়ার শঙ্কা সত্ত্বেও ‘প্রত্যয়’ চালু করার বিষয়ে অনড় অবস্থানে সরকার ও জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়া নিয়ে আমি এই মুহূর্তে কিছু বলছি না। তাঁরা একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই দেশ গণতান্ত্রিক দেশ, সেখানে সবারই রাজনৈতিক ও বাক্স্বাধীনতার অধিকার আছে। এই অচলাবস্থা যদি আগামীকাল (সোমবার) থেকে শুরু হয়ে থাকে, তাহলে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবস্থা নেব। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই পরবর্তী সিদ্ধান্তে আমরা যাব।’ গতকাল রোববার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় দেশের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় সরকার। ইতিমধ্যে এ ঘোষণাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরোধিতায় শুরুতেই হোঁচট খাবে এ কর্মসূচি। যদিও যে সংগঠনের নেতৃত্বে এ আন্দোলন হচ্ছে, অর্থাৎ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বেও রয়েছেন আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত শিক্ষকেরা। আর সারা দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বেও রয়েছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয় গত বছরের ১৭ আগস্ট। বর্তমানে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় মোট পাঁচটি কর্মসূচি (স্কিম) রয়েছে। এগুলো হলো প্রগতি, সুরক্ষা, প্রবাস, সমতা ও প্রত্যয়। এর মধ্যে প্রত্যয় চালু হচ্ছে আজ সোমবার ১ জুলাই থেকে। এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো। এসব সংস্থায় আজ থেকে যাঁরা যোগ দেবেন তাঁরা পুরোনো পেনশন ব্যবস্থার বদলে সরাসরি নতুন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের আওতায় আসবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষকদের মূল দাবি সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিল। কেননা, এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে প্রতি মাসের বেতন থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পেনশন স্কিমে জমা রাখতে হবে। এর বিপরীতে বর্তমানে অবসর-পরবর্তী সেসব সুযোগ-সুবিধা শিক্ষকেরা পান, তা-ও কমার শঙ্কা রয়েছে। মূলত এই দুই কারণে প্রত্যয় স্কিমের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছেন তাঁরা।
শিক্ষকনেতাদের দাবি, এমনিতেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কম। আবার প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত হলে অবসর-পরবর্তী সুযোগ-সুবিধা আরও কমবে। এতে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবেন না।
জানা যায়, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫৫টি, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা সাড়ে ১৬ হাজার, আর কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ৩৪ হাজার ৩৮২ জন।
গত ৬ এপ্রিল প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ তিন দফা বাতিলের দাবিতে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এর বাইরে সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিও তাঁদের। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন শিক্ষকেরা। গত ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিন দিন সারা দেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। এ ছাড়া গতকাল ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কয়েক মাস ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। গতকাল রোববারও ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি-বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। আজ সোমবারও তাঁদের কর্মসূচি আছে।
প্রত্যয় স্কিম নিয়ে আপত্তি কেন
শিক্ষকেরা বলছেন, প্রত্যয় স্কিমে মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা (যেটি সর্বনিম্ন) কেটে রাখার কথা বলা হয়েছে, যা বর্তমান পেনশন ব্যবস্থায় নেই। এ ছাড়া প্রত্যয় স্কিমে আনুতোষিকও শূন্য। বর্তমানে পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশনপ্রাপ্ত হন; কিন্তু প্রত্যয় স্কিমে পেনশনাররা ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন। বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়, সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে তা উল্লেখ নেই। এর বাইরে প্রত্যয় স্কিমে পেনশনধারীদের বয়সসীমা ৫৯ বছর রাখা হয়েছে, যদিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অবসরে যান ৬৫ বছরে। আর বর্তমান পেনশন ব্যবস্থায় এককালীন বিশাল অঙ্কের অর্থ পাওয়া যায়, যা প্রত্যয় স্কিমে সম্ভব নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, পেনশন একটা সুরক্ষা বলয়, সে জায়গায় শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করে সুরক্ষা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা (শিক্ষক) বিদ্যমান স্কিমে চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা ও পয়লা বৈশাখের একটি ভাতা পান। টাকার অঙ্কের হিসাবে। প্রত্যয় স্কিমে সেগুলো নেই।
একই সুরে কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান। তিনি বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত হলে আগে যে পেনশন সুবিধা ছিল, তার থেকে বেশ কিছু অর্থনৈতিক স্বকীয়তা বা সুযোগ-সুবিধা কমে যাবে। এতে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশা আসতে আগ্রহী হবে না। এমনিতেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কম।’
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো উচিত। তাতে মেধাবীরা এ পেশায় আসতে আগ্রহী হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করা হোক।
তবে জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছে ১ জুলাই থেকে প্রত্যয় স্কিম বাস্তবায়ন শুরু হবে। পেনশন কর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করবে। কারও কোনো আপত্তি থাকলে সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তা সংশোধন করা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সিদ্দিক ফারুক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আহনাফ তাহমিদ]
দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক সুরক্ষা দিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছে সরকার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচি এটি। কিন্তু চালুর পর বছর না পুরতেই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল সরকারের এ উদ্যোগ। বেঁকে বসেছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাঁদের জন্য চালু হওয়া পেনশন স্কিম বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে আজ সোমবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকেরা।
কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কর্মকাণ্ড পুরো অচল হয়ে পড়ার শঙ্কা সত্ত্বেও ‘প্রত্যয়’ চালু করার বিষয়ে অনড় অবস্থানে সরকার ও জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়া নিয়ে আমি এই মুহূর্তে কিছু বলছি না। তাঁরা একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই দেশ গণতান্ত্রিক দেশ, সেখানে সবারই রাজনৈতিক ও বাক্স্বাধীনতার অধিকার আছে। এই অচলাবস্থা যদি আগামীকাল (সোমবার) থেকে শুরু হয়ে থাকে, তাহলে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবস্থা নেব। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই পরবর্তী সিদ্ধান্তে আমরা যাব।’ গতকাল রোববার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় দেশের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় সরকার। ইতিমধ্যে এ ঘোষণাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরোধিতায় শুরুতেই হোঁচট খাবে এ কর্মসূচি। যদিও যে সংগঠনের নেতৃত্বে এ আন্দোলন হচ্ছে, অর্থাৎ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বেও রয়েছেন আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত শিক্ষকেরা। আর সারা দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বেও রয়েছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয় গত বছরের ১৭ আগস্ট। বর্তমানে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় মোট পাঁচটি কর্মসূচি (স্কিম) রয়েছে। এগুলো হলো প্রগতি, সুরক্ষা, প্রবাস, সমতা ও প্রত্যয়। এর মধ্যে প্রত্যয় চালু হচ্ছে আজ সোমবার ১ জুলাই থেকে। এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো। এসব সংস্থায় আজ থেকে যাঁরা যোগ দেবেন তাঁরা পুরোনো পেনশন ব্যবস্থার বদলে সরাসরি নতুন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের আওতায় আসবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষকদের মূল দাবি সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিল। কেননা, এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে প্রতি মাসের বেতন থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পেনশন স্কিমে জমা রাখতে হবে। এর বিপরীতে বর্তমানে অবসর-পরবর্তী সেসব সুযোগ-সুবিধা শিক্ষকেরা পান, তা-ও কমার শঙ্কা রয়েছে। মূলত এই দুই কারণে প্রত্যয় স্কিমের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছেন তাঁরা।
শিক্ষকনেতাদের দাবি, এমনিতেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কম। আবার প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত হলে অবসর-পরবর্তী সুযোগ-সুবিধা আরও কমবে। এতে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবেন না।
জানা যায়, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫৫টি, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা সাড়ে ১৬ হাজার, আর কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ৩৪ হাজার ৩৮২ জন।
গত ৬ এপ্রিল প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ তিন দফা বাতিলের দাবিতে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এর বাইরে সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিও তাঁদের। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন শিক্ষকেরা। গত ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিন দিন সারা দেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। এ ছাড়া গতকাল ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কয়েক মাস ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। গতকাল রোববারও ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি-বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। আজ সোমবারও তাঁদের কর্মসূচি আছে।
প্রত্যয় স্কিম নিয়ে আপত্তি কেন
শিক্ষকেরা বলছেন, প্রত্যয় স্কিমে মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা (যেটি সর্বনিম্ন) কেটে রাখার কথা বলা হয়েছে, যা বর্তমান পেনশন ব্যবস্থায় নেই। এ ছাড়া প্রত্যয় স্কিমে আনুতোষিকও শূন্য। বর্তমানে পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশনপ্রাপ্ত হন; কিন্তু প্রত্যয় স্কিমে পেনশনাররা ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন। বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়, সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে তা উল্লেখ নেই। এর বাইরে প্রত্যয় স্কিমে পেনশনধারীদের বয়সসীমা ৫৯ বছর রাখা হয়েছে, যদিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অবসরে যান ৬৫ বছরে। আর বর্তমান পেনশন ব্যবস্থায় এককালীন বিশাল অঙ্কের অর্থ পাওয়া যায়, যা প্রত্যয় স্কিমে সম্ভব নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, পেনশন একটা সুরক্ষা বলয়, সে জায়গায় শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করে সুরক্ষা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা (শিক্ষক) বিদ্যমান স্কিমে চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা ও পয়লা বৈশাখের একটি ভাতা পান। টাকার অঙ্কের হিসাবে। প্রত্যয় স্কিমে সেগুলো নেই।
একই সুরে কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান। তিনি বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত হলে আগে যে পেনশন সুবিধা ছিল, তার থেকে বেশ কিছু অর্থনৈতিক স্বকীয়তা বা সুযোগ-সুবিধা কমে যাবে। এতে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশা আসতে আগ্রহী হবে না। এমনিতেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কম।’
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো উচিত। তাতে মেধাবীরা এ পেশায় আসতে আগ্রহী হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করা হোক।
তবে জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছে ১ জুলাই থেকে প্রত্যয় স্কিম বাস্তবায়ন শুরু হবে। পেনশন কর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করবে। কারও কোনো আপত্তি থাকলে সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তা সংশোধন করা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সিদ্দিক ফারুক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আহনাফ তাহমিদ]
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের ৮০০ জন অতিথি। প্রথম দিন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে থাকবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের
৩৯ মিনিট আগেকিছু অসাধু ব্যক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহল ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার স্বত্ব প্রদান এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
২ ঘণ্টা আগেছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এর তিন দিন পর দায়িত্ব গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের ১০০ দিন পার হওয়া নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে বেলজিয়ামভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। মূল্যায়নে তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী স
২ ঘণ্টা আগেবিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য অনেকে নিজেই পুলিশকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় সেসব তথ্যই এখন তাঁদের জন্য ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গ
৩ ঘণ্টা আগে