বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘কানাডা বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কানাডা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির বড় বাজার। উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সুযোগ রয়েছে, এ সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করে থাকে। কানাডায় প্রচুর ক্যানোলা উৎপাদন হয়, স্বাস্থ্যসম্মত ভোজ্যতেল ক্যানোলা বাংলাদেশে জনপ্রিয় হতে পারে। বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে কানাডা ক্যানোলা ভোজ্যতেল ফ্যাক্টরি স্থাপন করে উৎপাদন করলে বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে রপ্তানি করে লাভবান হতে পারে।’ 

বাণিজ্যমন্ত্রী আজ বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলসের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন। 

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একশটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, বেশ কয়েকটির কাজ শেষ পর্যায়ে। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কানাডা লাভবান হবে।’ 

টিপু মুনশি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়, এগুলো রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। এ ধরনের কৃষিপণ্যের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে গবেষণার কাজে কানাডা সহায়তা করলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। বাংলাদেশ চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ সময়ে কানাডায় রপ্তানি করেছে ১,০৭০. ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে বাংলাদেশ কানাডা থেকে আমদানি করেছে ৪২৮.৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ছে।’ 

কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস বলেন, ‘কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। কানাডায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিপুল চাহিদা রয়েছে। কানাডার ক্যানোলা ভোজ্যতেল বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে। উভয় দেশের গভ. টু গভ. (জিটুজি) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে আমদানি করতে পারে। এ বিষয়ে কানাডা সরকার সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।’ 

লিলি নকোলস বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রশংসা করে বলেন, ‘উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা পারস্পরিক দেশ সফর করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পারে।’ এ ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের সামর্থ্য রয়েছে। 

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ এখন উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতিতে পোশাক তৈরি ও রপ্তানি করছে। ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল বি ১৫৭টি ফ্যাক্টরিকে লিড গ্রিন ফ্যাক্টরির সার্টিফিকেট দিয়েছে, এর মধ্যে প্রথম ১০টির মধ্যে ৯টিই বাংলাদেশে। বাংলাদেশে এখন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে শ্রমিকেরা কাজ করছে। শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) নুসরাত জাবীন বানু উপস্থিত ছিলেন।