নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ চারটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানালেও একটি দল সংলাপে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে ইসি। রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) মধ্য দিয়ে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে ইসি। এনডিএমের পর দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) সঙ্গে বৈঠক করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম দিনের সংলাপের শেষ বাংলাদেশ কংগ্রেস ইসির বৈঠকে অংশগ্রহণ করে নয়টি প্রস্তাব দিয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে এ লিখিত প্রস্তাব পেশ করেন দলটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ছাড়াও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ইয়ারুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন আজও গড়ে ওঠেনি। ফলে দেশের প্রতিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে। ‘একাদশ সংসদ নির্বাচন’ নামে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে এবং সাড়ে তিন বছর অনায়াসেই পার করে দিয়েছে। সাধারণ হিসেবে আর মাত্র দেড় বছর পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে যে পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংঘটিত হয়েছিল, তার সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি। সংসদের তথাকথিত বর্তমান বিরোধী দল বা অতীতে ক্ষমতাভোগী বড় কোনো দল সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করছে না। তারা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বললেও রহস্যজনক কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে কোনো রকম তাগিদ দেখাচ্ছেন না। মনে হচ্ছে এই অব্যবস্থা ও অনিয়মের নির্বাচন তারাও চাচ্ছেন।
দলটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও বিগত সাড়ে তিন বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোও চরম অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে। ফলে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে সাম্প্রতিক নির্বাচনব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে, কিন্তু যাঁদের উদ্দেশে এই আয়োজন, সেই ভোটাররা নির্বাচনে এখন আর ভোট দিতে আসে না। বলতে গেলে ২০১৮ সালের পর দেশের নির্বাচনব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে বর্তমান প্রজন্মের রাজনীতি করে কোনো লাভ হবে না, তারা দেশের সেবা করার কোনো সুযোগ পাবে না। কেননা, বর্তমান নির্বাচনব্যবস্থায় সরকারের ইচ্ছার বাইরে কেউ নির্বাচিত হতে পারছে না। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে যারা এভাবে নির্বাচিত হবে, তাদের দ্বারা দেশ এগোবে না এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। বরং তাদের হাত ধরে প্রশাসনসহ সর্বস্তরে দুর্নীতি ও অবক্ষয় বাড়বে এবং রাষ্ট্র ও সমাজে দেখা দেবে সীমাহীন অস্থিরতা।
বাংলাদেশ কংগ্রেস এর প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-
১. ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংশোধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জন্ম, মৃত্যু ও বয়সের ভিত্তিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্পন্ন করতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সরবরাহকৃত তথ্য অনুসারে জাতীয় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে।
২. সকল প্রকার নির্বাচন পরিচালিত হতে হবে নির্বাচন কমিশনের দ্বারা এবং নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে বাধ্য থাকবে। জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা/মহানগর নির্বাচন কর্মকর্তারা এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা রিটার্নিং অফিসার নিযুক্ত হবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত থেকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
৩. জাতীয় বাজেটের ০ দশমিক ০২ ভাগ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ করতে হবে যা নির্বাচন কমিশন দলগুলোর মধ্যে সমহারে বণ্টন করবে। রাজনৈতিক দলগুলো উক্ত অর্থ সমাজকল্যাণমূলক কাজ ও দল পরিচালনায় ব্যয় করবে, যার হিসাব বছর শেষে কমিশন বরাবর জমা করতে হবে।
৪. নির্বাচনে সকল প্রকার প্রচারণা হবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ব্যবস্থাপনা ও নির্দেশনা অনুসারে। প্রার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত মুদ্রণ ফি গ্রহণপূর্বক নির্বাচন কমিশন সকল প্রার্থীর নাম ও ছবি সংবলিত পোস্টার মুদ্রণ করে প্রার্থীদের মধ্যে সমসংখ্যক পোস্টার বিতরণ করবে এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে প্রার্থীরা উক্ত পোস্টার প্রদর্শন করবেন। তবে প্রার্থীগণ নিজ উদ্যোগে মাইকিং ও হাতে হাতে প্রচারপত্র বিতরণ করতে পারবেন। নির্বাচনের দিন নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ ছুটি ঘোষণা করতে হবে এবং সকল প্রকার অফিস ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। ভোট চলাকালীন সময়ে দলীয় ক্যাম্প স্থাপন পরিচালনা, ভোটারবাহী পরিবহন ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫. ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর অবস্থান ও পরিচালনায় গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে এবং ভোট প্রদানের পর প্রতীকসহ মুদ্রিত টোকেন প্রদান পদ্ধতি চালু করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ভোটার উক্ত টোকেনের কপি নির্ধারিত বাক্সে ফেলবেন যা সংরক্ষণ করতে হবে এবং মেশিনে প্রাপ্ত ভোট সংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। তবে বাংলাদেশ কংগ্রেস ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করে এবং ব্যালট পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে।
৬. জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস পূর্বে নির্বাচন কমিশন উক্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে এবং তফসিল ঘোষণার পর হতে দেশের বিদ্যমান সরকার ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ বলে অভিহিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত যাবতীয় লোকবল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক মনোনীত একজন নির্বাচন কমিশনারের অধীনে এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বদলির ক্ষমতা এককভাবে আরেকজন নির্বাচন কমিশনারের অধীনে ন্যস্ত থাকবে।
৭. যে কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অনুমোদিত বা নিবন্ধিত দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষণ সংস্থা এবং গণমাধ্যমকর্মীদেরকে অবাধ সুযোগ প্রদান করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদের মতামত ও প্রতিবেদন প্রকাশে বাধা প্রদান করা যাবে না।
৮. নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলি ও দলীয় সদস্যদের যে কোন বেআইনি ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে ‘পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনাল’ ও ‘পলিটিক্যাল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করিতে হইবে। পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনালে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলির যে কোন কমিটি বা সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা যাবে। জেলা জজের সমমানের একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সমন্বয়ে পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে। ট্রাইব্যুনালে আনীত অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলির যে কোন কমিটি বা সদস্যকে যুক্তিসংগত জরিমানা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে। পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনালের যে কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাবে। একজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও নির্বাচন কমিশন সচিবের সমন্বয়ে পলিটিক্যাল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে।
৯. নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য সৃষ্টি, রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন, জবাবদিহিতা, দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন রোধ, পরমতসহিষ্ণুতা, দেশপ্রেম, মূল্যবোধ ও নেতৃত্বের বিকাশ, মতামত গ্রহণ এবং নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দলগুলির সম্পর্কোন্নয়নের লক্ষ্যে দলগুলোর চেয়ারম্যান ও মহাসচিব (বা সমমানের পদধারী)-দের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন প্রতি বৎসর ডিসেম্বর মাসের যেকোনো সময় দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ চারটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানালেও একটি দল সংলাপে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে ইসি। রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) মধ্য দিয়ে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে ইসি। এনডিএমের পর দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) সঙ্গে বৈঠক করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম দিনের সংলাপের শেষ বাংলাদেশ কংগ্রেস ইসির বৈঠকে অংশগ্রহণ করে নয়টি প্রস্তাব দিয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে এ লিখিত প্রস্তাব পেশ করেন দলটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ছাড়াও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ইয়ারুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন আজও গড়ে ওঠেনি। ফলে দেশের প্রতিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে। ‘একাদশ সংসদ নির্বাচন’ নামে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে এবং সাড়ে তিন বছর অনায়াসেই পার করে দিয়েছে। সাধারণ হিসেবে আর মাত্র দেড় বছর পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে যে পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংঘটিত হয়েছিল, তার সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি। সংসদের তথাকথিত বর্তমান বিরোধী দল বা অতীতে ক্ষমতাভোগী বড় কোনো দল সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করছে না। তারা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বললেও রহস্যজনক কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে কোনো রকম তাগিদ দেখাচ্ছেন না। মনে হচ্ছে এই অব্যবস্থা ও অনিয়মের নির্বাচন তারাও চাচ্ছেন।
দলটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও বিগত সাড়ে তিন বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোও চরম অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে। ফলে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে সাম্প্রতিক নির্বাচনব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে, কিন্তু যাঁদের উদ্দেশে এই আয়োজন, সেই ভোটাররা নির্বাচনে এখন আর ভোট দিতে আসে না। বলতে গেলে ২০১৮ সালের পর দেশের নির্বাচনব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে বর্তমান প্রজন্মের রাজনীতি করে কোনো লাভ হবে না, তারা দেশের সেবা করার কোনো সুযোগ পাবে না। কেননা, বর্তমান নির্বাচনব্যবস্থায় সরকারের ইচ্ছার বাইরে কেউ নির্বাচিত হতে পারছে না। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে যারা এভাবে নির্বাচিত হবে, তাদের দ্বারা দেশ এগোবে না এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। বরং তাদের হাত ধরে প্রশাসনসহ সর্বস্তরে দুর্নীতি ও অবক্ষয় বাড়বে এবং রাষ্ট্র ও সমাজে দেখা দেবে সীমাহীন অস্থিরতা।
বাংলাদেশ কংগ্রেস এর প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-
১. ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংশোধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জন্ম, মৃত্যু ও বয়সের ভিত্তিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্পন্ন করতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সরবরাহকৃত তথ্য অনুসারে জাতীয় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে।
২. সকল প্রকার নির্বাচন পরিচালিত হতে হবে নির্বাচন কমিশনের দ্বারা এবং নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে বাধ্য থাকবে। জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা/মহানগর নির্বাচন কর্মকর্তারা এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা রিটার্নিং অফিসার নিযুক্ত হবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত থেকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
৩. জাতীয় বাজেটের ০ দশমিক ০২ ভাগ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ করতে হবে যা নির্বাচন কমিশন দলগুলোর মধ্যে সমহারে বণ্টন করবে। রাজনৈতিক দলগুলো উক্ত অর্থ সমাজকল্যাণমূলক কাজ ও দল পরিচালনায় ব্যয় করবে, যার হিসাব বছর শেষে কমিশন বরাবর জমা করতে হবে।
৪. নির্বাচনে সকল প্রকার প্রচারণা হবে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ব্যবস্থাপনা ও নির্দেশনা অনুসারে। প্রার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত মুদ্রণ ফি গ্রহণপূর্বক নির্বাচন কমিশন সকল প্রার্থীর নাম ও ছবি সংবলিত পোস্টার মুদ্রণ করে প্রার্থীদের মধ্যে সমসংখ্যক পোস্টার বিতরণ করবে এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে প্রার্থীরা উক্ত পোস্টার প্রদর্শন করবেন। তবে প্রার্থীগণ নিজ উদ্যোগে মাইকিং ও হাতে হাতে প্রচারপত্র বিতরণ করতে পারবেন। নির্বাচনের দিন নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ ছুটি ঘোষণা করতে হবে এবং সকল প্রকার অফিস ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। ভোট চলাকালীন সময়ে দলীয় ক্যাম্প স্থাপন পরিচালনা, ভোটারবাহী পরিবহন ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫. ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর অবস্থান ও পরিচালনায় গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে এবং ভোট প্রদানের পর প্রতীকসহ মুদ্রিত টোকেন প্রদান পদ্ধতি চালু করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ভোটার উক্ত টোকেনের কপি নির্ধারিত বাক্সে ফেলবেন যা সংরক্ষণ করতে হবে এবং মেশিনে প্রাপ্ত ভোট সংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। তবে বাংলাদেশ কংগ্রেস ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করে এবং ব্যালট পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে।
৬. জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস পূর্বে নির্বাচন কমিশন উক্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে এবং তফসিল ঘোষণার পর হতে দেশের বিদ্যমান সরকার ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ বলে অভিহিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত যাবতীয় লোকবল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক মনোনীত একজন নির্বাচন কমিশনারের অধীনে এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বদলির ক্ষমতা এককভাবে আরেকজন নির্বাচন কমিশনারের অধীনে ন্যস্ত থাকবে।
৭. যে কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অনুমোদিত বা নিবন্ধিত দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষণ সংস্থা এবং গণমাধ্যমকর্মীদেরকে অবাধ সুযোগ প্রদান করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদের মতামত ও প্রতিবেদন প্রকাশে বাধা প্রদান করা যাবে না।
৮. নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলি ও দলীয় সদস্যদের যে কোন বেআইনি ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে ‘পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনাল’ ও ‘পলিটিক্যাল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করিতে হইবে। পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনালে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলির যে কোন কমিটি বা সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা যাবে। জেলা জজের সমমানের একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সমন্বয়ে পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে। ট্রাইব্যুনালে আনীত অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলির যে কোন কমিটি বা সদস্যকে যুক্তিসংগত জরিমানা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে। পলিটিক্যাল ট্রাইব্যুনালের যে কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাবে। একজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও নির্বাচন কমিশন সচিবের সমন্বয়ে পলিটিক্যাল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে।
৯. নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য সৃষ্টি, রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন, জবাবদিহিতা, দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন রোধ, পরমতসহিষ্ণুতা, দেশপ্রেম, মূল্যবোধ ও নেতৃত্বের বিকাশ, মতামত গ্রহণ এবং নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দলগুলির সম্পর্কোন্নয়নের লক্ষ্যে দলগুলোর চেয়ারম্যান ও মহাসচিব (বা সমমানের পদধারী)-দের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন প্রতি বৎসর ডিসেম্বর মাসের যেকোনো সময় দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করবে।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের ৮০০ জন অতিথি। প্রথম দিন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে থাকবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের
২ ঘণ্টা আগেকিছু অসাধু ব্যক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহল ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার স্বত্ব প্রদান এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
৪ ঘণ্টা আগেছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এর তিন দিন পর দায়িত্ব গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের ১০০ দিন পার হওয়া নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে বেলজিয়ামভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। মূল্যায়নে তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী স
৪ ঘণ্টা আগেবিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য অনেকে নিজেই পুলিশকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় সেসব তথ্যই এখন তাঁদের জন্য ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গ
৫ ঘণ্টা আগে