সংসদ নির্বাচনও কয়েক ধাপে, এ আলোচনা সিইসির ব্যক্তিগত: ইসি আলমগীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৪, ১৭: ৩০

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনও একাধিক দিনে ধাপে ধাপে করার বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের ব্যক্তিগত আলোচনা বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

গতকাল রোববার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সঙ্গে বৈঠক শেষে ধাপে ধাপে ভোটের বিষয়ে সিইসি বলেছিলেন, তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হয়ে যাবে। ভোটকেন্দ্রে অধিকসংখ্যক ফোর্স মোতায়েন সহজ হবে। মনিটরিংটা সহজ হবে।

আজ সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ধাপে ধাপে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি নজরে আনলে ইসি আলমগীর বলেন, ‘কমিশন এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আমাদের বক্তব্য হলো, পদ্ধতি যেটাই হোক না কেন, পদ্ধতি ঠিক করবে রাজনৈতিক দল, সংসদ, ভোটার। তাঁরাই ঠিক করবেন। যে পদ্ধতিই অনুসরণ করা হোক না কেন, সংবিধানে যে অবস্থা থাকবে, সেই অবস্থার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্বাচনটা সুষ্ঠু করার। ওটা নিয়ে আমাদের ব্যক্তিগত পছন্দ, অপছন্দ নাই।’

কমিশনের একজন যখন চিন্তা করে ধাপে ধাপে জাতীয় নির্বাচন হলে ভোটটা ভালো হবে। এ রকম কেন মনে হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কথাটা উনি কমিশনের কোনো সিদ্ধান্ত হিসেবে বলেননি। উনি যেটা বলেছেন সেটা হলো যে একাডেমিক ডিসকাশনের ক্ষেত্রে উনি মনে করেন সেটা। এই রকম সিদ্ধান্ত দেয়নি যে কমিশন মনে করে এই পদ্ধতিটা ভালো। সেটি ব্যক্তিগত আলোচনা।’

ইভিএমের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নয়, ইভিএমের ভালো দিকগুলো নিয়ে ব্যক্তিগত আলোচনা হয়েছে যে ইভিএমে বিশ্বাস করা উচিত। কারণ, ইভিএমে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, নির্বাচন হওয়ার পরে কিন্তু কোনো প্রার্থী বলেনি কারচুপি হয়েছে। এই ধরনের একটি অভিযোগও আমরা পাইনি। সব রাজনৈতিক দল যদি ইভিএমের ভোটের বিষয়টি সমর্থন করত, তাহলে ভালো হতো সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধাপে ধাপে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, ‘এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ–অপছন্দের বিষয় নয়। এটা হলো জাতীয় সংসদ, দেশের রাজনৈতিক দল যে পদ্ধতি নির্ধারণ করবে, কমিশন সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্বাচন করবে। কমিশন কোনো গাইডলাইন দিতে পারে না, সুপারিশ করতে পারে না। বরং সংবিধানে কী আছে, সে অনুযায়ী কমিশনকে ফলো করতে হবে। সংবিধান রচনা করবে মহান জাতীয় সংসদ। মহান জাতীয় সংসদে কারা আছেন? সংসদ সদস্যরা। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই ঠিক করে দেবেন যে এই দেশের শাসনব্যবস্থা কেমন হবে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কেমন হবে, সরকারব্যবস্থা কেমন হবে, নির্বাচনব্যবস্থা কেমন হবে।’

একজন সংসদ সদস্যের যদি সাধারণ মৃত্যু কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে, তাহলে সেই ক্ষেত্রে ওই আসনে কী হবে? এটি কী সংবিধানের কোথাও উল্লেখ করা আছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে এ বিষয়ে আমরা কোনো কিছু উল্লেখ দেখি না। মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে—এটি আমি এ পর্যন্ত সংবিধানে দেখিনি। সাধারণত এটি ধরে নেওয়া হয়, যদি সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন তাঁর পক্ষে তো আর সংসদে আসা সম্ভব নয়। এটি ধরে নিয়েই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয় এবং আমাদের যখন জানানো হয়, আমরা সংবিধানের ১২৩ অনুযায়ী নির্বাচন করি।’

ঝিনাইদহ-৪ আসনের ক্ষেত্রে কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক বা অপমৃত্যু যা–ই হোক না কেন, এটা হলো সংসদের দায়িত্ব। স্পিকার যখন মৃত্যু সনদ পাবেন, তখন সংসদ আসনটি শূন্য ঘোষণা করবে। শূন্য ঘোষণা করলে গেজেট আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এরপরে আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।’

মৃত্যুর কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হওয়ার বিষয়টি না থাকায় অসংগতি হলো কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘থাকলে ভালো হতো। যেহেতু টানা ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকলে স্পিকার সংসদ সদস্য পদ শূন্য ঘোষণা করত পারেন। যদিও সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা নাই মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে।’

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনারের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উনি মারা গেছেন নাকি মারা যাননি, সেটি তো আমরা জানি না। আমরা অফিশিয়ালি জানি না। এটি সংসদ থেকে গেজেট করে যখন জানাবে তখন আমরা জানতে পারব। উনি মারা গেছেন কি না। সংসদ যদি আসনটি শূন্য ঘোষণা করে, তখন আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত