অ্যাডভোকেট সাহিদা আক্তার
বিখ্যাত আফ্রিকান-আমেরিকান মানবাধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং বলেছেন, ‘কোনো জায়গায় অবিচার, সবখানে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি।’ সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় আইনি সহায়তা ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সমাজের দরিদ্র, নিপীড়িত ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা।
এ কারণে আইনগত সহায়তা ও মৌলিক অধিকারগুলো একে অপরের পরিপূরক। আইন মানুষের কখনো ভেদাভেদ করে না। গরিব ও নিঃস্ব মানুষ যাতে আর্থিক দৈন্যের কারণে আইনগত সহায়তা পাওয়ার অধিকার থেকে কোনোভাবে বঞ্চিত না হয়, সে জন্য সরকারি আইন সহায়তা কর্মসূচি আছে।
সরকার আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও সহায় সম্বলহীন এবং নানা আর্থসামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ পাস করে। কিন্তু ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এই আইনের বাস্তবায়ন স্তিমিত হয়ে যায়।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করলে আইনি সহায়তা প্রদান কার্যক্রম সক্রিয়করণের ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় হেল্পলাইন কল সেন্টার ১৬৪৩০ চালু করা হয়।
এই আইনের আওতায় সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার একই বছর ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ নামে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। সেই সংস্থার অধীনে এরই মধ্যে দেশের ৬৪ জেলায় জেলা ও দায়রা জজদের নেতৃত্বে ‘জেলা লিগ্যাল এইড’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির পাশাপাশি সারা দেশের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে সেই সংস্থার তত্ত্বাবধানে সুপ্রিম কোর্ট কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি আইনগত সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রম আদালত ও চৌকি আদালতগুলোতেও সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি জেলা জজ আদালত ভবনে জেলা লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করা হয়েছে। তবে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে শুধু আইনের সহায়তা প্রদান কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি। মামলাজট কমানোর জন্য এই অফিসগুলোকে এডিআর কর্নার বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পক্ষগুলোর সম্মতির ভিত্তিতে লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে।
সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রমের সাফল্য নির্ভর করছে ব্যাপক প্রচারণা ও জনমত সৃষ্টির ওপর। এখনো এ দেশের জনগণের একটি অংশ দরিদ্র ও নিরক্ষর। এই দরিদ্র ও নিরক্ষর জনগণ তাঁদের আইনগত অধিকার সম্পর্কে ততটা সচেতন নন। এসব মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হলে অথবা কোনো আইনি জটিলতায় পড়লে আর্থিক দৈন্য কিংবা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা থাকার কারণে তাঁরা আইন-আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন না। এভাবে নানা আর্থসামাজিক প্রতিবন্ধকতা কিংবা দারিদ্র্যের কারণে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের জনকল্যাণমূলক আইনি সেবার বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং সরকারি আইনি সেবা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ২০১৩ সালে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ এপ্রিলকে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
লেখক: আইনজীবী, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা
বিখ্যাত আফ্রিকান-আমেরিকান মানবাধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং বলেছেন, ‘কোনো জায়গায় অবিচার, সবখানে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি।’ সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় আইনি সহায়তা ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সমাজের দরিদ্র, নিপীড়িত ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা।
এ কারণে আইনগত সহায়তা ও মৌলিক অধিকারগুলো একে অপরের পরিপূরক। আইন মানুষের কখনো ভেদাভেদ করে না। গরিব ও নিঃস্ব মানুষ যাতে আর্থিক দৈন্যের কারণে আইনগত সহায়তা পাওয়ার অধিকার থেকে কোনোভাবে বঞ্চিত না হয়, সে জন্য সরকারি আইন সহায়তা কর্মসূচি আছে।
সরকার আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও সহায় সম্বলহীন এবং নানা আর্থসামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ পাস করে। কিন্তু ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এই আইনের বাস্তবায়ন স্তিমিত হয়ে যায়।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করলে আইনি সহায়তা প্রদান কার্যক্রম সক্রিয়করণের ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় হেল্পলাইন কল সেন্টার ১৬৪৩০ চালু করা হয়।
এই আইনের আওতায় সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার একই বছর ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ নামে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। সেই সংস্থার অধীনে এরই মধ্যে দেশের ৬৪ জেলায় জেলা ও দায়রা জজদের নেতৃত্বে ‘জেলা লিগ্যাল এইড’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির পাশাপাশি সারা দেশের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে সেই সংস্থার তত্ত্বাবধানে সুপ্রিম কোর্ট কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি আইনগত সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রম আদালত ও চৌকি আদালতগুলোতেও সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি জেলা জজ আদালত ভবনে জেলা লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করা হয়েছে। তবে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে শুধু আইনের সহায়তা প্রদান কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি। মামলাজট কমানোর জন্য এই অফিসগুলোকে এডিআর কর্নার বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পক্ষগুলোর সম্মতির ভিত্তিতে লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে।
সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রমের সাফল্য নির্ভর করছে ব্যাপক প্রচারণা ও জনমত সৃষ্টির ওপর। এখনো এ দেশের জনগণের একটি অংশ দরিদ্র ও নিরক্ষর। এই দরিদ্র ও নিরক্ষর জনগণ তাঁদের আইনগত অধিকার সম্পর্কে ততটা সচেতন নন। এসব মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হলে অথবা কোনো আইনি জটিলতায় পড়লে আর্থিক দৈন্য কিংবা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা থাকার কারণে তাঁরা আইন-আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন না। এভাবে নানা আর্থসামাজিক প্রতিবন্ধকতা কিংবা দারিদ্র্যের কারণে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের জনকল্যাণমূলক আইনি সেবার বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং সরকারি আইনি সেবা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ২০১৩ সালে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ এপ্রিলকে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
লেখক: আইনজীবী, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের ৮০০ জন অতিথি। প্রথম দিন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে থাকবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের
৪ ঘণ্টা আগেকিছু অসাধু ব্যক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহল ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার স্বত্ব প্রদান এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
৫ ঘণ্টা আগেছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এর তিন দিন পর দায়িত্ব গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের ১০০ দিন পার হওয়া নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে বেলজিয়ামভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। মূল্যায়নে তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী স
৬ ঘণ্টা আগেবিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য অনেকে নিজেই পুলিশকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় সেসব তথ্যই এখন তাঁদের জন্য ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গ
৬ ঘণ্টা আগে