নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও পটুয়াখালী প্রতিনিধি
দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ওয়াদা করেছিলাম, প্রতিটি মানুষের ঘর আলোকিত করব। প্রতিটি মানুষ আলোকিত হবে। আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছি। আজকের দিনটা, আলোর পথের যাত্রা শুরু করেছিলাম, সেটা সফল হয়েছে সেই দিন।’ সোমবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন শেষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে আমরা প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে পারলাম, এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। আমরা আলোকিত করেছি এই দেশের মানুষের প্রত্যেকটা ঘর।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা উদ্যোগ নিলাম শুধু সরকারি না, বেসরকারি খাতেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করব। মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাব। যেখানে মাত্র ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছিলাম, পাঁচ বছরে আমরা ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আবার ২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি। ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখলাম সেই বিদ্যুৎ কমে ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে নেমে গেছে।’
মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যায় কিন্তু বাংলাদেশ সব সময় পিছিয়ে যাচ্ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২১টা বছর এবং এরপরে ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যারা সরকারে ছিল, আসলে এই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আন্তরিকতাই তাঁদের ছিল না। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য এই দেশের মানুষের।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দ্বীপাঞ্চলে সাবমেরিন কেব্ল দিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর যেখানে জাতীয় গ্রিড নেই, সেখানে সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুৎ দিয়ে দিচ্ছি। অর্থাৎ কোনো ঘর অন্ধকারে থাকবে না।’
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ধন্যবাদ জানাই চীনের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে। আমাদের অনুরোধে তাঁরা এই সুযোগটা করে দিয়েছিলেন। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সঙ্গে আমাদের দেশের এবং চীনের যাঁরা কাজ করেছেন, বিশেষ করে প্রকৌশলী বা যাঁরা কাজ করেছিলেন তাঁদের নতুন অভিজ্ঞতা হলো। ভবিষ্যতে আমাদের আর কারও মুখাপেক্ষী হতে হবে না। যেকোনো প্রকল্প আমরা নিজেরাই বাস্তবায়ন করতে পারব। সেই ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০৯ থেকে সরকার গঠনের পর থেকে এই ২০২২ সাল। এই দীর্ঘ সময় সরকারে থাকতে পেরেছি, সে জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। ভোট দিয়ে আমাদের তাঁরা নির্বাচিত করেছিলেন। এই ১৩ বছর একটানা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অব্যাহত রয়েছে। এর মাঝে ঝড়-ঝঞ্ঝা, বাধা অনেক এসেছে। কিন্তু সেটা আমরা অতিক্রম করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি বলেই আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলে রেখে গিয়েছিলেন। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’
যুবসমাজকে সরকার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘লেখাপড়া শিখে নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারবে। উদ্যোক্তা হয়ে আরও ১০টা মানুষকে চাকরি দিতে পারবে, সেভাবে যুবসমাজকে চিন্তা করতে হবে। তবে দেশই এগিয়ে যাবে।’
সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যেন সুন্দর ও উন্নত জীবন পায়, সেই পরিকল্পনা আমরা করে দিয়েছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি। পাশাপাশি ২১০০ সালের ডেলটা প্ল্যান আমরা করে দিয়েছি। নদী ড্রেজিং করে দেওয়া, নৌপথ চালু করা, সেই সঙ্গে সড়ক পথ, পুল-ব্রিজ ব্যাপকভাবে করে দিয়ে একটা যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা চাই এই দেশ এগিয়ে যাক, আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছি। দক্ষিণাঞ্চল সব সময় অবহেলিত। রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজ ব্যাপকভাবে করে দিয়েছি।’
গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। ঠিকানাবিহীন থাকবে না। একটি মানুষও আর কষ্ট পাবে না। ইনশা আল্লাহ সেটাও আমরা করে ফেলব, এতে কোনো সন্দেহ নাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গবেষণার মাধ্যমে আমরা লবণসহিষ্ণু ধানবীজ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি। এই দক্ষিণাঞ্চল অবহেলিত ছিল। এখানেই কিন্তু, দশমিনাতে (পটুয়াখালী) বীজ গবেষণাকেন্দ্র করে দিয়েছি। এখানে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বন্দর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়নকাজ চলছে। যে সমস্ত এলাকাগুলো ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে পানি এদিক থেকে ওই দিকে বয়ে যেত। মানুষের একটি মাত্র ফসল নষ্ট হলে দুর্ভিক্ষে পড়তে হতো। আল্লাহর রহমতে আর সেই দুর্ভিক্ষ হবে না, মানুষের কষ্ট থাকবে না। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে, উন্নত জীবন পাবে। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আপনাদের (জনগণ) কাজ আছে। আমাদের দল থেকে যেমন প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ করি। কাজেই সবুজ বনায়ন, উপকূল সবুজায়ন করা। এটা আমাদের প্রত্যেকটা নেতা কর্মীদের করতে হবে। আষাঢ় মাস থেকে আমরা বৃক্ষরোপণ করি। গাছ লাগালে নিজেরাও লাভবান হবে। আর আমাদের পরিবেশও ভালো থাকবে।’
সবাইকে করোনাভাইরাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি থাকবে না। যার যতটুকু সাধ্য আছে, সেই জমিতে যে যা পারেন, আমি সোজা বাংলায় বলব একটি মরিচ গাছও যদি লাগাতে পারেন। সবাই নিজেরা কিছু না কিছু উৎপাদন করবেন। আর কৃষকের পাশে দাঁড়াবেন। সবাইকে সকল কাজে এক হয়ে কাজ করতে হবে। যাতে বাংলাদেশ আর পেছনে না পড়ে থাকে। যে অগ্রযাত্রা আমরা শুরু করেছি, জাতির পিতা যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন—সেই সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক মহতী অনুষ্ঠানে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পেরেছি। করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে দুটি বছর অনেকটা গৃহবন্দী। তবে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, তার মাধ্যমে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। আজকে ইচ্ছে ছিল জনসভার করার। ভবিষ্যতে ইনশা আল্লাহ আবার আসব, জনসভা করব। সেই সভার অপেক্ষায় আমি আছি। আবার আমি বলি—স্বজন হারার বেদনা নিয়ে যে জীবন শুরু, সেই ব্যথা, কষ্ট, শোক আমাকে প্রেরণা দিয়েছে আমার বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দুঃখী মানুষের হাসি ফোটাতে গিয়ে আমার বাবা-মা এবং ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছেন। তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। আমি মনে করি, মুজিব আদর্শের প্রতিটি সৈনিককে সেটাই স্মরণ রাখতে হবে।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা নামটা মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল পঁচাত্তরের পরে। কিন্তু আর সেটা করতে পারবে না। খুনি ও যুদ্ধাপরাধীরা আর কখনো এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। মানুষ আজ নিজেরাই জেগেছে, এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছি। এই চলার গতি আর কেউ থামাতে পারবে না।’
মুজিববর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সবাইকে উপহার দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান, ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ও অন্যান্যরা।
দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ওয়াদা করেছিলাম, প্রতিটি মানুষের ঘর আলোকিত করব। প্রতিটি মানুষ আলোকিত হবে। আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছি। আজকের দিনটা, আলোর পথের যাত্রা শুরু করেছিলাম, সেটা সফল হয়েছে সেই দিন।’ সোমবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন শেষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে আমরা প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে পারলাম, এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। আমরা আলোকিত করেছি এই দেশের মানুষের প্রত্যেকটা ঘর।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা উদ্যোগ নিলাম শুধু সরকারি না, বেসরকারি খাতেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করব। মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাব। যেখানে মাত্র ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছিলাম, পাঁচ বছরে আমরা ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আবার ২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি। ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখলাম সেই বিদ্যুৎ কমে ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে নেমে গেছে।’
মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যায় কিন্তু বাংলাদেশ সব সময় পিছিয়ে যাচ্ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২১টা বছর এবং এরপরে ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যারা সরকারে ছিল, আসলে এই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আন্তরিকতাই তাঁদের ছিল না। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য এই দেশের মানুষের।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দ্বীপাঞ্চলে সাবমেরিন কেব্ল দিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর যেখানে জাতীয় গ্রিড নেই, সেখানে সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুৎ দিয়ে দিচ্ছি। অর্থাৎ কোনো ঘর অন্ধকারে থাকবে না।’
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ধন্যবাদ জানাই চীনের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে। আমাদের অনুরোধে তাঁরা এই সুযোগটা করে দিয়েছিলেন। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সঙ্গে আমাদের দেশের এবং চীনের যাঁরা কাজ করেছেন, বিশেষ করে প্রকৌশলী বা যাঁরা কাজ করেছিলেন তাঁদের নতুন অভিজ্ঞতা হলো। ভবিষ্যতে আমাদের আর কারও মুখাপেক্ষী হতে হবে না। যেকোনো প্রকল্প আমরা নিজেরাই বাস্তবায়ন করতে পারব। সেই ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০৯ থেকে সরকার গঠনের পর থেকে এই ২০২২ সাল। এই দীর্ঘ সময় সরকারে থাকতে পেরেছি, সে জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। ভোট দিয়ে আমাদের তাঁরা নির্বাচিত করেছিলেন। এই ১৩ বছর একটানা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অব্যাহত রয়েছে। এর মাঝে ঝড়-ঝঞ্ঝা, বাধা অনেক এসেছে। কিন্তু সেটা আমরা অতিক্রম করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি বলেই আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলে রেখে গিয়েছিলেন। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’
যুবসমাজকে সরকার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘লেখাপড়া শিখে নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারবে। উদ্যোক্তা হয়ে আরও ১০টা মানুষকে চাকরি দিতে পারবে, সেভাবে যুবসমাজকে চিন্তা করতে হবে। তবে দেশই এগিয়ে যাবে।’
সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যেন সুন্দর ও উন্নত জীবন পায়, সেই পরিকল্পনা আমরা করে দিয়েছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি। পাশাপাশি ২১০০ সালের ডেলটা প্ল্যান আমরা করে দিয়েছি। নদী ড্রেজিং করে দেওয়া, নৌপথ চালু করা, সেই সঙ্গে সড়ক পথ, পুল-ব্রিজ ব্যাপকভাবে করে দিয়ে একটা যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা চাই এই দেশ এগিয়ে যাক, আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছি। দক্ষিণাঞ্চল সব সময় অবহেলিত। রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজ ব্যাপকভাবে করে দিয়েছি।’
গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। ঠিকানাবিহীন থাকবে না। একটি মানুষও আর কষ্ট পাবে না। ইনশা আল্লাহ সেটাও আমরা করে ফেলব, এতে কোনো সন্দেহ নাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গবেষণার মাধ্যমে আমরা লবণসহিষ্ণু ধানবীজ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি। এই দক্ষিণাঞ্চল অবহেলিত ছিল। এখানেই কিন্তু, দশমিনাতে (পটুয়াখালী) বীজ গবেষণাকেন্দ্র করে দিয়েছি। এখানে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বন্দর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়নকাজ চলছে। যে সমস্ত এলাকাগুলো ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে পানি এদিক থেকে ওই দিকে বয়ে যেত। মানুষের একটি মাত্র ফসল নষ্ট হলে দুর্ভিক্ষে পড়তে হতো। আল্লাহর রহমতে আর সেই দুর্ভিক্ষ হবে না, মানুষের কষ্ট থাকবে না। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে, উন্নত জীবন পাবে। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আপনাদের (জনগণ) কাজ আছে। আমাদের দল থেকে যেমন প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ করি। কাজেই সবুজ বনায়ন, উপকূল সবুজায়ন করা। এটা আমাদের প্রত্যেকটা নেতা কর্মীদের করতে হবে। আষাঢ় মাস থেকে আমরা বৃক্ষরোপণ করি। গাছ লাগালে নিজেরাও লাভবান হবে। আর আমাদের পরিবেশও ভালো থাকবে।’
সবাইকে করোনাভাইরাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি থাকবে না। যার যতটুকু সাধ্য আছে, সেই জমিতে যে যা পারেন, আমি সোজা বাংলায় বলব একটি মরিচ গাছও যদি লাগাতে পারেন। সবাই নিজেরা কিছু না কিছু উৎপাদন করবেন। আর কৃষকের পাশে দাঁড়াবেন। সবাইকে সকল কাজে এক হয়ে কাজ করতে হবে। যাতে বাংলাদেশ আর পেছনে না পড়ে থাকে। যে অগ্রযাত্রা আমরা শুরু করেছি, জাতির পিতা যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন—সেই সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক মহতী অনুষ্ঠানে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পেরেছি। করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে দুটি বছর অনেকটা গৃহবন্দী। তবে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, তার মাধ্যমে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। আজকে ইচ্ছে ছিল জনসভার করার। ভবিষ্যতে ইনশা আল্লাহ আবার আসব, জনসভা করব। সেই সভার অপেক্ষায় আমি আছি। আবার আমি বলি—স্বজন হারার বেদনা নিয়ে যে জীবন শুরু, সেই ব্যথা, কষ্ট, শোক আমাকে প্রেরণা দিয়েছে আমার বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দুঃখী মানুষের হাসি ফোটাতে গিয়ে আমার বাবা-মা এবং ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছেন। তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। আমি মনে করি, মুজিব আদর্শের প্রতিটি সৈনিককে সেটাই স্মরণ রাখতে হবে।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা নামটা মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল পঁচাত্তরের পরে। কিন্তু আর সেটা করতে পারবে না। খুনি ও যুদ্ধাপরাধীরা আর কখনো এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। মানুষ আজ নিজেরাই জেগেছে, এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছি। এই চলার গতি আর কেউ থামাতে পারবে না।’
মুজিববর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সবাইকে উপহার দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান, ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ও অন্যান্যরা।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। এবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের ৮০০ জন অতিথি। প্রথম দিন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে থাকবেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের
১ ঘণ্টা আগেকিছু অসাধু ব্যক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহল ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার স্বত্ব প্রদান এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
২ ঘণ্টা আগেছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এর তিন দিন পর দায়িত্ব গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের ১০০ দিন পার হওয়া নিয়ে একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে বেলজিয়ামভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। মূল্যায়নে তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী স
৩ ঘণ্টা আগেবিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য অনেকে নিজেই পুলিশকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় সেসব তথ্যই এখন তাঁদের জন্য ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গ
৩ ঘণ্টা আগে