মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতাসহ ভুবনবিখ্যাত অনেক পর্যটকই সন্দ্বীপের প্রেমে পড়েছিলেন বলে শোনা যায়। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কবি কাজী নজরুল ইসলামও মুগ্ধ হয়েছিলেন। সন্দ্বীপের প্রেমে না পড়ে উপায় আছে! ভাঙতে ভাঙতে ছোট হয়ে যাওয়া বর্তমান সন্দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে অনুমান করা যায়, ইবনে বতুতা কেন এর প্রেমে পড়েছিলেন। আর পর্তুগিজরাই-বা কেন এখানে কলোনি গড়েছিল?
চারদিকে নারকেল আর খেজুরগাছের সারি, সাগর থেকে ছুটে আসা উদ্দাম নোনা বাতাস, তীরে আছড়ে পড়া ঢেউ, সন্দ্বীপের প্রেমে পড়ার জন্য এ-ই যথেষ্ট। আর যদি হয় সময়টা শুক্লপক্ষ, তাহলে তো কথাই নেই। সারি সারি নারকেল আর খেজুরগাছের ফাঁক গলে পড়া শুক্লপক্ষের চাঁদের আলোয় ভেসে যাওয়ার জন্য সন্দ্বীপ দারুণ জায়গা। আর যাঁরা ক্যাম্পিং করে থাকতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য সন্দ্বীপের কালাপানিয়া, হরিশপুর ও রহমতপুর খুব ভালো জায়গা। এসব জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ।
মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপে জনবসতির ইতিহাস বেশ প্রাচীন। একসময় এখানকার লবণশিল্প, জাহাজ নির্মাণ কারখানা ও বস্ত্রশিল্পের খ্যাতি ছিল। তুর্কি সাম্রাজ্যের সুলতানরা পর্যন্ত সন্দ্বীপের জাহাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বেশ কিছু জাহাজ সংগ্রহ করেছিলেন। পর্তুগিজদের দৃষ্টি পড়েছিল সন্দ্বীপের ওপর। তারা এখানে গড়েছিল উপনিবেশ। ১৬১৫ সালে পর্তুগিজদের সঙ্গে আরাকানের যুদ্ধে দুই শ সৈন্যসহ পর্তুগিজ সেনাপতি ইমানুয়েল মার্তুস নিহত হলে তারা সন্দ্বীপ ছেড়ে যায়। পরে ১৬১৬ সালে তার দখল নেয় মগ রাজা। এরপর আরাকান ও মগদের প্রাধান্য থাকলেও স্বাধীনভাবে এই অঞ্চল প্রায় অর্ধশতক রাজত্ব করেন দেলোয়ার খাঁ।
দেলোয়ার খাঁ কিংবা ইবনে বতুতার এই সব গল্প শুনতে হুট করেই ছুটে গিয়েছিলাম সন্দ্বীপ। হুড়োহুড়ি করে কোনোরকমে চট্টগ্রামের টিকিট কিনে বাসে উঠি। তারপর রাত ৩টায় নেমে গিয়েছিলাম সীতাকুণ্ডের কুমিরায়। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কুমিরা নৌ টার্মিনাল ঘাট। ভোর ৭টার আগে ট্রলার বা স্পিডবোট—কিছুই মিলবে না জেনেও হ্যামোকের কাপড় ভেদ করে আসা হিম ঠান্ডায় সেখানে অপেক্ষা করি। ভোরবেলা চোখে পড়ে, একদা সাগর-মহাসাগরের বুক চষে বেড়ানো বড় বড় জাহাজ শেষনিশ্বাস ত্যাগের জন্য এসেছে এখানে। এ যেন আত্মহত্যার প্রস্তুতি! কিন্তু এই ঘাটের সেতুতে হাঁটতে হাঁটতে মনে হবে, আপনি সোজা সাগরের বুক চিরে এগিয়ে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত সকাল ৮টায় বোটে উঠি। ২২ জন যাত্রী নিয়ে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে স্পিডবোট মাত্র ২০ মিনিটে নামিয়ে দেয় সন্দ্বীপ নৌ টার্মিনাল ঘাটে। টার্মিনালের আশপাশে গোট্টাছড়া ঘাট আর সাগরপারের ম্যানগ্রোভের হাতছানি। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কালাপানিয়া। সেখানে হবে তাঁবুবাস।
যেতে যেতে পথে পথে থামি। সোঁদা মাটির ঘ্রাণ নিই। কখনোবা মচমচে পরোটা-ভাজি আর মহিষের দুধের দই, মিষ্টি দিয়ে উদর পূর্তি করি।
এভাবেই একসময় পৌঁছে যাই কালাপানিয়া বেড়িবাঁধ। স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত মেঘনার মোহনার তীরে জনমানবশূন্য নারকেল-খেজুরগাছে ঘেরা জায়গায় তাঁবু ফেলি, রাত কাটাতে। ততক্ষণে একপাল শিশু আমাদের সঙ্গী। দেখা হয় প্রায় ৯০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত কালাপানিয়া হেদায়েতুল উলুম মাদ্রাসা। জনশ্রুতি আছে, এই মাদ্রাসার কাছাকাছি এসে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন বন্ধ হয়েছিল। মাদ্রাসার জনৈক হুজুরের আহ্বানে হাজার হাজার গ্রামবাসী বাঁশ পুঁতেছিল। এরপর আর মেঘনার করালগ্রাস এদিকটায় এগোয়নি। বর্তমানে সেখানে বিশাল চর জেগেছে।
বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতাসহ ভুবনবিখ্যাত অনেক পর্যটকই সন্দ্বীপের প্রেমে পড়েছিলেন বলে শোনা যায়। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কবি কাজী নজরুল ইসলামও মুগ্ধ হয়েছিলেন। সন্দ্বীপের প্রেমে না পড়ে উপায় আছে! ভাঙতে ভাঙতে ছোট হয়ে যাওয়া বর্তমান সন্দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে অনুমান করা যায়, ইবনে বতুতা কেন এর প্রেমে পড়েছিলেন। আর পর্তুগিজরাই-বা কেন এখানে কলোনি গড়েছিল?
চারদিকে নারকেল আর খেজুরগাছের সারি, সাগর থেকে ছুটে আসা উদ্দাম নোনা বাতাস, তীরে আছড়ে পড়া ঢেউ, সন্দ্বীপের প্রেমে পড়ার জন্য এ-ই যথেষ্ট। আর যদি হয় সময়টা শুক্লপক্ষ, তাহলে তো কথাই নেই। সারি সারি নারকেল আর খেজুরগাছের ফাঁক গলে পড়া শুক্লপক্ষের চাঁদের আলোয় ভেসে যাওয়ার জন্য সন্দ্বীপ দারুণ জায়গা। আর যাঁরা ক্যাম্পিং করে থাকতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য সন্দ্বীপের কালাপানিয়া, হরিশপুর ও রহমতপুর খুব ভালো জায়গা। এসব জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ।
মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপে জনবসতির ইতিহাস বেশ প্রাচীন। একসময় এখানকার লবণশিল্প, জাহাজ নির্মাণ কারখানা ও বস্ত্রশিল্পের খ্যাতি ছিল। তুর্কি সাম্রাজ্যের সুলতানরা পর্যন্ত সন্দ্বীপের জাহাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বেশ কিছু জাহাজ সংগ্রহ করেছিলেন। পর্তুগিজদের দৃষ্টি পড়েছিল সন্দ্বীপের ওপর। তারা এখানে গড়েছিল উপনিবেশ। ১৬১৫ সালে পর্তুগিজদের সঙ্গে আরাকানের যুদ্ধে দুই শ সৈন্যসহ পর্তুগিজ সেনাপতি ইমানুয়েল মার্তুস নিহত হলে তারা সন্দ্বীপ ছেড়ে যায়। পরে ১৬১৬ সালে তার দখল নেয় মগ রাজা। এরপর আরাকান ও মগদের প্রাধান্য থাকলেও স্বাধীনভাবে এই অঞ্চল প্রায় অর্ধশতক রাজত্ব করেন দেলোয়ার খাঁ।
দেলোয়ার খাঁ কিংবা ইবনে বতুতার এই সব গল্প শুনতে হুট করেই ছুটে গিয়েছিলাম সন্দ্বীপ। হুড়োহুড়ি করে কোনোরকমে চট্টগ্রামের টিকিট কিনে বাসে উঠি। তারপর রাত ৩টায় নেমে গিয়েছিলাম সীতাকুণ্ডের কুমিরায়। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কুমিরা নৌ টার্মিনাল ঘাট। ভোর ৭টার আগে ট্রলার বা স্পিডবোট—কিছুই মিলবে না জেনেও হ্যামোকের কাপড় ভেদ করে আসা হিম ঠান্ডায় সেখানে অপেক্ষা করি। ভোরবেলা চোখে পড়ে, একদা সাগর-মহাসাগরের বুক চষে বেড়ানো বড় বড় জাহাজ শেষনিশ্বাস ত্যাগের জন্য এসেছে এখানে। এ যেন আত্মহত্যার প্রস্তুতি! কিন্তু এই ঘাটের সেতুতে হাঁটতে হাঁটতে মনে হবে, আপনি সোজা সাগরের বুক চিরে এগিয়ে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত সকাল ৮টায় বোটে উঠি। ২২ জন যাত্রী নিয়ে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে স্পিডবোট মাত্র ২০ মিনিটে নামিয়ে দেয় সন্দ্বীপ নৌ টার্মিনাল ঘাটে। টার্মিনালের আশপাশে গোট্টাছড়া ঘাট আর সাগরপারের ম্যানগ্রোভের হাতছানি। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কালাপানিয়া। সেখানে হবে তাঁবুবাস।
যেতে যেতে পথে পথে থামি। সোঁদা মাটির ঘ্রাণ নিই। কখনোবা মচমচে পরোটা-ভাজি আর মহিষের দুধের দই, মিষ্টি দিয়ে উদর পূর্তি করি।
এভাবেই একসময় পৌঁছে যাই কালাপানিয়া বেড়িবাঁধ। স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত মেঘনার মোহনার তীরে জনমানবশূন্য নারকেল-খেজুরগাছে ঘেরা জায়গায় তাঁবু ফেলি, রাত কাটাতে। ততক্ষণে একপাল শিশু আমাদের সঙ্গী। দেখা হয় প্রায় ৯০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত কালাপানিয়া হেদায়েতুল উলুম মাদ্রাসা। জনশ্রুতি আছে, এই মাদ্রাসার কাছাকাছি এসে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন বন্ধ হয়েছিল। মাদ্রাসার জনৈক হুজুরের আহ্বানে হাজার হাজার গ্রামবাসী বাঁশ পুঁতেছিল। এরপর আর মেঘনার করালগ্রাস এদিকটায় এগোয়নি। বর্তমানে সেখানে বিশাল চর জেগেছে।
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
৩ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
৩ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
৩ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
৩ দিন আগে