ডা. ফারজানা রহমান
প্রশ্ন: আমার চাচাতো বোনের বয়স ১৯ বছর। তার এক বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। গ্রামে তার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে বসবাস করে। সন্তান জন্মের পর থেকে তার মধ্যে কিছু মানসিক অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। নিজের সন্তানকে কোলে নিতে চায় না। দিন দিন অস্বাভাবিক আচরণ বাড়ছে। সন্তানকে কোলে দিতে গেলে চিৎকার করে, ভয় পায় এবং আঘাত করার চেষ্টা করে। নিজেকেও আঘাত করে। গ্রামের মানুষজনের ধারণা, তাকে জিনে ধরেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না; বরং অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। আমরা তাকে ডাক্তার দেখাতে চাইছি। কিন্তু কীভাবে কী করব বুঝতে পারছি না। পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করলে উপকৃত হব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খুলনা
আপনার চাচাতো বোনের যে সমস্যার কথা বলেছেন, রোগের উপসর্গ পড়ে ধারণা করছি, তিনি পোস্ট পার্টাম সাইকোসিস বা প্রসব-পরবর্তী গুরুতর মানসিক রোগে ভুগছেন। এই রোগ হলে রোগীর বদ্ধমূল বিশ্বাস হয়—
এই মানসিক রোগ এতই গুরুতর যে মা তাঁর শিশুকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন বা মেরে ফেলেন। এ জন্যই অনেকে মনে করে থাকেন, রোগীকে হয়তো জিন-ভূতে ধরেছে। এই রোগের বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় আপনার বোনের চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবারের মানুষেরা কবিরাজের সাহায্য নিচ্ছেন। শুধু গ্রামে নয়, শহরেও এই মানসিক রোগের ব্যাপারে অনেকের হয়তো ধারণা নেই।
প্রথমেই বলব, এটি যে গুরুতর মানসিক রোগ, সেটি পরিবারের সবাইকে জানাতে হবে। রোগীর সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আপনার বোনের কাছ থেকে তাঁর সন্তানটিকে দূরে, অন্য কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে রাখতে হবে।
আপনার বোন সঠিক চিকিৎসা পেলে আশা করা যায় সুস্থ হবেন।
প্রশ্ন: আমার বয়স ২৪ বছর। একজন গৃহিণী। সাত মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে।
বাড়ির কাজে সাহায্য করার মতো কেউ নেই। কিন্তু এতে আমার তেমন কোনো সমস্যা কখনোই হয়নি। তবে কয়েক মাস ধরে কোনো কাজ করতে ইচ্ছা করে না। ঘরের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতেও বিরক্ত লাগে। অকারণেই কান্না পায়। এসব কারণে সন্তানের যত্নেও অবহেলা হয়ে যায়। খুব অপরাধবোধে ভুগছি। কেন এমন হচ্ছে বা এই সমস্যার সমাধান কী?
নাসিমা খানম, ময়মনসিংহ
সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়ের যে মানসিক সমস্যাগুলো হয়, উপসর্গ বা লক্ষণভেদে তাকে বলে পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন এবং পোস্ট পার্টাম সাইকোসিস।
ম্যাটারনিটি ব্লু বলে আরেকটি বিষয় আছে, যা সন্তান জন্মদানের এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রেও মা খুব কান্নাকাটি করেন, মন খারাপ করেন, নিজেদের যত্ন নেন না। এটা কিন্তু পরিবারের সবার অংশগ্রহণ এবং কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যায়। কোনো ওষুধের প্রয়োজন পড়ে না।
আপনার এই সমস্যার নাম সহজ ভাষায় প্রসব-পরবর্তী বিষণ্নতা। এটা গুরুতর মানসিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত মায়ের মন খুব খারাপ থাকে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। তিনি মনে করেন, তিনি কিছুই করতে পারবেন না। শিশুর যত্ন নিতে পারবেন না। নিজেকে অনেক তুচ্ছ মনে করেন। কখনো কখনো এমনও হয় যে তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন তিনি দোষী, পাপী। সন্তান জন্মদানের যোগ্য তিনি নন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি আত্মহত্যা করেন এবং তার আগে অনেকে নিজের সন্তানকেও হত্যা করেন। বিভিন্ন কারণে এই রোগ হতে পারে।
কারণ
যা করতে হবে
এই রোগের চিকিৎসার খরচ বেশি নয়। তবে সময়সাপেক্ষ। হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করালে বেশি ভালো হয়। চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে একটুও দেরি করা উচিত নয়। যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু হবে, তত তাড়াতাড়ি রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন। একবার এই রোগ হলে পরবর্তী সন্তান জন্মদানের পরও এটি দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে, চিকিৎসাধীন থাকতে হবে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসহ দেশের সব মেডিকেল কলেজ ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি ডিপার্টমেন্টে পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগে পোস্ট পার্টাম সাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে।
প্রশ্ন: আমার চাচাতো বোনের বয়স ১৯ বছর। তার এক বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। গ্রামে তার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে বসবাস করে। সন্তান জন্মের পর থেকে তার মধ্যে কিছু মানসিক অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। নিজের সন্তানকে কোলে নিতে চায় না। দিন দিন অস্বাভাবিক আচরণ বাড়ছে। সন্তানকে কোলে দিতে গেলে চিৎকার করে, ভয় পায় এবং আঘাত করার চেষ্টা করে। নিজেকেও আঘাত করে। গ্রামের মানুষজনের ধারণা, তাকে জিনে ধরেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না; বরং অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। আমরা তাকে ডাক্তার দেখাতে চাইছি। কিন্তু কীভাবে কী করব বুঝতে পারছি না। পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করলে উপকৃত হব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খুলনা
আপনার চাচাতো বোনের যে সমস্যার কথা বলেছেন, রোগের উপসর্গ পড়ে ধারণা করছি, তিনি পোস্ট পার্টাম সাইকোসিস বা প্রসব-পরবর্তী গুরুতর মানসিক রোগে ভুগছেন। এই রোগ হলে রোগীর বদ্ধমূল বিশ্বাস হয়—
এই মানসিক রোগ এতই গুরুতর যে মা তাঁর শিশুকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন বা মেরে ফেলেন। এ জন্যই অনেকে মনে করে থাকেন, রোগীকে হয়তো জিন-ভূতে ধরেছে। এই রোগের বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় আপনার বোনের চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবারের মানুষেরা কবিরাজের সাহায্য নিচ্ছেন। শুধু গ্রামে নয়, শহরেও এই মানসিক রোগের ব্যাপারে অনেকের হয়তো ধারণা নেই।
প্রথমেই বলব, এটি যে গুরুতর মানসিক রোগ, সেটি পরিবারের সবাইকে জানাতে হবে। রোগীর সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আপনার বোনের কাছ থেকে তাঁর সন্তানটিকে দূরে, অন্য কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে রাখতে হবে।
আপনার বোন সঠিক চিকিৎসা পেলে আশা করা যায় সুস্থ হবেন।
প্রশ্ন: আমার বয়স ২৪ বছর। একজন গৃহিণী। সাত মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে।
বাড়ির কাজে সাহায্য করার মতো কেউ নেই। কিন্তু এতে আমার তেমন কোনো সমস্যা কখনোই হয়নি। তবে কয়েক মাস ধরে কোনো কাজ করতে ইচ্ছা করে না। ঘরের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতেও বিরক্ত লাগে। অকারণেই কান্না পায়। এসব কারণে সন্তানের যত্নেও অবহেলা হয়ে যায়। খুব অপরাধবোধে ভুগছি। কেন এমন হচ্ছে বা এই সমস্যার সমাধান কী?
নাসিমা খানম, ময়মনসিংহ
সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়ের যে মানসিক সমস্যাগুলো হয়, উপসর্গ বা লক্ষণভেদে তাকে বলে পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন এবং পোস্ট পার্টাম সাইকোসিস।
ম্যাটারনিটি ব্লু বলে আরেকটি বিষয় আছে, যা সন্তান জন্মদানের এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রেও মা খুব কান্নাকাটি করেন, মন খারাপ করেন, নিজেদের যত্ন নেন না। এটা কিন্তু পরিবারের সবার অংশগ্রহণ এবং কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যায়। কোনো ওষুধের প্রয়োজন পড়ে না।
আপনার এই সমস্যার নাম সহজ ভাষায় প্রসব-পরবর্তী বিষণ্নতা। এটা গুরুতর মানসিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত মায়ের মন খুব খারাপ থাকে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। তিনি মনে করেন, তিনি কিছুই করতে পারবেন না। শিশুর যত্ন নিতে পারবেন না। নিজেকে অনেক তুচ্ছ মনে করেন। কখনো কখনো এমনও হয় যে তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন তিনি দোষী, পাপী। সন্তান জন্মদানের যোগ্য তিনি নন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি আত্মহত্যা করেন এবং তার আগে অনেকে নিজের সন্তানকেও হত্যা করেন। বিভিন্ন কারণে এই রোগ হতে পারে।
কারণ
যা করতে হবে
এই রোগের চিকিৎসার খরচ বেশি নয়। তবে সময়সাপেক্ষ। হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করালে বেশি ভালো হয়। চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে একটুও দেরি করা উচিত নয়। যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু হবে, তত তাড়াতাড়ি রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন। একবার এই রোগ হলে পরবর্তী সন্তান জন্মদানের পরও এটি দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে, চিকিৎসাধীন থাকতে হবে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসহ দেশের সব মেডিকেল কলেজ ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি ডিপার্টমেন্টে পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগে পোস্ট পার্টাম সাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে।
ঘুম ভালো না হলে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তাই জেনে নিন ভালো ঘুমের জন্য কী করবেন।
১৯ ঘণ্টা আগেভারতে এক জুনিয়র আইনজীবীর ওভারটাইম কাজের পরদিন অফিসে দেরিতে হবে জানিয়ে একটি বার্তা পাঠান সিনিয়র আইনজীবীকে। বার্তাটি সহজভাবে নেননি সিনিয়র আইনজীবী। তিনি প্রকাশ্য জুনিয়র আইনজীবীর সমালোচনা করেছেন। এতে দেশটিতে কর্মস্থলের সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
২ দিন আগেব্যাগ কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা ভালো। ব্যাগের আকার ও রং ব্যবহারকারীর ব্যক্তিত্বে ছাপ রাখে বেশ গভীরভাবে।
২ দিন আগেসংবেদনশীল ত্বকের মানুষ সারা বছর ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ ধরনের ত্বক আবহাওয়ার পরিবর্তন, দূষণ বা ত্বকের অনুপযুক্ত প্রসাধনীতে প্রভাবিত হতে পারে।
২ দিন আগে