আমরা সবাই চাই সন্তানদের ‘গুড প্যারেন্টিং’ উপহার দিতে। কিন্তু গোল বাধে তখনই, যখন আমরা সংজ্ঞায়িত করতে যাই, কোনটা আসলে গুড প্যারেন্টিং আর কোনটা নয়। আমরা ‘সাধারণ জ্ঞান’ থেকে যা যা করি, হয়তো তার অনেক কিছুই গুড প্যারেন্টিংয়ের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সবকিছুই কি?
আসুন, জেনে নিই বিশেষজ্ঞদের চিহ্নিত গুড প্যারেন্টিংয়ের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি বিষয়:
বড়দের মতো আচরণ আশা করবেন না
শিশুর মস্তিষ্ক পুরোপুরি বিকশিত হতে ২০ বছর পর্যন্ত লেগে যায়। এর আগে তারা নানা বিষয়ে অপরিণত বুদ্ধি-বিবেচনা নিয়ে কাজকর্ম করবে। এটাই স্বাভাবিক। তাই ছোটদের কাছ থেকে বড়দের মতো আচরণ আশা করবেন না।
লজ্জা দেবেন না, শেখান
জগতের প্রায় সবকিছু সম্পর্কে শিশুরা জানতে ও শিখতে চাইবে। একবারেই তো আর সবটা জানানো যাবে না, জানাতে হবে ধাপে ধাপে। ধাপগুলো নির্ধারণের সময় কোনোক্রমেই তাকে দোষারোপ করা বা লজ্জা দেওয়া যাবে না। এটা করতে হবে শক্তভাবে, তবে তার মর্যাদা রক্ষা করে।
সব ধাপে একই আচরণ করবেন না
যে শিশুটি এই সেদিনও আপনার অনুপস্থিতিতে কাঁদত, এখন সে আপনাকে দীর্ঘক্ষণ না দেখলেও অস্থির হয় না। কখনো ভেবে দেখেছেন, এমনটা কেন হয়? এটা হয় ওদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনেক ধাপ অতিক্রম করার ফলে। তাদের সঙ্গে সব সময় একই আচরণ না করে ওই ধাপগুলো অনুযায়ী আচরণে পরিবর্তন আনুন।
বাড়তি মনোযোগ নয়
কিসে তার বাড়তি যত্ন দরকার আর কিসে দরকার নেই, সেটা বুঝতে তার ব্যক্তিত্ব ও মেজাজ-মর্জি বোঝা জরুরি। হোঁচট বা আছাড় খেয়ে তা সামলে নিতে সচেষ্ট শিশুকে বাড়তি মনোযোগ দেওয়াটা জরুরি নয়। কিন্তু সেই একই শিশু যদি বিদ্যুৎ চমকানো বা তেলাপোকা দেখে ভয় পায়, তখন সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
ইচ্ছেমতো খেলতে দিন
শিশুদের কিছু নিয়মতান্ত্রিক খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু এর বাইরেও নিজের ইচ্ছামতো কোনো খেলা যদি তারা খেলতে চায়, তবে বাধা দেবেন না। খেলতে চাইলে তাদের সময় দিন। এটা তাদের সৃষ্টিশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে।
সরল পরিস্থিতির সমাধান নয়
শিশুরাও তাদের সমস্যা নিয়ে ভাবে, সমাধান খোঁজে। কিন্তু সেটা করার জন্য বড়দের কাছ থেকে উৎসাহ না পেলে তারা নিজ থেকে খুব বেশি এগোয় না। জটিল পরিস্থিতিতে আপনাকে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সরল পরিস্থিতিগুলো তাকেই সমাধান করতে দিন।
নিজেকে মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করুন
এটা ঠিক যে সন্তানের মা-বাবার পরিচয়টি আপনার কাছে অনেক বেশি আবেগময় অথবা সবচেয়ে পছন্দের। কিন্তু এটা বয়ে বেড়ানো তার ও আপনার উভয়ের জন্যই বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। আপনি যদি আপনার অন্য পরিচয়গুলোও তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরতে পারেন, সেটা আপনাদের উভয়ের জন্যই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের হবে।
নিজে করুন, অনুসরণ করবে
আপনি কী বলছেন, তারচেয়ে তারা বেশি লক্ষ করে আপনি সেসব নিজে কতটা মানছেন, সেদিকে। আপনিই তার ‘রোল মডেল’। প্রাথমিক ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠবে আপনার দেখানো উদাহরণগুলো থেকে, কথা শুনে নয়।
ভয় দেখানো যাবে না
ভয় দেখিয়ে, কঠোর নিয়ন্ত্রণে রেখে শিশুকে দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অনেক কাজ করিয়ে নেওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু এগুলোর অসারতা বুঝতে তার খুব একটা সময় লাগে না। তখন সে নিজ থেকে
সঠিক পথে থাকতে আর উদ্বুদ্ধ হয় না; বরং তাকে সঠিক বিষয়টি বুঝতে সময় দিলে এবং কোনো চাপ না দিলে যে শিক্ষাগুলো হয়, সেগুলোর ফল হয় সুদূরপ্রসারী।
খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা
শিশুকে শান্ত, সুবোধ ও নিয়মানুবর্তী হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে। কিন্তু মূল যে গুণাবলি তার অর্জন করা প্রয়োজন, সেগুলো হলো চিন্তাভাবনা ও আবেগের গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা, সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা, সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝা ও সেগুলোর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে দক্ষ হয়ে ওঠা। সর্বোপরি, এমন সব দক্ষতা অর্জন করা, যা তাকে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝতে এবং সেই অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
লেখক: সাইকো সোশ্যাল কাউন্সেলর, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম
আমরা সবাই চাই সন্তানদের ‘গুড প্যারেন্টিং’ উপহার দিতে। কিন্তু গোল বাধে তখনই, যখন আমরা সংজ্ঞায়িত করতে যাই, কোনটা আসলে গুড প্যারেন্টিং আর কোনটা নয়। আমরা ‘সাধারণ জ্ঞান’ থেকে যা যা করি, হয়তো তার অনেক কিছুই গুড প্যারেন্টিংয়ের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সবকিছুই কি?
আসুন, জেনে নিই বিশেষজ্ঞদের চিহ্নিত গুড প্যারেন্টিংয়ের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি বিষয়:
বড়দের মতো আচরণ আশা করবেন না
শিশুর মস্তিষ্ক পুরোপুরি বিকশিত হতে ২০ বছর পর্যন্ত লেগে যায়। এর আগে তারা নানা বিষয়ে অপরিণত বুদ্ধি-বিবেচনা নিয়ে কাজকর্ম করবে। এটাই স্বাভাবিক। তাই ছোটদের কাছ থেকে বড়দের মতো আচরণ আশা করবেন না।
লজ্জা দেবেন না, শেখান
জগতের প্রায় সবকিছু সম্পর্কে শিশুরা জানতে ও শিখতে চাইবে। একবারেই তো আর সবটা জানানো যাবে না, জানাতে হবে ধাপে ধাপে। ধাপগুলো নির্ধারণের সময় কোনোক্রমেই তাকে দোষারোপ করা বা লজ্জা দেওয়া যাবে না। এটা করতে হবে শক্তভাবে, তবে তার মর্যাদা রক্ষা করে।
সব ধাপে একই আচরণ করবেন না
যে শিশুটি এই সেদিনও আপনার অনুপস্থিতিতে কাঁদত, এখন সে আপনাকে দীর্ঘক্ষণ না দেখলেও অস্থির হয় না। কখনো ভেবে দেখেছেন, এমনটা কেন হয়? এটা হয় ওদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনেক ধাপ অতিক্রম করার ফলে। তাদের সঙ্গে সব সময় একই আচরণ না করে ওই ধাপগুলো অনুযায়ী আচরণে পরিবর্তন আনুন।
বাড়তি মনোযোগ নয়
কিসে তার বাড়তি যত্ন দরকার আর কিসে দরকার নেই, সেটা বুঝতে তার ব্যক্তিত্ব ও মেজাজ-মর্জি বোঝা জরুরি। হোঁচট বা আছাড় খেয়ে তা সামলে নিতে সচেষ্ট শিশুকে বাড়তি মনোযোগ দেওয়াটা জরুরি নয়। কিন্তু সেই একই শিশু যদি বিদ্যুৎ চমকানো বা তেলাপোকা দেখে ভয় পায়, তখন সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
ইচ্ছেমতো খেলতে দিন
শিশুদের কিছু নিয়মতান্ত্রিক খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু এর বাইরেও নিজের ইচ্ছামতো কোনো খেলা যদি তারা খেলতে চায়, তবে বাধা দেবেন না। খেলতে চাইলে তাদের সময় দিন। এটা তাদের সৃষ্টিশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে।
সরল পরিস্থিতির সমাধান নয়
শিশুরাও তাদের সমস্যা নিয়ে ভাবে, সমাধান খোঁজে। কিন্তু সেটা করার জন্য বড়দের কাছ থেকে উৎসাহ না পেলে তারা নিজ থেকে খুব বেশি এগোয় না। জটিল পরিস্থিতিতে আপনাকে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সরল পরিস্থিতিগুলো তাকেই সমাধান করতে দিন।
নিজেকে মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করুন
এটা ঠিক যে সন্তানের মা-বাবার পরিচয়টি আপনার কাছে অনেক বেশি আবেগময় অথবা সবচেয়ে পছন্দের। কিন্তু এটা বয়ে বেড়ানো তার ও আপনার উভয়ের জন্যই বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। আপনি যদি আপনার অন্য পরিচয়গুলোও তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরতে পারেন, সেটা আপনাদের উভয়ের জন্যই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের হবে।
নিজে করুন, অনুসরণ করবে
আপনি কী বলছেন, তারচেয়ে তারা বেশি লক্ষ করে আপনি সেসব নিজে কতটা মানছেন, সেদিকে। আপনিই তার ‘রোল মডেল’। প্রাথমিক ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠবে আপনার দেখানো উদাহরণগুলো থেকে, কথা শুনে নয়।
ভয় দেখানো যাবে না
ভয় দেখিয়ে, কঠোর নিয়ন্ত্রণে রেখে শিশুকে দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অনেক কাজ করিয়ে নেওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু এগুলোর অসারতা বুঝতে তার খুব একটা সময় লাগে না। তখন সে নিজ থেকে
সঠিক পথে থাকতে আর উদ্বুদ্ধ হয় না; বরং তাকে সঠিক বিষয়টি বুঝতে সময় দিলে এবং কোনো চাপ না দিলে যে শিক্ষাগুলো হয়, সেগুলোর ফল হয় সুদূরপ্রসারী।
খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা
শিশুকে শান্ত, সুবোধ ও নিয়মানুবর্তী হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে। কিন্তু মূল যে গুণাবলি তার অর্জন করা প্রয়োজন, সেগুলো হলো চিন্তাভাবনা ও আবেগের গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা, সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা, সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝা ও সেগুলোর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে দক্ষ হয়ে ওঠা। সর্বোপরি, এমন সব দক্ষতা অর্জন করা, যা তাকে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝতে এবং সেই অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
লেখক: সাইকো সোশ্যাল কাউন্সেলর, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম
দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথার ওপর নীল আকাশে উঁকি দেবে সাদা মেঘ। শরৎকাল বলে ভুল হতে পারে। ভুল ভাঙলে দেখতে পাবেন, মেঘের ভেলা সূর্যের আলোয় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলে হয়ে উঠছে গোলাপি কিংবা লাল। বুঝবেন, আপনি শরতের সাদা মেঘ নয়, দেখছেন তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা।
৩ দিন আগেকোনো কিছু ওপর থেকে নিচে পড়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে। স্কুলের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে আমরা সবাই এ বিষয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোতে স্যার আইজ্যাক নিউটনের সূত্র কাজ করে না। অর্থাৎ সেসব জায়গায় কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেতে চান সেই সব জায়গায়?
৩ দিন আগেশীত, বসন্ত আর বর্ষায় বাংলার নীল নদ সারির রূপ বদলে ফেলে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল নামলে দক্ষ মাঝিরাও ভয়ে ভয়ে বইঠা চালান। আর শীতে সারি নদীর নীল পানি দেয় অপার্থিব জগতের খোঁজ। নদীটি ধরে কিছুদূর উজান বাইলেই পাওয়া যাবে লালাখাল জিরো পয়েন্ট।
৩ দিন আগেভ্রমণকালে রোগবালাই থেকে দূরে থাকার বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী না হলে ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেতে পারে। ভ্রমণের সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন কিছু উপায়।
৩ দিন আগে