আনিসুল ইসলাম নাঈম
পড়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বা খাদ্য প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক করতে চাইলে অবশ্যই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অথবা ফুড টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে) নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। এরপর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে কৃতকার্য প্রথম সারির ভর্তি-ইচ্ছুকেরা স্নাতক পড়ার সুযোগ পান। বস্তুত গণিত, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ে পারদর্শী শিক্ষার্থীরা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
কোথায় কোথায় ভর্তি হওয়া যায়
বাংলাদেশে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা হয় ১৯৬৪ সালে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড রুরাল ইন্ডাস্ট্রিজ বিভাগে ‘ফুড টেকনোলজি’ নামক মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু করার মাধ্যমে। কালের পরিক্রমায়, একই বিভাগ ২০০২ সালে দেশের প্রথম ‘বিএসসি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং’ স্নাতক প্রোগ্রামে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করে। এই ধারা আজ অবধি সগৌরবে চলমান। যুগের চাহিদায় একে একে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নামে দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ডিগ্রি প্রদান শুরু করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড অ্যান্ড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং), ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (অ্যাগ্রো প্রসেস অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং) ইত্যাদি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি দিয়ে থাকে।
কী কী বিষয় পড়ানো হয়
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংকে বলা হয় একটি ‘মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি’ প্রোগ্রাম; অর্থাৎ আধুনিক প্রকৌশলবিদ্যার প্রায় সব অঙ্গনেরই কিছু না কিছু পড়াশোনা এখানে জরুরি। উদাহরণস্বরূপ স্নাতকের বিভিন্ন বর্ষে একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীকে স্ট্রাকচারাল, ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার সায়েন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি নানাবিধ কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। আর বিভাগীয় কোর্সের মধ্যে প্রধান হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন, ফুড কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজি, প্রসেস ডিজাইন, ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্ট, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ইত্যাদি। এ ছাড়া স্নাতক শেষ বর্ষে বাধ্যতামূলকভাবে একটি রিসার্চ প্রজেক্ট এবং একটি ইন্টার্নশিপ অথবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং সম্পন্ন করতে হয়।
কর্মসংস্থান বা চাকরির সুযোগ
ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের প্রধান কাজের স্থান অত্যাধুনিক ফুড ইন্ডাস্ট্রি এবং ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিগুলো। নেসলে, ড্যান ফুডস, পারফেট্টিসহ বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের ফুড ইঞ্জিনিয়াররা সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। প্রতিবছর খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রাণ, আকিজ, এসিআই, স্কয়ার, হক, নাবিস্কো, ইগলু, পোলার, কাজী ফার্মস, আড়ং, সিপি ফুডস, ইস্পাহানি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েটদের ব্যাপক কর্মসংস্থান করে থাকে। আর এনজিওর ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যেমন গেইন, নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি উচ্চ বেতনে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। এসবের বাইরে অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার আলোকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজস্ব খাদ্য ব্যবসা গড়ে তোলারও নজির রয়েছে যথেষ্ট। পাশাপাশি সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে প্রথমেই চলে আসে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা এবং সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর ইনস্ট্রাক্টর পদের কথা। এ ছাড়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বিএসটিআই প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েটদের চাকরির সুযোগ রয়েছে।
ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজনীয়তা
‘খাদ্যনিরাপত্তা’ এবং ‘নিরাপদ খাদ্য’ একটি দেশের সুখ-সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের অন্যতম চাবিকাঠিস্বরূপ। আয়তন না বাড়লেও, প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে বাংলাদেশের জনসংখ্যা। বর্ধিত জনগোষ্ঠীর জন্য অতিরিক্ত খাদ্য জোগানের পাশাপাশি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও অপরিসীম। ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যে প্রধান হলো খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, মূল্যায়ন এবং সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা। কাজেই একটি জনবহুল দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের অবস্থান অনস্বীকার্য। এমতাবস্থায় ‘নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’-এর আলোকে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দেশে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের পরিধি আগের থেকে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন বিশ্বে খাদ্যের বিপুল চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের দৃঢ় অবস্থান ও কঠোর পরিশ্রম আরও জরুরি হয়ে পড়বে বলেই বিশ্বাস রাখা যায়।
পড়ার খরচ কেমন
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অন্যান্য ডিগ্রির মতোই নামমাত্র খরচে এ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন সম্ভব। আর স্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত আড়াই থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে স্নাতক পড়াশোনা সম্পন্ন করা যায়। যেখানে ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে অনেক সময় পড়াশোনার খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা
বাংলাদেশের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি দেয়, তাদের অধিকাংশই স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রিও দিয়ে থাকে। এর মাঝে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনেরও সুযোগ রয়েছে। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি বাংলাদেশে তুলনামূলক নতুন হলেও বহির্বিশ্বে বহু আগে থেকেই ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বা সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষেত্রে ব্যাপক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালু আছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, জার্মানি, ইতালি, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং বিশ্বের বহু দেশে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাবৃত্তিসহ উচ্চশিক্ষার সুবিধা রয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েট এসব সম্মানজনক স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপ্রেক্ষিতে স্নাতক ফলাফল, ভাষা দক্ষতা, জিআরই স্কোর, গবেষণাপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে স্কলারশিপ প্রাপ্তি বিবেচনা করা হয়।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম
পড়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বা খাদ্য প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক করতে চাইলে অবশ্যই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অথবা ফুড টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে) নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। এরপর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে কৃতকার্য প্রথম সারির ভর্তি-ইচ্ছুকেরা স্নাতক পড়ার সুযোগ পান। বস্তুত গণিত, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ে পারদর্শী শিক্ষার্থীরা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
কোথায় কোথায় ভর্তি হওয়া যায়
বাংলাদেশে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা হয় ১৯৬৪ সালে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড রুরাল ইন্ডাস্ট্রিজ বিভাগে ‘ফুড টেকনোলজি’ নামক মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু করার মাধ্যমে। কালের পরিক্রমায়, একই বিভাগ ২০০২ সালে দেশের প্রথম ‘বিএসসি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং’ স্নাতক প্রোগ্রামে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করে। এই ধারা আজ অবধি সগৌরবে চলমান। যুগের চাহিদায় একে একে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নামে দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ডিগ্রি প্রদান শুরু করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড অ্যান্ড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং), ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (অ্যাগ্রো প্রসেস অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং) ইত্যাদি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি দিয়ে থাকে।
কী কী বিষয় পড়ানো হয়
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংকে বলা হয় একটি ‘মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি’ প্রোগ্রাম; অর্থাৎ আধুনিক প্রকৌশলবিদ্যার প্রায় সব অঙ্গনেরই কিছু না কিছু পড়াশোনা এখানে জরুরি। উদাহরণস্বরূপ স্নাতকের বিভিন্ন বর্ষে একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীকে স্ট্রাকচারাল, ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার সায়েন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি নানাবিধ কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। আর বিভাগীয় কোর্সের মধ্যে প্রধান হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন, ফুড কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজি, প্রসেস ডিজাইন, ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্ট, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ইত্যাদি। এ ছাড়া স্নাতক শেষ বর্ষে বাধ্যতামূলকভাবে একটি রিসার্চ প্রজেক্ট এবং একটি ইন্টার্নশিপ অথবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং সম্পন্ন করতে হয়।
কর্মসংস্থান বা চাকরির সুযোগ
ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের প্রধান কাজের স্থান অত্যাধুনিক ফুড ইন্ডাস্ট্রি এবং ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিগুলো। নেসলে, ড্যান ফুডস, পারফেট্টিসহ বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের ফুড ইঞ্জিনিয়াররা সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। প্রতিবছর খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রাণ, আকিজ, এসিআই, স্কয়ার, হক, নাবিস্কো, ইগলু, পোলার, কাজী ফার্মস, আড়ং, সিপি ফুডস, ইস্পাহানি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েটদের ব্যাপক কর্মসংস্থান করে থাকে। আর এনজিওর ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যেমন গেইন, নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি উচ্চ বেতনে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। এসবের বাইরে অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার আলোকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজস্ব খাদ্য ব্যবসা গড়ে তোলারও নজির রয়েছে যথেষ্ট। পাশাপাশি সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে প্রথমেই চলে আসে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা এবং সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর ইনস্ট্রাক্টর পদের কথা। এ ছাড়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বিএসটিআই প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েটদের চাকরির সুযোগ রয়েছে।
ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজনীয়তা
‘খাদ্যনিরাপত্তা’ এবং ‘নিরাপদ খাদ্য’ একটি দেশের সুখ-সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের অন্যতম চাবিকাঠিস্বরূপ। আয়তন না বাড়লেও, প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে বাংলাদেশের জনসংখ্যা। বর্ধিত জনগোষ্ঠীর জন্য অতিরিক্ত খাদ্য জোগানের পাশাপাশি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও অপরিসীম। ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যে প্রধান হলো খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, মূল্যায়ন এবং সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা। কাজেই একটি জনবহুল দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের অবস্থান অনস্বীকার্য। এমতাবস্থায় ‘নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’-এর আলোকে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দেশে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের পরিধি আগের থেকে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন বিশ্বে খাদ্যের বিপুল চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের দৃঢ় অবস্থান ও কঠোর পরিশ্রম আরও জরুরি হয়ে পড়বে বলেই বিশ্বাস রাখা যায়।
পড়ার খরচ কেমন
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অন্যান্য ডিগ্রির মতোই নামমাত্র খরচে এ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন সম্ভব। আর স্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত আড়াই থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে স্নাতক পড়াশোনা সম্পন্ন করা যায়। যেখানে ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে অনেক সময় পড়াশোনার খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা
বাংলাদেশের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি দেয়, তাদের অধিকাংশই স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রিও দিয়ে থাকে। এর মাঝে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনেরও সুযোগ রয়েছে। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি বাংলাদেশে তুলনামূলক নতুন হলেও বহির্বিশ্বে বহু আগে থেকেই ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বা সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষেত্রে ব্যাপক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালু আছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, জার্মানি, ইতালি, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং বিশ্বের বহু দেশে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাবৃত্তিসহ উচ্চশিক্ষার সুবিধা রয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েট এসব সম্মানজনক স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপ্রেক্ষিতে স্নাতক ফলাফল, ভাষা দক্ষতা, জিআরই স্কোর, গবেষণাপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে স্কলারশিপ প্রাপ্তি বিবেচনা করা হয়।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম
চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ে আট পদের লিখিত পরীক্ষার তারিখ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান সরকার হাসান শাহরিয়ার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ব্যাংকে ‘সহকারী পরিচালক’ পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. জবদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১ দিন আগেজনবল নিয়োগের জন্য পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির দুই ধরনের শূন্য পদে ১২ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
১ দিন আগেসিনিয়র স্টাফ নার্স (১০ম গ্রেড) পদের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪ হাজার ৫৫২ জন প্রার্থী। বুধবার পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২ দিন আগে