সুন্দরভাবে কথা বলার পাঁচ কৌশল

মারুফা মাহজাবীন মম
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৪, ০৮: ৩৮
আপডেট : ১২ জুন ২০২৪, ১২: ২৪

যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ভাষা তথা কথা, যা আমরা কমবেশি সবাই বলি। তবে কথা বলাও যে একটি শিল্প, তা হয়তো খেয়াল করি না সব সময়। পরিবার ও বন্ধু থেকে শুরু করে অ্যাকাডেমিক বা অফিসের প্রেজেন্টেশন, বিশেষত পাবলিক স্পিকিংয়ের সময় কথা বলার ধরন সুন্দর না হলে ঘটতে পারে নানা বিপত্তি। তাই সুন্দর কথা বলা খুব জরুরি। সুন্দর কথা বলার পাঁচটি কৌশল জানাচ্ছেন মারুফা মাহজাবীন মম

বিশুদ্ধ উচ্চারণ
সুন্দর কথা বলার জন্য সবার আগে আপনার উচ্চারণ শুদ্ধ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিকতা পরিহার করা উচিত। এর মধ্য দিয়ে বক্তার ওপর শ্রোতার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। আর বিশুদ্ধ উচ্চারণের প্রথম শর্ত হচ্ছে উচ্চারণ শুনে শেখা। বিশুদ্ধ উচ্চারণ শেখার জন্য টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপক, আবৃত্তিকারের করা উচ্চারণ মনোযোগ দিয়ে শুনে অনুকরণ করতে পারেন। উচ্চারণ অনুকরণ অনুশীলনের মধ্য দিয়েই আপনার বিশুদ্ধ উচ্চারণসহ সুন্দর করে কথা বলার দক্ষতা তৈরি হবে।

সঠিক ও যথাযথ জ্ঞান
বক্তা যে বিষয়ে কথা বলবেন, সে সম্পর্কে সঠিক ও যথাযথ জ্ঞান থাকা জরুরি। এ ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ করতে বই ও ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, ভুল কোনো তথ্য পেয়ে শ্রোতা যেন বিভ্রান্ত না হয়। তাই কথা বলার আগে ভেবেচিন্তে বলা উচিত। নেতিবাচক কথা না বলাই ভালো। সংক্ষিপ্তভাবে সহজ ও স্পষ্ট করে কথা বলুন। কথা বলার সময় অপ্রয়োজনীয় বিরতি নিলে শ্রুতিমধুর শোনায় না। এ ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে।

আত্মবিশ্বাস
কথা বলার সময় বক্তার আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। কোনো কারণে বিচলিত হলেও, তা প্রকাশ করা উচিত নয়। এতে কথা শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন শ্রোতা। তবে এর মানে এটি নয় যে আত্মবিশ্বাস দেখাতে দ্রুত কথা বলা শুরু করবেন। কথা অবশ্যই সব সময় ধীরে ও ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বলা উচিত যেন সবাই ভালোভাবে শুনতে ও বুঝতে পারেন। পাশাপাশি মৃদু হেসে কথা বলা ভালো একটি গুণ। কথা বলার ফাঁকে গভীর শ্বাস নেবেন। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে নিয়মিত বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার চর্চা করতে পারেন। কারণ, কোনো বিষয়ে কথা বলার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি থাকা জরুরি। পূর্ব প্রস্তুতির মাধ্যমে নিজের মধ্যে একধরনের প্রবল আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে। 

মুদ্রা দোষ
এক কথা বারবার বলা মুদ্রা দোষ। এই অভ্যাস থাকলে দ্রুত পরিহার করুন। মুদ্রা দোষের কারণে শ্রোতা বিরক্ত হতে পারেন। মুদ্রা দোষ দূর করার জন্য মেডিটেশন বেশ সহায়ক। এতে আপনি নিজের কাজে মনোযোগী হয়ে উঠবেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। দুশ্চিন্তার ফলে ব্যক্তি উদাসীন থাকে এবং নিজের কাজের প্রতি মনোযোগ থাকে না। তাই একই কাজের পুনরাবৃত্তি ঘটে। অনেক ক্ষেত্রে মুদ্রা দোষ স্বাভাবিকভাবেই দূর হয়। তাই এতে বিচলিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। মুদ্রা দোষ দূর করতে কথা বলার সময় সচেতন হওয়া জরুরি।

আন্তরিকতা প্রকাশ
সুন্দরভাবে কথা বলার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল হচ্ছে আন্তরিকতা। এর মধ্য দিয়ে কথার বলার সময় বক্তার অনেক অসংগতি শ্রোতা এড়িয়ে যেতে পারেন। তাই আন্তরিকতার সঙ্গে পরিমিত কথা বলা উচিত। এ ক্ষেত্রে রাগান্বিত না হয়ে ধৈর্য নিয়ে শান্ত ও নম্রভাবে কথা বলবেন। মুখের অভিব্যক্তি ঠিক রাখবেন। অনর্থক ও অপ্রয়োজনীয় কথা বলাথেকে বিরত থাকবেন। বাগ্‌বিতণ্ডা পরিহার করবেন। চিৎকার করে কথা বলা যাবে না। তবে এমনভাবে কথা বলবেন যেন উপস্থিত শ্রোতারা পরিপূর্ণভাবে শুনতে পায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত