ধর্ম ও জীবন ডেস্ক
‘এস্তেনজা’ শব্দের অর্থ মুক্তি পাওয়া। মলমূত্র ত্যাগের পর পানি, পাথর, মাটি, কাগজ বা এমন অন্য কোনো বস্তুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করাকে ইসলামের পরিভাষায় ‘এস্তেনজা’ বলা হয়। পায়খানা-প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে যেসব নাপাক বের হয়, তা থেকে পবিত্র হতে এস্তেনজা করা আবশ্যক।
পাথর, ঢিলা, টিস্যু পেপার ইত্যাদি দিয়ে এস্তেনজা করা বৈধ
পাথর এবং এমন জমাটবদ্ধ শুকনো বস্তু, যা দিয়ে নাপাক দূর করা যায় এবং যা ব্যবহার করা ইসলামে নিষিদ্ধ নয়, তা দিয়ে এস্তেনজা করা যাবে। যেমন— কাগজ, টিস্যু পেপার, ন্যাকড়া, শুকনো কাঠ, মাটির ঢেলা ইত্যাদি।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন এস্তেনজা করতে যায়, তখন সে যেন তিনটি পাথর সঙ্গে নিয়ে যায়, যা দিয়ে সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪০; নাসায়ি: ১ / ১৮; আহমাদ: ৬ / ১০৮-১৩৩)
অন্য এক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা কেউ তিনটির কম পাথর দিয়ে এস্তেনজা করবে না।’ (মুসলিম: ২৬২; নাসায়ি ১ / ১২; তিরমিজি: ১৬)
এ ক্ষেত্রে তিনটি ব্যবহার করা অনেকেই আবশ্যক বলেছেন, অনেকে বলেন সুন্নত। তবে নাপাক দূর করতে যত দরকার, তত ব্যবহার করা আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই।
পানি ও টিস্যু পেপার দুটো ব্যবহার করাই উত্তম
এস্তেনজা পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম। পানি ও ঢিলা দুটোই ব্যবহার করে পবিত্রতা অর্জন করা এ ক্ষেত্রে উত্তম। আবার দুটোর মধ্যে পানি ব্যবহার করা উত্তম। মহানবী (সা.) কখনো দুটোই, আবার কখনো যেকোনো একটি ব্যবহার করতেন। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) টয়লেটে যেতেন, আমি ও আমার বয়সী আরেকটা ছেলে পানির পাত্র ও বর্শার মতো লাঠিসহ তাঁর জন্য পানি নিয়ে যেতাম। এ পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য সারতেন। (বুখারি: ১৫১; মুসলিম: ২৭০-২৭১)
সাধারণত আরবের মানুষ এস্তেনজায় ঢিলা বা পাথর ব্যবহার করতেন। তবে মদিনার কুফাবাসীরা ঢিলা ও পানি দুটোই ব্যবহার করতেন। তাই পবিত্র কোরআনে কুফাবাসীর প্রশংসা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এখানে কিছু লোক রয়েছে, যারা পবিত্রতা পছন্দ করে।’ (সুরা তওবা: ১০৮)। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তারা (কুফাবাসী) পানি দিয়ে এস্তেনজা করে। ফলে আল্লাহ তাদের ব্যাপারে এই আয়াত নাজিল করেন।’ (আবু দাউদ: ৪৪; তিরমিজি: ৩১০০; ইবনে মাজাহ: ৩৫৭)
শুকনো হাড় ও গোবর ব্যবহার করা যাবে না
এস্তেনজা করার উপাদানটি পবিত্র হতে হবে এবং নিষিদ্ধ বস্তু হতে পারবে না। যেমন— গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেনজা করা যাবে না। কারণ প্রথমটি নাপাক এবং দ্বিতীয়টি নিষিদ্ধ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেনজা করো না। কারণ তা তোমাদের ভাই জিনদের খাবার।’ (মুসলিম: ৬৮২; তিরমিজি: ১৮; আহমাদ: ১ / ৪৩৬)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, নবী (সা.) একবার শৌচকাজে যাওয়ার সময় তিনটি পাথর কুড়িয়ে দিতে আমাকে আদেশ দিলেন। আমি দুটি পাথর পেলাম এবং তৃতীয়টি খোঁজাখুঁজি করেও পেলাম না। তাই এক টুকরো শুকনো গোবর নিয়ে তাঁর কাছে গেলাম। তিনি পাথর দুটি নিলেন এবং গোবরটি ফেলে দিয়ে বললেন, ‘এটি অপবিত্র।’ (বুখারি: ১৫৬)
বায়ুত্যাগ করলে এস্তেনজা করতে হবে না
বায়ুত্যাগ করলে বা ঘুম থেকে জাগলে এস্তেনজা করা জরুরি নয়। তবে নামাজ পড়তে হলে অবশ্যই অজু করতে হবে। কারণ এস্তেনজা নাপাক বস্তু দূর করার জন্য করা হয়। বায়ুত্যাগে কোনো নাপাক বস্তু দৃশ্যমান হয় না। তাই এস্তেনজা করতে হবে না। তবে বায়ুত্যাগ করলে বা ঘুমালে অজু ভেঙে যায়, তাই অজু করতে হবে। (আল-মুগনি: ১ / ২০৬)
মলমূত্র ত্যাগের আদব
মলমূত্র ত্যাগ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু আদব রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
১. মানুষের দৃষ্টির আড়ালে নির্জন স্থানে, যেখান থেকে বাইরে দুর্গন্ধ আসে না— এমন স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করা উচিত। (তিরমিজি: ২০; আবু দাউদ: ২)
২. নরম ও নিচু স্থান বেছে নেওয়া উচিত, যাতে প্রস্রাবের ছিটা শরীরে না লাগে। (আবু দাউদ: ৩; তিরমিজি: ২০)
৩. টয়লেটে প্রবেশের সময় দোয়া পড়া—আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবাইস। অর্থ: হে আল্লাহ, আমি নাপাক ও শয়তানদের থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি। (বুখারি, হাদিস: ১৩৯)
৪. বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসা। এতে মল বের হওয়া সহজ হয়। (বায়হাকি: ৪৬৬; মজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০২০)
৫. টয়লেটে বাঁ পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (নাসায়ি: ১১১; আহমাদ: ২৬৩২৬)
৬. মাথা ঢেকে রাখা। (বায়হাকি: ৪৬৪)
৭. গর্তে প্রস্রাব না করা। কারণ ভেতরে সাপ পোকামাকড় থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। (আবু দাউদ: ২৭; শরহুস সুন্নাহ: ১ / ৫৬)
৮. রাস্তা অথবা কবরস্থানে প্রস্রাব–পায়খানা না করা। (মুসলিম: ৩৯৭; আল-ফিকহুল ইসলামি: ১ / ৩০৮-৩০৯)
৯. মানুষের আশ্রয় নেয় এমন কোনো গাছের ছায়ায় বা ফলবান গাছের নিচে প্রস্রাব–পায়খানা করা নিষেধ। (মুসলিম: ৩৯৭; আবু দাউদ: ২৪; আল-ফিকহুল ইসলামি: ১ / ৩১০)
১০. প্রস্রাব–পায়খানা করার সময় প্রয়োজন ছাড়া কথা বলা কিংবা কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির করা অনুচিত। (আবু দাউদ: ১৪; মুসলিম: ৫৫৫)
১১. কিবলার দিকে মুখ করে বা পেছনে ফিরে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তাহরিমি তথা অতি নিন্দনীয়। (বুখারি: ৩৮০)
১২. চৌবাচ্চা, পানির ট্যাংক বা ছোট আয়তনের বদ্ধ পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তাহরিমি। (মুসলিম: ৪২৩, শরহুন নববি: ১ / ৪৫৪)
১৩. বদ্ধ বেশি পানি অথবা প্রবহমান পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তানজিহি। (মুসলিম: ৪২৫, আল-বাহরুর রায়েক: ১ / ৩০১)
১৪. গোসলের স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (তিরমিজি: ২১)
১৫. কূপ, নদী ও চৌবাচ্চার আশপাশে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (আবু দাউদ: ২৪)
১৬. খোলা স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় সতর ঢেকে রাখা উচিত। (মুসলিম: ৫১৭)
১৭. কোনো অপারগতা ছাড়া ডান হাতে এস্তেনজা করা মাকরুহ। (আহমাদ: ২৬৩২৬)
১৮. অপারগতা ছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরুহ। এতে প্রস্রাবের ছিটা গায়ে লাগার আশঙ্কা থাকে। (তিরমিজি: ১২; আহমাদ: ১৯৫৫৫)
১৯. প্রস্রাব-পায়খানা শেষে বের হওয়ার পর দোয়া পড়া—আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়াফানি। অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমার অস্বস্তি দূর করে স্বস্তি দিয়েছেন।
২০. এস্তেনজা করার পর মাটিতে হাত মাজবে বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে হাত ধুয়ে নেবে। (বুখারি: ২৬৬; মুসলিম: ৩১৭; আবু দাউদ: ৪৫; ইবনে মাজাহ: ৬৭৮; নাসায়ি: ১ / ৪৫)
২১. সন্দেহ দূর করতে প্রস্রাবের পর কাপড় বা লজ্জাস্থানে পানি ছিটানো সুন্নত। (দারেমি: ৭১১; বায়হাকি: ১ / ১৬১)
২২. আল্লাহর নাম আছে এমন বস্তু নিয়ে টয়লেটে যাওয়া অনুচিত। (সুরা হজ: ৩২; বুখারি: ৫৮৭২; মুসলিম: ২০৯; মাজমু: ২ / ৮৭; মুগনি: ১ / ২২৭)
২৩. ঢিলা ধরে জনসম্মুখে হাঁটাহাঁটি-নাচানাচি করা অনুচিত। এ ছাড়া ঢিলা ধরে ৪০ কদম হাঁটার কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। (আহসানুল ফাতওয়া, ১ম খণ্ড)
‘এস্তেনজা’ শব্দের অর্থ মুক্তি পাওয়া। মলমূত্র ত্যাগের পর পানি, পাথর, মাটি, কাগজ বা এমন অন্য কোনো বস্তুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করাকে ইসলামের পরিভাষায় ‘এস্তেনজা’ বলা হয়। পায়খানা-প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে যেসব নাপাক বের হয়, তা থেকে পবিত্র হতে এস্তেনজা করা আবশ্যক।
পাথর, ঢিলা, টিস্যু পেপার ইত্যাদি দিয়ে এস্তেনজা করা বৈধ
পাথর এবং এমন জমাটবদ্ধ শুকনো বস্তু, যা দিয়ে নাপাক দূর করা যায় এবং যা ব্যবহার করা ইসলামে নিষিদ্ধ নয়, তা দিয়ে এস্তেনজা করা যাবে। যেমন— কাগজ, টিস্যু পেপার, ন্যাকড়া, শুকনো কাঠ, মাটির ঢেলা ইত্যাদি।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন এস্তেনজা করতে যায়, তখন সে যেন তিনটি পাথর সঙ্গে নিয়ে যায়, যা দিয়ে সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪০; নাসায়ি: ১ / ১৮; আহমাদ: ৬ / ১০৮-১৩৩)
অন্য এক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা কেউ তিনটির কম পাথর দিয়ে এস্তেনজা করবে না।’ (মুসলিম: ২৬২; নাসায়ি ১ / ১২; তিরমিজি: ১৬)
এ ক্ষেত্রে তিনটি ব্যবহার করা অনেকেই আবশ্যক বলেছেন, অনেকে বলেন সুন্নত। তবে নাপাক দূর করতে যত দরকার, তত ব্যবহার করা আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই।
পানি ও টিস্যু পেপার দুটো ব্যবহার করাই উত্তম
এস্তেনজা পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম। পানি ও ঢিলা দুটোই ব্যবহার করে পবিত্রতা অর্জন করা এ ক্ষেত্রে উত্তম। আবার দুটোর মধ্যে পানি ব্যবহার করা উত্তম। মহানবী (সা.) কখনো দুটোই, আবার কখনো যেকোনো একটি ব্যবহার করতেন। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) টয়লেটে যেতেন, আমি ও আমার বয়সী আরেকটা ছেলে পানির পাত্র ও বর্শার মতো লাঠিসহ তাঁর জন্য পানি নিয়ে যেতাম। এ পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য সারতেন। (বুখারি: ১৫১; মুসলিম: ২৭০-২৭১)
সাধারণত আরবের মানুষ এস্তেনজায় ঢিলা বা পাথর ব্যবহার করতেন। তবে মদিনার কুফাবাসীরা ঢিলা ও পানি দুটোই ব্যবহার করতেন। তাই পবিত্র কোরআনে কুফাবাসীর প্রশংসা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এখানে কিছু লোক রয়েছে, যারা পবিত্রতা পছন্দ করে।’ (সুরা তওবা: ১০৮)। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তারা (কুফাবাসী) পানি দিয়ে এস্তেনজা করে। ফলে আল্লাহ তাদের ব্যাপারে এই আয়াত নাজিল করেন।’ (আবু দাউদ: ৪৪; তিরমিজি: ৩১০০; ইবনে মাজাহ: ৩৫৭)
শুকনো হাড় ও গোবর ব্যবহার করা যাবে না
এস্তেনজা করার উপাদানটি পবিত্র হতে হবে এবং নিষিদ্ধ বস্তু হতে পারবে না। যেমন— গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেনজা করা যাবে না। কারণ প্রথমটি নাপাক এবং দ্বিতীয়টি নিষিদ্ধ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেনজা করো না। কারণ তা তোমাদের ভাই জিনদের খাবার।’ (মুসলিম: ৬৮২; তিরমিজি: ১৮; আহমাদ: ১ / ৪৩৬)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, নবী (সা.) একবার শৌচকাজে যাওয়ার সময় তিনটি পাথর কুড়িয়ে দিতে আমাকে আদেশ দিলেন। আমি দুটি পাথর পেলাম এবং তৃতীয়টি খোঁজাখুঁজি করেও পেলাম না। তাই এক টুকরো শুকনো গোবর নিয়ে তাঁর কাছে গেলাম। তিনি পাথর দুটি নিলেন এবং গোবরটি ফেলে দিয়ে বললেন, ‘এটি অপবিত্র।’ (বুখারি: ১৫৬)
বায়ুত্যাগ করলে এস্তেনজা করতে হবে না
বায়ুত্যাগ করলে বা ঘুম থেকে জাগলে এস্তেনজা করা জরুরি নয়। তবে নামাজ পড়তে হলে অবশ্যই অজু করতে হবে। কারণ এস্তেনজা নাপাক বস্তু দূর করার জন্য করা হয়। বায়ুত্যাগে কোনো নাপাক বস্তু দৃশ্যমান হয় না। তাই এস্তেনজা করতে হবে না। তবে বায়ুত্যাগ করলে বা ঘুমালে অজু ভেঙে যায়, তাই অজু করতে হবে। (আল-মুগনি: ১ / ২০৬)
মলমূত্র ত্যাগের আদব
মলমূত্র ত্যাগ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু আদব রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
১. মানুষের দৃষ্টির আড়ালে নির্জন স্থানে, যেখান থেকে বাইরে দুর্গন্ধ আসে না— এমন স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করা উচিত। (তিরমিজি: ২০; আবু দাউদ: ২)
২. নরম ও নিচু স্থান বেছে নেওয়া উচিত, যাতে প্রস্রাবের ছিটা শরীরে না লাগে। (আবু দাউদ: ৩; তিরমিজি: ২০)
৩. টয়লেটে প্রবেশের সময় দোয়া পড়া—আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবাইস। অর্থ: হে আল্লাহ, আমি নাপাক ও শয়তানদের থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি। (বুখারি, হাদিস: ১৩৯)
৪. বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসা। এতে মল বের হওয়া সহজ হয়। (বায়হাকি: ৪৬৬; মজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০২০)
৫. টয়লেটে বাঁ পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (নাসায়ি: ১১১; আহমাদ: ২৬৩২৬)
৬. মাথা ঢেকে রাখা। (বায়হাকি: ৪৬৪)
৭. গর্তে প্রস্রাব না করা। কারণ ভেতরে সাপ পোকামাকড় থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। (আবু দাউদ: ২৭; শরহুস সুন্নাহ: ১ / ৫৬)
৮. রাস্তা অথবা কবরস্থানে প্রস্রাব–পায়খানা না করা। (মুসলিম: ৩৯৭; আল-ফিকহুল ইসলামি: ১ / ৩০৮-৩০৯)
৯. মানুষের আশ্রয় নেয় এমন কোনো গাছের ছায়ায় বা ফলবান গাছের নিচে প্রস্রাব–পায়খানা করা নিষেধ। (মুসলিম: ৩৯৭; আবু দাউদ: ২৪; আল-ফিকহুল ইসলামি: ১ / ৩১০)
১০. প্রস্রাব–পায়খানা করার সময় প্রয়োজন ছাড়া কথা বলা কিংবা কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির করা অনুচিত। (আবু দাউদ: ১৪; মুসলিম: ৫৫৫)
১১. কিবলার দিকে মুখ করে বা পেছনে ফিরে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তাহরিমি তথা অতি নিন্দনীয়। (বুখারি: ৩৮০)
১২. চৌবাচ্চা, পানির ট্যাংক বা ছোট আয়তনের বদ্ধ পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তাহরিমি। (মুসলিম: ৪২৩, শরহুন নববি: ১ / ৪৫৪)
১৩. বদ্ধ বেশি পানি অথবা প্রবহমান পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তানজিহি। (মুসলিম: ৪২৫, আল-বাহরুর রায়েক: ১ / ৩০১)
১৪. গোসলের স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (তিরমিজি: ২১)
১৫. কূপ, নদী ও চৌবাচ্চার আশপাশে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (আবু দাউদ: ২৪)
১৬. খোলা স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় সতর ঢেকে রাখা উচিত। (মুসলিম: ৫১৭)
১৭. কোনো অপারগতা ছাড়া ডান হাতে এস্তেনজা করা মাকরুহ। (আহমাদ: ২৬৩২৬)
১৮. অপারগতা ছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরুহ। এতে প্রস্রাবের ছিটা গায়ে লাগার আশঙ্কা থাকে। (তিরমিজি: ১২; আহমাদ: ১৯৫৫৫)
১৯. প্রস্রাব-পায়খানা শেষে বের হওয়ার পর দোয়া পড়া—আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়াফানি। অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমার অস্বস্তি দূর করে স্বস্তি দিয়েছেন।
২০. এস্তেনজা করার পর মাটিতে হাত মাজবে বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে হাত ধুয়ে নেবে। (বুখারি: ২৬৬; মুসলিম: ৩১৭; আবু দাউদ: ৪৫; ইবনে মাজাহ: ৬৭৮; নাসায়ি: ১ / ৪৫)
২১. সন্দেহ দূর করতে প্রস্রাবের পর কাপড় বা লজ্জাস্থানে পানি ছিটানো সুন্নত। (দারেমি: ৭১১; বায়হাকি: ১ / ১৬১)
২২. আল্লাহর নাম আছে এমন বস্তু নিয়ে টয়লেটে যাওয়া অনুচিত। (সুরা হজ: ৩২; বুখারি: ৫৮৭২; মুসলিম: ২০৯; মাজমু: ২ / ৮৭; মুগনি: ১ / ২২৭)
২৩. ঢিলা ধরে জনসম্মুখে হাঁটাহাঁটি-নাচানাচি করা অনুচিত। এ ছাড়া ঢিলা ধরে ৪০ কদম হাঁটার কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। (আহসানুল ফাতওয়া, ১ম খণ্ড)
এখানে কারণগুলো তুলে ধরা হলো—অন্যায় জুলুম থেকে বাঁচার জন্য মজলুম ব্যক্তি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তার যে দোষ রয়েছে, তা সবিস্তারে তুলে ধরার অনুমতি আছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, একবার আমরা
১২ ঘণ্টা আগেওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
২ দিন আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
২ দিন আগেপবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা আগের যুগের নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, নবীগণ বারবার বলেছেন, আমরা তোমাদের কাছে আল্লাহর পথে আহ্বান করার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।
২ দিন আগে