ইসলাম ডেস্ক
হালাল পশুপাখি জবাইয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। বাজার থেকে মুরগি কেনার পর সেটি ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক জবাই হচ্ছে কি না, তা খেয়াল করা আবশ্যক। এখানে জবাই শুদ্ধ হওয়ার শর্ত, জবাইয়ের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি ও মেশিনে মুরগি জবাইয়ের বিধান আলোচনা করা হলো।
জবাই শুদ্ধ হওয়ার শর্ত
মুরগি বা অন্যান্য পশুপাখি জবাই শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইসলামে কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যেমন:
১. জবাইকারী মুসলমান অথবা আহলে কিতাব তথা কোনো আসমানি কিতাবের অনুসারী (ইহুদি ও খ্রিষ্টান) হওয়া জরুরি। জবাইকারীকে মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত প্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়, শ্বাসরোধে মারা যায়, আঘাত লেগে মারা যায়, উচ্চ স্থান থেকে পড়ে মারা যায়, শিংয়ের আঘাতে মারা যায় এবং যেটি থেকে হিংস্র জন্তু ভক্ষণ করেছে, তবে তোমরা যা জবাই করেছ, তা ছাড়া। যে জন্তু যজ্ঞের বেদিতে বলি দেওয়া হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক তির দিয়ে বণ্টন করা হয় (তাও হারাম)। এসব গোনাহের কাজ।’ (সুরা মায়েদা: ৩)
২. জবাইয়ের শুরুতে আল্লাহ তাআলার নাম উচ্চারণ করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেসব জন্তুর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি, সেগুলো খেয়ো না। তা খাওয়া গুনাহ। (সুরা আনআম: ১২১)
৩. ধারালো দা, ছুরি, চাকু ইত্যাদি দিয়ে গলার দিকে জবাই করা এবং শ্বাসনালি, খাদ্যনালি ও দুটি প্রধান ধমনির অন্তত একটি কেটে রক্ত প্রবাহিত করা। এক সাহাবি মহানবী (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ‘আমরা কি বাঁশের কঞ্চি দিয়ে প্রাণী জবাই করতে পারি?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘যে প্রাণীর রক্ত প্রবাহিত করা হয়, আর তাতে বিসমিল্লাহ বলা হয়, তা খাও।’ (বুখারি: ৩০৭৫)
এসব শর্তের কোনো একটি পূরণ না হলে ইসলামের দৃষ্টিতে জবাই শুদ্ধ হবে না এবং প্রাণীটি খাওয়া জায়েজ হবে না। তবে জবাইয়ের সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে ভুলে গেলে জবাই শুদ্ধ হবে।
জবাইয়ের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি
জবাইয়ের কিছু সুন্নত ও মোস্তাহাব রয়েছে। তা হলো—
১. জবাইয়ের সময় প্রাণী যেন অতিরিক্ত কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা। তাই ধারালো ছুরি ব্যবহার করা উচিত। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা সবকিছু সুন্দরভাবে সম্পাদন করার নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব যখন তোমরা হত্যা করবে তখন উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করবে। যখন জবাই করবে তখন উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। প্রত্যেকে তার ছুরিতে শান দেবে এবং পশুকে শান্তি দেবে।’ (মুসলিম: ১৯৫৫)
২. প্রাণীর সামনে অস্ত্র ধার না দেওয়া এবং এক প্রাণীর সামনে আরেক প্রাণী জবাই করা থেকে বিরত থাকা উচিত। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘কেউ যেন প্রাণীর চোখের সামনে ছুরিতে শান না দেয়।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৬০৬,৮৬১০)
৩. দক্ষ ও পারদর্শী লোকের মাধ্যমে দ্রুত জবাই করা উচিত। শুধু গলার রগই যেন কাটা যায়; গর্দান বা মাথা যেন বিচ্ছিন্ন না হয়। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৬০০)
৪. পুরোপুরি নিস্তেজ না হওয়া পর্যন্ত কাটা-ছেলা ও এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪ / ১৮৮-১৯০; আলমাবসুত লি-সারাখসি: ১১ / ২২৬; আলইখতিয়ার: ৪ / ২৩৬; আলমুহিতুল বুরহানি: ৮ / ৪৪৭)
মেশিনে মুরগি জবাইয়ের বিধান
মেশিনের সাহায্যে মুরগিকে প্রথমে অচেতন করা এবং এরপর একজন মুসলমানের মাধ্যমে তা জবাই করার একটি প্রক্রিয়ার কথা জানা যায়। এভাবে করলে জবাই শুদ্ধ হবে। তবে অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, এ পদ্ধতিতে জবাইয়ের আগে অনেক মুরগি মারা যায়। তাই এ পদ্ধতিতে জবাই করা অনুচিত। তবে প্রত্যেক মুরগির বিষয়ে জবাইয়ের আগে জীবিত কি না নিশ্চিত হওয়া গেলে অসুবিধা নেই।
এ পদ্ধতিতে প্রতিটি মুরগির জন্য প্রতিবার আল্লাহর নাম নেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলার কথা শোনা যায়। এ ব্যাপারে কোনো প্রকার অবহেলা করা যাবে না। কেননা প্রতিটি প্রাণীর জন্য আল্লাহর নাম নেওয়া ছাড়া জবাই করা প্রাণী হালালই হয় না। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। (মাসিক আল-কাউসার, মুফতি মুহাম্মাদ আবদুল মালেক, রজব সংখ্যা, ১৪৪১ হিজরি)
মেশিনের সুইচ টিপে অনেক মুরগি একসঙ্গে জবাই করার পদ্ধতিও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহ বলে সুইচে চাপ দেওয়ার পর একসঙ্গে যে কয়টা প্রাণীর গলায় ছুরি চলবে, সেই সংখ্যক প্রাণী হালাল হবে। (ফাতাওয়া বাইয়িনাত: ৪ / ৪৯১-৫০০)
হালাল পশুপাখি জবাইয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। বাজার থেকে মুরগি কেনার পর সেটি ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক জবাই হচ্ছে কি না, তা খেয়াল করা আবশ্যক। এখানে জবাই শুদ্ধ হওয়ার শর্ত, জবাইয়ের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি ও মেশিনে মুরগি জবাইয়ের বিধান আলোচনা করা হলো।
জবাই শুদ্ধ হওয়ার শর্ত
মুরগি বা অন্যান্য পশুপাখি জবাই শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইসলামে কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যেমন:
১. জবাইকারী মুসলমান অথবা আহলে কিতাব তথা কোনো আসমানি কিতাবের অনুসারী (ইহুদি ও খ্রিষ্টান) হওয়া জরুরি। জবাইকারীকে মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত প্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়, শ্বাসরোধে মারা যায়, আঘাত লেগে মারা যায়, উচ্চ স্থান থেকে পড়ে মারা যায়, শিংয়ের আঘাতে মারা যায় এবং যেটি থেকে হিংস্র জন্তু ভক্ষণ করেছে, তবে তোমরা যা জবাই করেছ, তা ছাড়া। যে জন্তু যজ্ঞের বেদিতে বলি দেওয়া হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক তির দিয়ে বণ্টন করা হয় (তাও হারাম)। এসব গোনাহের কাজ।’ (সুরা মায়েদা: ৩)
২. জবাইয়ের শুরুতে আল্লাহ তাআলার নাম উচ্চারণ করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেসব জন্তুর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি, সেগুলো খেয়ো না। তা খাওয়া গুনাহ। (সুরা আনআম: ১২১)
৩. ধারালো দা, ছুরি, চাকু ইত্যাদি দিয়ে গলার দিকে জবাই করা এবং শ্বাসনালি, খাদ্যনালি ও দুটি প্রধান ধমনির অন্তত একটি কেটে রক্ত প্রবাহিত করা। এক সাহাবি মহানবী (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ‘আমরা কি বাঁশের কঞ্চি দিয়ে প্রাণী জবাই করতে পারি?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘যে প্রাণীর রক্ত প্রবাহিত করা হয়, আর তাতে বিসমিল্লাহ বলা হয়, তা খাও।’ (বুখারি: ৩০৭৫)
এসব শর্তের কোনো একটি পূরণ না হলে ইসলামের দৃষ্টিতে জবাই শুদ্ধ হবে না এবং প্রাণীটি খাওয়া জায়েজ হবে না। তবে জবাইয়ের সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে ভুলে গেলে জবাই শুদ্ধ হবে।
জবাইয়ের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি
জবাইয়ের কিছু সুন্নত ও মোস্তাহাব রয়েছে। তা হলো—
১. জবাইয়ের সময় প্রাণী যেন অতিরিক্ত কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা। তাই ধারালো ছুরি ব্যবহার করা উচিত। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা সবকিছু সুন্দরভাবে সম্পাদন করার নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব যখন তোমরা হত্যা করবে তখন উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করবে। যখন জবাই করবে তখন উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। প্রত্যেকে তার ছুরিতে শান দেবে এবং পশুকে শান্তি দেবে।’ (মুসলিম: ১৯৫৫)
২. প্রাণীর সামনে অস্ত্র ধার না দেওয়া এবং এক প্রাণীর সামনে আরেক প্রাণী জবাই করা থেকে বিরত থাকা উচিত। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘কেউ যেন প্রাণীর চোখের সামনে ছুরিতে শান না দেয়।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৬০৬,৮৬১০)
৩. দক্ষ ও পারদর্শী লোকের মাধ্যমে দ্রুত জবাই করা উচিত। শুধু গলার রগই যেন কাটা যায়; গর্দান বা মাথা যেন বিচ্ছিন্ন না হয়। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৮৬০০)
৪. পুরোপুরি নিস্তেজ না হওয়া পর্যন্ত কাটা-ছেলা ও এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪ / ১৮৮-১৯০; আলমাবসুত লি-সারাখসি: ১১ / ২২৬; আলইখতিয়ার: ৪ / ২৩৬; আলমুহিতুল বুরহানি: ৮ / ৪৪৭)
মেশিনে মুরগি জবাইয়ের বিধান
মেশিনের সাহায্যে মুরগিকে প্রথমে অচেতন করা এবং এরপর একজন মুসলমানের মাধ্যমে তা জবাই করার একটি প্রক্রিয়ার কথা জানা যায়। এভাবে করলে জবাই শুদ্ধ হবে। তবে অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, এ পদ্ধতিতে জবাইয়ের আগে অনেক মুরগি মারা যায়। তাই এ পদ্ধতিতে জবাই করা অনুচিত। তবে প্রত্যেক মুরগির বিষয়ে জবাইয়ের আগে জীবিত কি না নিশ্চিত হওয়া গেলে অসুবিধা নেই।
এ পদ্ধতিতে প্রতিটি মুরগির জন্য প্রতিবার আল্লাহর নাম নেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলার কথা শোনা যায়। এ ব্যাপারে কোনো প্রকার অবহেলা করা যাবে না। কেননা প্রতিটি প্রাণীর জন্য আল্লাহর নাম নেওয়া ছাড়া জবাই করা প্রাণী হালালই হয় না। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। (মাসিক আল-কাউসার, মুফতি মুহাম্মাদ আবদুল মালেক, রজব সংখ্যা, ১৪৪১ হিজরি)
মেশিনের সুইচ টিপে অনেক মুরগি একসঙ্গে জবাই করার পদ্ধতিও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহ বলে সুইচে চাপ দেওয়ার পর একসঙ্গে যে কয়টা প্রাণীর গলায় ছুরি চলবে, সেই সংখ্যক প্রাণী হালাল হবে। (ফাতাওয়া বাইয়িনাত: ৪ / ৪৯১-৫০০)
সড়ককে মানুষের চলাচলের উপযোগী করা ইমানের পরিচায়ক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান শাখা হলো, এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো, সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (
১১ ঘণ্টা আগেশীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল, যা রোজা রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী সময়। অপর দিকে শীতের রাত অনেক দীর্ঘ হয়, ফলে রাতের প্রথম প্রহরে ঘুমিয়ে নিয়ে শেষ প্রহরে আল্লাহর ইবাদত ও তাহাজ্জুদে মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে হাদিসে শীতকালকে ইবাদতের বসন্তক
১ দিন আগেআল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে।
২ দিন আগেসমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
৩ দিন আগে