আমজাদ ইউনুস
১৯২২ সালের ৭ এপ্রিল জার্মানির এরফুর্টে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে শিমেলের জন্ম। মাত্র ১৫ বছর বয়সে আরবি ভাষা শেখা শুরু করেন। এ সময় তিনি ফারসি, তুর্কি ও উর্দু ভাষা শেখার পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের নীতি এবং আরব ও ইসলামের ইতিহাসের পাঠও পেয়েছিলেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ডক্টরেট লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘মধ্যযুগের শেষ পর্বে মিসর’।
বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে তিনি ও সহকর্মীরা মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দী হন। শিমেল বন্দিশিবিরে একটি ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ চালু করেন। সেখানে তাঁর প্রথম লেকচার ছিল ইসলাম বিষয়ে। তখন সুফিবাদ বিষয়ে গবেষণা করে দ্বিতীয়বার ডক্টরেট অর্জন করেন। তুর্কি ভাষায় পারদর্শী হওয়ার কারণে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছিলেন।
জার্মান এই নারী ইসলাম বিষয়ে গবেষক এবং ইসলামি কবিতার অনুবাদক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। অমুসলিম হয়েও খ্রিষ্টবাদ ও ইহুদিবাদে প্রভাবিত ছিলেন না। বিভ্রান্তিপূর্ণ ও শত্রুর দৃষ্টিতে ইসলাম কিংবা মুসলমানদের দেখেননি। ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি তার শ্রদ্ধাপূর্ণ ও ভক্তিমিশ্রিত অবস্থান ছিল। আরবি, উর্দু, ফারসি, তুর্কি ও সিন্ধি ভাষার বেশ কিছু ইসলামি কবিতা জার্মান ও ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। ইসলামি সাহিত্য-সংস্কৃতি, ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা বিষয়ে শতাধিক বই রচনা করেছেন।
মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি তাঁর হৃদয়ে অশেষ প্রেম, ভালোবাসা ও ভক্তি ছিল। নবীর প্রতি তাঁর ভালোবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘ইসলামের রাসুলের প্রতি আমার ভালোবাসার জন্য আমাকে দোষারোপ করবেন না। ইসলাম ও তার রাসুলের প্রতি আমার অগাধ ও গভীর ভালোবাসা রয়েছে। অনেকেই বলে, আমি গোপনে ইসলাম গ্রহণ করেছি। একজন হিন্দু কবির একটি উদ্ধৃতি দিয়ে বলি—আমি কাফির না মুমিন এটা একমাত্র মহান আল্লাহই জানেন। তবে আমি আল্লাহর নবী মুহাম্মদের একনিষ্ঠ প্রেমিক হিসেবে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই।’
১৯৮৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর রচিত নবীজির জীবনীগ্রন্থ। নাম ‘অ্যান্ড মুহাম্মদ ইজ হিস মেসেনজার: দ্য ভেনারেশন অব দ্য প্রফেট ইন ইসলামিক পাইটি’। বইটি আরবি ভাষায়ও অনূদিত হয়েছে।
পবিত্র কোরআনের প্রতিও তাঁর শ্রদ্ধাপূর্ণ অবস্থান ছিল। কোরআনের সত্যতা, আরবি ভাষার নান্দনিকতা ও শক্তির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘পবিত্র কোরআন ইসলামি সমাজের ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী। পাশাপাশি আরবি ভাষা এবং জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় এর প্রভাব দেখা যায়। আরবি ভাষার শক্তির একটি দিক হলো, অনারব যেসব মুসলমান ধর্মীয় জ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে, তারা আরবিতে ধর্মীয় জ্ঞানের বোঝাপড়া করতে পারে।’
পবিত্র কোরআনের সত্যতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পবিত্র কোরআন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সর্বশ্রেষ্ঠ অলৌকিক ঘটনা। তাঁর নবুওয়তের চূড়ান্ত প্রমাণ। এটি সব মানুষের জন্য আল্লাহর অবতীর্ণ বাণী। আগের নবী-রাসুলদের ওপর মহান আল্লাহর অবতীর্ণ গ্রন্থসমূহের চেয়ে কোরআন প্রভাবশালী। কোরআন মন, বিবেক ও আবেগ-অনুভূতিতে স্পর্শ করে।’
জীবনের শেষ মুহূর্ত কোরআনের সঙ্গে কাটানো তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল। মৃত্যুর আগে তিনি অসিয়ত করে বলেন, ‘আমার মৃত্যুর পর কবরে প্রবেশ করানোর আগে আমার মাথার সামনে যেন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, যাতে এই পবিত্র বাণীগুলো দিয়ে পৃথিবীতে আমার শেষ সময় অতিবাহিত হয়।’
ড. অ্যানেমারি শিমেল কর্মজীবনে তাঁর জ্ঞান-গবেষণা ও মনীষা মর্যাদা পেয়েছেন নানাভাবে। বহুবার তাঁকে ভূষিত করা হয়েছে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রিতে। নানা দেশ থেকে পেয়েছেন অনেক পদক-পুরস্কার। ১৯৯৫ সালে জার্মানির সম্মানজনক ‘শান্তি পুরস্কার’ অর্জন করেন। তখন জার্মানির প্রেসিডেন্ট প্রশংসাবাণী পাঠ করেছিলেন। উর্দু ভাষা ও ইকবালের বিষয়ে অবদানের জন্য পাকিস্তান সরকার তাঁকে ‘হেলাল-ই-ইমতিয়াজ’ পুরস্কারে ভূষিত করে।
সূত্র: আলখালিজ ডটএই ও অন্যান্য
১৯২২ সালের ৭ এপ্রিল জার্মানির এরফুর্টে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে শিমেলের জন্ম। মাত্র ১৫ বছর বয়সে আরবি ভাষা শেখা শুরু করেন। এ সময় তিনি ফারসি, তুর্কি ও উর্দু ভাষা শেখার পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের নীতি এবং আরব ও ইসলামের ইতিহাসের পাঠও পেয়েছিলেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ডক্টরেট লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘মধ্যযুগের শেষ পর্বে মিসর’।
বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে তিনি ও সহকর্মীরা মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দী হন। শিমেল বন্দিশিবিরে একটি ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ চালু করেন। সেখানে তাঁর প্রথম লেকচার ছিল ইসলাম বিষয়ে। তখন সুফিবাদ বিষয়ে গবেষণা করে দ্বিতীয়বার ডক্টরেট অর্জন করেন। তুর্কি ভাষায় পারদর্শী হওয়ার কারণে আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছিলেন।
জার্মান এই নারী ইসলাম বিষয়ে গবেষক এবং ইসলামি কবিতার অনুবাদক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। অমুসলিম হয়েও খ্রিষ্টবাদ ও ইহুদিবাদে প্রভাবিত ছিলেন না। বিভ্রান্তিপূর্ণ ও শত্রুর দৃষ্টিতে ইসলাম কিংবা মুসলমানদের দেখেননি। ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি তার শ্রদ্ধাপূর্ণ ও ভক্তিমিশ্রিত অবস্থান ছিল। আরবি, উর্দু, ফারসি, তুর্কি ও সিন্ধি ভাষার বেশ কিছু ইসলামি কবিতা জার্মান ও ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। ইসলামি সাহিত্য-সংস্কৃতি, ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা বিষয়ে শতাধিক বই রচনা করেছেন।
মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি তাঁর হৃদয়ে অশেষ প্রেম, ভালোবাসা ও ভক্তি ছিল। নবীর প্রতি তাঁর ভালোবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘ইসলামের রাসুলের প্রতি আমার ভালোবাসার জন্য আমাকে দোষারোপ করবেন না। ইসলাম ও তার রাসুলের প্রতি আমার অগাধ ও গভীর ভালোবাসা রয়েছে। অনেকেই বলে, আমি গোপনে ইসলাম গ্রহণ করেছি। একজন হিন্দু কবির একটি উদ্ধৃতি দিয়ে বলি—আমি কাফির না মুমিন এটা একমাত্র মহান আল্লাহই জানেন। তবে আমি আল্লাহর নবী মুহাম্মদের একনিষ্ঠ প্রেমিক হিসেবে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই।’
১৯৮৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর রচিত নবীজির জীবনীগ্রন্থ। নাম ‘অ্যান্ড মুহাম্মদ ইজ হিস মেসেনজার: দ্য ভেনারেশন অব দ্য প্রফেট ইন ইসলামিক পাইটি’। বইটি আরবি ভাষায়ও অনূদিত হয়েছে।
পবিত্র কোরআনের প্রতিও তাঁর শ্রদ্ধাপূর্ণ অবস্থান ছিল। কোরআনের সত্যতা, আরবি ভাষার নান্দনিকতা ও শক্তির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘পবিত্র কোরআন ইসলামি সমাজের ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী। পাশাপাশি আরবি ভাষা এবং জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় এর প্রভাব দেখা যায়। আরবি ভাষার শক্তির একটি দিক হলো, অনারব যেসব মুসলমান ধর্মীয় জ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে, তারা আরবিতে ধর্মীয় জ্ঞানের বোঝাপড়া করতে পারে।’
পবিত্র কোরআনের সত্যতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পবিত্র কোরআন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সর্বশ্রেষ্ঠ অলৌকিক ঘটনা। তাঁর নবুওয়তের চূড়ান্ত প্রমাণ। এটি সব মানুষের জন্য আল্লাহর অবতীর্ণ বাণী। আগের নবী-রাসুলদের ওপর মহান আল্লাহর অবতীর্ণ গ্রন্থসমূহের চেয়ে কোরআন প্রভাবশালী। কোরআন মন, বিবেক ও আবেগ-অনুভূতিতে স্পর্শ করে।’
জীবনের শেষ মুহূর্ত কোরআনের সঙ্গে কাটানো তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল। মৃত্যুর আগে তিনি অসিয়ত করে বলেন, ‘আমার মৃত্যুর পর কবরে প্রবেশ করানোর আগে আমার মাথার সামনে যেন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, যাতে এই পবিত্র বাণীগুলো দিয়ে পৃথিবীতে আমার শেষ সময় অতিবাহিত হয়।’
ড. অ্যানেমারি শিমেল কর্মজীবনে তাঁর জ্ঞান-গবেষণা ও মনীষা মর্যাদা পেয়েছেন নানাভাবে। বহুবার তাঁকে ভূষিত করা হয়েছে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রিতে। নানা দেশ থেকে পেয়েছেন অনেক পদক-পুরস্কার। ১৯৯৫ সালে জার্মানির সম্মানজনক ‘শান্তি পুরস্কার’ অর্জন করেন। তখন জার্মানির প্রেসিডেন্ট প্রশংসাবাণী পাঠ করেছিলেন। উর্দু ভাষা ও ইকবালের বিষয়ে অবদানের জন্য পাকিস্তান সরকার তাঁকে ‘হেলাল-ই-ইমতিয়াজ’ পুরস্কারে ভূষিত করে।
সূত্র: আলখালিজ ডটএই ও অন্যান্য
ওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
১৭ ঘণ্টা আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
১৭ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা আগের যুগের নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, নবীগণ বারবার বলেছেন, আমরা তোমাদের কাছে আল্লাহর পথে আহ্বান করার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।
১৭ ঘণ্টা আগেনাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বা উপহাস করা গুনাহের কাজ। নাম বিকৃত করা, অসম্পূর্ণ নামে ডাকা কোনো মুমিনের কাজ নয়। কারণ প্রকৃত মুসলিমের কথা বা কাজে অন্য কেউ কষ্ট পেতে পারে না। কারও নাম নিয়ে বিদ্রূপ করা তাকে কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
২ দিন আগে