শায়খ মাহমুদুল হাসান
মানুষের দুনিয়ার জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী। অনিশ্চিত এই জীবনের তুলনা চলে বিরতি ও ফিরতিহীন ধাবমান রেলগাড়ির সঙ্গে। যার যাত্রাকাল ও যাত্রাস্থান জানা থাকলেও শেষ গন্তব্য ও যাত্রার সমাপ্তিকাল মহান আল্লাহ ছাড়া কারও জানা নেই। টুকরো টুকরো এই ক্ষণ ও মুহূর্তগুলো দিন, রাত, সপ্তাহ, মাস ও বছরে রূপ নিয়ে মহাকালের মিছিলে যোগ হতে থাকে। কালের স্রোত ও সময়ের গতিপ্রবাহ অবিরাম বয়ে চলে।
ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে থাকে অবিরত। এভাবে মানুষ একদিন পৌঁছে যায় অমোঘ-অনিবার্য সত্য মৃত্যুর দোরগোড়ায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি তাদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেন। এরপর যখন তাদের মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময় আসে, তখন তারা সামান্য কালক্ষেপণও করতে পারে না আবার ত্বরান্বিতও করতে পারে না।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৬১)
একটি বছর শেষ হয়ে নতুন আরেকটি বছর শুরু হতে চলেছে। প্রত্যেক মানুষের উচিত, ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে করে চিন্তিত হওয়া এবং নতুন বছরের জন্য পরিকল্পনা করা। তবে দুঃখজনক সত্য হলো, কিছু মানুষ বছরের প্রথম দিনে বল্গাহারা হয়ে যায়। সুন্দর মুহূর্তগুলো অপ্রীতিকর ও অনৈতিক কাজকর্মে নষ্ট করে। ভুলে যায় নববর্ষে একটি বছরের সূচনা—আনন্দের সঙ্গে মিশে আছে আরেকটি বছর হারানোর বেদনা। অথচ আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্য প্রয়োজন তীব্র আত্মসমালোচনা ও অত্যধিক অনুশোচনা।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো ধরনের পাপাচার ও অশ্লীল কার্যকলাপ ইসলাম সমর্থন করে না। এর মাধ্যমে বরং বছরের প্রথম প্রহরটি পঙ্কিল ও কলঙ্কিত করা হয়। ইসলাম সুস্থ বিনোদনচর্চায় উৎসাহিত করে। তবে অশ্লীলতা, কদর্য আচরণ, প্রবৃত্তির অনুসরণ ও অনৈতিকতার সঙ্গে কখনো সমঝোতা করে না। তাই এই রাতে প্রত্যেক মুসলিমের উচিত অতীতের পাপের মার্জনা চেয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ভবিষ্যৎ দিনগুলো যাতে সুন্দর, সমৃদ্ধ ও পুণ্যময় হয়, সে জন্য দোয়া করা।
দিন, রাত, সপ্তাহ, বছর—সবকিছুরই একটা শেষ থাকে। প্রত্যেক কর্তব্যসচেতন ব্যক্তিই নির্দিষ্ট সময় শেষে ফলাফলের হিসাব করেন; অর্জন-বিয়োজন বিবেচনা করেন। তাই বছরের আগমন ও প্রস্থানে প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তির কর্তব্য হলো আত্মসমালোচনা করা।
অনুতাপ ও অনুশোচনার মাধ্যমে অতীতের কাজকর্ম পর্যালোচনা করা। পাশাপাশি বিগত বছর যতটুকু সময় আল্লাহর বিধান ও সন্তুষ্টির মতো চলার তাওফিক হয়েছে, সে জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করা। গুনাহ, গাফিলতি ও আল্লাহর অসন্তুষ্টিতে যে সময়টুকু কেটেছে, সেটার জন্য অনুতপ্ত হওয়া; আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নতুন বছর সৎ, নিষ্ঠা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক কাটানোর প্রত্যয় করা।
যদিও এটি মুমিনের প্রাত্যহিক ও আবশ্যিক কর্তব্য। তবু ভালো-মন্দের হিসাব এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুনভাবে সংকল্পবদ্ধ হওয়া পরিশুদ্ধ জীবন বিনির্মাণের অপরিহার্য শর্ত। সময়ের আগমন-প্রস্থান আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তিনি সেই সত্তা, যিনি দিন ও রাতকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন। এসব বিষয় শুধু তার উপকারে আসে, যে উপদেশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৬২)
পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর এই সন্ধিক্ষণে চলুন আমরা জীবনের হিসাব মেলাই। গভীরভাবে উপলব্ধি করি, যে দিনগুলো শেষ হয়ে গেল, তা আমাদের জীবনেরই একটি মূল্যবান অংশ। একটি বছর শেষ হওয়ার সরল ও সহজ অর্থ হলো, আমাদের প্রত্যেকের জীবনমাল্য থেকে ৩৬৫ দিনের ৩৬৫টি পুষ্প ঝরে পড়া, আমাদের জীবন আরও সংকুচিত হয়ে আসা এবং মৃত্যু আমাদের আরও কাছে চলে আসা। তাই আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ার মতো কিছু নেই। বরং হিসাবনিকাশ করে জীবনের হালখাতা তৈরি করা উচিত।
লেখক: খতিব ও প্রিন্সিপাল, এসেক্স জামে মসজিদ অ্যান্ড অ্যাকাডেমি, ইংল্যান্ড
মানুষের দুনিয়ার জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী। অনিশ্চিত এই জীবনের তুলনা চলে বিরতি ও ফিরতিহীন ধাবমান রেলগাড়ির সঙ্গে। যার যাত্রাকাল ও যাত্রাস্থান জানা থাকলেও শেষ গন্তব্য ও যাত্রার সমাপ্তিকাল মহান আল্লাহ ছাড়া কারও জানা নেই। টুকরো টুকরো এই ক্ষণ ও মুহূর্তগুলো দিন, রাত, সপ্তাহ, মাস ও বছরে রূপ নিয়ে মহাকালের মিছিলে যোগ হতে থাকে। কালের স্রোত ও সময়ের গতিপ্রবাহ অবিরাম বয়ে চলে।
ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে থাকে অবিরত। এভাবে মানুষ একদিন পৌঁছে যায় অমোঘ-অনিবার্য সত্য মৃত্যুর দোরগোড়ায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি তাদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেন। এরপর যখন তাদের মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময় আসে, তখন তারা সামান্য কালক্ষেপণও করতে পারে না আবার ত্বরান্বিতও করতে পারে না।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৬১)
একটি বছর শেষ হয়ে নতুন আরেকটি বছর শুরু হতে চলেছে। প্রত্যেক মানুষের উচিত, ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে করে চিন্তিত হওয়া এবং নতুন বছরের জন্য পরিকল্পনা করা। তবে দুঃখজনক সত্য হলো, কিছু মানুষ বছরের প্রথম দিনে বল্গাহারা হয়ে যায়। সুন্দর মুহূর্তগুলো অপ্রীতিকর ও অনৈতিক কাজকর্মে নষ্ট করে। ভুলে যায় নববর্ষে একটি বছরের সূচনা—আনন্দের সঙ্গে মিশে আছে আরেকটি বছর হারানোর বেদনা। অথচ আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্য প্রয়োজন তীব্র আত্মসমালোচনা ও অত্যধিক অনুশোচনা।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো ধরনের পাপাচার ও অশ্লীল কার্যকলাপ ইসলাম সমর্থন করে না। এর মাধ্যমে বরং বছরের প্রথম প্রহরটি পঙ্কিল ও কলঙ্কিত করা হয়। ইসলাম সুস্থ বিনোদনচর্চায় উৎসাহিত করে। তবে অশ্লীলতা, কদর্য আচরণ, প্রবৃত্তির অনুসরণ ও অনৈতিকতার সঙ্গে কখনো সমঝোতা করে না। তাই এই রাতে প্রত্যেক মুসলিমের উচিত অতীতের পাপের মার্জনা চেয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ভবিষ্যৎ দিনগুলো যাতে সুন্দর, সমৃদ্ধ ও পুণ্যময় হয়, সে জন্য দোয়া করা।
দিন, রাত, সপ্তাহ, বছর—সবকিছুরই একটা শেষ থাকে। প্রত্যেক কর্তব্যসচেতন ব্যক্তিই নির্দিষ্ট সময় শেষে ফলাফলের হিসাব করেন; অর্জন-বিয়োজন বিবেচনা করেন। তাই বছরের আগমন ও প্রস্থানে প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তির কর্তব্য হলো আত্মসমালোচনা করা।
অনুতাপ ও অনুশোচনার মাধ্যমে অতীতের কাজকর্ম পর্যালোচনা করা। পাশাপাশি বিগত বছর যতটুকু সময় আল্লাহর বিধান ও সন্তুষ্টির মতো চলার তাওফিক হয়েছে, সে জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করা। গুনাহ, গাফিলতি ও আল্লাহর অসন্তুষ্টিতে যে সময়টুকু কেটেছে, সেটার জন্য অনুতপ্ত হওয়া; আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নতুন বছর সৎ, নিষ্ঠা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক কাটানোর প্রত্যয় করা।
যদিও এটি মুমিনের প্রাত্যহিক ও আবশ্যিক কর্তব্য। তবু ভালো-মন্দের হিসাব এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুনভাবে সংকল্পবদ্ধ হওয়া পরিশুদ্ধ জীবন বিনির্মাণের অপরিহার্য শর্ত। সময়ের আগমন-প্রস্থান আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তিনি সেই সত্তা, যিনি দিন ও রাতকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন। এসব বিষয় শুধু তার উপকারে আসে, যে উপদেশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৬২)
পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর এই সন্ধিক্ষণে চলুন আমরা জীবনের হিসাব মেলাই। গভীরভাবে উপলব্ধি করি, যে দিনগুলো শেষ হয়ে গেল, তা আমাদের জীবনেরই একটি মূল্যবান অংশ। একটি বছর শেষ হওয়ার সরল ও সহজ অর্থ হলো, আমাদের প্রত্যেকের জীবনমাল্য থেকে ৩৬৫ দিনের ৩৬৫টি পুষ্প ঝরে পড়া, আমাদের জীবন আরও সংকুচিত হয়ে আসা এবং মৃত্যু আমাদের আরও কাছে চলে আসা। তাই আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ার মতো কিছু নেই। বরং হিসাবনিকাশ করে জীবনের হালখাতা তৈরি করা উচিত।
লেখক: খতিব ও প্রিন্সিপাল, এসেক্স জামে মসজিদ অ্যান্ড অ্যাকাডেমি, ইংল্যান্ড
সমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
২০ ঘণ্টা আগেএখানে কারণগুলো তুলে ধরা হলো—অন্যায় জুলুম থেকে বাঁচার জন্য মজলুম ব্যক্তি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তার যে দোষ রয়েছে, তা সবিস্তারে তুলে ধরার অনুমতি আছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, একবার আমরা
২ দিন আগেওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
৩ দিন আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
৩ দিন আগে