ইজাজুল হক
বৃষ্টি আল্লাহর বিস্ময়কর অনুগ্রহের নাম। বৃষ্টিশূন্য খরার ভেতর দিন যাপন করতে বাধ্য মানুষই কেবল এ কথা হাড়ে হাড়ে অনুভব করতে পারে। দিনের পর দিন সুবিশাল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে তারা; কয়েক ফোঁটা শীতল রহমতের জন্য কায়মনোবাক্যে আকুতি জানায়। এমন মুহূর্তে এক পশলা বৃষ্টি ধূসর-নিষ্প্রাণ মরুর বুকেও জাগিয়ে তোলে প্রাণের ছোঁয়া; দাবানলে পোড়া শস্যখেত এবং উজাড় হওয়া বনে আনে সবুজের সমারোহ।
বৃষ্টির এই জীবন-জাগানো প্রকৃতির সঙ্গে কোরআনের রয়েছে গভীর যোগসূত্র। মানুষের ঘুমন্ত হৃদয় জাগাতে এবং মরচে ধরা নিষ্প্রাণ অন্তর সুশোভিত করতেই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। গুনাহের দাবদাহে ফেটে চৌচির হৃদয়ের জমিতে সবুজ ফসল ফলাতে কোরআনই এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বিভিন্নভাবে বৃষ্টির প্রসঙ্গ এনেছেন। পৃথিবীর জীবন-চঞ্চলতা ও অস্তিত্ব রক্ষায় এ এক অনিবার্য উপাদান। বৃষ্টি, পানি ও সাগর-নদীর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ একমাত্র আল্লাহরই হাতে। তিনি এই মহা নিয়ামতের কথা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করে তোমাদের জীবিকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূল উৎপন্ন করেন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৩২)
শুধু বৃষ্টিই নয়, সাগর থেকে বৃষ্টি সঞ্চারী মেঘমালা আকাশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া এবং বর্ষণের পর ফের তা মানুষের কল্যাণে সংরক্ষণ করে রাখার ক্ষমতাও তাঁরই হাতে। এরশাদ হচ্ছে, ‘আমি বৃষ্টি সঞ্চারী বায়ু পাঠাই। এরপর আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি আর তোমাদের পান করাই। মূলত তোমরা তা সংরক্ষণ করতে সক্ষম নও।’ (সুরা হিজর: ২২)
পৃথিবীতে এমন অনেক বিস্তীর্ণ অঞ্চল রয়েছে, যেখানে প্রাণধারণ অনেকাংশেই অসম্ভব; সবুজ-শ্যামল পৃথিবী আর ভেজা মাটির ঘ্রাণ সেখানে স্বপ্নের চেয়ে বেশি কিছু নয়। তবে সেই ঊষর মরুর বুকে যখন রহমতের বৃষ্টি নেমে আসে, তখন রুক্ষ মাটির কোষে কোষে প্রাণের সঞ্চার হয় এবং মাটি ভেদ করে বেরিয়ে আসে সবুজাভ বৃক্ষ-লতা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যিনি আকাশ থেকে পরিমিত বৃষ্টি বর্ষণ করেন। এরপর তা দিয়ে আমি মৃত ভূ-ভাগ সঞ্জীবিত করি। এভাবেই তোমাদের পুনরুত্থিত করা হবে।’ (সুরা যুখরুফ: ১১)
পাখির চঞ্চু থেকে পড়ে যাওয়া শস্যদানাটিও একটু বৃষ্টির ছোঁয়া কিংবা হালকা আর্দ্রতা পেলে গাছ হয়ে তরতরিয়ে বেড়ে ওঠে এবং দুহাত ভরে আমাদের শস্য দান করে। যত রকমারি শাকসবজি ও বাহারি ফলফলাদি আমরা খাই, সবই বৃষ্টির দান। আর বৃষ্টি, সে তো মহান আল্লাহর দান! এরশাদ হচ্ছে, ‘আর তিনিই আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। এরপর তা দিয়ে আমি সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি। এরপর তা থেকে সবুজ পাতা গজিয়ে দিই—তা থেকে বের করি ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা। আর খেজুরগাছের মাথি থেকে বের করি ঝুলন্ত থোকা, সৃষ্টি করি আঙুরের বাগান, জয়তুন ও ডালিম—একই রকম, আবার রকমারিও। গাছে যখন ফল আসে এবং তা পাকে, তখন তাতে গভীর দৃষ্টি দাও। এসবে মুমিনদের জন্য রয়েছে অনেক শিক্ষা।’ (সুরা আনআম: ৯৯)
একইভাবে মানুষের অন্তরের বৃষ্টি হলো পবিত্র কোরআন। বৃষ্টি যেমন মাটি নরম করে পৃথিবী সাজায়, কোরআনও মানুষের হৃদয় নরম করে আলোকিত জীবন গড়তে সাহায্য করে। ঘুমন্ত বিবেক, মৃত আত্মা এবং গুনাহ ভরা পাথর-কঠিন মন ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়ে ওঠে কোরআনের পরশেই। তাই তো বৃষ্টির সঙ্গে মানবহৃদয়কে তুলনা করে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মুমিনদের জন্য কি সময় আসেনি যে আল্লাহর স্মরণ এবং যে সত্য (কোরআন) নাজিল হয়েছে তার মাধ্যমে তাদের হৃদয়গুলো নরম হবে? আর তারা তাদের মতো যেন না হয়, যাদের আগে কিতাব দেওয়া হয়েছিল, এরপর বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে তাদের হৃদয় কঠিন হয়ে যায়। তাদের বেশির ভাগই ছিল পাপাচারী। জেনে রেখো, আল্লাহ ভূ-ভাগকে মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন। আমি তোমাদের জন্য আমার নিদর্শনগুলো খুলে বলেছি যেন তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা হাদিদ: ১৬-১৭)
মুমিনের হৃদয়কে জমি এবং কোরআনকে বৃষ্টি হিসেবে কল্পনা করুন। কোরআনের শীতল বৃষ্টি যখন রুক্ষ হৃদয়ের জমিতে পড়ে, তখন তা ইমানের বলে বলীয়ান এবং প্রবল আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। এরপর জীবনের অন্তিম লক্ষ্য জান্নাত ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছুটে চলে অবিরাম।
তবে বৃষ্টি যেমন তার ছোঁয়ায় ভিন্ন ভিন্ন জাতের বৃক্ষ উৎপন্ন করে, তেমনি কোরআনও মানুষের হৃদয়কে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করে গড়ে তোলে। আপনি দেখবেন, প্রত্যেক বিশ্বাসী মানুষের আলাদা ব্যক্তিত্ব, গুণ, অভিজ্ঞতা, আদর্শ, ভালোবাসা ও ঘৃণার জায়গা রয়েছে। তবে মত-পথের ভিন্নতা সত্ত্বেও মুমিনের গন্তব্য একটিই—জান্নাত। এ যেন সবাই একই বৃষ্টির ফসল!
বিশ্বাসী প্রাণে মতভিন্নতা থাকবেই—এটিই বিশ্বাসের সৌন্দর্য ও নান্দনিকতা। কে কোন ভালো কাজের মাধ্যমে অনন্ত সাফল্যের অধিকারী হবে, তা আমরা কেউই জানি না। কোনো সৎকাজই পরকালের পরীক্ষায় উতরে যেতে যথেষ্ট নয়—যদি হৃদয়টা আল্লাহর ভয়ে বিগলিত এবং কোরআনের সত্য গ্রহণে উন্মুখ না হয়। হৃদয় যত সজীব, বলিষ্ঠ এবং কোরআনের রঙে রঙিন হবে, তত তা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সহায়ক হবে।
বৃষ্টির ছোঁয়ায় উৎপন্ন হাজারো রকমের বৃক্ষের সহাবস্থান যেমন আমরা মেনে নিই, তেমনি বিশ্বাসী হৃদয়ের বিচিত্রতাও আমাদের সাদরে গ্রহণ করতে হবে। হাজারো ভিন্ন জাতের বৃক্ষের সমন্বয়ে যেমন সুবিশাল আমাজন বন গড়ে উঠেছে, তেমনি কোটি কোটি জীবন্ত প্রাণের বন্ধনে গড়ে উঠবে শক্তিশালী মানবসমাজ। কারণ নিজের মতের ওপর পুরো পৃথিবী গড়ে তোলা আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো, কোরআনের বৃষ্টিতে আমাদের ও চারপাশের হৃদয়গুলো আর্দ্র করা, মতবৈচিত্র্য মেনে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুসংহতভাবে বসবাস করা এবং সুন্দর-সহিষ্ণু পৃথিবী গড়ে তোলা।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বৃষ্টি আল্লাহর বিস্ময়কর অনুগ্রহের নাম। বৃষ্টিশূন্য খরার ভেতর দিন যাপন করতে বাধ্য মানুষই কেবল এ কথা হাড়ে হাড়ে অনুভব করতে পারে। দিনের পর দিন সুবিশাল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে তারা; কয়েক ফোঁটা শীতল রহমতের জন্য কায়মনোবাক্যে আকুতি জানায়। এমন মুহূর্তে এক পশলা বৃষ্টি ধূসর-নিষ্প্রাণ মরুর বুকেও জাগিয়ে তোলে প্রাণের ছোঁয়া; দাবানলে পোড়া শস্যখেত এবং উজাড় হওয়া বনে আনে সবুজের সমারোহ।
বৃষ্টির এই জীবন-জাগানো প্রকৃতির সঙ্গে কোরআনের রয়েছে গভীর যোগসূত্র। মানুষের ঘুমন্ত হৃদয় জাগাতে এবং মরচে ধরা নিষ্প্রাণ অন্তর সুশোভিত করতেই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। গুনাহের দাবদাহে ফেটে চৌচির হৃদয়ের জমিতে সবুজ ফসল ফলাতে কোরআনই এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বিভিন্নভাবে বৃষ্টির প্রসঙ্গ এনেছেন। পৃথিবীর জীবন-চঞ্চলতা ও অস্তিত্ব রক্ষায় এ এক অনিবার্য উপাদান। বৃষ্টি, পানি ও সাগর-নদীর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ একমাত্র আল্লাহরই হাতে। তিনি এই মহা নিয়ামতের কথা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করে তোমাদের জীবিকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূল উৎপন্ন করেন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৩২)
শুধু বৃষ্টিই নয়, সাগর থেকে বৃষ্টি সঞ্চারী মেঘমালা আকাশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া এবং বর্ষণের পর ফের তা মানুষের কল্যাণে সংরক্ষণ করে রাখার ক্ষমতাও তাঁরই হাতে। এরশাদ হচ্ছে, ‘আমি বৃষ্টি সঞ্চারী বায়ু পাঠাই। এরপর আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি আর তোমাদের পান করাই। মূলত তোমরা তা সংরক্ষণ করতে সক্ষম নও।’ (সুরা হিজর: ২২)
পৃথিবীতে এমন অনেক বিস্তীর্ণ অঞ্চল রয়েছে, যেখানে প্রাণধারণ অনেকাংশেই অসম্ভব; সবুজ-শ্যামল পৃথিবী আর ভেজা মাটির ঘ্রাণ সেখানে স্বপ্নের চেয়ে বেশি কিছু নয়। তবে সেই ঊষর মরুর বুকে যখন রহমতের বৃষ্টি নেমে আসে, তখন রুক্ষ মাটির কোষে কোষে প্রাণের সঞ্চার হয় এবং মাটি ভেদ করে বেরিয়ে আসে সবুজাভ বৃক্ষ-লতা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যিনি আকাশ থেকে পরিমিত বৃষ্টি বর্ষণ করেন। এরপর তা দিয়ে আমি মৃত ভূ-ভাগ সঞ্জীবিত করি। এভাবেই তোমাদের পুনরুত্থিত করা হবে।’ (সুরা যুখরুফ: ১১)
পাখির চঞ্চু থেকে পড়ে যাওয়া শস্যদানাটিও একটু বৃষ্টির ছোঁয়া কিংবা হালকা আর্দ্রতা পেলে গাছ হয়ে তরতরিয়ে বেড়ে ওঠে এবং দুহাত ভরে আমাদের শস্য দান করে। যত রকমারি শাকসবজি ও বাহারি ফলফলাদি আমরা খাই, সবই বৃষ্টির দান। আর বৃষ্টি, সে তো মহান আল্লাহর দান! এরশাদ হচ্ছে, ‘আর তিনিই আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। এরপর তা দিয়ে আমি সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি। এরপর তা থেকে সবুজ পাতা গজিয়ে দিই—তা থেকে বের করি ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা। আর খেজুরগাছের মাথি থেকে বের করি ঝুলন্ত থোকা, সৃষ্টি করি আঙুরের বাগান, জয়তুন ও ডালিম—একই রকম, আবার রকমারিও। গাছে যখন ফল আসে এবং তা পাকে, তখন তাতে গভীর দৃষ্টি দাও। এসবে মুমিনদের জন্য রয়েছে অনেক শিক্ষা।’ (সুরা আনআম: ৯৯)
একইভাবে মানুষের অন্তরের বৃষ্টি হলো পবিত্র কোরআন। বৃষ্টি যেমন মাটি নরম করে পৃথিবী সাজায়, কোরআনও মানুষের হৃদয় নরম করে আলোকিত জীবন গড়তে সাহায্য করে। ঘুমন্ত বিবেক, মৃত আত্মা এবং গুনাহ ভরা পাথর-কঠিন মন ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়ে ওঠে কোরআনের পরশেই। তাই তো বৃষ্টির সঙ্গে মানবহৃদয়কে তুলনা করে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মুমিনদের জন্য কি সময় আসেনি যে আল্লাহর স্মরণ এবং যে সত্য (কোরআন) নাজিল হয়েছে তার মাধ্যমে তাদের হৃদয়গুলো নরম হবে? আর তারা তাদের মতো যেন না হয়, যাদের আগে কিতাব দেওয়া হয়েছিল, এরপর বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে তাদের হৃদয় কঠিন হয়ে যায়। তাদের বেশির ভাগই ছিল পাপাচারী। জেনে রেখো, আল্লাহ ভূ-ভাগকে মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন। আমি তোমাদের জন্য আমার নিদর্শনগুলো খুলে বলেছি যেন তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা হাদিদ: ১৬-১৭)
মুমিনের হৃদয়কে জমি এবং কোরআনকে বৃষ্টি হিসেবে কল্পনা করুন। কোরআনের শীতল বৃষ্টি যখন রুক্ষ হৃদয়ের জমিতে পড়ে, তখন তা ইমানের বলে বলীয়ান এবং প্রবল আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। এরপর জীবনের অন্তিম লক্ষ্য জান্নাত ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছুটে চলে অবিরাম।
তবে বৃষ্টি যেমন তার ছোঁয়ায় ভিন্ন ভিন্ন জাতের বৃক্ষ উৎপন্ন করে, তেমনি কোরআনও মানুষের হৃদয়কে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করে গড়ে তোলে। আপনি দেখবেন, প্রত্যেক বিশ্বাসী মানুষের আলাদা ব্যক্তিত্ব, গুণ, অভিজ্ঞতা, আদর্শ, ভালোবাসা ও ঘৃণার জায়গা রয়েছে। তবে মত-পথের ভিন্নতা সত্ত্বেও মুমিনের গন্তব্য একটিই—জান্নাত। এ যেন সবাই একই বৃষ্টির ফসল!
বিশ্বাসী প্রাণে মতভিন্নতা থাকবেই—এটিই বিশ্বাসের সৌন্দর্য ও নান্দনিকতা। কে কোন ভালো কাজের মাধ্যমে অনন্ত সাফল্যের অধিকারী হবে, তা আমরা কেউই জানি না। কোনো সৎকাজই পরকালের পরীক্ষায় উতরে যেতে যথেষ্ট নয়—যদি হৃদয়টা আল্লাহর ভয়ে বিগলিত এবং কোরআনের সত্য গ্রহণে উন্মুখ না হয়। হৃদয় যত সজীব, বলিষ্ঠ এবং কোরআনের রঙে রঙিন হবে, তত তা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সহায়ক হবে।
বৃষ্টির ছোঁয়ায় উৎপন্ন হাজারো রকমের বৃক্ষের সহাবস্থান যেমন আমরা মেনে নিই, তেমনি বিশ্বাসী হৃদয়ের বিচিত্রতাও আমাদের সাদরে গ্রহণ করতে হবে। হাজারো ভিন্ন জাতের বৃক্ষের সমন্বয়ে যেমন সুবিশাল আমাজন বন গড়ে উঠেছে, তেমনি কোটি কোটি জীবন্ত প্রাণের বন্ধনে গড়ে উঠবে শক্তিশালী মানবসমাজ। কারণ নিজের মতের ওপর পুরো পৃথিবী গড়ে তোলা আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো, কোরআনের বৃষ্টিতে আমাদের ও চারপাশের হৃদয়গুলো আর্দ্র করা, মতবৈচিত্র্য মেনে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুসংহতভাবে বসবাস করা এবং সুন্দর-সহিষ্ণু পৃথিবী গড়ে তোলা।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
ওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
১৯ ঘণ্টা আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
১৯ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা আগের যুগের নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, নবীগণ বারবার বলেছেন, আমরা তোমাদের কাছে আল্লাহর পথে আহ্বান করার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।
১৯ ঘণ্টা আগেনাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বা উপহাস করা গুনাহের কাজ। নাম বিকৃত করা, অসম্পূর্ণ নামে ডাকা কোনো মুমিনের কাজ নয়। কারণ প্রকৃত মুসলিমের কথা বা কাজে অন্য কেউ কষ্ট পেতে পারে না। কারও নাম নিয়ে বিদ্রূপ করা তাকে কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
২ দিন আগে