আবদুল আযীয কাসেমি
প্রশ্ন: রোজা রেখে ট্রল, হাসিঠাট্টা ও গল্প-আড্ডাবাজিতে সময় কাটানো যাবে কি? এমনটি করলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি? ইসলামি শরিয়তের আলোকে জানতে চাই।
উত্তর: রমজান মাসের রোজা ইসলামের অন্যতম ফরজ ইবাদত। এটি ইসলামের মৌলিক পাঁচ খুঁটির একটি। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামের ভিত্তি হলো পাঁচটি বস্তুর ওপর। এক. এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত আর কেউ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। দুই. নামাজ যথাযথভাবে আদায় করা। তিন. জাকাত প্রদান করা। চার. রমজানের রোজা রাখা। পাঁচ. সামর্থ্য থাকলে বাইতুল্লাহর হজ করা।’ (বুখারি ও মুসলিম)
রোজার পারিভাষিক অর্থ হলো, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস পরিহার করা। এটুকুতেই রোজার ফরজ আদায় হয়ে যাবে। তবে রোজা আল্লাহ তাআলার কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য বেশ কিছু শিষ্টাচার রক্ষা করে চলতে হয়। তখনই সেই রোজা আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে জরুরি হলো জবানের হেফাজত করা। বিশেষত মিথ্যা, পরনিন্দা, অশ্লীল কথা ও অযথা কথাবার্তা থেকে নিজেকে সযতনে রক্ষা করা। এ প্রসঙ্গে বেশ কিছু হাদিস নবী (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখেও মিথ্যা বলা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার ত্যাগ করার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি: ১৯০৩)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকেই বর্ণিত আরেকটি হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘সিয়াম তথা রোজা হলো ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ এটাকে ভেঙে না ফেলা হয়।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, রোজা ভেঙে ফেলা হবে কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘মিথ্যা বলার মাধ্যমে, অথবা পরনিন্দা করার মাধ্যমে।’ (তাবারানি: ৪৫৩৬)
পরিমিত পরিমাণে হাসিঠাট্টা ইসলামে নিষেধ নয়। নবী (সা.)ও মাঝে মাঝে সাহাবিদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করেছেন। রমজানে তা একেবারে করা যাবে না—এমনটি কোথাও বলা নেই। তবে রমজান যেহেতু একটি পবিত্র ও গাম্ভীর্যপূর্ণ মাস, তাই এই মাসের পবিত্রতা রক্ষার্থে অনর্থক গল্প-গুজব ও হাসিঠাট্টায় সময় নষ্ট করা অনুচিত।
অনেককে দেখা যায়, সময় কাটানোর জন্য এ মাসে একত্রে বসে আড্ডা দেন। রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি মাসকে এ রকম হালকা কাজে নষ্ট করা ঠিক নয়। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তই অত্যন্ত মূল্যবান। এক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামের সৌন্দর্য হলো অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার করে চলা।’ (তিরমিজি: ২৩১৭) এ ছাড়া সচেতন মানুষ কখনোই অনর্থক কাজে সময় নষ্ট করতে পারে না।
রমজান যেহেতু কোরআন নাজিলের মাস, তাই এ মাসে কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব সর্বাধিক। পূর্বসূরি সাহাবায়ে কেরাম ও মহামনীষীরা রমজান মাসে তাঁদের সর্বোচ্চ সময় তিলাওয়াতের পেছনেই ব্যয় করতেন। ইসলামের প্রথম যুগের মনীষাদের ব্যাপারে তাঁদের জীবনীকারগণ উল্লেখ করেছেন, রমজানে তাঁরা তারাবির বাইরে ৬০ খতম কোরআন তিলাওয়াত করতেন। তারাবিতেও এক খতম পড়তেন তাঁরা। এভাবে মোট ৬১ খতম কোরআন তিলাওয়াত করতেন। যদি কেউ কোরআন তিলাওয়াত করতে না পারে, তবে তার জন্য রয়েছে জিকির করার মহাসুযোগ।
উত্তর দিয়েছেন: আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
প্রশ্ন: রোজা রেখে ট্রল, হাসিঠাট্টা ও গল্প-আড্ডাবাজিতে সময় কাটানো যাবে কি? এমনটি করলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি? ইসলামি শরিয়তের আলোকে জানতে চাই।
উত্তর: রমজান মাসের রোজা ইসলামের অন্যতম ফরজ ইবাদত। এটি ইসলামের মৌলিক পাঁচ খুঁটির একটি। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামের ভিত্তি হলো পাঁচটি বস্তুর ওপর। এক. এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত আর কেউ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। দুই. নামাজ যথাযথভাবে আদায় করা। তিন. জাকাত প্রদান করা। চার. রমজানের রোজা রাখা। পাঁচ. সামর্থ্য থাকলে বাইতুল্লাহর হজ করা।’ (বুখারি ও মুসলিম)
রোজার পারিভাষিক অর্থ হলো, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস পরিহার করা। এটুকুতেই রোজার ফরজ আদায় হয়ে যাবে। তবে রোজা আল্লাহ তাআলার কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য বেশ কিছু শিষ্টাচার রক্ষা করে চলতে হয়। তখনই সেই রোজা আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে জরুরি হলো জবানের হেফাজত করা। বিশেষত মিথ্যা, পরনিন্দা, অশ্লীল কথা ও অযথা কথাবার্তা থেকে নিজেকে সযতনে রক্ষা করা। এ প্রসঙ্গে বেশ কিছু হাদিস নবী (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখেও মিথ্যা বলা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার ত্যাগ করার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি: ১৯০৩)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকেই বর্ণিত আরেকটি হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘সিয়াম তথা রোজা হলো ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ এটাকে ভেঙে না ফেলা হয়।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, রোজা ভেঙে ফেলা হবে কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘মিথ্যা বলার মাধ্যমে, অথবা পরনিন্দা করার মাধ্যমে।’ (তাবারানি: ৪৫৩৬)
পরিমিত পরিমাণে হাসিঠাট্টা ইসলামে নিষেধ নয়। নবী (সা.)ও মাঝে মাঝে সাহাবিদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করেছেন। রমজানে তা একেবারে করা যাবে না—এমনটি কোথাও বলা নেই। তবে রমজান যেহেতু একটি পবিত্র ও গাম্ভীর্যপূর্ণ মাস, তাই এই মাসের পবিত্রতা রক্ষার্থে অনর্থক গল্প-গুজব ও হাসিঠাট্টায় সময় নষ্ট করা অনুচিত।
অনেককে দেখা যায়, সময় কাটানোর জন্য এ মাসে একত্রে বসে আড্ডা দেন। রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি মাসকে এ রকম হালকা কাজে নষ্ট করা ঠিক নয়। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তই অত্যন্ত মূল্যবান। এক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামের সৌন্দর্য হলো অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার করে চলা।’ (তিরমিজি: ২৩১৭) এ ছাড়া সচেতন মানুষ কখনোই অনর্থক কাজে সময় নষ্ট করতে পারে না।
রমজান যেহেতু কোরআন নাজিলের মাস, তাই এ মাসে কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব সর্বাধিক। পূর্বসূরি সাহাবায়ে কেরাম ও মহামনীষীরা রমজান মাসে তাঁদের সর্বোচ্চ সময় তিলাওয়াতের পেছনেই ব্যয় করতেন। ইসলামের প্রথম যুগের মনীষাদের ব্যাপারে তাঁদের জীবনীকারগণ উল্লেখ করেছেন, রমজানে তাঁরা তারাবির বাইরে ৬০ খতম কোরআন তিলাওয়াত করতেন। তারাবিতেও এক খতম পড়তেন তাঁরা। এভাবে মোট ৬১ খতম কোরআন তিলাওয়াত করতেন। যদি কেউ কোরআন তিলাওয়াত করতে না পারে, তবে তার জন্য রয়েছে জিকির করার মহাসুযোগ।
উত্তর দিয়েছেন: আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
ওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
৮ ঘণ্টা আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
৮ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা আগের যুগের নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, নবীগণ বারবার বলেছেন, আমরা তোমাদের কাছে আল্লাহর পথে আহ্বান করার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।
৮ ঘণ্টা আগেনাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বা উপহাস করা গুনাহের কাজ। নাম বিকৃত করা, অসম্পূর্ণ নামে ডাকা কোনো মুমিনের কাজ নয়। কারণ প্রকৃত মুসলিমের কথা বা কাজে অন্য কেউ কষ্ট পেতে পারে না। কারও নাম নিয়ে বিদ্রূপ করা তাকে কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
১ দিন আগে