আমজাদ ইউনুস
১ হাজার ২০০ বছর আগে খলিফা আবদুর রহমান আদ-দাখিলের আমলে ৭৮৪ থেকে ৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে স্পেনের তৎকালীন রাজধানী কর্ডোভায় এই ঐতিহাসিক মসজিদ নির্মিত হয়। এটি ‘লা মেজকিতা’ কিংবা ‘দ্য গ্রেট মসজিদ অব কর্ডোভা’ নামেও পরিচিত। মুসলিম দার্শনিক আল্লামা ইকবাল এখানে ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি এ মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সাতটি কবিতা লিখেছিলেন। ‘বালে জিবরিল’ শিরোনামে দীর্ঘ কবিতাটি এই মসজিদে বসেই লিখেছিলেন তিনি।
আব্বাসি শাসনামলে যেমন বাগদাদ মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল, তেমনি উমাইয়া শাসনামলে কর্ডোভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এটি সেকালের জ্ঞানচর্চা ও বুদ্ধিবৃত্তির কেন্দ্রে পরিণত হয়। পাঠদানের জন্য প্রাচ্যের পণ্ডিতদের কর্ডোভায় আসার আমন্ত্রণ জানানো হতো। তাঁদের অনেক উপহার ও অনুদান প্রদান করা হতো। এ সময় কর্ডোভা জামে মসজিদে একটি বিশাল গ্রন্থাগারও তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আনুমানিক ৪ লাখ বই ছিল। প্রাচ্য থেকে দুর্লভ বই কপি করার জন্য লিপিকারদের পাঠানো হতো। এভাবে মসজিদটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
খলিফা তৃতীয় আবদুর রহমানের (৯১২-৯২৯ খ্রি.) আমলে জামে কর্ডোভা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। এ সময় ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে শিক্ষার্থীরা সেখানে আসতে থাকেন। প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশ থেকে জ্ঞান অর্জনের জন্য এখানে আসেন। তাফসির, ধর্মতত্ত্ব, দর্শন, আরবি ব্যাকরণ, অভিধানশাস্ত্র, ইতিহাস, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, গণিত, আইন ইত্যাদি বিষয়ে এখানে পাঠদান করা হতো। কারিগরি, বৃত্তিমূলক শিক্ষা, বক্তৃতা চর্চা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মুসলিম, ইহুদি, খ্রিষ্টান শিক্ষার্থীরা সমান অধিকার নিয়ে শিক্ষাগ্রহণ ও পাঠদানে নিয়োজিত থাকতেন।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য বিভিন্ন অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো। তাঁরা জ্ঞানে-গুণে ও তাকওয়ায় অনন্য ছিলেন। নম্র ভাষায় পাঠদান করতেন। শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো শিক্ষক নির্বাচন করতে পারতেন। কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষকের কাছে পাঠ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ছিল না। এখানকার শিক্ষকেরা অন্যান্য পেশায় যুক্ত ছিলেন। এ কারণে শিক্ষকদের সুবিধার্থে একটি সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছিল; সেই সময়ে শিক্ষার্থীর পাঠ গ্রহণ চলত।
শিক্ষার্থীরা বৃত্তাকারে শিক্ষকের চারপাশে জড়ো হতেন। মহান রবের প্রশংসা, গুণগান এবং রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠের মাধ্যমে পাঠদান শুরু হতো। শিক্ষক দুর্লভ শব্দগুলোর ব্যাখ্যা করতেন। শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসার উত্তর দিতেন এবং দোয়ার মাধ্যমে ক্লাস শেষ করতেন। আবু বকর ইবনে মুয়াবিয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হাদিস পাঠদান করতেন। বিখ্যাত আরবি ভাষাবিদ আবু-আলী প্রাচীন আরবদের ভাষা, কবিতা ও প্রবচন পড়াতেন। আন্দালুসিয়ান ইতিহাসবিদ ও দার্শনিক ইবনুল কুতিয়া ব্যাকরণ পড়াতেন। জামে কর্ডোভার খ্যাতি কায়রোর আল-আজহার এবং বাগদাদের নিজামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমপর্যায়ের। স্পেনে মুসলমানদের পতনের পর মসজিদটি গির্জায় পরিণত হয়। এখনো তা গির্জা হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
১ হাজার ২০০ বছর আগে খলিফা আবদুর রহমান আদ-দাখিলের আমলে ৭৮৪ থেকে ৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে স্পেনের তৎকালীন রাজধানী কর্ডোভায় এই ঐতিহাসিক মসজিদ নির্মিত হয়। এটি ‘লা মেজকিতা’ কিংবা ‘দ্য গ্রেট মসজিদ অব কর্ডোভা’ নামেও পরিচিত। মুসলিম দার্শনিক আল্লামা ইকবাল এখানে ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি এ মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সাতটি কবিতা লিখেছিলেন। ‘বালে জিবরিল’ শিরোনামে দীর্ঘ কবিতাটি এই মসজিদে বসেই লিখেছিলেন তিনি।
আব্বাসি শাসনামলে যেমন বাগদাদ মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল, তেমনি উমাইয়া শাসনামলে কর্ডোভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এটি সেকালের জ্ঞানচর্চা ও বুদ্ধিবৃত্তির কেন্দ্রে পরিণত হয়। পাঠদানের জন্য প্রাচ্যের পণ্ডিতদের কর্ডোভায় আসার আমন্ত্রণ জানানো হতো। তাঁদের অনেক উপহার ও অনুদান প্রদান করা হতো। এ সময় কর্ডোভা জামে মসজিদে একটি বিশাল গ্রন্থাগারও তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আনুমানিক ৪ লাখ বই ছিল। প্রাচ্য থেকে দুর্লভ বই কপি করার জন্য লিপিকারদের পাঠানো হতো। এভাবে মসজিদটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
খলিফা তৃতীয় আবদুর রহমানের (৯১২-৯২৯ খ্রি.) আমলে জামে কর্ডোভা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। এ সময় ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে শিক্ষার্থীরা সেখানে আসতে থাকেন। প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশ থেকে জ্ঞান অর্জনের জন্য এখানে আসেন। তাফসির, ধর্মতত্ত্ব, দর্শন, আরবি ব্যাকরণ, অভিধানশাস্ত্র, ইতিহাস, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, গণিত, আইন ইত্যাদি বিষয়ে এখানে পাঠদান করা হতো। কারিগরি, বৃত্তিমূলক শিক্ষা, বক্তৃতা চর্চা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মুসলিম, ইহুদি, খ্রিষ্টান শিক্ষার্থীরা সমান অধিকার নিয়ে শিক্ষাগ্রহণ ও পাঠদানে নিয়োজিত থাকতেন।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য বিভিন্ন অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো। তাঁরা জ্ঞানে-গুণে ও তাকওয়ায় অনন্য ছিলেন। নম্র ভাষায় পাঠদান করতেন। শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো শিক্ষক নির্বাচন করতে পারতেন। কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষকের কাছে পাঠ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ছিল না। এখানকার শিক্ষকেরা অন্যান্য পেশায় যুক্ত ছিলেন। এ কারণে শিক্ষকদের সুবিধার্থে একটি সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছিল; সেই সময়ে শিক্ষার্থীর পাঠ গ্রহণ চলত।
শিক্ষার্থীরা বৃত্তাকারে শিক্ষকের চারপাশে জড়ো হতেন। মহান রবের প্রশংসা, গুণগান এবং রাসুল (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠের মাধ্যমে পাঠদান শুরু হতো। শিক্ষক দুর্লভ শব্দগুলোর ব্যাখ্যা করতেন। শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসার উত্তর দিতেন এবং দোয়ার মাধ্যমে ক্লাস শেষ করতেন। আবু বকর ইবনে মুয়াবিয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হাদিস পাঠদান করতেন। বিখ্যাত আরবি ভাষাবিদ আবু-আলী প্রাচীন আরবদের ভাষা, কবিতা ও প্রবচন পড়াতেন। আন্দালুসিয়ান ইতিহাসবিদ ও দার্শনিক ইবনুল কুতিয়া ব্যাকরণ পড়াতেন। জামে কর্ডোভার খ্যাতি কায়রোর আল-আজহার এবং বাগদাদের নিজামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমপর্যায়ের। স্পেনে মুসলমানদের পতনের পর মসজিদটি গির্জায় পরিণত হয়। এখনো তা গির্জা হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
সমাজের প্রত্যেক সদস্যের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও আন্তরিকতার সম্পর্ক থাকা চাই। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা ও মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে মহানবী (সা.) ৬টি কর্তব্যের কথা বলেছেন, যা পালন
১ দিন আগেএখানে কারণগুলো তুলে ধরা হলো—অন্যায় জুলুম থেকে বাঁচার জন্য মজলুম ব্যক্তি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তার যে দোষ রয়েছে, তা সবিস্তারে তুলে ধরার অনুমতি আছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, একবার আমরা
২ দিন আগেওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
৩ দিন আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
৩ দিন আগে