মুফতি আবু দারদা
আরবি দাওয়াত শব্দের অর্থ ডাকা এবং তাবলিগ শব্দের অর্থ পৌঁছে দেওয়া। ইসলামের সুমহান বাণী প্রসারের পদ্ধতিকেই দাওয়াত ও তাবলিগ বলা হয়। ইসলামে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। মুসলমানদের একটি দলকে অবশ্যই এই দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে একটা দল থাকা চাই, যারা মানুষকে কল্যাণের পথে ডাকবে এবং অন্যায় করতে নিষেধ করবে। মূলত তারাই সফল।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৪)
মানুষকে আলোর পথ দেখাতে শেষ নবী হিসেবে পৃথিবীতে এসেছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর প্রধান দায়িত্বই ছিল মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা এবং সমাজে ইসলামের মহান বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমার পালনকর্তার পথে মানুষকে ডাকো। ...’ (সুরা কাসাস: ৮৭) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী, বলো, এটিই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীরা আল্লাহর পথে সুস্পষ্ট দলিল দিয়ে ডাকি। ...’ (ইউসুফ: ১০৮) অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আমি তোমাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে পাঠিয়েছি এবং আল্লাহর আদেশে তাঁর পথে আহ্বানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে।’ (আহজাব: ৪৪-৪৫)
দাওয়াতের কাজে অবহেলা না করার জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুল, তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাজিল হয়েছে, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও। যদি না দাও, তাহলে তুমি বার্তা পৌঁছে দিলে না।’ (সুরা মায়েদা: ৬৭) আল্লাহর দেওয়া এই দায়িত্ব মহানবী (সা.) অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন এবং মৃত্যুর আগে সাহাবায়ে কিরামকে ইসলামের প্রচার-প্রসার করার দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘একটি আয়াত জানা থাকলেও তা আমার পক্ষ থেকে পৌঁছে দাও। ...’ (বুখারি)
মহানবী (সা.)-এর পর যেহেতু আর কোনো নবী আসবেন না, তাই এ দায়িত্ব তাঁর অনুসারীদের কাঁধেই অর্পিত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির কল্যাণেই তোমাদের উদ্ভব হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ করো, অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখো।’ (সুরা আলে ইমরান: ১১০) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘তার কথার চেয়ে কার কথা আর উত্তম হতে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎ কাজ করে এবং বলে—নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত।’ (হামিম সাজদা: ৩৩)
মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পদ্ধতি মহানবী (সা.) নবুয়তের ২৩ বছরে হাতে-কলমে শিখিয়ে গেছেন। কোরআন-হাদিসের অসংখ্য বাণী থেকে আমরা দাওয়াতের পথ-পদ্ধতি ও শিষ্টাচারের কথা জানতে পারি। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে ডাকো এবং তাদের সঙ্গে সুন্দর পন্থায় বিতর্ক করো।’ (সুরা নাহল: ১২৫)
আয়াত থেকে বোঝা যায়, প্রথমে মানুষকে ইমানের দাওয়াত দিতে হবে। তারপর অন্যান্য ফরজ বিধানের কথা তুলে ধরতে হবে। মহানবী (সা.) হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে ইয়েমেনের শাসক হিসেবে পাঠানোর সময় বলেছিলেন, ‘সেখানকার অধিবাসীদের এ সাক্ষ্যদানের প্রতি আহ্বান জানাবে যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। যদি তারা তা মেনে নেয়, তবে তাদের জানাবে যে আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যদি সেটাও তারা মেনে নেয়, তবে তাদের জানাবে যে আল্লাহ তাআলা তাদের সম্পদে জাকাত ফরজ করেছেন; যা তাদের ধনীদের থেকে নিয়ে গরিবদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।’
(বুখারি ও মুসলিম)
ইসলামের প্রচার-প্রসারের কাজ করা সবার জন্য জরুরি। ভালো কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করার এই মহান কাজ বন্ধ হয়ে গেলে পৃথিবীতে অন্যায়-অনাচার ছেয়ে যাবে। তাই মহানবী (সা.) বলেন, ‘সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমরা অবশ্যই ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং খারাপ কাজে নিষেধ করবে। অন্যথায় শিগগিরই আল্লাহ তাআলা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর আজাব পাঠাবেন। এরপর তোমরা (মুক্তির জন্য) তাঁর কাছে দোয়া করবে, তবে তোমাদের দোয়া কবুল হবে না।’ (তিরমিজি)
লেখক: শিক্ষক
আরবি দাওয়াত শব্দের অর্থ ডাকা এবং তাবলিগ শব্দের অর্থ পৌঁছে দেওয়া। ইসলামের সুমহান বাণী প্রসারের পদ্ধতিকেই দাওয়াত ও তাবলিগ বলা হয়। ইসলামে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। মুসলমানদের একটি দলকে অবশ্যই এই দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে একটা দল থাকা চাই, যারা মানুষকে কল্যাণের পথে ডাকবে এবং অন্যায় করতে নিষেধ করবে। মূলত তারাই সফল।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৪)
মানুষকে আলোর পথ দেখাতে শেষ নবী হিসেবে পৃথিবীতে এসেছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর প্রধান দায়িত্বই ছিল মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা এবং সমাজে ইসলামের মহান বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমার পালনকর্তার পথে মানুষকে ডাকো। ...’ (সুরা কাসাস: ৮৭) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী, বলো, এটিই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীরা আল্লাহর পথে সুস্পষ্ট দলিল দিয়ে ডাকি। ...’ (ইউসুফ: ১০৮) অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী, আমি তোমাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে পাঠিয়েছি এবং আল্লাহর আদেশে তাঁর পথে আহ্বানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে।’ (আহজাব: ৪৪-৪৫)
দাওয়াতের কাজে অবহেলা না করার জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুল, তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাজিল হয়েছে, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও। যদি না দাও, তাহলে তুমি বার্তা পৌঁছে দিলে না।’ (সুরা মায়েদা: ৬৭) আল্লাহর দেওয়া এই দায়িত্ব মহানবী (সা.) অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন এবং মৃত্যুর আগে সাহাবায়ে কিরামকে ইসলামের প্রচার-প্রসার করার দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘একটি আয়াত জানা থাকলেও তা আমার পক্ষ থেকে পৌঁছে দাও। ...’ (বুখারি)
মহানবী (সা.)-এর পর যেহেতু আর কোনো নবী আসবেন না, তাই এ দায়িত্ব তাঁর অনুসারীদের কাঁধেই অর্পিত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির কল্যাণেই তোমাদের উদ্ভব হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ করো, অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখো।’ (সুরা আলে ইমরান: ১১০) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘তার কথার চেয়ে কার কথা আর উত্তম হতে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎ কাজ করে এবং বলে—নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত।’ (হামিম সাজদা: ৩৩)
মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পদ্ধতি মহানবী (সা.) নবুয়তের ২৩ বছরে হাতে-কলমে শিখিয়ে গেছেন। কোরআন-হাদিসের অসংখ্য বাণী থেকে আমরা দাওয়াতের পথ-পদ্ধতি ও শিষ্টাচারের কথা জানতে পারি। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে ডাকো এবং তাদের সঙ্গে সুন্দর পন্থায় বিতর্ক করো।’ (সুরা নাহল: ১২৫)
আয়াত থেকে বোঝা যায়, প্রথমে মানুষকে ইমানের দাওয়াত দিতে হবে। তারপর অন্যান্য ফরজ বিধানের কথা তুলে ধরতে হবে। মহানবী (সা.) হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে ইয়েমেনের শাসক হিসেবে পাঠানোর সময় বলেছিলেন, ‘সেখানকার অধিবাসীদের এ সাক্ষ্যদানের প্রতি আহ্বান জানাবে যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। যদি তারা তা মেনে নেয়, তবে তাদের জানাবে যে আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যদি সেটাও তারা মেনে নেয়, তবে তাদের জানাবে যে আল্লাহ তাআলা তাদের সম্পদে জাকাত ফরজ করেছেন; যা তাদের ধনীদের থেকে নিয়ে গরিবদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।’
(বুখারি ও মুসলিম)
ইসলামের প্রচার-প্রসারের কাজ করা সবার জন্য জরুরি। ভালো কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করার এই মহান কাজ বন্ধ হয়ে গেলে পৃথিবীতে অন্যায়-অনাচার ছেয়ে যাবে। তাই মহানবী (সা.) বলেন, ‘সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! তোমরা অবশ্যই ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং খারাপ কাজে নিষেধ করবে। অন্যথায় শিগগিরই আল্লাহ তাআলা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর আজাব পাঠাবেন। এরপর তোমরা (মুক্তির জন্য) তাঁর কাছে দোয়া করবে, তবে তোমাদের দোয়া কবুল হবে না।’ (তিরমিজি)
লেখক: শিক্ষক
ওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
১৭ ঘণ্টা আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
১৭ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা আগের যুগের নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, নবীগণ বারবার বলেছেন, আমরা তোমাদের কাছে আল্লাহর পথে আহ্বান করার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।
১৭ ঘণ্টা আগেনাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বা উপহাস করা গুনাহের কাজ। নাম বিকৃত করা, অসম্পূর্ণ নামে ডাকা কোনো মুমিনের কাজ নয়। কারণ প্রকৃত মুসলিমের কথা বা কাজে অন্য কেউ কষ্ট পেতে পারে না। কারও নাম নিয়ে বিদ্রূপ করা তাকে কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
২ দিন আগে