মাওলানা ইসমাইল নাজিম
নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ করেছেন। ইসলামের পরিভাষায় এসব শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াত বলা হয়। এখানে নবীজীবনের তাৎপর্যপূর্ণ তিন বাইয়াত অনুষ্ঠানের কথা তুলে ধরা হলো।
আকাবার প্রথম শপথ
নবুয়তের একাদশ বছরে ইসলামের দাওয়াত মক্কার চৌহদ্দি পেরিয়ে মদিনায়ও পৌঁছে যায়। সে বছর মদিনা থেকে আসা ৬ জন হজযাত্রী ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁরা মহানবী (সা.)-কে কথা দেন, ইয়াসরিবে ফিরে তাঁরা মানুষকে ইসলামের পথে ডাকবেন। পরের বছর হজের মৌসুমে গত বছরের ৬ জনসহ মোট ১২ জন ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে আসেন এবং মিনার ময়দানের আকাবা নামের এক সুড়ঙ্গে তাঁর সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর হাতে একটি আনুষ্ঠানিক বাইয়াত তথা শপথ গ্রহণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে একে বাইয়াতুল আকাবা আলা-উলা বা আকাবার প্রথম শপথ বলা হয়।
এই শপথ অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.) মদিনার ১২ জন সাহাবির কাছে বেশ কিছু বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। হাদিসে সেই শপথের বাক্যগুলো এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে—‘এসো, আমার কাছে অঙ্গীকার করো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, সন্তানকে হত্যা করবে না, মনগড়া অপবাদ আরোপ করবে না এবং কোনো ভালো কথায় আমাকে অমান্য করবে না। যারা এসব কথা মানবে এবং পূর্ণ করবে, আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের পুরস্কার রয়েছে। যারা এসব কাজে লিপ্ত হবে এবং তার শাস্তি প্রদান করা হয়, তবে সেটা তার মুক্তিলাভের কারণ হবে। আর যদি কেউ এসবে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ তা গোপন রেখে দেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে—তিনি শাস্তি দেবেন বা ক্ষমা করবেন।’ (বুখারি)
আকাবার দ্বিতীয় শপথ
আকাবার প্রথম শপথের ফলাফল পরের বছর তথা নবুয়তের ত্রয়োদশ বছরে প্রতিভাত হয়। সেই ১২ জন মুসলমান এবার ৭৫ জনের কাফেলা নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় আসেন। তখনো মক্কায় ইসলাম প্রচারে বাধাবিপত্তি ছিল। তাই তাঁরা পৌত্তলিক হজযাত্রীদের সঙ্গেই ছিলেন এবং গোপনে নবীজির সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। আগের মতো এবারও তাঁরা আকাবার সুড়ঙ্গে একত্র হতে সম্মত হলেন। রাতের গভীরে অন্যান্য হাজির অজ্ঞাতে সুড়ঙ্গে উপস্থিত হন। নবীজি সেখানে তাশরিফ আনলেন।
এই অনুষ্ঠানে নবীজি তাঁদের কাছ থেকে যে অঙ্গীকার নেন, তা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) বলেন, আমরা আরজ করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা আপনার কাছে কোন বিষয়ে শপথ গ্রহণ করব?’ তিনি বললেন, ‘সুখে-দুঃখে সব সময় আনুগত্য করবে, অভাব ও সচ্ছলতায় একইভাবে ব্যয় করবে, ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলবে, আল্লাহর পথে অটল থাকবে এবং এ ব্যাপারে কারও ভর্ৎসনার পরোয়া করবে না, যখন আমি তোমাদের কাছে হিজরত করব, তখন আমাকে সাহায্য করবে এবং যেভাবে নিজেদের জানমাল ও সন্তানদের হেফাজত করছ, সেভাবেই আমার হেফাজত করবে। এসব করলে তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (ইবনে হিশাম)
মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।
সুরা ফাতহ: ১৮
এই শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াতুল আকাবা আস-সানিয়া বা আকাবার দ্বিতীয় শপথ বলা হয়। এতে দীর্ঘ আলোচনা এবং নানা নাটকীয়তার অবতারণা হয়েছিল। সবশেষে উপস্থিত আনসার সাহাবি মহানবীর প্রতি কৃত অঙ্গীকার রক্ষার শপথ করেন। এই অনুষ্ঠানে দুজন নারীও উপস্থিত ছিলেন। পুরুষদের সবাই নবীজির হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আর উপস্থিত দুই নারীকে (হাত স্পর্শ না করে) মৌখিকভাবে শপথ পড়ানো হয়। (মুসলিম) শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে নবীজি ১২ জন ব্যক্তিকে তাঁদের নেতা নির্বাচন করেন, যাঁরা মদিনায় গিয়ে ইসলামের কাজে নিজ নিজ সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেবেন। নেতা নির্বাচনের পর তাঁদের কাছ থেকে আবার বিশেষভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়।
বাইয়াতুর রিজওয়ান
ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে বাইয়াতুর রিজওয়ান সংগঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) স্বপ্নের মাধ্যমে ওমরাহ করার ব্যাপারে আদিষ্ট হলে ১ হাজার ৪০০ সাহাবির একটি দল নিয়ে মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া এলাকায় গিয়ে যাত্রাবিরতি করেন এবং মক্কার নেতৃত্বে থাকা কুরাইশ সরদারদের কাছে এ ব্যাপারে খবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তখনো মুসলমানদের সঙ্গে মক্কার কাফিরদের যুদ্ধাবস্থা ছিল।
নবী (সা.) হজরত ওসমান (রা.)-কে দূত বানিয়ে মক্কায় পাঠান এবং নির্দেশনা দেন, ‘তুমি গিয়ে তাদের বলে দাও—আমরা যুদ্ধ করার জন্য আসিনি; ওমরাহ পালন করার জন্য এসেছি। তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াতও পেশ করো।’ ওসমান (রা.) নবীজির বার্তা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের পৌঁছে দিলেন। কুরাইশ নেতারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল এবং ওসমানকে দীর্ঘসময় মক্কায় আটকে রাখল। এতে হুদাইবিয়ায় অবস্থানরত মুসলমানদের মধ্যে হজরত ওসমান (রা.)-কে শহীদ করে দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এ কথা রাসুল (সা.)-এর কানে পৌঁছালে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে যতক্ষণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, ততক্ষণ আমরা এ স্থান ত্যাগ করব না।’
এরপর সব সাহাবিকে ডেকে শপথাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। তাঁরা অঙ্গীকার করলেন যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করবেন না এবং নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করে যুদ্ধে অবিচল থাকবেন। শপথের পর দেখা গেল, ওসমান (রা.) সুস্থভাবে ফিরে এলেন। ফলে আর যুদ্ধের পথে যেতে হলো না।
এই শপথ অনুষ্ঠান হয়েছিল হুদায়বিয়ার একটি গাছের নিচে। সাহাবিদের এভাবে জানের বিনিময়ে শপথ করার ব্যাপারটি মহান আল্লাহর ভীষণ পছন্দ হয়েছিল। তিনি পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করলেন এবং বাইয়াতুর রিজওয়ানে অংশ নেওয়া সবার প্রতি তাঁর সন্তুষ্টির ঘোষণা দেন। এরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।’ (সুরা ফাতহ: ১৮)
নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ করেছেন। ইসলামের পরিভাষায় এসব শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াত বলা হয়। এখানে নবীজীবনের তাৎপর্যপূর্ণ তিন বাইয়াত অনুষ্ঠানের কথা তুলে ধরা হলো।
আকাবার প্রথম শপথ
নবুয়তের একাদশ বছরে ইসলামের দাওয়াত মক্কার চৌহদ্দি পেরিয়ে মদিনায়ও পৌঁছে যায়। সে বছর মদিনা থেকে আসা ৬ জন হজযাত্রী ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁরা মহানবী (সা.)-কে কথা দেন, ইয়াসরিবে ফিরে তাঁরা মানুষকে ইসলামের পথে ডাকবেন। পরের বছর হজের মৌসুমে গত বছরের ৬ জনসহ মোট ১২ জন ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে আসেন এবং মিনার ময়দানের আকাবা নামের এক সুড়ঙ্গে তাঁর সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর হাতে একটি আনুষ্ঠানিক বাইয়াত তথা শপথ গ্রহণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে একে বাইয়াতুল আকাবা আলা-উলা বা আকাবার প্রথম শপথ বলা হয়।
এই শপথ অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.) মদিনার ১২ জন সাহাবির কাছে বেশ কিছু বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। হাদিসে সেই শপথের বাক্যগুলো এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে—‘এসো, আমার কাছে অঙ্গীকার করো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, সন্তানকে হত্যা করবে না, মনগড়া অপবাদ আরোপ করবে না এবং কোনো ভালো কথায় আমাকে অমান্য করবে না। যারা এসব কথা মানবে এবং পূর্ণ করবে, আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের পুরস্কার রয়েছে। যারা এসব কাজে লিপ্ত হবে এবং তার শাস্তি প্রদান করা হয়, তবে সেটা তার মুক্তিলাভের কারণ হবে। আর যদি কেউ এসবে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ তা গোপন রেখে দেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে—তিনি শাস্তি দেবেন বা ক্ষমা করবেন।’ (বুখারি)
আকাবার দ্বিতীয় শপথ
আকাবার প্রথম শপথের ফলাফল পরের বছর তথা নবুয়তের ত্রয়োদশ বছরে প্রতিভাত হয়। সেই ১২ জন মুসলমান এবার ৭৫ জনের কাফেলা নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় আসেন। তখনো মক্কায় ইসলাম প্রচারে বাধাবিপত্তি ছিল। তাই তাঁরা পৌত্তলিক হজযাত্রীদের সঙ্গেই ছিলেন এবং গোপনে নবীজির সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। আগের মতো এবারও তাঁরা আকাবার সুড়ঙ্গে একত্র হতে সম্মত হলেন। রাতের গভীরে অন্যান্য হাজির অজ্ঞাতে সুড়ঙ্গে উপস্থিত হন। নবীজি সেখানে তাশরিফ আনলেন।
এই অনুষ্ঠানে নবীজি তাঁদের কাছ থেকে যে অঙ্গীকার নেন, তা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) বলেন, আমরা আরজ করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা আপনার কাছে কোন বিষয়ে শপথ গ্রহণ করব?’ তিনি বললেন, ‘সুখে-দুঃখে সব সময় আনুগত্য করবে, অভাব ও সচ্ছলতায় একইভাবে ব্যয় করবে, ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলবে, আল্লাহর পথে অটল থাকবে এবং এ ব্যাপারে কারও ভর্ৎসনার পরোয়া করবে না, যখন আমি তোমাদের কাছে হিজরত করব, তখন আমাকে সাহায্য করবে এবং যেভাবে নিজেদের জানমাল ও সন্তানদের হেফাজত করছ, সেভাবেই আমার হেফাজত করবে। এসব করলে তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (ইবনে হিশাম)
মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।
সুরা ফাতহ: ১৮
এই শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াতুল আকাবা আস-সানিয়া বা আকাবার দ্বিতীয় শপথ বলা হয়। এতে দীর্ঘ আলোচনা এবং নানা নাটকীয়তার অবতারণা হয়েছিল। সবশেষে উপস্থিত আনসার সাহাবি মহানবীর প্রতি কৃত অঙ্গীকার রক্ষার শপথ করেন। এই অনুষ্ঠানে দুজন নারীও উপস্থিত ছিলেন। পুরুষদের সবাই নবীজির হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আর উপস্থিত দুই নারীকে (হাত স্পর্শ না করে) মৌখিকভাবে শপথ পড়ানো হয়। (মুসলিম) শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে নবীজি ১২ জন ব্যক্তিকে তাঁদের নেতা নির্বাচন করেন, যাঁরা মদিনায় গিয়ে ইসলামের কাজে নিজ নিজ সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেবেন। নেতা নির্বাচনের পর তাঁদের কাছ থেকে আবার বিশেষভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়।
বাইয়াতুর রিজওয়ান
ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে বাইয়াতুর রিজওয়ান সংগঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) স্বপ্নের মাধ্যমে ওমরাহ করার ব্যাপারে আদিষ্ট হলে ১ হাজার ৪০০ সাহাবির একটি দল নিয়ে মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া এলাকায় গিয়ে যাত্রাবিরতি করেন এবং মক্কার নেতৃত্বে থাকা কুরাইশ সরদারদের কাছে এ ব্যাপারে খবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তখনো মুসলমানদের সঙ্গে মক্কার কাফিরদের যুদ্ধাবস্থা ছিল।
নবী (সা.) হজরত ওসমান (রা.)-কে দূত বানিয়ে মক্কায় পাঠান এবং নির্দেশনা দেন, ‘তুমি গিয়ে তাদের বলে দাও—আমরা যুদ্ধ করার জন্য আসিনি; ওমরাহ পালন করার জন্য এসেছি। তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াতও পেশ করো।’ ওসমান (রা.) নবীজির বার্তা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের পৌঁছে দিলেন। কুরাইশ নেতারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল এবং ওসমানকে দীর্ঘসময় মক্কায় আটকে রাখল। এতে হুদাইবিয়ায় অবস্থানরত মুসলমানদের মধ্যে হজরত ওসমান (রা.)-কে শহীদ করে দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এ কথা রাসুল (সা.)-এর কানে পৌঁছালে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে যতক্ষণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, ততক্ষণ আমরা এ স্থান ত্যাগ করব না।’
এরপর সব সাহাবিকে ডেকে শপথাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। তাঁরা অঙ্গীকার করলেন যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করবেন না এবং নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করে যুদ্ধে অবিচল থাকবেন। শপথের পর দেখা গেল, ওসমান (রা.) সুস্থভাবে ফিরে এলেন। ফলে আর যুদ্ধের পথে যেতে হলো না।
এই শপথ অনুষ্ঠান হয়েছিল হুদায়বিয়ার একটি গাছের নিচে। সাহাবিদের এভাবে জানের বিনিময়ে শপথ করার ব্যাপারটি মহান আল্লাহর ভীষণ পছন্দ হয়েছিল। তিনি পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করলেন এবং বাইয়াতুর রিজওয়ানে অংশ নেওয়া সবার প্রতি তাঁর সন্তুষ্টির ঘোষণা দেন। এরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।’ (সুরা ফাতহ: ১৮)
ওয়াজ মাহফিল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। আবহমানকাল থেকে বাঙালি মুসলিম সমাজে এটি প্রচলিত। ওয়াজের মঞ্চ থেকে মুসলমানদের আদর্শ মুসলমান হওয়ার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই এসব মাহফিল পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হলে সমাজে নীতিনৈতিকতার চর্চা বাড়বে, অপরাধ প্রবণতা কমবে, সুন্দর ও কল্যাণময় সমাজ গড়ে তোলা সহজ হয়
১১ ঘণ্টা আগেক্যালিগ্রাফি বা লিপিকলা মুসলিম সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামি লিপিকলার সূচনা মূলত পবিত্র কোরআনকে লিখিতরূপে সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর মুসলিম অক্ষরশিল্পীরা এ শিল্পকে যুগে যুগে নান্দনিক সব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত করেন। এখানে মুসলিম লিপিকলার ৫
১২ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা আগের যুগের নবীদের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, নবীগণ বারবার বলেছেন, আমরা তোমাদের কাছে আল্লাহর পথে আহ্বান করার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।
১২ ঘণ্টা আগেনাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বা উপহাস করা গুনাহের কাজ। নাম বিকৃত করা, অসম্পূর্ণ নামে ডাকা কোনো মুমিনের কাজ নয়। কারণ প্রকৃত মুসলিমের কথা বা কাজে অন্য কেউ কষ্ট পেতে পারে না। কারও নাম নিয়ে বিদ্রূপ করা তাকে কষ্ট দেওয়ার নামান্তর। তাই এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
১ দিন আগে