যৌন কেলেঙ্কারিতে সরলেন গেটজ, পাম বন্ডি হচ্ছেন ট্রাম্পের অ্যাটর্নি জেনারেল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ০২
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮: ৫২
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে পুরোনো মিত্র পাম বন্ডিকে বেছে নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

ট্রাম্প প্রশাসনের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে মনোনীত হওয়ার পরপরই যৌন কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে সরে দাঁড়াতে হলো ম্যাট গেটজকে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে পুরোনো মিত্র পাম বন্ডিকে বেছে নিলেন ট্রাম্প। আজ শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

২০১৬ সালের ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পাম বন্ডির। সম্প্রতি এক সমাবেশে তিনি বলেন, ট্রাম্পকে বন্ধু মনে করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আইনের জগতে আছেন বন্ডি। ফ্লোরিডার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

২০১৯ সালে ট্রাম্পের প্রথম সিনেটে অভিশংসন প্রক্রিয়ায় তাঁর আইনজীবী দলের সদস্য ছিলেন বন্ডি। ট্রাম্পের অভিশংসনের বিপক্ষে জনসমর্থন গঠনে কাজ করেন তিনি। এ সময় আইনি পরামর্শদাতা ও আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন বন্ডি। তাঁর সহায়তায় অভিযোগ থেকে মুক্তি পান ট্রাম্প। এ ছাড়া নিউইয়র্কের আদালতে উপস্থিত হয়ে আর্থিক প্রতারণায় অভিযুক্ত ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেন তিনি।

ট্রাম্পের গত প্রশাসনে ড্রাগ ও মাদকের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কমিশনে ছিলেন বন্ডি। ২০২০ সালের নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি করে তাঁকে হারানো হয়েছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। সে সময়ও ট্রাম্পের আইনজীবী দলে ছিলেন পাম বন্ডি।

ট্রাম্পের সাবেক কর্মীদের নিয়ে তৈরি থিঙ্কট্যাংক আমেরিকা ফার্স্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের আইনি শাখার নেতৃত্বেও ছিলেন বন্ডি। এই কর্মীরা ট্রাম্পকে আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, পাম বন্ডি প্রায় ২০ বছর ধরে প্রসিকিউটর ছিলেন। তিনি সহিংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। ফ্লোরিডায় নিরাপদ সড়ক আইন করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প লেখেন, ‘অনেক দিন ধরেই পক্ষপাতদুষ্ট বিচার বিভাগকে আমার ও অন্য রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু আর না। পাম বন্ডি বিচার বিভাগকে নতুন করে সাজাবেন, যার কাজ হবে অপরাধ দমন করে আমেরিকাকে আবারও নিরাপদ করে তোলা (মেক আমেরিকা সেইফ অ্যাগেইন)।’

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় যাত্রায় ট্রাম্পের বিচার বিভাগ সম্পর্কিত পরিকল্পনায় রয়েছে—রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রশাসনকে ব্যবহার বন্ধ করা, মার্কিন সীমান্ত সুরক্ষা, অপরাধী সংগঠনগুলো নির্মূল করা এবং আমেরিকানদের বিচার বিভাগের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা পুনরুদ্ধার করা।

অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পেলে বিচার বিভাগের ১ লাখ ১৫ হাজারেরও বেশি কর্মী এবং প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট পাবেন পাম বন্ডি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বন্ডিকে অভিনন্দন জানিয়ে গেটজ বলেন, সঠিক ব্যক্তি নির্বাচন করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বিচার বিভাগে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনবেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গেটজ বলেন, ‘ওয়াশিংটনে বিতর্ক করে সময় নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। ট্রাম্প প্রশাসনের বিচার বিভাগকে প্রথম দিন থেকেই কার্যকর হতে হবে। তাই আমি অ্যাটর্নি জেনারেলের মনোনয়ন থেকে আমার নাম প্রত্যাহার করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে রক্ষা করবেন এবং ইতিহাসের সফলতম প্রেসিডেন্ট হবেন বলে আমার বিশ্বাস। তাঁর মনোনীত হওয়া আমার জন্য সম্মানের।’

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গেটজকে বিচার বিভাগের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মনোনীত করেন। এর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। যৌন নিপীড়ন ও মাদক সেবনের অভিযোগে গেটজের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছিল। যদিও এসব অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ এবং ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেন তিনি।

ম্যাট গেটজের সরে দাঁড়ানো নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গেটজের সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, এটি নতুন প্রশাসনের অগ্রাধিকারগুলোকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মনোনয়ন থেকে সরে দাঁড়ালেও গেটজ বলেছেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি সব সময় সমর্থন দিয়ে যাবেন এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত