কাতার ছেড়েছেন হামাস নেতারা, গেলেন কোথায়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ০১
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ নেতারা। ছবিটি চলতি বছরের এপ্রিলে তোলা। ছবি: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা কেন্দ্রিক স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের শীর্ষ নেতারা কাতার ত্যাগ করেছেন। তবে দেশটির রাজধানী দোহায় অবস্থিত হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় এখনো বন্ধ হয়নি। গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতারা কাতার ত্যাগ করে তুরস্কে গিয়েছেন এমন গুঞ্জন শোনা গেলেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই, এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে কাতার ত্যাগ করে হামাস নেতারা কোথায় আশ্রয় নিয়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে কাতার সরকারের এক কর্মকর্তা ও ফিলিস্তিনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, হামাসের উপপ্রধান ও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী খলিল আল-হাইয়াও কাতার ত্যাগ করা নেতাদের মধ্যে আছেন।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, হামাসের দপ্তরের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ আছে। এই বিষয়টি এমন এক সময়ে সামনে এল, যখন কাতার ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন, তবে হামাসের দপ্তর এখনো স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, হামাসের আলোচকেরা নিজেদের অবস্থান গোপন রেখেছেন। যাতে তাদের আশ্রয় দেওয়া দেশ বা দেশগুলো কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না পড়ে। তবে তিনি বলেন, খলিল আল-হাইয়া সম্ভবত তুরস্কে আছেন। কারণ গত দুই মাসে তিনি সেখানে কয়েকবার সফর করেছেন।

কাতার ২০১২ সাল থেকে হামাসকে দোহায় রাজনৈতিক কার্যালয় পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর কাতার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে কাতার জানিয়েছিল, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে তাদের উদ্যোগ বন্ধ আছে এবং ‘যখন পক্ষগুলো আন্তরিকভাবে যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহ দেখাবে, তখনই আলোচনা পুনরায় শুরু হবে।’

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি গত মঙ্গলবার বলেন, ‘হামাসের আলোচকেরা এখন দোহায় নেই। তাঁরা বিভিন্ন দেশের রাজধানীতে যাতায়াত করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘দোহায় হামাসের দপ্তর মূলত আলোচনা প্রক্রিয়ার জন্য ছিল। বর্তমানে কোনো মধ্যস্থতা না থাকায় দপ্তরটির কার্যক্রম নেই। তবে দপ্তর স্থায়ীভাবে বন্ধ হলে আমরা তা সরাসরি জানাব।’

এদিকে, হামাস নেতারা তুরস্কের আশ্রয় নিয়েছেন—এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোতে। তবে হামাসের পক্ষ থেকে এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলা হয়েছে, ‘কিছু ইসরায়েলি গণমাধ্যম হামাস নেতাদের কাতার ছেড়ে তুরস্কে যাওয়ার যে খবর প্রকাশ করেছে, তা মিথ্যা।’

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তুর্কি সংবাদমাধ্যম এনটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হামাসের রাজনৈতিক নেতারা মাঝে মাঝে তুরস্কে সফর করেন। তবে তাদের দপ্তর তুরস্কে স্থানান্তরের খবর ভিত্তিহীন।’

এদিকে, হামাস নেতাদের তুরস্কে আশ্রয় নেওয়ার খবরের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতাদের কোথাও আরামে বসবাস করার সুযোগ থাকা উচিত নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু হামাস নেতা যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত। আমরা চাই, তাদের আমাদের কাছে হস্তান্তর হোক।’

তুরস্ক হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে না এবং হামাস নেতারা সেখানে প্রায়ই সময় কাটান। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান হামাসকে প্রতিরোধ আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেন এবং গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের কড়া সমালোচনা করছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত