সদ্য জয় পাওয়া তেলেঙ্গানা রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আনামুলা রেবন্ত রেড্ডির ওপরই ভরসা রাখল কংগ্রেস। পদ নিয়ে প্রতিযোগিতার মধ্যেই আজ বুধবার এই সিদ্ধান্ত জানান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

পাঁচ রাজ্যের মধ্যে তিনটিতে ভোটে জিতলেও বিজেপি এখনো পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য একাধিক নেতা প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।

তবে মাত্র একটিতে জেতা কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দেরি করেনি। দলের মধ্যে বিরোধ থাকলেও ৫৪ বছর বয়সি আক্রমণাত্মক রেবন্ত রেড্ডিকে বেছে নিল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদে শপথ নেবেন রেবন্ত।

এরই মধ্যে কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন রেড্ডি। রাহুল তাকে টুইটে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

তবে রেবন্ত রেড্ডি মুখ্যমন্ত্রী হলেও সরকার ‘ওয়ান ম্যান শো’ হবে না বলে জানিয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে বেনুগোপাল। তিনি পিটিআইকে বলেন, ‘প্রবীণ নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেভাবেই মন্ত্রিসভা হবে।’

একজন উপমুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ করার কথাও চলছে।

রেবন্ত কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন ২০১৭ সালে। তেলুগু দেশম থেকে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তার আগে ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ সংঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির হাত ধরে। ২০১৮ সালের পর থেকে তাঁকে ৯ বার গৃহবন্দী করে রেখেছিল কেসিআরের সরকার।

রেবন্ত অসম্ভব ভালো বক্তা। মানুষের আবেগকে উসকে দিতে পারেন। তাদের কছে নিজের কথা পৌঁছে দিতে পারেন। তাঁদের মতকে প্রভাবিত করতে পারেন। তিনি আক্রমণটাকে বিরোধী শিবিরে নিয়ে যেতে পারেন। তাই দীর্ঘদিনের কংগ্রেসিদের দাবি উপেক্ষা করে তাকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল-খাড়গেরা।

গত কয়েক বছরে রেবন্ত বারবার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাস্তায় নেমেছেন। অনেকবার তাঁকে গৃহবন্দী করে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু গত এক বছর তিনি তাঁর আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়েছিলেন, যার জেরে কংগ্রেস এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে পেরেছে।

তিন রাজ্যে বিজেপি

তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে রীতিমতো সরগরম বিজেপি। রাজস্থানে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধররাজে সিন্ধিয়া নবনির্বাচিত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তাঁর বাড়িতে ২০ জন বিধায়ক গিয়ে বৈঠক করেছেন। বাকিদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করছেন।

কিন্তু বালকনাথ, দিয়া কুমারী, গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতরাও প্রতিযোগিতায় আছেন। আদিত্যনাথের মতো বালকনাথও নাথ সম্প্রদায়ের যোগী। দিয়া কুমারী জয়পুর রাজপরিবারের সদস্য। গজেন্দ্র কেন্দ্রে মন্ত্রী।

মদ্যপ্রদেশে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের পাশাপাশি কেন্দ্রে মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। তাছাড়া নরেন্দ্র সিং তোমরও মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। ছত্তিশগড়েও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী রামন সিংয়ের পাশাপাশি আরো কয়েকজন নেতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছেন।

তবে এক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদি যাঁদের চাইবেন, তাঁরাই মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন। বিজেপির পার্লামন্টারি বোর্ডের বৈঠকে মোদি তাঁর পছন্দের নেতাদের নাম জানাবেন, যাঁরা মুখ্যমন্ত্রী হবেন। মোদি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নতুন মুখদের বেছে নিতে পারেন বলে বিজেপি সূত্র জানাচ্ছে। তবে শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর চাপ দেওয়ার জন্য বসুন্ধরারাজেরাও তৎপর।