কলকাতার গার্ডেন রিচ এলাকায় একটি পাঁচতলা নির্মাণাধীন ভবন ধসে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত আরও ১৫ জন। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে গার্ডেন রিচ এলাকার হাজারি মোল্লা বাগানের বস্তিতে পাঁচতলা ভবনের একটি অংশ ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে থাকতে পারে এমন আরও অনেককে খুঁজে বের করতে তল্লাশি অভিযান চলছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে। স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেন, ‘রোববার গভীর রাতে গার্ডেন রিচ এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ে। আমরা কয়েকজনকে উদ্ধার করেছি। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।’

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে যে, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় এখনো পর্যন্ত প্রায় ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভবনটি ধসে পড়ার আগেই ভবনের গা থেকে কংক্রিটের বিশাল খণ্ড পাশের ঝুপড়িতে পড়েছিল। ভবনটি বেআইনিভাবে বানানো হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল রোববার দিবাগত রাত পৌনে দুইটা নাগাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং উদ্ধার অভিযান খতিয়ে দেখেন।

কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, যে জায়গায় বেআইনিভাবে ভবনটি তৈরি হচ্ছিল সেখানে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। ভবনটি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা মো. ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আইন অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহরের পশ্চিম প্রান্তের আজান মোল্লা লেনে ভবন ধসের স্থান পরিদর্শন করেছেন এবং স্থানীয়দের অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘রমজান মাসে এমন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আমরা সকলে অত্যন্ত মর্মাহত। অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা এটা এবং বেআইনি কাজের জন্য এই ঘটনা ঘটল। উদ্ধারকাজ দ্রুত হচ্ছে।’

এ ছাড়া নিহতদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লাখ রুপি এবং আহতদের ১ লাখ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

উদ্ধারকাজ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা নিচে আটকে আছে তাদের কাছে পৌঁছাতে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে হচ্ছে। এ জন্য আমরা গ্যাস কাটার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করছি। সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে বলে সময় লাগছে।’

রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত দলগুলো এই উদ্ধারকাজে একসঙ্গে কাজ করছিল।