বিভাস রায় চৌধুরী
ভারতের অন্যতম সম্মানীয় সেনাপতি জেনারেল বিপিন রাওয়াত, যিনি ৪৩ বছরের সেনাজীবনে দেশের প্রায় সব প্রান্তে কাজ করেছেন। সঙ্গে এক বছর কঙ্গোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সেনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর পাওয়া পদকের মধ্যে আছে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল, উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল, অতি বিশিষ্ট সেবা মেডেল, যুদ্ধ সেবা মেডেল, সেনা মেডেল, বিশিষ্ট সেনা মেডেল ইত্যাদি।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো ভারতে কখনোই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ছিল না। বরং তিন বাহিনীর তিন প্রধানের মধ্যে সিনিয়র ব্যক্তি চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু কার্গিলের পর থেকেই একজন সর্বাধিনায়কের প্রয়োজন ভারত অনুভব করছিল। বেশ কয়েক বছরের টালবাহানার পরে বর্তমান সরকার এই পদের মঞ্জুরি দেয়। তত দিনে তিন বাহিনীর আলাদা আলাদা কমান্ড ভাগ থেকে সরে এসে চীন বা আমেরিকার স্টাইলে থিয়েটার কমান্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে আর্মি, এয়ারফোর্স, নেভি সম্মিলিতভাবে একই কমান্ডের অধীনে মুখ্যত আর্মি কমান্ডারের আদেশানুযায়ী কাজ করবে বলে ঠিক হয়।
সেই অবস্থায় একজনকে দেশের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। আর সে ক্ষেত্রে সাবেক আর্মি চিফ জেনারেল রাওয়াত ছিলেন একমাত্র পছন্দের ব্যক্তি। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—সব মিলিয়ে তাঁর চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
উত্তর ভারতের গাড়োয়ালিরা এমনিতেই যোদ্ধা জাতি। তাতে জেনারেল রাওয়াত নিজে ছিলেন চতুর্থ প্রজন্মের ভারতীয় সেনা। উত্তর ভারতে সেনাবাহিনীতে ‘সেবা’ করা অত্যন্ত গর্বের বলে মনে করা হয়। জেনারেল রাওয়াতের বাবা ছিলেন গোর্খা রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁর পিতামহ ও প্রপিতামহ দুজনেই কাজ করেছেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। ওদিকে তাঁর মামাদাদু ছিলেন উত্তরকাশীর বিধায়ক। রাজনীতি আর যুদ্ধনীতি একসঙ্গে তাঁর ধমনিতে বইছিল। ফলে যথারীতি বিপিন রাওয়াত নিজেও ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (যা ভারতের প্রায় সমস্ত চিফের প্রথম ট্রেনিং অ্যাকাডেমি) থেকে পাস করে এবং পরে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ট্রেনিং নিয়ে তাঁর বাবা যে রেজিমেন্টের কমান্ডার ছিলেন, সেই ১১ গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন।
পরে জেনারেল বিপিন ৫/১১ গোর্খা রাইফেলস কমান্ড করেন। এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনাবাহিনী, নম্বর ৩ কোর, দক্ষিণ সেনা কমান্ড ইত্যাদিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ আর চিফ অব আর্মি স্টাফে উন্নীত হন তিনি।
বিপিন রাওয়াতের শিক্ষাগত যোগ্যতা যেকোনো শিক্ষাবিদকে লজ্জায় ফেলবে। জেনারেল রাওয়াত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছিলেন। তারপর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন, তিনি সেই কলেজেই বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া ডিফেন্স স্টাডিজে এমফিল করেছিলেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, ডক্টরেট করেন মিলিটারি-মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপরে চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয় মীরাট থেকে। আমেরিকান আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে হায়ার কমান্ড কোর্স করেন তিনি। নিজে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন অনেক দিন। ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ও জেনারেল সুহাগের পরে ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্ট থেকে উঠে আসা বিপিন রাওয়াত ছিলেন তৃতীয় সেনাপ্রধান।
১৯৮৭ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমা নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে সুমদরং ছু ভ্যালিতে। যেখানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ভারতীয় সেনাকে ম্যাকমোহন লাইন থেকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি। সেখানে তখন পাহাড়া দিচ্ছিল রাওয়াতের ব্যাটালিয়ন। কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনা বেশ কয়েকবার অসীম সাহস ও কুশলতা দেখিয়ে সেই দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচায়। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, তাঁর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নম্বর ৩ কোরের কোর কমান্ডার লে. জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
৮ ডিসেম্বর সকালে জেনারেল রাওয়াত দিল্লি থেকে ভিআইপি ফ্লাইটে দক্ষিণ ভারতের কোয়েমাবটুরে আসেন। এখানে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বানানো রানওয়ে ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৪৩ নম্বর উয়িং। এখান থেকে শুরু হয় নীলগিরি পাহাড়। তাঁর গন্তব্য ছিল সেই পাহাড়ের গায়ে ওয়েলিংটনে অবস্থিত ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ। সেখানে তাঁকে বর্তমান ট্রেনি অফিসারদের সম্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু নিয়তির ইচ্ছে ছিল ভিন্ন।
সুলুরের ১০৯ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার একটি মি-১৭ ভি-৫ হেলিকপ্টার নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতে টেক অফ করেন। ওয়েলিংটনে পৌঁছানোর আগেই পাহাড়ের গায়ে হেলিকপ্টার এক অজানা কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে। হেলিকপ্টারে আগুন ধরে যায় এবং ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে একজন বাদে সবাই মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে জেনারেল বিপিওন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা আছেন।
উটির উচ্চতা ২২৪০ মিটার। এই উচ্চতায় মেঘ ও কুয়াশার এক অসাধারণ প্রাকৃতিক খেলা দেখা যায়। দুর্ঘটনার কারণ এখনই বলা মুশকিল। তবে পাহাড়ের খাঁজে দুপুরের দিকে বাতাসের ঘনত্ব হঠাৎ পালটে যাওয়া বা মেঘ কুয়াশার ফলে দৃশ্যমানতার অভাব ঘটতে পারে। তার মধ্য দিয়ে হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়া পাহাড়ি খাদে অবশ্যই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি করে। অনেকেই অবশ্য সন্দেহ করছেন কোনো অন্তর্ঘাতমূলক কাজের। তবে সেই আশঙ্কা একবারে উড়িয়ে না দিলেও জেনারেল রাওয়াতের ওপরে এতটা হুমকি ছিল বলে মনে হয় না।
একজন সেনানায়কের যে ভূমিকা থাকা দরকার, তিনি ঠিক সেই ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে এই দুর্ঘটনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের সেনা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
লেখক: প্রাক্তন ভারতীয় বিমান সেনা। বর্তমানে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালের জ্যেষ্ঠ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।
ভারতের অন্যতম সম্মানীয় সেনাপতি জেনারেল বিপিন রাওয়াত, যিনি ৪৩ বছরের সেনাজীবনে দেশের প্রায় সব প্রান্তে কাজ করেছেন। সঙ্গে এক বছর কঙ্গোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি সেনাবাহিনীতে ভারতীয় সেনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর পাওয়া পদকের মধ্যে আছে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল, উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল, অতি বিশিষ্ট সেবা মেডেল, যুদ্ধ সেবা মেডেল, সেনা মেডেল, বিশিষ্ট সেনা মেডেল ইত্যাদি।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান বা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো ভারতে কখনোই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ছিল না। বরং তিন বাহিনীর তিন প্রধানের মধ্যে সিনিয়র ব্যক্তি চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু কার্গিলের পর থেকেই একজন সর্বাধিনায়কের প্রয়োজন ভারত অনুভব করছিল। বেশ কয়েক বছরের টালবাহানার পরে বর্তমান সরকার এই পদের মঞ্জুরি দেয়। তত দিনে তিন বাহিনীর আলাদা আলাদা কমান্ড ভাগ থেকে সরে এসে চীন বা আমেরিকার স্টাইলে থিয়েটার কমান্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে আর্মি, এয়ারফোর্স, নেভি সম্মিলিতভাবে একই কমান্ডের অধীনে মুখ্যত আর্মি কমান্ডারের আদেশানুযায়ী কাজ করবে বলে ঠিক হয়।
সেই অবস্থায় একজনকে দেশের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। আর সে ক্ষেত্রে সাবেক আর্মি চিফ জেনারেল রাওয়াত ছিলেন একমাত্র পছন্দের ব্যক্তি। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, সরকার, প্রশাসন, সেনাকাঠামো, বৈদেশিক সেনানায়কদের সঙ্গে সম্পর্ক—সব মিলিয়ে তাঁর চেয়ে দক্ষ সেনাপতি ২০১৯ সালের শেষে ভারতে আর কেউ ছিলেন না বললেই চলে। তাই ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে তাঁকেই ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
উত্তর ভারতের গাড়োয়ালিরা এমনিতেই যোদ্ধা জাতি। তাতে জেনারেল রাওয়াত নিজে ছিলেন চতুর্থ প্রজন্মের ভারতীয় সেনা। উত্তর ভারতে সেনাবাহিনীতে ‘সেবা’ করা অত্যন্ত গর্বের বলে মনে করা হয়। জেনারেল রাওয়াতের বাবা ছিলেন গোর্খা রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তাঁর পিতামহ ও প্রপিতামহ দুজনেই কাজ করেছেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। ওদিকে তাঁর মামাদাদু ছিলেন উত্তরকাশীর বিধায়ক। রাজনীতি আর যুদ্ধনীতি একসঙ্গে তাঁর ধমনিতে বইছিল। ফলে যথারীতি বিপিন রাওয়াত নিজেও ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (যা ভারতের প্রায় সমস্ত চিফের প্রথম ট্রেনিং অ্যাকাডেমি) থেকে পাস করে এবং পরে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ট্রেনিং নিয়ে তাঁর বাবা যে রেজিমেন্টের কমান্ডার ছিলেন, সেই ১১ গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন।
পরে জেনারেল বিপিন ৫/১১ গোর্খা রাইফেলস কমান্ড করেন। এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনাবাহিনী, নম্বর ৩ কোর, দক্ষিণ সেনা কমান্ড ইত্যাদিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে ভাইস চিফ অব আর্মি স্টাফ আর চিফ অব আর্মি স্টাফে উন্নীত হন তিনি।
বিপিন রাওয়াতের শিক্ষাগত যোগ্যতা যেকোনো শিক্ষাবিদকে লজ্জায় ফেলবে। জেনারেল রাওয়াত ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছিলেন। তারপর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন, তিনি সেই কলেজেই বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া ডিফেন্স স্টাডিজে এমফিল করেছিলেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, ডক্টরেট করেন মিলিটারি-মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপরে চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয় মীরাট থেকে। আমেরিকান আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে হায়ার কমান্ড কোর্স করেন তিনি। নিজে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন অনেক দিন। ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ও জেনারেল সুহাগের পরে ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্ট থেকে উঠে আসা বিপিন রাওয়াত ছিলেন তৃতীয় সেনাপ্রধান।
১৯৮৭ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমা নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে সুমদরং ছু ভ্যালিতে। যেখানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ভারতীয় সেনাকে ম্যাকমোহন লাইন থেকে এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি। সেখানে তখন পাহাড়া দিচ্ছিল রাওয়াতের ব্যাটালিয়ন। কঙ্গোতে ভারতীয় শান্তি সেনা বেশ কয়েকবার অসীম সাহস ও কুশলতা দেখিয়ে সেই দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচায়। ২০১৫ সালে মিয়ানমারে যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, তাঁর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নম্বর ৩ কোরের কোর কমান্ডার লে. জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
৮ ডিসেম্বর সকালে জেনারেল রাওয়াত দিল্লি থেকে ভিআইপি ফ্লাইটে দক্ষিণ ভারতের কোয়েমাবটুরে আসেন। এখানে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বানানো রানওয়ে ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৪৩ নম্বর উয়িং। এখান থেকে শুরু হয় নীলগিরি পাহাড়। তাঁর গন্তব্য ছিল সেই পাহাড়ের গায়ে ওয়েলিংটনে অবস্থিত ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ। সেখানে তাঁকে বর্তমান ট্রেনি অফিসারদের সম্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু নিয়তির ইচ্ছে ছিল ভিন্ন।
সুলুরের ১০৯ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার একটি মি-১৭ ভি-৫ হেলিকপ্টার নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতে টেক অফ করেন। ওয়েলিংটনে পৌঁছানোর আগেই পাহাড়ের গায়ে হেলিকপ্টার এক অজানা কারণে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে। হেলিকপ্টারে আগুন ধরে যায় এবং ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে একজন বাদে সবাই মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে জেনারেল বিপিওন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা আছেন।
উটির উচ্চতা ২২৪০ মিটার। এই উচ্চতায় মেঘ ও কুয়াশার এক অসাধারণ প্রাকৃতিক খেলা দেখা যায়। দুর্ঘটনার কারণ এখনই বলা মুশকিল। তবে পাহাড়ের খাঁজে দুপুরের দিকে বাতাসের ঘনত্ব হঠাৎ পালটে যাওয়া বা মেঘ কুয়াশার ফলে দৃশ্যমানতার অভাব ঘটতে পারে। তার মধ্য দিয়ে হেলিকপ্টারের উড়ে যাওয়া পাহাড়ি খাদে অবশ্যই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি করে। অনেকেই অবশ্য সন্দেহ করছেন কোনো অন্তর্ঘাতমূলক কাজের। তবে সেই আশঙ্কা একবারে উড়িয়ে না দিলেও জেনারেল রাওয়াতের ওপরে এতটা হুমকি ছিল বলে মনে হয় না।
একজন সেনানায়কের যে ভূমিকা থাকা দরকার, তিনি ঠিক সেই ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে এই দুর্ঘটনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের সেনা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
লেখক: প্রাক্তন ভারতীয় বিমান সেনা। বর্তমানে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালের জ্যেষ্ঠ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।
উত্তর-পূর্ব লেবাননের একটি জরুরি প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন উদ্ধারকর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি
৪ ঘণ্টা আগেস্পেনের একটি বৃদ্ধাশ্রমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১০ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তপক্ষ। আজ শুক্রবার স্পেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এল পেইসের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল-জাজিরা।
৫ ঘণ্টা আগেঅপ্রাপ্তবয়স্ক নারী হলেও সম্মতির ভিত্তিতে তাঁর সঙ্গে যৌনসঙ্গম ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায় দিয়েছে মুম্বাই হাইকোর্ট। আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে সম্মতিকে বৈধতার জন্য যুক্তি হিসেবে প্রদর্শন গ্রহণযোগ্য হবে না।
৯ ঘণ্টা আগেএখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে। অতিরিক্ত ভিড় থেকে মসজিদের কার্যক্রম বিঘ্ন হওয়া ঠেকাতে এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্য সংরক্ষণের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে