রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যু নিয়ে রুশ কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁর মায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন রাশিয়ার একটি আদালত। নাভালনি ফাউন্ডেশনের বরাতে খবরটি দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

রাশিয়ার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ইয়ামালো-নেনেতের একটি কারাগারের বন্দী ছিলেন নাভালনি। সেই কারাগারেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। নাভালনি জালিয়াতি, চরমপন্থীদের সমর্থন দেওয়াসহ একাধিক মামলায় ২০ বছরেরও বেশি সাজা ভোগ করছিলেন।

নাভালনির মা লুডমিলা নাভালনায়া আর্কটিক পেনাল কলোনির বিরুদ্ধে চিকিৎসা সেবায় অনুপযুক্ত বিধান রাখার অভিযোগ করেছিলেন। গত মাসে নাভালনির মৃত্যু ঘোষণা করে রুশ কারা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছিল, ‘নাভালনি হাঁটার পর অসুস্থ বোধ করেন এবং একটু পরই জ্ঞান হারান। দ্রুত চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স দলকে ডাকা হয়। তাঁর জ্ঞান ফিরিয়ে আনা চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। পরে চিকিৎসকেরা তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে।’

অন্যদিকে, নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেই তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।

নাভালনির দল বলছে, নাভালনি কারাগারে কাটানো তিন বছরে অনেকবারই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দিতে ব্যর্থ ছিল কারা কর্তৃপক্ষ। সে জন্য তিনি নিজেও কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। কিন্তু এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছিল।

• মর্গে পাওয়া গেছে নাভালনির থেঁতলানো মরদেহ

নাভালনির ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইভান ঝদানভের দাবি, লুডমিলা নাভালনায়া যে চিঠি পেয়েছেন সেখানে বলা হয়েছে যে, শুধুমাত্র অ্যালেক্সি নাভালনি নিজেই এই দাবির বাদী হতে পারেন।

• আমার স্বামীর সঙ্গে কী করেছেন, পুতিন জবাব দিন: নাভালনির স্ত্রী

ইউলিয়া নাভালনায়াও মামলা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার খবরে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে তিনি দাবি করেছেন যে, আদালতে তার প্রয়াত স্বামীর মৃত্যুর প্রমাণ এড়াতেই মামলাটি খারিজ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র একটি কারণেই মামলাটি খারিজ করা হয়েছিল। কারণ মামলাটি চললে ১৬ ফেব্রুয়ারি কী হয়েছিল সে সম্পর্কে নথি এবং ভিডিও সরবরাহ করতে হবে।’

রুশ কর্তৃপক্ষের দ্বারা নাভালনিকে খুন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন। সে সঙ্গে, নাভালনির মৃত্যুকে পশ্চিমা প্রতিক্রিয়াকে পাগলামি বলে অভিহিত করেছে তারা।