মারুফ ইসলাম
‘কখনো সময় আসে, জীবন মুচকি হাসে…’ কবির সুমনের এই গানের মতো পিটা লিমজারোয়েনরাতের জীবনেও যেন মুচকি হাসির সময় এসেছে। এক লহমায় বদলে গেছে তাঁর জীবনের খোলনলচে। তিনি হতে যাচ্ছেন থাইল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী—এটি এখন থাইল্যান্ডবাসীর কাছে স্পষ্ট।
৪২ বছর বয়সী পিটার কাছেও ব্যাপারটি স্পষ্ট। তিনি মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে, পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্যরা যদি বাধা না দেন এবং আইনি মারপ্যাঁচে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে যদি অযোগ্য ঘোষণা করা না হয়, সে ক্ষেত্রে তিনিই হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
আত্মবিশ্বাসী পিটা এরই মধ্যে আয়োজন করেছেন সংবাদ সম্মেলনের। গতকাল সেই সংবাদ সম্মেলনে ঘরভর্তি সাংবাদিক ও উজ্জ্বল আলোয় ভরা ক্যামেরার সামনে তিনি বলেন, ‘আজ একটি নতুন দিন। এই দিনের সূর্যের আলোর মতোই উজ্জ্বল ও আশায় পরিপূর্ণ।’
গত রোববারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে পিটার দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি (এমএফপি) ও অপর এক বিরোধী দল ফেউ থাই পার্টির কাছে ধরাশায়ী হয়েছে সেনাসমর্থিত ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড থাই নেশন পার্টি।
থাইল্যান্ডের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে এক দশকের সেনাসমর্থিত সরকারকে। বিপরীতে ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়েছে পিটার দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে। ফলে সবচেয়ে বেশি আসনে ভোটে জিতেছে এমএফপি।
সর্বশেষ হিসাবমতে, ৫০০ আসনের নিম্নকক্ষে সর্বোচ্চ ১৫১ আসন পেয়েছে এমএফপি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাসিত নেতা থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার ফেউ থাই পেয়েছে ১৪১ আসন। আর ক্ষমতায় থাকা ইউনাইটেড থাই নেশন রয়েছে পঞ্চম অবস্থানে।
থাইল্যান্ডের নির্বাচনী কাঠামো অনুযায়ী ভোটাররা দুটি ব্যালটে ভোট দিয়ে থাকেন। ভোটাররা চার বছরের জন্য ৪০০ জন স্থানীয় প্রতিনিধি ও ১০০ জন জাতীয় পর্যায়ের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। তাঁদের নিয়ে গঠিত হয় নিম্নকক্ষ; যাকে ‘হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ’ নামে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ, নির্বাচনে জয়ী হতে ২৫১ আসনের দরকার হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে সিনেট সদস্যদের সমর্থনও লাগে। সে ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষের ৫০০ জন ও ২৫০ জন সিনেটর মিলে ঠিক করবেন কে হবেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
এমন পরিস্থিতিতে ফেউ থাই জানিয়েছে, তারা মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি এবং আরও চারটি ছোট দলের সঙ্গে জোট গড়তে রাজি। সেটি হলে নতুন পার্লামেন্টে এই জোটের আসনসংখ্যা দাঁড়াবে ৬০ শতাংশের বেশি।
তারপরও সংকট কাটছে না। ২৫০ আসনের সিনেটকে ভোটে হারাতে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতাও যথেষ্ট নয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সিনেটের সদস্যদের নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচা। এই সদস্যরা পরবর্তী সরকারের আমলেও পার্লামেন্টে যোগ দিতে পারবেন। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, মুভ ফরোয়ার্ড যে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বিজয়ী হয়েছে, সিনেটের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে পারেন, বিশেষ করে রাজতন্ত্রের অবমাননা সম্পর্কিত আইন সংশোধনের প্রস্তাবগুলোতে।
বোঝাই যাচ্ছে, থাইল্যান্ডে আগামী কয়েক দিন রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ দর-কষাকষি চলবে। সামরিক বাহিনী ও তাদের সমর্থকেরা এর সুযোগ নিয়ে বিজয়ী দলগুলোর সরকার গঠনের পথ আটকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক বিশ্লেষক।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা কম, তবে আইনি মারপ্যাঁচে ফেলে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে। এর আগে ২০২০ সালে দলটির পূর্বসূরি ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টির ক্ষেত্রে সেটিই ঘটেছিল।
তবে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির নেতা-কর্মীরা আশাবাদী, তাঁরা সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন এবং পিটা লিমজারোয়েনরাত হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল ব্যাংককে পার্টির সদর দপ্তরে পিটা বলেন, ‘সময় পাল্টে গেছে এবং এখনই সঠিক সময়।’
২০১৯ সালে ফিউচার ফরওয়ার্ড পার্টি থেকে মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন পিটা লিমজারোয়েনরাত। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর রাজনৈতিক জীবন।
ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিশিষ্ট ধনকুবের ও সেনাবাহিনীর কট্টর সমালোচক থানাথর্ন জুয়াংরুংরুংকিত। ২০১৯ সালের নির্বাচনে পরিবর্তনের আওয়াজ তুলে থাইল্যান্ডের রাজনীতির ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টি।
এরপর থাইল্যান্ডের সমাজতন্ত্রপন্থী সামরিক কর্মকর্তা, আমলা এবং বিচারকেরা এক জোট হয়ে সাংবিধানিক আদালতের মাধ্যমে ২০২০ দলটিকে বিলুপ্ত করেন এবং এর নেতাদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করেন। এমপি হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করেন থানাথর্নকেও।
এমন পরিস্থিতিতে ফিউচার ফরোয়ার্ডের উত্তরসূরি হিসেবে গঠন করা হয় মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে। আর এর নতুন নেতা হিসেবে ক্রমশ জনপ্রিয় হতে থাকেন পিটা লিমজারোয়েনরাত।
ফিউচার ফরোয়ার্ডকে নিষিদ্ধ করার পর সংবিধান সংশোধন, নতুন নির্বাচন ও সরকার-সমালোচকদের হয়রানি বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল হাজার হাজার তরুণ।
সেই তরুণেরাই মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির ছায়াতলে আশ্রয় নেয় এবং থাইল্যান্ডের রাজনীতি পরিবর্তনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে থাকে।
২০১৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিলেন পিটা। এ ছাড়া তাঁর সেনা-শাসনবিরোধী ও রাজতন্ত্রবিরোধী সাহসী প্রতিশ্রুতিগুলোও তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়।
পিটা বারবার সংবিধান সংশোধন ও সামরিক শাসনের থাবা থেকে থাইল্যান্ডকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গত এপ্রিলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ডকে অসামরিকীকরণ, গণতন্ত্রীকরণ ও বিকেন্দ্রীকরণ করাই আমার মূল অগ্রাধিকার।’
পিটার জন্ম থাইল্যান্ডের একটি রাজনৈতিক পরিবারে। তাঁর বাবা কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন। চাচা ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সহযোগী।
পিটা লিমজারোয়েনরাত পড়াশোনা করেছেন নিউজিল্যান্ডের একটি স্কুলে। তখনই তাঁর রাজনীতির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাকে নিউজিল্যান্ডের একটি স্কুলে পাঠানো হয়েছিল। তখন তিনটি মাত্র টিভি চ্যানেল ছিল। সেগুলোতে হয় অস্ট্রেলিয়ান সোপ অপেরা হতো, নয়তো সংসদের বিতর্ক দেখানো হতো। ওই বিকর্তগুলো দেখতে দেখতেই আমার রাজনীতির প্রতি আগ্রহ জন্মে।’
পিটা পরবর্তী সময়ে ব্যাংককের থামাসাট ইউনিভার্সিটি থেকে ফিন্যান্সে স্নাতক ডিগ্রি, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক পলিসিতে স্নাতকোত্তর এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
পিটা তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন ব্যবসায়ী হিসেবে। বাবার রেখে যাওয়া রাইস ব্র্যান ওয়েল কোম্পানির হাল ধরেছিলেন তিনি। পরে তিনি থাইল্যান্ডের রাইড শেয়ারিং কোম্পানি গ্র্যাবের নির্বাহী পরিচালকও হয়েছিলেন।
চুটিমা তেনপানার্ট নামের এক থাই অভিনেত্রী ও মডেলকে বিয়ে করেছিলেন পিটা। ২০১৯ সালে এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তবে তাঁদের একমাত্র মেয়ে সাত বছর বয়সী পিপিম বাবা পিটার সঙ্গেই থাকে।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স ও ডয়চে ভেলে
‘কখনো সময় আসে, জীবন মুচকি হাসে…’ কবির সুমনের এই গানের মতো পিটা লিমজারোয়েনরাতের জীবনেও যেন মুচকি হাসির সময় এসেছে। এক লহমায় বদলে গেছে তাঁর জীবনের খোলনলচে। তিনি হতে যাচ্ছেন থাইল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী—এটি এখন থাইল্যান্ডবাসীর কাছে স্পষ্ট।
৪২ বছর বয়সী পিটার কাছেও ব্যাপারটি স্পষ্ট। তিনি মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে, পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্যরা যদি বাধা না দেন এবং আইনি মারপ্যাঁচে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে যদি অযোগ্য ঘোষণা করা না হয়, সে ক্ষেত্রে তিনিই হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
আত্মবিশ্বাসী পিটা এরই মধ্যে আয়োজন করেছেন সংবাদ সম্মেলনের। গতকাল সেই সংবাদ সম্মেলনে ঘরভর্তি সাংবাদিক ও উজ্জ্বল আলোয় ভরা ক্যামেরার সামনে তিনি বলেন, ‘আজ একটি নতুন দিন। এই দিনের সূর্যের আলোর মতোই উজ্জ্বল ও আশায় পরিপূর্ণ।’
গত রোববারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে পিটার দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি (এমএফপি) ও অপর এক বিরোধী দল ফেউ থাই পার্টির কাছে ধরাশায়ী হয়েছে সেনাসমর্থিত ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড থাই নেশন পার্টি।
থাইল্যান্ডের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে এক দশকের সেনাসমর্থিত সরকারকে। বিপরীতে ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়েছে পিটার দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে। ফলে সবচেয়ে বেশি আসনে ভোটে জিতেছে এমএফপি।
সর্বশেষ হিসাবমতে, ৫০০ আসনের নিম্নকক্ষে সর্বোচ্চ ১৫১ আসন পেয়েছে এমএফপি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাসিত নেতা থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার ফেউ থাই পেয়েছে ১৪১ আসন। আর ক্ষমতায় থাকা ইউনাইটেড থাই নেশন রয়েছে পঞ্চম অবস্থানে।
থাইল্যান্ডের নির্বাচনী কাঠামো অনুযায়ী ভোটাররা দুটি ব্যালটে ভোট দিয়ে থাকেন। ভোটাররা চার বছরের জন্য ৪০০ জন স্থানীয় প্রতিনিধি ও ১০০ জন জাতীয় পর্যায়ের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। তাঁদের নিয়ে গঠিত হয় নিম্নকক্ষ; যাকে ‘হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ’ নামে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ, নির্বাচনে জয়ী হতে ২৫১ আসনের দরকার হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে সিনেট সদস্যদের সমর্থনও লাগে। সে ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষের ৫০০ জন ও ২৫০ জন সিনেটর মিলে ঠিক করবেন কে হবেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
এমন পরিস্থিতিতে ফেউ থাই জানিয়েছে, তারা মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি এবং আরও চারটি ছোট দলের সঙ্গে জোট গড়তে রাজি। সেটি হলে নতুন পার্লামেন্টে এই জোটের আসনসংখ্যা দাঁড়াবে ৬০ শতাংশের বেশি।
তারপরও সংকট কাটছে না। ২৫০ আসনের সিনেটকে ভোটে হারাতে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতাও যথেষ্ট নয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সিনেটের সদস্যদের নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচা। এই সদস্যরা পরবর্তী সরকারের আমলেও পার্লামেন্টে যোগ দিতে পারবেন। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, মুভ ফরোয়ার্ড যে প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বিজয়ী হয়েছে, সিনেটের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে পারেন, বিশেষ করে রাজতন্ত্রের অবমাননা সম্পর্কিত আইন সংশোধনের প্রস্তাবগুলোতে।
বোঝাই যাচ্ছে, থাইল্যান্ডে আগামী কয়েক দিন রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ দর-কষাকষি চলবে। সামরিক বাহিনী ও তাদের সমর্থকেরা এর সুযোগ নিয়ে বিজয়ী দলগুলোর সরকার গঠনের পথ আটকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক বিশ্লেষক।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা কম, তবে আইনি মারপ্যাঁচে ফেলে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে। এর আগে ২০২০ সালে দলটির পূর্বসূরি ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টির ক্ষেত্রে সেটিই ঘটেছিল।
তবে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির নেতা-কর্মীরা আশাবাদী, তাঁরা সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন এবং পিটা লিমজারোয়েনরাত হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল ব্যাংককে পার্টির সদর দপ্তরে পিটা বলেন, ‘সময় পাল্টে গেছে এবং এখনই সঠিক সময়।’
২০১৯ সালে ফিউচার ফরওয়ার্ড পার্টি থেকে মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন পিটা লিমজারোয়েনরাত। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর রাজনৈতিক জীবন।
ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিশিষ্ট ধনকুবের ও সেনাবাহিনীর কট্টর সমালোচক থানাথর্ন জুয়াংরুংরুংকিত। ২০১৯ সালের নির্বাচনে পরিবর্তনের আওয়াজ তুলে থাইল্যান্ডের রাজনীতির ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টি।
এরপর থাইল্যান্ডের সমাজতন্ত্রপন্থী সামরিক কর্মকর্তা, আমলা এবং বিচারকেরা এক জোট হয়ে সাংবিধানিক আদালতের মাধ্যমে ২০২০ দলটিকে বিলুপ্ত করেন এবং এর নেতাদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করেন। এমপি হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করেন থানাথর্নকেও।
এমন পরিস্থিতিতে ফিউচার ফরোয়ার্ডের উত্তরসূরি হিসেবে গঠন করা হয় মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিকে। আর এর নতুন নেতা হিসেবে ক্রমশ জনপ্রিয় হতে থাকেন পিটা লিমজারোয়েনরাত।
ফিউচার ফরোয়ার্ডকে নিষিদ্ধ করার পর সংবিধান সংশোধন, নতুন নির্বাচন ও সরকার-সমালোচকদের হয়রানি বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল হাজার হাজার তরুণ।
সেই তরুণেরাই মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির ছায়াতলে আশ্রয় নেয় এবং থাইল্যান্ডের রাজনীতি পরিবর্তনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে থাকে।
২০১৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিলেন পিটা। এ ছাড়া তাঁর সেনা-শাসনবিরোধী ও রাজতন্ত্রবিরোধী সাহসী প্রতিশ্রুতিগুলোও তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়।
পিটা বারবার সংবিধান সংশোধন ও সামরিক শাসনের থাবা থেকে থাইল্যান্ডকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গত এপ্রিলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ডকে অসামরিকীকরণ, গণতন্ত্রীকরণ ও বিকেন্দ্রীকরণ করাই আমার মূল অগ্রাধিকার।’
পিটার জন্ম থাইল্যান্ডের একটি রাজনৈতিক পরিবারে। তাঁর বাবা কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন। চাচা ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সহযোগী।
পিটা লিমজারোয়েনরাত পড়াশোনা করেছেন নিউজিল্যান্ডের একটি স্কুলে। তখনই তাঁর রাজনীতির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাকে নিউজিল্যান্ডের একটি স্কুলে পাঠানো হয়েছিল। তখন তিনটি মাত্র টিভি চ্যানেল ছিল। সেগুলোতে হয় অস্ট্রেলিয়ান সোপ অপেরা হতো, নয়তো সংসদের বিতর্ক দেখানো হতো। ওই বিকর্তগুলো দেখতে দেখতেই আমার রাজনীতির প্রতি আগ্রহ জন্মে।’
পিটা পরবর্তী সময়ে ব্যাংককের থামাসাট ইউনিভার্সিটি থেকে ফিন্যান্সে স্নাতক ডিগ্রি, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক পলিসিতে স্নাতকোত্তর এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
পিটা তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন ব্যবসায়ী হিসেবে। বাবার রেখে যাওয়া রাইস ব্র্যান ওয়েল কোম্পানির হাল ধরেছিলেন তিনি। পরে তিনি থাইল্যান্ডের রাইড শেয়ারিং কোম্পানি গ্র্যাবের নির্বাহী পরিচালকও হয়েছিলেন।
চুটিমা তেনপানার্ট নামের এক থাই অভিনেত্রী ও মডেলকে বিয়ে করেছিলেন পিটা। ২০১৯ সালে এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তবে তাঁদের একমাত্র মেয়ে সাত বছর বয়সী পিপিম বাবা পিটার সঙ্গেই থাকে।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স ও ডয়চে ভেলে
উত্তর-পূর্ব লেবাননের একটি জরুরি প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন উদ্ধারকর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি
২ ঘণ্টা আগেস্পেনের একটি বৃদ্ধাশ্রমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১০ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তপক্ষ। আজ শুক্রবার স্পেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এল পেইসের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল-জাজিরা।
৩ ঘণ্টা আগেঅপ্রাপ্তবয়স্ক নারী হলেও সম্মতির ভিত্তিতে তাঁর সঙ্গে যৌনসঙ্গম ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায় দিয়েছে মুম্বাই হাইকোর্ট। আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে সম্মতিকে বৈধতার জন্য যুক্তি হিসেবে প্রদর্শন গ্রহণযোগ্য হবে না।
৭ ঘণ্টা আগেএখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে। অতিরিক্ত ভিড় থেকে মসজিদের কার্যক্রম বিঘ্ন হওয়া ঠেকাতে এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্য সংরক্ষণের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে