বাবার ৫ বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য ছেড়ে সন্ন্যাসী হয়েছেন সিরিপান্নো

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২: ৪৬
বৌদ্ধ ভিক্ষু আজহান সিরিপান্নো। ছবি: সংগৃহীত

থাই-মালয়েশীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসেবে পরিচিত আজহান সিরিপান্নো। অনেকেই মনে করেন, তাঁর জীবনের ছায়া অবলম্বনেই কানাডিয়ান লেখক রবিন শর্মা লিখেছেন ‘দ্য মঙ্ক হু সোল্ড হিজ ফ্যারারি’ বইটি।

অনেকেই বইটির কাল্পনিক চরিত্র জুলিয়ান ম্যান্টেলের বাস্তব রূপ মনে করেন সিরিপান্নোকে। তবে সিরিপান্নোর জীবন শুধু গল্প নয়। তিনি বাস্তবেই ত্যাগ করেছেন, তাঁর বাবার ৫ বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্য। সাদাসিধে এক আধ্যাত্মিক জীবন বেছে নিয়েছেন তিনি।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সিরিপান্নো মালয়েশিয়ার তৃতীয় ধনী ব্যক্তি আনন্দা কৃষ্ণনের একমাত্র পুত্র। আনন্দা কৃষ্ণনের ব্যবসার পরিধি টেলিকম, স্যাটেলাইট, মিডিয়া, তেল, গ্যাস এবং রিয়েল এস্টেট পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি এয়ারসেল ফোন কোম্পানির মালিক।

সিরিপান্নো ছোটবেলা থেকেই তাঁর বাবার বিশাল সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তবে ১৮ বছর বয়সে তিনি সব ছেড়ে বেছে নেন সন্ন্যাসের পথ। সিরিপান্নোর এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন তাঁর বাবাও। আনন্দা কৃষ্ণন নিজেও একজন ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ এবং দাতব্য কর্মকাণ্ডে জড়িত।

জানা যায়, সিরিপান্নোর মা মমওয়াজারংসে সুপ্রিন্দা চাক্রাবান থাই রাজপরিবারের সদস্য। তাই থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে সিরিপান্নোর সম্পর্ক অনেক ঘনিষ্ঠ ছিল। এই সম্পর্কই তাঁকে আধ্যাত্মিক পথ বেছে নিতে প্রভাবিত করেছে।

থাইল্যান্ডে মাত্র ১৮ বছর বয়সে মায়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই মজার ছলে একটি আশ্রমে কিছুদিনের জন্য সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেছিলেন সিরিপান্নো। শুরুতে এটি নিছক কৌতূহলের বশে হলেও পরে তা তাঁর জীবনকেই বদলে দেয়। এরপর গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত দাও দুম মঠের অভিভাবক হিসেবে বসবাস করছেন।

সিরিপান্নো এবং তাঁর দুই বোন লন্ডনে বড় হয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন এবং আটটি ভাষায় দক্ষ। বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি তাঁর উন্মুক্ত মানসিকতা তাঁকে বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষায় আকৃষ্ট করেছে।

সিরিপান্নো এখন দানের ওপর নির্ভর করেই জীবনযাপন করেন। তবে বৌদ্ধ ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো পারিবারিক সম্পর্ক। তাই তিনি মাঝে মাঝে তাঁর বাবার সঙ্গে দেখা করতে যান এবং সাময়িকভাবে পুরোনো জীবনযাত্রায় ফিরে যান।

সিরিপান্নোর গল্প শুনে অনেকেই মনে করেন, বৈষয়িক সুখের বাইরেও জীবনের একটি সৌন্দর্য আছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত