ফখরুল ইসলাম
দুই দশক পর আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানে দেশটি ছেড়ে দলে দলে পালাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংবাদমাধ্যম, সর্বত্র চোখে পড়ছে আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়তে চাওয়ার কাকুতিমিনতির চিত্র। তবে কূটনৈতিক যোগাযোগ ছাড়া আফগানিস্তান ছাড়ার সম্ভাবনা সে দেশের সব নাগরিকের জন্যই অত্যন্ত ক্ষীণ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাত এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ২২ লাখ শরণার্থী এরাই মধ্যে সীমান্ত দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। দেশটির অভ্যন্তরে গৃহহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ৩৫ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিক। এদের প্রায় প্রত্যেকেরই আপন মাতৃভূমি থেকে পালানো ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর একজন মুখপাত্র বলেন, আফগানদের অধিকাংশই বৈধ উপায়ে দেশ ছাড়তে পারছে না। যারা বিপদে পড়তে পারে তাদের দেশ ত্যাগের স্পষ্ট কোনো উপায় নেই। তালেবান গোষ্ঠীর পুনরুত্থানের আগেই নিরাপত্তার অভাবে ৫ লাখ ৫০ আফগান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
তবে শত বাধা পেরিয়ে কিছু শরণার্থী দেশটি থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পেয়েছেন। তালেবানদের কাবুল নিয়ন্ত্রণের পরপরই পাকিস্তানে কয়েক হাজার আফগান আশ্রয় নিয়েছেন। আরেক সীমান্তবর্তী দেশ উজবেকিস্তানের তাঁবুতে বসবাস করছেন আরও প্রায় দেড় হাজার সাধারণ মানুষ। পালানোর চেষ্টায় মরিয়া হাজার হাজার মানুষ ছুটেছেন কাবুল বিমানবন্দরের দিকে।
ন্যাটোর এক কর্মকর্তা জানান, ১৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার সাধারণ মানুষ বিমানযোগে ভিনদেশে পালিয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কতজন আফগান নাগরিক তা স্পষ্ট নয়। সব মিলিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন ৩৫ লাখ আফগান নাগরিক।
এদিকে, এ বছর তীব্র খরা এবং খাদ্য সংকটের মধ্যে দিয়ে গেছে আফগানিস্তানের বেশির ভাগ অঞ্চল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) জুন মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থাৎ প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাবারের অভাবে দিনযাপন করছেন।
আফগান শরণার্থীরা যাচ্ছে কোথায়?
গত বছর সবচেয়ে বেশি শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান এবং ইরান। ইউএনএইচসিআর জানায়, প্রায় ১৫ লাখ আফগান শরণার্থী ২০২০ সালে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া ইরানে আশ্রয় নিয়েছেন ৭ লাখ ৮০ হাজার শরণার্থী। শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি। দেশটিতে অবস্থান করছেন ১ লাখ ৮১ হাজার শরণার্থী। অপরদিকে ১ লাখ ২৯ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন তুরস্কে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় ৪৬ হাজার ৬০০, ফ্রান্সে ৪৫ হাজার ১০০, গ্রিসে ৪১ হাজার ২০০, সুইডেনে ৩১ হাজার ৩০০, সুইজারল্যান্ডে ১৫ হাজার ৪০০, ভারতে ১৫ হাজার ১০০, ইতালিতে ১৩ হাজার ৪০০, যুক্তরাজ্যে ১২ হাজার ৬০০, অস্ট্রেলিয়ায় ১২ হাজার ৪০০, বেলজিয়ামে ৮ হাজার ৯০০, ইন্দোনেশিয়ায় ৭ হাজার ৬০০ আফগান শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন।
যেসব দেশ আফগান শরণার্থীদের শীর্ষ গন্তব্য হতে যাচ্ছে:
ইরান
আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য এরই মধ্যে শিবির নির্মাণ করেছে ইরান কর্তৃপক্ষ। তালেবানের কাবুল দখলের পর থেকেই শরণার্থীদের ঢল নেমেছে ইরানে। এসব শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী তিনটি প্রদেশে শিবির নির্মাণ করা হয়েছে। অবশ্য তেহরান জানিয়েছে, অবস্থার উন্নতি হলে তাদের আবার নিজ দেশে ফিরতে হবে।
পাকিস্তান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত জুনে জানিয়েছিলেন, তালেবান আফগান দখল করে নিলে সীমান্ত বন্ধ করে দেবে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের একটি সীমান্ত প্রবেশ পথ এখনো খোলা রয়েছে। যদিও ওই প্রবেশ পথে কড়া টহল বসিয়েছে তালেবান।
তাজিকিস্তান
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী দেশটিতে এ পর্যন্ত কতজন আফগান প্রবেশ করেছে তার কোনো সঠিক হিসেব নেই। তবে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক হাজার শরণার্থী তাজিকিস্তান আশ্রয় নিয়েছেন। দেশটির সরকার জানায়, তাজিকিস্তান ১ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত আছে।
উজবেকিস্তান
সম্প্রতি উজবেকিস্তানে প্রায় ১৫০০ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তারা শিবির বানিয়ে থাকছেন। তবে এখন উজবেকিস্তানে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভিসা ছাড়া কাউকেই উজবেকিস্তানে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না তারা।
যুক্তরাজ্য
ধীরে ধীরে ২০ হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাজ্য। দেশটির লক্ষ্য হচ্ছে প্রথম বছরে ৫ হাজার আফগানকে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আফগানিস্তানের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা নারী ও শিশুদের পাশাপাশি ধর্মীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্র
অভিবাসন ভিসার জন্য আবেদনকারী আফগান শরণার্থীদের সহায়তা করতে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ঠিক কতজন আফগান শরণার্থী আশ্রয় দেবে তা এখনো স্পষ্ট করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
কানাডা
তালেবানদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে জানিয়েছে কানাডা। আফগানিস্তানের প্রায় ২০ হাজার নাগরিককে পুনর্বাসন করবে জাস্টিন ট্রুডোর দেশটি।
অস্ট্রেলিয়া
এরই মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পালানো ৩ হাজার নাগরিককে অভিবাসন ভিসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে স্কট মরিসন সরকার এ সংখ্যা আর বাড়ানো হবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না। সেসময় বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে ইইউভুক্ত দেশসমূহে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
জার্মানি
এরই মধ্যে কিছু আফগান শরণার্থীকে গ্রহণ করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে জার্মানি। তবে সংখ্যার পরিমাণ উল্লেখ করেনি দেশটি। এর আগে ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যের বহুসংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে নিজ দেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। তবে মার্কেল জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করাই এখন জার্মানির মূল লক্ষ্য।
ফ্রান্স
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের অবৈধ অভিবাসীদের থেকে ইউরোপকে রক্ষা করতে হবে। তবে আফগানিস্তানে যারা সবচেয়ে বিপদে আছে তাদের আশ্রয় দেবে দেশটি। বর্তমানের এ পরিস্থিতি ইউরোপ একা মোকাবিলা করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।
অস্ট্রিয়া
কোনো আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না অস্ট্রিয়া। তবে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তদবির করেছে তার দেশ।
সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ডও জানিয়েছে যে তারা আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবে না।
তুরস্ক
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, আফগানিস্তানকে স্থিতিশীল করতে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করবে তার সরকার। এর পাশাপাশি শরণার্থীদের ঢল ঠেকাতে ইরানের সঙ্গে মিলে দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
উত্তর মেসেডোনিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো
এরই মধ্যে অস্থায়ীভাবে ৪৫০ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া হবে জানিয়েছে উত্তর মেসেডোনিয়া। এ ছাড়া আলবেনিয়া জানিয়েছে, তারা ৩০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। আফগান শরণার্থীদের আশ্রয়ের পরিকল্পনা করছে কসোভোও। তবে দেশটি এখনো কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
উগান্ডা
যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে ২ হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে রাজি উগান্ডার সরকার। দেশটি বর্তমানে আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক শরণার্থীর আশ্রয়স্থল, বিশ্বে তৃতীয়।
দুই দশক পর আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানে দেশটি ছেড়ে দলে দলে পালাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংবাদমাধ্যম, সর্বত্র চোখে পড়ছে আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়তে চাওয়ার কাকুতিমিনতির চিত্র। তবে কূটনৈতিক যোগাযোগ ছাড়া আফগানিস্তান ছাড়ার সম্ভাবনা সে দেশের সব নাগরিকের জন্যই অত্যন্ত ক্ষীণ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাত এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ২২ লাখ শরণার্থী এরাই মধ্যে সীমান্ত দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। দেশটির অভ্যন্তরে গৃহহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ৩৫ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিক। এদের প্রায় প্রত্যেকেরই আপন মাতৃভূমি থেকে পালানো ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর একজন মুখপাত্র বলেন, আফগানদের অধিকাংশই বৈধ উপায়ে দেশ ছাড়তে পারছে না। যারা বিপদে পড়তে পারে তাদের দেশ ত্যাগের স্পষ্ট কোনো উপায় নেই। তালেবান গোষ্ঠীর পুনরুত্থানের আগেই নিরাপত্তার অভাবে ৫ লাখ ৫০ আফগান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
তবে শত বাধা পেরিয়ে কিছু শরণার্থী দেশটি থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পেয়েছেন। তালেবানদের কাবুল নিয়ন্ত্রণের পরপরই পাকিস্তানে কয়েক হাজার আফগান আশ্রয় নিয়েছেন। আরেক সীমান্তবর্তী দেশ উজবেকিস্তানের তাঁবুতে বসবাস করছেন আরও প্রায় দেড় হাজার সাধারণ মানুষ। পালানোর চেষ্টায় মরিয়া হাজার হাজার মানুষ ছুটেছেন কাবুল বিমানবন্দরের দিকে।
ন্যাটোর এক কর্মকর্তা জানান, ১৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার সাধারণ মানুষ বিমানযোগে ভিনদেশে পালিয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কতজন আফগান নাগরিক তা স্পষ্ট নয়। সব মিলিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন ৩৫ লাখ আফগান নাগরিক।
এদিকে, এ বছর তীব্র খরা এবং খাদ্য সংকটের মধ্যে দিয়ে গেছে আফগানিস্তানের বেশির ভাগ অঞ্চল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) জুন মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থাৎ প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাবারের অভাবে দিনযাপন করছেন।
আফগান শরণার্থীরা যাচ্ছে কোথায়?
গত বছর সবচেয়ে বেশি শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান এবং ইরান। ইউএনএইচসিআর জানায়, প্রায় ১৫ লাখ আফগান শরণার্থী ২০২০ সালে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া ইরানে আশ্রয় নিয়েছেন ৭ লাখ ৮০ হাজার শরণার্থী। শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি। দেশটিতে অবস্থান করছেন ১ লাখ ৮১ হাজার শরণার্থী। অপরদিকে ১ লাখ ২৯ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন তুরস্কে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় ৪৬ হাজার ৬০০, ফ্রান্সে ৪৫ হাজার ১০০, গ্রিসে ৪১ হাজার ২০০, সুইডেনে ৩১ হাজার ৩০০, সুইজারল্যান্ডে ১৫ হাজার ৪০০, ভারতে ১৫ হাজার ১০০, ইতালিতে ১৩ হাজার ৪০০, যুক্তরাজ্যে ১২ হাজার ৬০০, অস্ট্রেলিয়ায় ১২ হাজার ৪০০, বেলজিয়ামে ৮ হাজার ৯০০, ইন্দোনেশিয়ায় ৭ হাজার ৬০০ আফগান শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন।
যেসব দেশ আফগান শরণার্থীদের শীর্ষ গন্তব্য হতে যাচ্ছে:
ইরান
আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য এরই মধ্যে শিবির নির্মাণ করেছে ইরান কর্তৃপক্ষ। তালেবানের কাবুল দখলের পর থেকেই শরণার্থীদের ঢল নেমেছে ইরানে। এসব শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী তিনটি প্রদেশে শিবির নির্মাণ করা হয়েছে। অবশ্য তেহরান জানিয়েছে, অবস্থার উন্নতি হলে তাদের আবার নিজ দেশে ফিরতে হবে।
পাকিস্তান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত জুনে জানিয়েছিলেন, তালেবান আফগান দখল করে নিলে সীমান্ত বন্ধ করে দেবে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের একটি সীমান্ত প্রবেশ পথ এখনো খোলা রয়েছে। যদিও ওই প্রবেশ পথে কড়া টহল বসিয়েছে তালেবান।
তাজিকিস্তান
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী দেশটিতে এ পর্যন্ত কতজন আফগান প্রবেশ করেছে তার কোনো সঠিক হিসেব নেই। তবে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক হাজার শরণার্থী তাজিকিস্তান আশ্রয় নিয়েছেন। দেশটির সরকার জানায়, তাজিকিস্তান ১ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত আছে।
উজবেকিস্তান
সম্প্রতি উজবেকিস্তানে প্রায় ১৫০০ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তারা শিবির বানিয়ে থাকছেন। তবে এখন উজবেকিস্তানে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভিসা ছাড়া কাউকেই উজবেকিস্তানে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না তারা।
যুক্তরাজ্য
ধীরে ধীরে ২০ হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাজ্য। দেশটির লক্ষ্য হচ্ছে প্রথম বছরে ৫ হাজার আফগানকে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আফগানিস্তানের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা নারী ও শিশুদের পাশাপাশি ধর্মীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্র
অভিবাসন ভিসার জন্য আবেদনকারী আফগান শরণার্থীদের সহায়তা করতে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ঠিক কতজন আফগান শরণার্থী আশ্রয় দেবে তা এখনো স্পষ্ট করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
কানাডা
তালেবানদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে জানিয়েছে কানাডা। আফগানিস্তানের প্রায় ২০ হাজার নাগরিককে পুনর্বাসন করবে জাস্টিন ট্রুডোর দেশটি।
অস্ট্রেলিয়া
এরই মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পালানো ৩ হাজার নাগরিককে অভিবাসন ভিসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে স্কট মরিসন সরকার এ সংখ্যা আর বাড়ানো হবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না। সেসময় বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে ইইউভুক্ত দেশসমূহে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
জার্মানি
এরই মধ্যে কিছু আফগান শরণার্থীকে গ্রহণ করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে জার্মানি। তবে সংখ্যার পরিমাণ উল্লেখ করেনি দেশটি। এর আগে ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যের বহুসংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে নিজ দেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। তবে মার্কেল জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করাই এখন জার্মানির মূল লক্ষ্য।
ফ্রান্স
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের অবৈধ অভিবাসীদের থেকে ইউরোপকে রক্ষা করতে হবে। তবে আফগানিস্তানে যারা সবচেয়ে বিপদে আছে তাদের আশ্রয় দেবে দেশটি। বর্তমানের এ পরিস্থিতি ইউরোপ একা মোকাবিলা করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।
অস্ট্রিয়া
কোনো আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না অস্ট্রিয়া। তবে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তদবির করেছে তার দেশ।
সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ডও জানিয়েছে যে তারা আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবে না।
তুরস্ক
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, আফগানিস্তানকে স্থিতিশীল করতে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করবে তার সরকার। এর পাশাপাশি শরণার্থীদের ঢল ঠেকাতে ইরানের সঙ্গে মিলে দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
উত্তর মেসেডোনিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো
এরই মধ্যে অস্থায়ীভাবে ৪৫০ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া হবে জানিয়েছে উত্তর মেসেডোনিয়া। এ ছাড়া আলবেনিয়া জানিয়েছে, তারা ৩০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। আফগান শরণার্থীদের আশ্রয়ের পরিকল্পনা করছে কসোভোও। তবে দেশটি এখনো কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
উগান্ডা
যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে ২ হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে রাজি উগান্ডার সরকার। দেশটি বর্তমানে আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক শরণার্থীর আশ্রয়স্থল, বিশ্বে তৃতীয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেছেন। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে তাঁরা সাক্ষাৎ করেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস ইরানের দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে
২৯ মিনিট আগেইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ আছে সেগুলোর সার্বভৌম মালিকানা ফিলিস্তিনি জনগণের। এই বিষয়টির স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবটিতে পশ্চিমা বিশ্বের অনেকগুলো দেশ সমর্থন দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে এই প্রস্তাব পাস হয়
১ ঘণ্টা আগেচিকিৎসার জন্য ২০০৭ সালে ভারতের আসামে গিয়েছিল বাংলাদেশের সিলেটের এক পরিবার। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালে পরিবারের এক মেয়ে স্থানীয় এক যুবকের প্রেমে পড়ে। শেষমেশ তাঁকে বিয়ে করে সেখানেই থেকে যান তিনি। তবে তাঁর ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ কখনোই প্রশস্ত ছিল না। ২০১৯ সালে বিজেপি সরকার হিন্দুস
২ ঘণ্টা আগেউত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন আত্মঘাতী ড্রোনের ব্যাপক উৎপাদন শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর মতে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এমন ড্রোনের ব্যবহার বাড়ার প্রেক্ষাপটে সামরিক মতবাদেও দ্রুত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আজ শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ—এর বরাত দিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদ
৩ ঘণ্টা আগে