অনলাইন ডেস্ক
তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে পর পর দুটি ভয়ানক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে। ধসে পড়ে বহু ভবন। ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। এ দুর্যোগে দুই হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই মর্মান্তিক দুর্যোগ আগের ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলোর স্মৃতি নাড়া দিচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে সর্বশেষ মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ধসে পড়া স্থাপনার স্তূপ থেকে এখনো হতাহতদের বের করে আনা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প গাজিয়ানটেপ শহরের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমন সোয়লু বলেছেন, ‘ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে গাজিয়ানটেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালটিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির এবং কিলিসের ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
প্রথম ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে তখন বাসিন্দারা ঘুমিয়ে ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভবন ধসে পড়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত বাসিন্দারা অন্ধকার রাস্তায় জড়ো হন।
প্রথম আঘাতের কয়েক ঘণ্টা পরই আরেকটি বড় মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের এলবিস্তান এলাকায়। ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। তবে কোনো আফটার শক ছিল না।
বিশ্বে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলো একটু স্মরণ করা যাক:
আফগানিস্তান, জুন ২০২২
৬ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে পূর্ব আফগানিস্তান কেঁপে ওঠে। ভূমিকম্পটি পাকতিকা প্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে সাড়ে ৪ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস বা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিহত হয় কমপক্ষে ১ হাজার মানুষ। আহত হয় দেড় হাজারেরও বেশি।
হাইতি, আগস্ট ২০২১
২০২১ সালের ১৪ আগস্ট ভোরে ৭ দশমিক ২ মাত্রার এ ভূমিকম্প হাইতিকে কাঁপিয়ে দেয়। এতে দেশটির হাসপাতাল, স্কুল এবং বাড়িঘর ধসে পড়ে। প্রাণ হারায় ২ হাজার ২০০–এর বেশি মানুষ। ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়ে দেশ।
নেপাল, এপ্রিল ২০১৫
নেপালে ২০১৫ সালের এ ভূমিকম্প দেশটিতে ১৯৩৪ সালের পর সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি বলে ধরা হয়। রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এতে ৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। আহতের সংখ্যা ছিল ২১ হাজার। কাঠমাণ্ডুর ৮০ শতাংশ মন্দির এবং ঐতিহাসিক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাটিতে মিশে যায় ৯৮ শতাংশ ঘরবাড়ি।
পাকিস্তান, সেপ্টেম্বর ২০১৩
পাকিস্তানের প্রত্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে বেলুচিস্তানের আওয়ারান জেলার প্রায় সব গ্রামের বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। নিহত হয় ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ।
এ ভূমিকম্প করাচি, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদ, লারকানা এবং লাহোরসহ পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলোতেও অনুভূত হয়েছিল। ভূমিকম্পটি ভারতের দিল্লিতেও অনুভূত হয়, সেখানে কিছু ভবন কেঁপে উঠেছিল। এ ছাড়া কেন্দ্রস্থল থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে ওমানের রাজধানী মাস্কটেও হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
জাপান, মার্চ ২০১১
জাপানের তোহোকুতে ২০১১ সালের এ ভূমিকম্প ও সুনামিকে একুশ শতকের দুর্যোগগুলোর মধ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটির মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৯। এতে ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায় বা নিখোঁজ হয়। আহত হন আরও ৬ হাজার জন।
ভূমিকম্পটি জাপানের উপকূলে ভয়াবহ সুনামির সৃষ্টি করে। এর ক্ষয়ক্ষতি ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিপর্যয়ের সমপর্যায়ের ছিল। ফুকুশিমার ঘটনাকে ১৯৮৬ সালে চেরনোবিলের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপর্যয় বলে বিবেচনা করা হয়।
হাইতি, জানুয়ারি ২০১০
২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি হাইতির রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্সের চারপাশে ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ২ লাখ ৩০ হাজার লোক মারা যায় এবং অসংখ্য ভবন ভেঙে পড়ে। ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে কিউবা এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলোও কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী ভূমিকম্পগুলোর একটি এটি। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কমপক্ষে ৫২টি আফটার শক হাইতিকে লন্ডভন্ড করে দেয়। আফটার শকগুলোরও মাত্রা ছিল গড়ে ৪ দশমিক ৫। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আনুমানিক নিহত ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার। সরকারি হিসাবে নিহত ২ লাখ ২০ হাজার থেকে ৩ লাখ ১৬ হাজার। অবশ্য পরে সরকারি হিসাব নিয়ে বিতর্ক ওঠে।
এ ছাড়া সরকারি হিসাবে, আড়াই লাখ আবাসিক ভবন এবং ৩০ হাজার বাণিজ্যিক ভবন ধসে গেছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চীন, মে ২০০৮
চীনের ২০০৮ সালে মারাত্মক এ ভূমিকম্পে ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান। এ ছাড়া ১ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন। ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্প পশ্চিম চীনের পাহাড়ি প্রদেশ সিচুয়ানে আঘাত হানে। লক্ষাধিক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। আনুমানিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এ ভূমিকম্পে প্রায় ১০ হাজার শিশু বিদ্যালয়ের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা গিয়েছিল। যা দেশটিতে জনরোষ সৃষ্টি করে। পরে সরকারি তদন্তে দেখা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় ২০ শতাংশই ছিল অনিরাপদ।
কাশ্মীর, মে ২০০৫
কাশ্মীরে ২০০৫ সালে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এ ভূমিকম্পে ৭৫ হাজার মানুষ মারা যায়। গৃহহীন হয়ে পড়ে লক্ষাধিক। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে এ ভূমিকম্প হওয়ায় উদ্ধারকাজে জটিলতার সৃষ্টি হয়। ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়ে।
আফগানিস্তান, ১৯৯৮
১৯৯৮ সালে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে দুটি ভূমিকম্প হয়েছিল। হিন্দুকুশের তাখার প্রদেশে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ভূমিকম্পে প্রায় ২ হাজার ৩০০ লোক নিহত হয়। যদিও অনেকের অনুমান প্রকৃত সংখ্যা ৪ হাজার। মে মাসে একই অঞ্চলে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার দ্বিতীয় ভূমিকম্পে প্রায় ৪ হাজার লোক নিহত হয়।
চিলি, মে ১৯৬০
রিখটার স্কেলে ৯ দশমিক ৫ মাত্রার এ ভূমিকম্প চিলির ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। এতে ৩০ ফুট উচ্চতার সুনামির সৃষ্টি হয়। ধ্বংস হয় অসংখ্য গ্রাম। এ দুর্যোগে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে নানা মত রয়েছে। তবে কমপক্ষে ২ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
জাপান, সেপ্টেম্বর ১৯২৩
জাপানে ১৯২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর এক মনোরম বিকেলে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্প টোকিও-ইয়োকোহামা শহরকে তছনছ করে দিয়েছিল। সর্বনাশা এ ভূমিকম্প শহর দুটির দু–একটি ভবন ছাড়া সব ভবন মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল। ৪০ ফুট উচ্চতার সুনামি হয়েছিল।
ভূমিকম্পের পরে অগ্নিকাণ্ড এবং টর্নেডো আঘাত হানে। সরকারি কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা জানিয়েছিলেন ১ লাখ ৪৩ হাজার। কর্মকর্তারা আরও বলেছিলেন যে, ইয়োকোহামার ভবনগুলোর ৯০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিছু ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আর টোকিওর প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে পর পর দুটি ভয়ানক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে। ধসে পড়ে বহু ভবন। ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। এ দুর্যোগে দুই হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই মর্মান্তিক দুর্যোগ আগের ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলোর স্মৃতি নাড়া দিচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে সর্বশেষ মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ধসে পড়া স্থাপনার স্তূপ থেকে এখনো হতাহতদের বের করে আনা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প গাজিয়ানটেপ শহরের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমন সোয়লু বলেছেন, ‘ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে গাজিয়ানটেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালটিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির এবং কিলিসের ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
প্রথম ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে তখন বাসিন্দারা ঘুমিয়ে ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভবন ধসে পড়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত বাসিন্দারা অন্ধকার রাস্তায় জড়ো হন।
প্রথম আঘাতের কয়েক ঘণ্টা পরই আরেকটি বড় মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের এলবিস্তান এলাকায়। ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। তবে কোনো আফটার শক ছিল না।
বিশ্বে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলো একটু স্মরণ করা যাক:
আফগানিস্তান, জুন ২০২২
৬ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে পূর্ব আফগানিস্তান কেঁপে ওঠে। ভূমিকম্পটি পাকতিকা প্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে সাড়ে ৪ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস বা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিহত হয় কমপক্ষে ১ হাজার মানুষ। আহত হয় দেড় হাজারেরও বেশি।
হাইতি, আগস্ট ২০২১
২০২১ সালের ১৪ আগস্ট ভোরে ৭ দশমিক ২ মাত্রার এ ভূমিকম্প হাইতিকে কাঁপিয়ে দেয়। এতে দেশটির হাসপাতাল, স্কুল এবং বাড়িঘর ধসে পড়ে। প্রাণ হারায় ২ হাজার ২০০–এর বেশি মানুষ। ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়ে দেশ।
নেপাল, এপ্রিল ২০১৫
নেপালে ২০১৫ সালের এ ভূমিকম্প দেশটিতে ১৯৩৪ সালের পর সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি বলে ধরা হয়। রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এতে ৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। আহতের সংখ্যা ছিল ২১ হাজার। কাঠমাণ্ডুর ৮০ শতাংশ মন্দির এবং ঐতিহাসিক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাটিতে মিশে যায় ৯৮ শতাংশ ঘরবাড়ি।
পাকিস্তান, সেপ্টেম্বর ২০১৩
পাকিস্তানের প্রত্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে বেলুচিস্তানের আওয়ারান জেলার প্রায় সব গ্রামের বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। নিহত হয় ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ।
এ ভূমিকম্প করাচি, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদ, লারকানা এবং লাহোরসহ পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলোতেও অনুভূত হয়েছিল। ভূমিকম্পটি ভারতের দিল্লিতেও অনুভূত হয়, সেখানে কিছু ভবন কেঁপে উঠেছিল। এ ছাড়া কেন্দ্রস্থল থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে ওমানের রাজধানী মাস্কটেও হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
জাপান, মার্চ ২০১১
জাপানের তোহোকুতে ২০১১ সালের এ ভূমিকম্প ও সুনামিকে একুশ শতকের দুর্যোগগুলোর মধ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটির মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৯। এতে ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায় বা নিখোঁজ হয়। আহত হন আরও ৬ হাজার জন।
ভূমিকম্পটি জাপানের উপকূলে ভয়াবহ সুনামির সৃষ্টি করে। এর ক্ষয়ক্ষতি ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিপর্যয়ের সমপর্যায়ের ছিল। ফুকুশিমার ঘটনাকে ১৯৮৬ সালে চেরনোবিলের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপর্যয় বলে বিবেচনা করা হয়।
হাইতি, জানুয়ারি ২০১০
২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি হাইতির রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্সের চারপাশে ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ২ লাখ ৩০ হাজার লোক মারা যায় এবং অসংখ্য ভবন ভেঙে পড়ে। ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে কিউবা এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলোও কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী ভূমিকম্পগুলোর একটি এটি। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কমপক্ষে ৫২টি আফটার শক হাইতিকে লন্ডভন্ড করে দেয়। আফটার শকগুলোরও মাত্রা ছিল গড়ে ৪ দশমিক ৫। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আনুমানিক নিহত ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার। সরকারি হিসাবে নিহত ২ লাখ ২০ হাজার থেকে ৩ লাখ ১৬ হাজার। অবশ্য পরে সরকারি হিসাব নিয়ে বিতর্ক ওঠে।
এ ছাড়া সরকারি হিসাবে, আড়াই লাখ আবাসিক ভবন এবং ৩০ হাজার বাণিজ্যিক ভবন ধসে গেছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চীন, মে ২০০৮
চীনের ২০০৮ সালে মারাত্মক এ ভূমিকম্পে ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান। এ ছাড়া ১ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন। ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্প পশ্চিম চীনের পাহাড়ি প্রদেশ সিচুয়ানে আঘাত হানে। লক্ষাধিক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। আনুমানিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এ ভূমিকম্পে প্রায় ১০ হাজার শিশু বিদ্যালয়ের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা গিয়েছিল। যা দেশটিতে জনরোষ সৃষ্টি করে। পরে সরকারি তদন্তে দেখা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় ২০ শতাংশই ছিল অনিরাপদ।
কাশ্মীর, মে ২০০৫
কাশ্মীরে ২০০৫ সালে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এ ভূমিকম্পে ৭৫ হাজার মানুষ মারা যায়। গৃহহীন হয়ে পড়ে লক্ষাধিক। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে এ ভূমিকম্প হওয়ায় উদ্ধারকাজে জটিলতার সৃষ্টি হয়। ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়ে।
আফগানিস্তান, ১৯৯৮
১৯৯৮ সালে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে দুটি ভূমিকম্প হয়েছিল। হিন্দুকুশের তাখার প্রদেশে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ভূমিকম্পে প্রায় ২ হাজার ৩০০ লোক নিহত হয়। যদিও অনেকের অনুমান প্রকৃত সংখ্যা ৪ হাজার। মে মাসে একই অঞ্চলে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার দ্বিতীয় ভূমিকম্পে প্রায় ৪ হাজার লোক নিহত হয়।
চিলি, মে ১৯৬০
রিখটার স্কেলে ৯ দশমিক ৫ মাত্রার এ ভূমিকম্প চিলির ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। এতে ৩০ ফুট উচ্চতার সুনামির সৃষ্টি হয়। ধ্বংস হয় অসংখ্য গ্রাম। এ দুর্যোগে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে নানা মত রয়েছে। তবে কমপক্ষে ২ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
জাপান, সেপ্টেম্বর ১৯২৩
জাপানে ১৯২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর এক মনোরম বিকেলে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্প টোকিও-ইয়োকোহামা শহরকে তছনছ করে দিয়েছিল। সর্বনাশা এ ভূমিকম্প শহর দুটির দু–একটি ভবন ছাড়া সব ভবন মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল। ৪০ ফুট উচ্চতার সুনামি হয়েছিল।
ভূমিকম্পের পরে অগ্নিকাণ্ড এবং টর্নেডো আঘাত হানে। সরকারি কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা জানিয়েছিলেন ১ লাখ ৪৩ হাজার। কর্মকর্তারা আরও বলেছিলেন যে, ইয়োকোহামার ভবনগুলোর ৯০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিছু ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আর টোকিওর প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মহারানি লক্ষ্মীবাই মেডিকেল কলেজের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (এনআইসিইউ) এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীরা তৎক্ষণাৎ জানালা ভেঙে রোগীদের বের করার চেষ্টা করেন। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকল বাহিনী।
৭ মিনিট আগেউত্তর-পূর্ব লেবাননের একটি জরুরি প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন উদ্ধারকর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি
৯ ঘণ্টা আগেস্পেনের একটি বৃদ্ধাশ্রমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১০ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তপক্ষ। আজ শুক্রবার স্পেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এল পেইসের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল-জাজিরা।
১০ ঘণ্টা আগেঅপ্রাপ্তবয়স্ক নারী হলেও সম্মতির ভিত্তিতে তাঁর সঙ্গে সঙ্গম ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায় দিয়েছে মুম্বাই হাইকোর্ট। আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে সম্মতিকে বৈধতার জন্য যুক্তি হিসেবে প্রদর্শন গ্রহণযোগ্য হবে না।
১৪ ঘণ্টা আগে