পুরো পৃথিবীকে নাড়া দিয়েছেন কেনিয়ার বৃক্ষপ্রেমী স্কুলবালিকা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ২৩: ১১

মাত্র ১৪ বছর বয়সে পরিবেশগত সক্রিয়তার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন কেনিয়ার মেয়ে এলিয়ান ওয়ানজিকু ক্লিস্টুন। পরিবেশবাদী এমন কর্মকাণ্ডের জন্য দেশটির নোবেল বিজয়ী প্রয়াত রাজনীতিবিদ ওয়াঙ্গারি মাথাই হলেন তাঁর অনুপ্রেরণা। 

বুধবার বিবিসি জানিয়েছে, মাত্র চার বছর বয়সেই মাথাইয়ের কথা জানতে পেরেছিলেন এলিয়ান। কেনিয়ায় লাখ লাখ গাছ লাগানো মাথাইয়ের জীবনী থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সেই বয়সেই তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেছিলেন। তবে মাথাইয়ের জীবনের রাজনৈতিক সংগ্রামের কথা ভেবে শুরুর দিকে এলিয়ানকে কিছুটা দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তাঁর মা। কিন্তু নিজের চিন্তায় এলিয়ান ছিলেন স্থির। তিনি বৃক্ষরোপণে মনোনিবেশ করেছিলেন এবং গাছের প্রতি আবেগকে লালন করেছিলেন। 

২০১৭ সালে মাত্র সাত বছর বয়সেই পরিবারের সহযোগিতায় ‘চিলড্রেন উইথ নেচার’ নামে একটি অলাভজনক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন এলিয়ান। অন্যান্য শিশুদের পরিবেশগত বিভিন্ন দিক সচেতন করে তোলাই এই সংস্থাটির কাজ। ২০২০ সালে এলিয়ানের যখন ১০ বছর বয়স, তত দিনে তিনি ব্যক্তিগতভাবেই প্রায় আড়াই লাখ গাছ রোপণ করেছিলেন। তাঁকে অনুসরণ করে শুধু কেনিয়ায় নয়, অন্যান্য দেশেও বৃক্ষপ্রেমীদের একটি সমাজ গড়ে উঠেছিল। তত দিনে সম্মিলিতভাবে এই সমাজ উগান্ডা, পোল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ আরও কয়েকটি দেশে ১৩ লাখের বেশি গাছ লাগিয়েছিল। 

এভাবে জলবায়ু সক্রিয়তার জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আন্তর্জাতিকভাবে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন এলিয়ান। এই বয়সেই তিনি বিশ্বজুড়ে জলবায়ু নিয়ে প্রচারাভিযান এবং ইভেন্টগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ২০২৩ সালের জলবায়ু সম্মেলনেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এই সম্মেলনে কেনিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত দেশটির ক্রমবর্ধমান ম্যালেরিয়া সমস্যা নিয়ে তিনি ভাষণ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি গ্র্যামি-বিজয়ী পপ তারকা মেজি আলাবি এবং ফুটবল কিংবদন্তি ডেভিড বেকহ্যামের সঙ্গেও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। দেখা করেছেন, ব্রিটিশ রাজা চার্লসের সঙ্গেও। 

222সর্বশেষ ‘সেভ-আওয়ার-ওয়াইল্ডলাইফ’-এর একটি তথ্যচিত্রেও জলবায়ু নিয়ে সক্রিয় থাকতে নিজের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এলিয়ান। এই উদ্যোগটি বন্যপ্রাণী, বিশেষ করে হাতির ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছে। তথ্যচিত্রে এলিয়ান মত দিয়েছেন, শিকারের চেয়েও হাতিদের জন্য একটি বড় হুমকি এখন আবহাওয়ার ধরন বদলে যাওয়া। 

বিবিসি জানিয়েছে, জলবায়ু নিয়ে গণমাধ্যম এবং অ্যাডভোকেসিতে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলিয়ান। তবে এই ব্যস্ততা তাঁকে গাছ লাগানোর মিশন থেকে তাঁকে নড়াতে পারেনি। মরুকরণ ঠেকাতে আফ্রিকা মহাদেশের গ্রিন বেল্টে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করছেন। নিজের ১৮ তম জন্মদিনের মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক ট্রিলিয়ন গাছ রোপণের অনুঘটক হতে চান তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত