ফ্যাক্টচেক /ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী ও পুরুষের মধ্যে দেয়াল ভাঙার ভিডিও ভাইরাল, এটি কবেকার

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক  
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ১৫
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ২২

নারীদের জন্য কড়াকড়ি পোশাকবিধি রয়েছে ইরানে। দেশটিতে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। তবে এই বাধ্যবাধকতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়েই হয়েছে প্রতিবাদ। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি দেশটিতে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক নারী। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওর বরাত দিয়ে গত শনিবার রয়টার্স জানায়, পোশাকবিধির প্রতিবাদ জানিয়ে ইরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শরীরের পোশাক খুলে শুধু অন্তর্বাস পরে হেঁটেছেন এক নারী। এর আগে ২০২২ সালে ঠিকমতো হিজাব না পরায় ইরানের নীতি পুলিশের হাতে ইরানি কুর্দি নারী মাশা আমিনি এক তরুণীর মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। সে সময় দেশটিতে বিপুলসংখ্যক নারী রাস্তায় নেমে পোশাকবিধির প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি পোশাকবিধির বিরুদ্ধে শুধু অন্তর্বাস পরে ওই নারীর হাঁটার ঘটনায় ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ইরানে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত লিঙ্গ বিভাজনকারী দেয়াল ভাঙছে শিক্ষার্থীরা, ভিডিওটি কবেকার। ছবি: ফেসবুক
ইরানে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত লিঙ্গ বিভাজনকারী দেয়াল ভাঙছে শিক্ষার্থীরা, ভিডিওটি কবেকার। ছবি: ফেসবুক

ভাইরাল ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, ‘ইরানি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে যে দেয়াল তৈরি করা হয়েছিল তা শিক্ষার্থীরা ভেঙে ফেলেছে।’ ৫৯ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একদল শিক্ষার্থী লিঙ্গ বিভাজনকারী একটি দেয়াল ভেঙে ফেলছে। গত বুধবার (৬ নভেম্বর) ‘জামান ফিরোজ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অর্ধলক্ষ বার দেখা হয়েছে, শেয়ার হয়েছে ৩ শতাধিক। পোস্টটি কমেন্টবক্সে অনেকেই ভিডিওটি কখনকার সেটি জানতে চেয়ে মন্তব্য করেছেন।

ভিডিওটি থেকে কিছু কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে ‘ফ্রম ইরান’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এটি পাওয়া যায়। ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর পোস্ট করা হয়। পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ইরানের বন্দর আব্বাস শহরের হরমোজগান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘আজাদি, আজাদি’ স্লোগান দিয়ে ছেলে-মেয়েদের আলাদা করতে ক্যাফেটেরিয়ায় তৈরি লিঙ্গ বিভাজনকারী দেয়াল ভেঙে ফেলে।

ইরানে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত লিঙ্গ বিভাজনকারী দেয়াল ভাঙছে শিক্ষার্থীরা, ভিডিওটি ২০২২ সালের। ছবি: আল জাজিরা
ইরানে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত লিঙ্গ বিভাজনকারী দেয়াল ভাঙছে শিক্ষার্থীরা, ভিডিওটি ২০২২ সালের। ছবি: আল জাজিরা

এই সূত্রে পরবর্তী অনুসন্ধানে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর ভিডিওটি অ্যাকাউন্টটিতে টুইট করা হয়। এ থেকে জানা যায়, মাশা আমিনির পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর পর সারা দেশে চলমান প্রতিবাদের মধ্যে ইরানের হরমোজগান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেখানকার ক্যাফেটেরিয়ায় তৈরি লিঙ্গ বিভাজনকারী দেয়াল ভেঙে ফেলে।

অর্থাৎ, ইরানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের আলাদা করতে ক্যাফেটেরিয়ায় তৈরি লিঙ্গ বিভাজনকারী দেয়াল ভাঙার ভিডিওটি ২০২২ সালের। সম্প্রতি পোশাকবিধির বিরুদ্ধে শুধু অন্তর্বাস পরে এক নারীর হাঁটার ঘটনায় পুরোনো ভিডিওটি সময় উল্লেখ ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত