ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু এখন রীতিমতো আতঙ্কের নাম! প্রতি বছরই দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান বহু মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৪৭১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল রোববার (৩ নভেম্বর) পর্যন্ত এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১৪ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। এ পরিস্থিতিতে মশা থেকে বাঁচতে মানুষের মধ্যে নানা ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার।
এই টোটকা যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে, তেমনি প্রচার হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও। মশা তাড়াতে টোটকাটি কতটা কার্যকর?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই টোটকা ব্যবহারের নিয়ম বলা হয়েছে, একটা লেবু আধ খণ্ড করে কেটে কয়েকটি লবঙ্গ গেঁথে দিতে হবে। শুধু লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোনায় রেখে দিতে হবে। জানালার গ্রিলেও রাখা যেতে পারে। এতে মশার উপদ্রব কমে যাবে। টোটকাটি সম্পর্কে আরও বলা হয়, কিছুদিন পরপর লেবু বদলে নিলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পেস্টিসাইড ইনফরমেশন সেন্টারের মতে, বিভিন্ন ধরনের মশা প্রতিরোধক মানবদেহের গন্ধ আড়াল করে। তখন মশা তাঁর অবস্থান শনাক্ত করতে পারে না, ফলে মশার কামড়ও খেতে হয় না। মশার ঘ্রাণেন্দ্রীয় খুব শক্তিশালী। এরা শিকার খোঁজে ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে। মানুষের ঘামের গন্ধ এবং নিশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা কার্বন ডাই অক্সাইড এদের আকর্ষণ করে। তাই, যখন কোনো প্রতিরোধক ব্যবহার করা হয়, তখন সেটি ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে, ফলে মশার জন্য শিকারের (মানুষ বা অন্যান্য প্রাণী) অবস্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে জানায়, মশা প্রতিরোধকের কার্যকারিতা এবং এর স্থায়ীত্বের ওপর বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কিত। এর মধ্যে—মশার প্রজাতি, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, ব্যক্তির ঘামের পরিমাণ এবং ওই ব্যক্তি মশাকে কতটা আকৃষ্ট করছেন ইত্যাদি।
এশিয়ান জার্নাল অব রিসার্চ ইন ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধ অনুসারে, লবঙ্গ এবং লেবুর খোসা থেকে প্রস্তুত এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে কার্যকর। একাধিত পরীক্ষায় এটি প্রমাণিত। এ ছাড়া লেমন গ্রাস, ইউক্যালিপটাস, তুলসী, কমলাসহ কিছু উদ্ভিদেরও মশা প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গ থেকে প্রস্তুত তেল প্রায় ৭৬ মিনিট পর্যন্ত মশা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। অন্য কিছু পরীক্ষায় এর কার্যকারিতার স্থায়ীত্ব দুই থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত পাওয়া গেছে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, মশার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে লবঙ্গ থেকে প্রস্তুত তেলের ঘনত্ব সাধারণ তেলের প্রায় পাঁচ গুণ হওয়া প্রয়োজন।
আমেরিকার মশা নিয়ন্ত্রণ সংস্থার টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ও মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ জো কনলন ইউএসএ টুডেকে বলেন, ‘লেবু এবং লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে ভালো প্রতিরোধক। তবে সরাসরি লেবু এবং লবঙ্গের মিশ্রণ সমান কার্যকর হবে এমনটা নিশ্চিত নয়।’
জো কনলন বলেন, ‘লবঙ্গের তেল মশা তাড়াতে কার্যকর, তবে এটি শুধু তখনই কাজ করে যখন এই তেলের খুব বেশি ঘন হয়। অর্থাৎ তেলের ঘনত্ব এতটাই বেশি হতে হবে যে এটি ত্বকে লাগালে পোড়া বা ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। মশা তাড়াতে কার্যকর মাত্রায় লবঙ্গের তেল ব্যবহারের জন্য প্রায় ২৫ শতাংশ ঘনত্ব প্রয়োজন। তবে এটি বাস্তবসম্মত নয়, কারণ এত বেশি ঘন তেল ত্বকে লাগালে ক্ষতি হতে পারে। লেবুতে শুধু লবঙ্গ গেঁথে দিয়ে মশা তাড়ানো সম্ভব নয়।’
কনলন আরও বলেন, ‘যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ) লেবু ও লবঙ্গের মিশ্রণ পরীক্ষা করে অনুমোদন দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এটা সত্য বলে মানতে রাজি নই। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস, জিকা, ম্যালেরিয়া এবং আরও অনেক মশাবাহিত রোগের কারণে এটি জীবন–মৃত্যুর বিষয়। তাই স্রেফ যেকোনো কিছু নিয়ে মশা প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’
মশা তাড়াতে আধাকাটা লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখার এই টোটকা কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে প্রচলিত। ২০২৩ সালে টোটকাটি শ্রীলঙ্কা ও ভারতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় বার্তা সংস্থা এএফপি শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের (এনডিসিইউ) চিকিৎসক ডা. লাহিরু কোদিতুভাক্কুর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তিনি এএফপিকে জানান, দাবিটি অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। লেবু ও লবঙ্গের ঘন তেলই কেবল ক্ষতিকর প্রাণী ও মশার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধক হিসেবে বিবেচিত হয়। তবুও এগুলোর কার্যকারিতা মাত্র কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মশা তাড়াতে আধকাটা লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখার এই টোটকার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
একই টোটকা সম্পর্কে আমেরিকার মশা নিয়ন্ত্রণ সংস্থার আরেকজন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড্যানিয়েল মার্কোস্কি এএফপিকে বলেন, ‘উদ্ভিদের নির্যাস বা এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে কিছু পরিমাণে কার্যকরী হতে পারে। কিন্তু শুধু আস্ত লবঙ্গ বা অন্য কোনো ফলের সঙ্গে একত্রে বাড়ির চারপাশে রাখলে মশা তাড়ানো যাবে, এটি নিশ্চিত নয়।’
ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান নিউজ মিটার টোটকাটি সম্পর্কে জানতে দেশটির একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট ফিজিশিয়ান অধ্যাপক ড. এস. বিজয় মোহনের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তিনি নিউজ মিটারকে বলেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপ বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত স্বাস্থ্য টিপস বিশ্বাস করা ঠিক নয়। এই টিপসগুলো নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা নেই। তাই এসব টোটকার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা উল্টো ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।’
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের উন্মুক্ত পিয়ার রিভিউড জার্নাল পিএলওএস ওয়ানে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে লবঙ্গ নির্ভর মশা প্রতিরোধকগুলোকে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাসবাহী মশার বিরুদ্ধে কম কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু এখন রীতিমতো আতঙ্কের নাম! প্রতি বছরই দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান বহু মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৪৭১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল রোববার (৩ নভেম্বর) পর্যন্ত এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১৪ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। এ পরিস্থিতিতে মশা থেকে বাঁচতে মানুষের মধ্যে নানা ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার।
এই টোটকা যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে, তেমনি প্রচার হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও। মশা তাড়াতে টোটকাটি কতটা কার্যকর?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই টোটকা ব্যবহারের নিয়ম বলা হয়েছে, একটা লেবু আধ খণ্ড করে কেটে কয়েকটি লবঙ্গ গেঁথে দিতে হবে। শুধু লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোনায় রেখে দিতে হবে। জানালার গ্রিলেও রাখা যেতে পারে। এতে মশার উপদ্রব কমে যাবে। টোটকাটি সম্পর্কে আরও বলা হয়, কিছুদিন পরপর লেবু বদলে নিলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পেস্টিসাইড ইনফরমেশন সেন্টারের মতে, বিভিন্ন ধরনের মশা প্রতিরোধক মানবদেহের গন্ধ আড়াল করে। তখন মশা তাঁর অবস্থান শনাক্ত করতে পারে না, ফলে মশার কামড়ও খেতে হয় না। মশার ঘ্রাণেন্দ্রীয় খুব শক্তিশালী। এরা শিকার খোঁজে ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে। মানুষের ঘামের গন্ধ এবং নিশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা কার্বন ডাই অক্সাইড এদের আকর্ষণ করে। তাই, যখন কোনো প্রতিরোধক ব্যবহার করা হয়, তখন সেটি ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে, ফলে মশার জন্য শিকারের (মানুষ বা অন্যান্য প্রাণী) অবস্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে জানায়, মশা প্রতিরোধকের কার্যকারিতা এবং এর স্থায়ীত্বের ওপর বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কিত। এর মধ্যে—মশার প্রজাতি, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, ব্যক্তির ঘামের পরিমাণ এবং ওই ব্যক্তি মশাকে কতটা আকৃষ্ট করছেন ইত্যাদি।
এশিয়ান জার্নাল অব রিসার্চ ইন ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধ অনুসারে, লবঙ্গ এবং লেবুর খোসা থেকে প্রস্তুত এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে কার্যকর। একাধিত পরীক্ষায় এটি প্রমাণিত। এ ছাড়া লেমন গ্রাস, ইউক্যালিপটাস, তুলসী, কমলাসহ কিছু উদ্ভিদেরও মশা প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গ থেকে প্রস্তুত তেল প্রায় ৭৬ মিনিট পর্যন্ত মশা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। অন্য কিছু পরীক্ষায় এর কার্যকারিতার স্থায়ীত্ব দুই থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত পাওয়া গেছে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, মশার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে লবঙ্গ থেকে প্রস্তুত তেলের ঘনত্ব সাধারণ তেলের প্রায় পাঁচ গুণ হওয়া প্রয়োজন।
আমেরিকার মশা নিয়ন্ত্রণ সংস্থার টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ও মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ জো কনলন ইউএসএ টুডেকে বলেন, ‘লেবু এবং লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে ভালো প্রতিরোধক। তবে সরাসরি লেবু এবং লবঙ্গের মিশ্রণ সমান কার্যকর হবে এমনটা নিশ্চিত নয়।’
জো কনলন বলেন, ‘লবঙ্গের তেল মশা তাড়াতে কার্যকর, তবে এটি শুধু তখনই কাজ করে যখন এই তেলের খুব বেশি ঘন হয়। অর্থাৎ তেলের ঘনত্ব এতটাই বেশি হতে হবে যে এটি ত্বকে লাগালে পোড়া বা ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। মশা তাড়াতে কার্যকর মাত্রায় লবঙ্গের তেল ব্যবহারের জন্য প্রায় ২৫ শতাংশ ঘনত্ব প্রয়োজন। তবে এটি বাস্তবসম্মত নয়, কারণ এত বেশি ঘন তেল ত্বকে লাগালে ক্ষতি হতে পারে। লেবুতে শুধু লবঙ্গ গেঁথে দিয়ে মশা তাড়ানো সম্ভব নয়।’
কনলন আরও বলেন, ‘যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ) লেবু ও লবঙ্গের মিশ্রণ পরীক্ষা করে অনুমোদন দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এটা সত্য বলে মানতে রাজি নই। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস, জিকা, ম্যালেরিয়া এবং আরও অনেক মশাবাহিত রোগের কারণে এটি জীবন–মৃত্যুর বিষয়। তাই স্রেফ যেকোনো কিছু নিয়ে মশা প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’
মশা তাড়াতে আধাকাটা লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখার এই টোটকা কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে প্রচলিত। ২০২৩ সালে টোটকাটি শ্রীলঙ্কা ও ভারতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় বার্তা সংস্থা এএফপি শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের (এনডিসিইউ) চিকিৎসক ডা. লাহিরু কোদিতুভাক্কুর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তিনি এএফপিকে জানান, দাবিটি অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। লেবু ও লবঙ্গের ঘন তেলই কেবল ক্ষতিকর প্রাণী ও মশার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধক হিসেবে বিবেচিত হয়। তবুও এগুলোর কার্যকারিতা মাত্র কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মশা তাড়াতে আধকাটা লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখার এই টোটকার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
একই টোটকা সম্পর্কে আমেরিকার মশা নিয়ন্ত্রণ সংস্থার আরেকজন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড্যানিয়েল মার্কোস্কি এএফপিকে বলেন, ‘উদ্ভিদের নির্যাস বা এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে কিছু পরিমাণে কার্যকরী হতে পারে। কিন্তু শুধু আস্ত লবঙ্গ বা অন্য কোনো ফলের সঙ্গে একত্রে বাড়ির চারপাশে রাখলে মশা তাড়ানো যাবে, এটি নিশ্চিত নয়।’
ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান নিউজ মিটার টোটকাটি সম্পর্কে জানতে দেশটির একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট ফিজিশিয়ান অধ্যাপক ড. এস. বিজয় মোহনের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তিনি নিউজ মিটারকে বলেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপ বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত স্বাস্থ্য টিপস বিশ্বাস করা ঠিক নয়। এই টিপসগুলো নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা নেই। তাই এসব টোটকার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা উল্টো ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।’
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের উন্মুক্ত পিয়ার রিভিউড জার্নাল পিএলওএস ওয়ানে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে লবঙ্গ নির্ভর মশা প্রতিরোধকগুলোকে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাসবাহী মশার বিরুদ্ধে কম কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক, সোশ্যাল মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভাইরাল, ভুয়া পোস্ট, সংঘর্ষ, রাজধানী, সেনাবাহিনী, বিক্ষোভ, রিকশা
১০ ঘণ্টা আগেদীপ্তির বক্তব্য দাবিতে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নাম ও লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। দীপ্তি চৌধুরীর ছবিযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, ‘আমার নানীর ফুফাতো বোনের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’
১৪ ঘণ্টা আগেআজ শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অডিও রেকর্ড প্রচার করা হয়েছে। তাতে হাসিনাকে কথা বলতে শোনা যায়, গুলি খাওয়ার পর আবু সাঈদকে চার–পাঁচ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
১ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকও। সম্প্রতি সারজিস শিশু মডেল অভিনেত্রী সিমরিন লুবাবাকে ফেসবুকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
২ দিন আগে