রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন পর্যায়ে কেনাকাটায় অনিয়মের কারণে রাষ্ট্রের ২৯ কোটি ৯৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯৬৯ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কোভিডকালে (২০১৯-২০ অর্থবছরে) রাজধানীর কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও সেবা কেনায় এই আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে নিরীক্ষা বিভাগের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) বা সরকারি ক্রয় বিধিমালার বিভিন্ন বিধি লঙ্ঘন করে এসব অনিয়ম করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম), জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান বা পঙ্গু হাসপাতাল, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব অনিয়ম ঘটিয়েছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরপত্র ও চুক্তিপত্র ছাড়াই পণ্য কেনা, মালপত্র সরবরাহ না করা সত্ত্বেও ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করা, প্রস্তাবিত দরের চেয়ে বেশি দরে বিল পরিশোধ, হোটেলে প্রকৃত অবস্থানকারীর চেয়ে বেশি দেখিয়ে বিল পরিশোধ এবং সরকার-নির্ধারিত বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে কেনাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এসব অনিয়ম করা হয়েছে।
নিরীক্ষা বিভাগ থেকে এসব অনিয়মের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হলে অনেক হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জবাবও দেয়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, যদি কেউ দুর্নীতি করে থাকে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তাঁর মতে, কোভিডের সময়ে অনেক ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে কেনাকাটা করতে হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটলে এ ধরনের আপত্তি নমনীয় দৃষ্টিতে দেখার প্রয়োজন আছে।
বেশি দামে ক্রয়, সরবরাহ ছাড়াই বিল
নিরীক্ষা প্রতিবেদনমতে, সরকারনির্ধারিত বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে মেডিকেল সার্জিক্যাল রিকুইজিট (এমএসআর) অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা ইত্যাদি কেনে সরকারি আটটি হাসপাতাল। এর মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি ৭ কোটি ৪৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪০৬ টাকা।
এমএসআরের কোনো সামগ্রী সরবরাহ না করা সত্ত্বেও মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করে। এতে আর্থিক ক্ষতি ৩ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ১৯৩ টাকা।
নিরীক্ষা বিভাগের আপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন দেড় মাস আগে। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। একই ধরনের মন্তব্য মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকেরও।
পিপিআরে সরবরাহকারীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে সামগ্রী কেনার বিধান থাকলেও লেক্সিকোন মার্চেনডাইজের সঙ্গে চুক্তিপত্র ছাড়াই এমএসআর বিল পরিশোধ করে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যের বিতর্কিত ঠিকাদার মোতাজ্জিরুল ইসলাম মিঠুর। এতে সরকারের ক্ষতি ২ কোটি ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭২ টাকা। এমনকি এই বিল প্রদানের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনমতে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডেন্টাল সিবিসিটি ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কিনেছে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৫১ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকা।
হোটেলে অবস্থান ৩৯, বিল পরিশোধ ৬০ জনের
কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল চুক্তি না করেই আবাসিক হোটেল ও খাবারের বিল বাবদ রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেডকে ২ কোটি ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৩০০ টাকা বিল পরিশোধ করেছে।
হোটেল ব্লু বার্ডের প্রস্তাবিত দরের চেয়ে বেশি দরে এবং প্রকৃত অবস্থানকারীর চেয়ে বেশি অবস্থানকারী দেখিয়ে ৮০ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা বিল পরিশোধ করেছে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালের পক্ষ থেকে দেখানো চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, থাকা-খাওয়া বাবদ জনপ্রতি দিতে হবে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। অথচ হোটেলটির চেয়ারম্যানের সই করা দর-প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া হোটেলে অবস্থান করেছেন ৩৯ জন, কিন্তু বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৬০ জনের। কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শিহাব উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে দরপত্রে অনিয়ম
পিপিআর অনুযায়ী আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ, ২০১৫ লঙ্ঘন করে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ অনিয়মিতভাবে বিল পরিশোধ করায় আর্থিক ক্ষতি ৬ কোটি ৩৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। মুগদা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে দরপত্রে নানা অনিয়মের আশ্রয় নেয়।
নিরীক্ষার সময় মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১২১ বাক্স কেমিক্যাল রিএজেন্ট মজুত থাকার কথা। কিন্তু পাওয়া গেছে মাত্র ৪১ বাক্স। বাকি ৮০ বাক্স কীভাবে গায়েব হলো তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি ২ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার ১৭৩ টাকা। আপত্তিতে উল্লিখিত টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে সুপারিশ করেছে নিরীক্ষা দপ্তর।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, কোভিড চলাকালীন তিনি এই প্রতিষ্ঠানে ছিলেন না। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না।
চুক্তি ছাড়া উচ্চ দামে ক্রয়
খাবার সরবরাহকারীর সঙ্গে চুক্তি না করেই বিল প্রদানের মাধ্যমে ৭৪ লাখ ২০ হাজার ৬৭৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কাজটি করেছে বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান।
দরপত্র ছাড়া, চুক্তি না করে, জামানত না নিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান জেএমআই মার্কেটিং লিমিটেডের কাছ থেকে সরাসরি উচ্চ দামে নন-সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস কিনেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে আর্থিক ক্ষতি ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা।
জবাবদিহির আওতায় আনার তাগিদ
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাস্থ্য খাত আগে থেকেই লুটপাটের জায়গা। করোনাকালে সেখানে দুর্নীতির মহোৎসব শুরু হয়েছিল, এটা অনেক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সরকারি কেনাকাটার দুর্নীতির সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশ থাকে। এখন যেহেতু নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে, তাই সরকারের উচিত এগুলো আমলে নিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে জবাবদিহির আওতায় আনা। নয়তো এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে।
স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন পর্যায়ে কেনাকাটায় অনিয়মের কারণে রাষ্ট্রের ২৯ কোটি ৯৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯৬৯ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কোভিডকালে (২০১৯-২০ অর্থবছরে) রাজধানীর কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও সেবা কেনায় এই আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে নিরীক্ষা বিভাগের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) বা সরকারি ক্রয় বিধিমালার বিভিন্ন বিধি লঙ্ঘন করে এসব অনিয়ম করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম), জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান বা পঙ্গু হাসপাতাল, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব অনিয়ম ঘটিয়েছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরপত্র ও চুক্তিপত্র ছাড়াই পণ্য কেনা, মালপত্র সরবরাহ না করা সত্ত্বেও ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করা, প্রস্তাবিত দরের চেয়ে বেশি দরে বিল পরিশোধ, হোটেলে প্রকৃত অবস্থানকারীর চেয়ে বেশি দেখিয়ে বিল পরিশোধ এবং সরকার-নির্ধারিত বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে কেনাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এসব অনিয়ম করা হয়েছে।
নিরীক্ষা বিভাগ থেকে এসব অনিয়মের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হলে অনেক হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জবাবও দেয়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, যদি কেউ দুর্নীতি করে থাকে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তাঁর মতে, কোভিডের সময়ে অনেক ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে কেনাকাটা করতে হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটলে এ ধরনের আপত্তি নমনীয় দৃষ্টিতে দেখার প্রয়োজন আছে।
বেশি দামে ক্রয়, সরবরাহ ছাড়াই বিল
নিরীক্ষা প্রতিবেদনমতে, সরকারনির্ধারিত বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে মেডিকেল সার্জিক্যাল রিকুইজিট (এমএসআর) অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা ইত্যাদি কেনে সরকারি আটটি হাসপাতাল। এর মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি ৭ কোটি ৪৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪০৬ টাকা।
এমএসআরের কোনো সামগ্রী সরবরাহ না করা সত্ত্বেও মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করে। এতে আর্থিক ক্ষতি ৩ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ১৯৩ টাকা।
নিরীক্ষা বিভাগের আপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন দেড় মাস আগে। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। একই ধরনের মন্তব্য মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকেরও।
পিপিআরে সরবরাহকারীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে সামগ্রী কেনার বিধান থাকলেও লেক্সিকোন মার্চেনডাইজের সঙ্গে চুক্তিপত্র ছাড়াই এমএসআর বিল পরিশোধ করে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যের বিতর্কিত ঠিকাদার মোতাজ্জিরুল ইসলাম মিঠুর। এতে সরকারের ক্ষতি ২ কোটি ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭২ টাকা। এমনকি এই বিল প্রদানের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনমতে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডেন্টাল সিবিসিটি ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কিনেছে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৫১ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকা।
হোটেলে অবস্থান ৩৯, বিল পরিশোধ ৬০ জনের
কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল চুক্তি না করেই আবাসিক হোটেল ও খাবারের বিল বাবদ রিজেন্ট ডিসকভারি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেডকে ২ কোটি ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৩০০ টাকা বিল পরিশোধ করেছে।
হোটেল ব্লু বার্ডের প্রস্তাবিত দরের চেয়ে বেশি দরে এবং প্রকৃত অবস্থানকারীর চেয়ে বেশি অবস্থানকারী দেখিয়ে ৮০ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা বিল পরিশোধ করেছে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালের পক্ষ থেকে দেখানো চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, থাকা-খাওয়া বাবদ জনপ্রতি দিতে হবে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। অথচ হোটেলটির চেয়ারম্যানের সই করা দর-প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া হোটেলে অবস্থান করেছেন ৩৯ জন, কিন্তু বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৬০ জনের। কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শিহাব উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে দরপত্রে অনিয়ম
পিপিআর অনুযায়ী আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ, ২০১৫ লঙ্ঘন করে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ অনিয়মিতভাবে বিল পরিশোধ করায় আর্থিক ক্ষতি ৬ কোটি ৩৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। মুগদা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে দরপত্রে নানা অনিয়মের আশ্রয় নেয়।
নিরীক্ষার সময় মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১২১ বাক্স কেমিক্যাল রিএজেন্ট মজুত থাকার কথা। কিন্তু পাওয়া গেছে মাত্র ৪১ বাক্স। বাকি ৮০ বাক্স কীভাবে গায়েব হলো তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি ২ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার ১৭৩ টাকা। আপত্তিতে উল্লিখিত টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে সুপারিশ করেছে নিরীক্ষা দপ্তর।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, কোভিড চলাকালীন তিনি এই প্রতিষ্ঠানে ছিলেন না। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না।
চুক্তি ছাড়া উচ্চ দামে ক্রয়
খাবার সরবরাহকারীর সঙ্গে চুক্তি না করেই বিল প্রদানের মাধ্যমে ৭৪ লাখ ২০ হাজার ৬৭৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কাজটি করেছে বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান।
দরপত্র ছাড়া, চুক্তি না করে, জামানত না নিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান জেএমআই মার্কেটিং লিমিটেডের কাছ থেকে সরাসরি উচ্চ দামে নন-সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস কিনেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে আর্থিক ক্ষতি ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা।
জবাবদিহির আওতায় আনার তাগিদ
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাস্থ্য খাত আগে থেকেই লুটপাটের জায়গা। করোনাকালে সেখানে দুর্নীতির মহোৎসব শুরু হয়েছিল, এটা অনেক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সরকারি কেনাকাটার দুর্নীতির সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশ থাকে। এখন যেহেতু নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে, তাই সরকারের উচিত এগুলো আমলে নিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে জবাবদিহির আওতায় আনা। নয়তো এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে