আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) ও সাইফুল ইসলাম, সখীপুর (টাঙ্গাইল)
ভ্যানে প্যাডেল মেরে সংসারটা কোনো রকমে টেনে টেনে এগিয়ে নেন শামসুল ইসলাম। সন্তানের লেখাপড়ার খরচটাও তাই বাড়তি চাপ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা তাঁর পরিবারে। তবুও আসে ঈদ। কষ্ট হলেও সবার কাপড়-চোপড় আর তেল-সেমাই-চিনি কিনতেই হয়। তার মধ্যে ছেলে-মেয়েরা যখন ঈদের দিন মাংস খাওয়ার বায়না ধরে, ভ্যানচালক বাবার সাধ্যে তখন আর কুলায় না।
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বানিয়াজুরীর বাসিন্দা শামসুল ইসলাম গত ঈদুল ফিতরে সন্তানদের বায়না পূরণ করতে পারেননি। এবার তাই আগেভাগেই এলাকার একটি ‘গোশত সমিতির’ সদস্য হয়েছেন তিনি। মাসে মাসে সমিতিতে দিয়েছেন চাঁদা। ঈদের আগে গরু কেনা হবে। জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নেবেন সমিতির সদস্যরা। এবার তাঁর সন্তানদের বায়না পূরণ হবে। সেটা ভাবতেই ভালো লাগছে শামসুলের।
শুধু শামসুল নন, বানিয়াজুরী, বালিয়াখোড়া, সিংজুরী, নালী, বড়টিয়া, পয়লা ও ঘিওর সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এ ধরনের সমিতি। প্রতিবছর বাড়ছে সমিতি ও
সদস্য সংখ্যা। এ বছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গোশত সমিতি হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশের জেলা টাঙ্গাইলের সখীপুরের ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় এ ধরনের পাঁচ শতাধিক সমিতি আছে বলে জানা গেছে।
ঘিওরের কমপক্ষে ২০টি সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে উপজেলার রাথুরা গ্রামের গৃহবধূদের নিয়ে গোশত সমিতির যাত্রা শুরু হয়। পরে প্রতিবছর সমিতির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ বছর সমিতির সংখ্যা দেড় শতাধিক। এ ধরনের সমিতিতে সাধারণত সদস্য সংখ্যা ২০ থেকে ৬০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাঁরা প্রত্যেকে প্রতি মাসে নির্ধারিত হারে চাঁদা জমা দেন। পরে জমা করা টাকায় ঈদের দু-এক দিন আগে গরু, মহিষ বা ছাগল কিনে এনে জবাই করে মাংস ভাগ করে নেন তাঁরা। শবে কদরের দিন থেকে শুরু হয় সমিতির পশু জবাইয়ের কাজ। চলে ঈদের দিন পর্যন্ত। শুরুতে শুধু নিম্নবিত্তের লোকেরা এ ধরনের সমিতি করলেও এখন মধ্যবিত্তের অনেকেই এ সমিতিতে যোগ দিচ্ছেন।
বানিয়াজুরী এলাকায় এবার ৪টি সমিতি হয়েছে। একটি সমিতির মূল উদ্যোক্তা মর্জিনা বেগম। তিনি জানান, গত বছর সমিতিতে সদস্য ছিল ২০ জন; এবার ৩৫। চাঁদা মাসে জনপ্রতি ৩০০ টাকা। প্রতিজন এক বছরে জমা করেছেন ৩ হাজার ৬০০ টাকা। বড় একটি গরু কিনে জবাই করে এরই মধ্যে মাংস ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের ভাগে সাত কেজি করে পড়েছে। বাজারদরের চেয়ে কেজিতে দেড়-দুই শ টাকা কম পড়েছে। কম দামে এবং সঞ্চয়ের টাকায় একসঙ্গে এতখানি মাংস পেয়ে সবাই খুশি।
মাইলাঘী এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বলেন, ‘ঈদের আগে নানা কিছু কেনাকাটায় টাকা শেষ হয়ে যায়। এ সময় তাঁদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে গরুর মাংস কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। নারীরা সমিতি করার কারণে ঈদের আগে পরিবারের পুরুষদের অনেক চাপ কমেছে। এতে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ঈদের আনন্দ বেড়ে যায়।’ এলাকায় গোশত সমিতি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানালেন সিংজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান মিঠু। তিনি বলেন, ‘দিন দিন এ সমিতির সংখ্যা বাড়ছে। সমিতির কারণে ঈদুল ফিতরে এখন ঘরে ঘরে গরুর গোশত থাকে।’
ঘিওর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যার কাজী মাহেলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সারা বছর একটু একটু সঞ্চয় করে ঈদের আগে পশু কিনে জবাই করে মাংস ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে তাঁরা বাড়তি আনন্দ পেয়ে থাকেন। এতে সংসারের চাপও অনেক কমে যায়। বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণে যেসব সমিতি রয়েছে, তাঁরাও সংসারে সমতা ও মর্যাদা পায়।’
টাঙ্গাইলের সখীপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার ঈদুল ফিতরে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় পাঁচ শতাধিক সমিতি নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মাংসের চাহিদা পূরণ করবে। উপজেলার হামিদপুর গ্রামের চৌরাস্তা এলাকার মাংস সমিতির উদ্যোক্তা ইসমাইল হোসেন জানান, তাঁদের সমিতিতে সদস্যসংখ্যা ৫৩ জন। প্রত্যেকে মাসিক ২০০ টাকা করে জমা দিয়েছেন। বছর ঘুরে সমিতিতে জমা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ টাকা। ঈদের আগে এই টাকা দিয়ে গরু কিনে সদস্যদের মধ্যে মাংস ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের ভাগে প্রায় পাঁচ কেজি মাংস পড়েছে।
সমিতির সদস্য উপজেলার হামিদপুর গ্রামের অটোভ্যানচালক শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ঈদে পোলাপানরে জামাকাপড় কিনে দিতেই সব টেকা শেষ। কোনোমতে চিনি সেমাই কিনি। মাংস কেনার টাকা পামু কোথায়? কিন্তু সমিতি কইরা এইবার চার-পাঁছ কেজি গরুর মাংস পামু। সেই মাংস পোলাপানরে খাওয়াইতে পারমু।’
একই গ্রামের আবদুস সালাম জানান, মাংস সমিতির মাধ্যমে নিজেরা গরু কিনে এনে ভালো মাংস পাওয়া যায়। খরচও কম পড়ে। তা ছাড়া আমরা মাসিক হারে চাঁদা তুলি। এতে সদস্যদের টাকা দিতে কষ্টও কম হয়।
ভ্যানে প্যাডেল মেরে সংসারটা কোনো রকমে টেনে টেনে এগিয়ে নেন শামসুল ইসলাম। সন্তানের লেখাপড়ার খরচটাও তাই বাড়তি চাপ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা তাঁর পরিবারে। তবুও আসে ঈদ। কষ্ট হলেও সবার কাপড়-চোপড় আর তেল-সেমাই-চিনি কিনতেই হয়। তার মধ্যে ছেলে-মেয়েরা যখন ঈদের দিন মাংস খাওয়ার বায়না ধরে, ভ্যানচালক বাবার সাধ্যে তখন আর কুলায় না।
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বানিয়াজুরীর বাসিন্দা শামসুল ইসলাম গত ঈদুল ফিতরে সন্তানদের বায়না পূরণ করতে পারেননি। এবার তাই আগেভাগেই এলাকার একটি ‘গোশত সমিতির’ সদস্য হয়েছেন তিনি। মাসে মাসে সমিতিতে দিয়েছেন চাঁদা। ঈদের আগে গরু কেনা হবে। জবাই করে মাংস ভাগাভাগি করে নেবেন সমিতির সদস্যরা। এবার তাঁর সন্তানদের বায়না পূরণ হবে। সেটা ভাবতেই ভালো লাগছে শামসুলের।
শুধু শামসুল নন, বানিয়াজুরী, বালিয়াখোড়া, সিংজুরী, নালী, বড়টিয়া, পয়লা ও ঘিওর সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এ ধরনের সমিতি। প্রতিবছর বাড়ছে সমিতি ও
সদস্য সংখ্যা। এ বছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গোশত সমিতি হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশের জেলা টাঙ্গাইলের সখীপুরের ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় এ ধরনের পাঁচ শতাধিক সমিতি আছে বলে জানা গেছে।
ঘিওরের কমপক্ষে ২০টি সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে উপজেলার রাথুরা গ্রামের গৃহবধূদের নিয়ে গোশত সমিতির যাত্রা শুরু হয়। পরে প্রতিবছর সমিতির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ বছর সমিতির সংখ্যা দেড় শতাধিক। এ ধরনের সমিতিতে সাধারণত সদস্য সংখ্যা ২০ থেকে ৬০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাঁরা প্রত্যেকে প্রতি মাসে নির্ধারিত হারে চাঁদা জমা দেন। পরে জমা করা টাকায় ঈদের দু-এক দিন আগে গরু, মহিষ বা ছাগল কিনে এনে জবাই করে মাংস ভাগ করে নেন তাঁরা। শবে কদরের দিন থেকে শুরু হয় সমিতির পশু জবাইয়ের কাজ। চলে ঈদের দিন পর্যন্ত। শুরুতে শুধু নিম্নবিত্তের লোকেরা এ ধরনের সমিতি করলেও এখন মধ্যবিত্তের অনেকেই এ সমিতিতে যোগ দিচ্ছেন।
বানিয়াজুরী এলাকায় এবার ৪টি সমিতি হয়েছে। একটি সমিতির মূল উদ্যোক্তা মর্জিনা বেগম। তিনি জানান, গত বছর সমিতিতে সদস্য ছিল ২০ জন; এবার ৩৫। চাঁদা মাসে জনপ্রতি ৩০০ টাকা। প্রতিজন এক বছরে জমা করেছেন ৩ হাজার ৬০০ টাকা। বড় একটি গরু কিনে জবাই করে এরই মধ্যে মাংস ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের ভাগে সাত কেজি করে পড়েছে। বাজারদরের চেয়ে কেজিতে দেড়-দুই শ টাকা কম পড়েছে। কম দামে এবং সঞ্চয়ের টাকায় একসঙ্গে এতখানি মাংস পেয়ে সবাই খুশি।
মাইলাঘী এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বলেন, ‘ঈদের আগে নানা কিছু কেনাকাটায় টাকা শেষ হয়ে যায়। এ সময় তাঁদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে গরুর মাংস কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। নারীরা সমিতি করার কারণে ঈদের আগে পরিবারের পুরুষদের অনেক চাপ কমেছে। এতে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ঈদের আনন্দ বেড়ে যায়।’ এলাকায় গোশত সমিতি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানালেন সিংজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান মিঠু। তিনি বলেন, ‘দিন দিন এ সমিতির সংখ্যা বাড়ছে। সমিতির কারণে ঈদুল ফিতরে এখন ঘরে ঘরে গরুর গোশত থাকে।’
ঘিওর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যার কাজী মাহেলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সারা বছর একটু একটু সঞ্চয় করে ঈদের আগে পশু কিনে জবাই করে মাংস ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে তাঁরা বাড়তি আনন্দ পেয়ে থাকেন। এতে সংসারের চাপও অনেক কমে যায়। বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণে যেসব সমিতি রয়েছে, তাঁরাও সংসারে সমতা ও মর্যাদা পায়।’
টাঙ্গাইলের সখীপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার ঈদুল ফিতরে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় পাঁচ শতাধিক সমিতি নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মাংসের চাহিদা পূরণ করবে। উপজেলার হামিদপুর গ্রামের চৌরাস্তা এলাকার মাংস সমিতির উদ্যোক্তা ইসমাইল হোসেন জানান, তাঁদের সমিতিতে সদস্যসংখ্যা ৫৩ জন। প্রত্যেকে মাসিক ২০০ টাকা করে জমা দিয়েছেন। বছর ঘুরে সমিতিতে জমা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ টাকা। ঈদের আগে এই টাকা দিয়ে গরু কিনে সদস্যদের মধ্যে মাংস ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের ভাগে প্রায় পাঁচ কেজি মাংস পড়েছে।
সমিতির সদস্য উপজেলার হামিদপুর গ্রামের অটোভ্যানচালক শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ঈদে পোলাপানরে জামাকাপড় কিনে দিতেই সব টেকা শেষ। কোনোমতে চিনি সেমাই কিনি। মাংস কেনার টাকা পামু কোথায়? কিন্তু সমিতি কইরা এইবার চার-পাঁছ কেজি গরুর মাংস পামু। সেই মাংস পোলাপানরে খাওয়াইতে পারমু।’
একই গ্রামের আবদুস সালাম জানান, মাংস সমিতির মাধ্যমে নিজেরা গরু কিনে এনে ভালো মাংস পাওয়া যায়। খরচও কম পড়ে। তা ছাড়া আমরা মাসিক হারে চাঁদা তুলি। এতে সদস্যদের টাকা দিতে কষ্টও কম হয়।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১৪ ঘণ্টা আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১৬ ঘণ্টা আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে