আসিফ
একবার স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের জনক এবং খ্যাতনামা কল্পবিজ্ঞানী আর্থার সি ক্লার্ককে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘সমান সমান বা ৫০ শতাংশ।’ এ ঘটনার ২০ বছর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে সংঘঠিত স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আবার তাঁকে একই প্রশ্ন করলে তিনি স্মিত হেসে বলেছিলেন, ‘৫১ শতাংশ’। এই উত্তরের পর সাংবাদিকেরা অবাক হলে তিনি ধূমকেতু, গ্রহাণু, উল্কাপতনের সম্ভাবনাকে ইঙ্গিত করেই তাঁর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
আর্থার সি ক্লার্কের পৃথিবী ধ্বংসের আশঙ্কার উত্তরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পরিবেশদূষণের বিষয়টিও বিবেচনার মধ্যে ছিল। এই দূষণেরই একটি প্রতিক্রিয়া আমরা দেখছি করোনা মহামারির সময়। যে কারণেই হোক, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম করোনা ভাইরাসটি স্বাভাবিক পরিবেশে নিষ্ক্রিয় ছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েছে, নতুন বাহক পেয়ে নিজের অস্তিত্ব বিকাশে মরিয়া এই ভাইরাস জল, স্থলসহ সর্বত্র নিজের বংশবিস্তার করে পৃথিবীর বুকে আঘাত হেনেছিল। এখানে কিন্তু চার্লস ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়া কাজ করেছে।
মানুষই বোধ হয় একমাত্র দুর্লভ প্রাণী, যে জলে, স্থলে, আকাশে সমানভাবে তার বিচরণ বিস্তার করে চলেছে। বিজ্ঞানপ্রযুক্তির সাহায্যে সে এই কৌশল রপ্ত করেছে, কিন্তু বিজ্ঞানের অন্তরের কথা সে শোনেনি; নিজের জীবনযাপনের মধ্যে যে বিজ্ঞানের অন্তর বা মূল ভাবটি প্রয়োগ করা দরকার, তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে নদী রক্ষার প্রয়োজনীয়তা, কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের কতসংখ্যক মানুষ নিয়ে একটি জনবসতি গড়ে উঠতে পারে, সেখানে কি পরিমাণ গাছপালা, জলাভূমি থাকা দরকার, তার নির্ধারণ যে বিজ্ঞান করে দিয়েছে, তা কিন্তু মানুষ মানেনি। মানুষ শুধু বিজ্ঞানপ্রযুক্তিকে জাদুর যন্ত্রের মতো ভোগের কাজে ব্যবহার করেছে এবং এখনো করছে। পরিণামে পরিবেশ-প্রতিবেশ এমনভাবে ধ্বংস হয়েছে যে আমাদের একটার পর একটা মহামারির মতো আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। তার দু-একটা নমুনা হচ্ছে ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু, জিকা, করোনা ভাইরাস ইত্যাদি।
অবশ্য জীববিজ্ঞানী ডেভিড কোলম্যান বলেছেন, মানুষের দেহে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে পরিবেশদূষণ দায়ী নয়। তবে তিনি এ-ও বলেছেন, প্রযুক্তির সুবিধায় নিমজ্জিত বিজ্ঞান বোধবিহীন সমাজে সামাজিক জীবনযাপনে যোগাযোগের যে জাল বিস্তার করেছে, তাতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা খুবই কঠিন। তার প্রমাণ আমরা পাই করোনাকালীন পৃথিবীর বেশির ভাগ রাষ্ট্রের স্বাস্থ্য
খাতের বিপন্নতার অবস্থা দেখে। যদিও করোনা মহামারিতে মানবসভ্যতা পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা ছিল না। এতে ক্ষতি হয়েছে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ।
কিন্তু আমরা জানি, কয়েক কিলোমিটারের অধিক চওড়া একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তা ও পরিবেশগত বিপর্যয়ে সম্পূর্ণ মানবসভ্যতাসহ অধিকাংশ প্রাণী ও উদ্ভিদজগৎ চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। তার প্রমাণ পাই সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ১০ কিলোমিটার ব্যাসের একটি উল্কাপিণ্ডের আঘাত থেকে। ফলে ধূলিকণা উদ্গিরণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, পৃথিবীতে নেমে আসে কয়েক কোটি বছরের জন্য নিউক্লিয়ার শীত। মহাজাগতিক এই ঘটনার প্রভাবে অতিকায় ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটে। এর পরেই আমরা বেতার প্রাযুক্তিক সভ্যতায় পৌঁছাই। এ ধরনের ঘটনা একটা নির্দিষ্ট বিরতিতে ঘটে, সেটা আগের পাঁচটি গণবিলুপ্তি বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনগুলো পড়লেও টের পাওয়া যায়।
মাত্র ৫০ হাজার বছর আগেও আমেরিকার উত্তর অ্যারিজোনায় মহাকাশ থেকে পড়েছিল ১৮০ ফুট ব্যাসের এক ধূমকেতু। ফলে সৃষ্টি হয়েছিল ৪ হাজার ফুট বড় ও ৬০০ ফুট গভীর গর্তের। আর মাত্র ৩০ ফুট ব্যাসের কোনো ধূমকেতুর খণ্ড যদি পৃথিবীতে পড়ে, তার শক্তি হবে হিরোশিমায় ফেলা পরমাণু বোমার পাঁচ গুণেরও বেশি। চলতি শতাব্দীতেই ১৯০৮ সালে সাইবেরিয়ায় ঘটেছিল এ ধরনের সবচেয়ে বড় অঘটনটি। অরণ্যের প্রায় ১০ কিলোমিটার ওপরে ঘটেছিল ২০ মেগাটনের সমান শক্তিশালী বিস্ফোরণ। সম্প্রতি ইতালীয় গবেষকদের একটি দল সাইবেরিয়ায় চেকো হ্রদের নিচে উল্কাপিণ্ডের অংশটিকে সাক্ষ্য হিসেবে পেয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সাইবেরিয়ার তাঙ্গুসকায় ১০০ মিটারের বরফাচ্ছাদিত উল্কাখণ্ড এবং ১০ কিলোমিটার ব্যাসের উল্কাটিও সূর্যের চারদিকে ঘুরতে থাকা মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যে অবস্থানকারী গ্রহাণু বেষ্টনী থেকে আসা। ওই গ্রহাণু বেষ্টনীতে রয়েছে কিছু শিলা, কিছু ধাতব, কিছু তুষারাবৃত কণা, কিছু জৈব অণুর যৌগ।
গ্রহাণু, উল্কা ও ধূমকেতু যেগুলো ভবিষ্যতে পৃথিবীকে আঘাত হানতে পারে, সেগুলোকে বলা হয় পৃথিবীর নিকটবর্তী বস্তু বা নিওস। আর এই নিওস আবিষ্কারে নিয়োজিত রয়েছেন একদল মহাকাশ বিজ্ঞানী। তাঁদের মধ্যে লিনিয়ার, নিট ও স্পেসওয়াচের কথা উল্লেখ করা যায়। এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি নিওস সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া গেছে, যেগুলোর কোনোটির আয়তন ১০ ঘনকিলোমিটারের বেশি।
মনে রাখতে হবে, ৪০ মিটারের মতো একটি গ্রহাণু একটি মহানগরীর সমান এলাকা ধ্বংস করে ফেলতে সক্ষম। এখনো হাজার হাজার নিওস অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। মার্কিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক ‘সেপসগতি’ প্রোগ্রাম সার্বক্ষণিকভাবে আশঙ্কাযুক্ত নিওস পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। তবে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রহাণু শনাক্তকরণ এবং ট্র্যাকিং করা গ্রহাণুর আঘাত থেকে বাঁচার জন্য মানবসভ্যতার বড় ধরনের পদক্ষেপ হতে পারে।
পর্যবেক্ষণ ও যুক্তি বলে, এ ধরনের ব্যাপার মানুষ যতটা ভাবে, তার চেয়েও বেশি ঘটে। ফলে কেবল জীবন নয়, বিলুপ্তি ঘটে সভ্যতারও। বিজ্ঞানী ক্লাব বলেন, ‘এ ধরনের ব্যাপার আনুমানিক ৩০০ বছর পরপর ঘটে। আমরা বেশ কয়েক শ বছর যাবৎ কিছু ঘটতে দেখছি না। সে জন্যই আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে এতটা অজ্ঞ। অবশ্য ঘটনাটি এমন নয় যে আগামী ১০ বা ১০০ বছরের মধ্যে ঘটবে না। কিন্তু আপনারা যদি যুক্তিবাদী হন, তাহলে বুঝবেন যে এক জীবনে এ ধরনের ঘটনা ঘটার এক-চতুর্থাংশ সম্ভাবনা থেকেই যায়। এ পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই শতাব্দীতে পৃথিবীকে আঘাতের তেমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে বড় ধরনের গ্রহাণুর আঘাত যে আসবে, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত। তার আগেই মানবপ্রজাতিকে তা মোকাবিলায় সক্ষম হয়ে উঠতে হবে।
আর প্রতিবছর আকাশে ধূমকেতু বা উল্কাপিণ্ড মহাজাগতিক আনন্দের বর্ণচ্ছটা হিসেবে আসে। সবগুলো নিরাপদ না-ও হতে পারে, সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েই যায়। বিজ্ঞানের জ্ঞানই এর সমাধান দিতে পারে।
আসিফ, বিজ্ঞান বক্তা ও সম্পাদক, মহাবৃত্ত
একবার স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের জনক এবং খ্যাতনামা কল্পবিজ্ঞানী আর্থার সি ক্লার্ককে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘সমান সমান বা ৫০ শতাংশ।’ এ ঘটনার ২০ বছর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে সংঘঠিত স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আবার তাঁকে একই প্রশ্ন করলে তিনি স্মিত হেসে বলেছিলেন, ‘৫১ শতাংশ’। এই উত্তরের পর সাংবাদিকেরা অবাক হলে তিনি ধূমকেতু, গ্রহাণু, উল্কাপতনের সম্ভাবনাকে ইঙ্গিত করেই তাঁর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
আর্থার সি ক্লার্কের পৃথিবী ধ্বংসের আশঙ্কার উত্তরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পরিবেশদূষণের বিষয়টিও বিবেচনার মধ্যে ছিল। এই দূষণেরই একটি প্রতিক্রিয়া আমরা দেখছি করোনা মহামারির সময়। যে কারণেই হোক, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম করোনা ভাইরাসটি স্বাভাবিক পরিবেশে নিষ্ক্রিয় ছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েছে, নতুন বাহক পেয়ে নিজের অস্তিত্ব বিকাশে মরিয়া এই ভাইরাস জল, স্থলসহ সর্বত্র নিজের বংশবিস্তার করে পৃথিবীর বুকে আঘাত হেনেছিল। এখানে কিন্তু চার্লস ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়া কাজ করেছে।
মানুষই বোধ হয় একমাত্র দুর্লভ প্রাণী, যে জলে, স্থলে, আকাশে সমানভাবে তার বিচরণ বিস্তার করে চলেছে। বিজ্ঞানপ্রযুক্তির সাহায্যে সে এই কৌশল রপ্ত করেছে, কিন্তু বিজ্ঞানের অন্তরের কথা সে শোনেনি; নিজের জীবনযাপনের মধ্যে যে বিজ্ঞানের অন্তর বা মূল ভাবটি প্রয়োগ করা দরকার, তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে নদী রক্ষার প্রয়োজনীয়তা, কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের কতসংখ্যক মানুষ নিয়ে একটি জনবসতি গড়ে উঠতে পারে, সেখানে কি পরিমাণ গাছপালা, জলাভূমি থাকা দরকার, তার নির্ধারণ যে বিজ্ঞান করে দিয়েছে, তা কিন্তু মানুষ মানেনি। মানুষ শুধু বিজ্ঞানপ্রযুক্তিকে জাদুর যন্ত্রের মতো ভোগের কাজে ব্যবহার করেছে এবং এখনো করছে। পরিণামে পরিবেশ-প্রতিবেশ এমনভাবে ধ্বংস হয়েছে যে আমাদের একটার পর একটা মহামারির মতো আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। তার দু-একটা নমুনা হচ্ছে ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু, জিকা, করোনা ভাইরাস ইত্যাদি।
অবশ্য জীববিজ্ঞানী ডেভিড কোলম্যান বলেছেন, মানুষের দেহে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে পরিবেশদূষণ দায়ী নয়। তবে তিনি এ-ও বলেছেন, প্রযুক্তির সুবিধায় নিমজ্জিত বিজ্ঞান বোধবিহীন সমাজে সামাজিক জীবনযাপনে যোগাযোগের যে জাল বিস্তার করেছে, তাতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা খুবই কঠিন। তার প্রমাণ আমরা পাই করোনাকালীন পৃথিবীর বেশির ভাগ রাষ্ট্রের স্বাস্থ্য
খাতের বিপন্নতার অবস্থা দেখে। যদিও করোনা মহামারিতে মানবসভ্যতা পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা ছিল না। এতে ক্ষতি হয়েছে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ।
কিন্তু আমরা জানি, কয়েক কিলোমিটারের অধিক চওড়া একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তা ও পরিবেশগত বিপর্যয়ে সম্পূর্ণ মানবসভ্যতাসহ অধিকাংশ প্রাণী ও উদ্ভিদজগৎ চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। তার প্রমাণ পাই সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ১০ কিলোমিটার ব্যাসের একটি উল্কাপিণ্ডের আঘাত থেকে। ফলে ধূলিকণা উদ্গিরণে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, পৃথিবীতে নেমে আসে কয়েক কোটি বছরের জন্য নিউক্লিয়ার শীত। মহাজাগতিক এই ঘটনার প্রভাবে অতিকায় ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটে। এর পরেই আমরা বেতার প্রাযুক্তিক সভ্যতায় পৌঁছাই। এ ধরনের ঘটনা একটা নির্দিষ্ট বিরতিতে ঘটে, সেটা আগের পাঁচটি গণবিলুপ্তি বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনগুলো পড়লেও টের পাওয়া যায়।
মাত্র ৫০ হাজার বছর আগেও আমেরিকার উত্তর অ্যারিজোনায় মহাকাশ থেকে পড়েছিল ১৮০ ফুট ব্যাসের এক ধূমকেতু। ফলে সৃষ্টি হয়েছিল ৪ হাজার ফুট বড় ও ৬০০ ফুট গভীর গর্তের। আর মাত্র ৩০ ফুট ব্যাসের কোনো ধূমকেতুর খণ্ড যদি পৃথিবীতে পড়ে, তার শক্তি হবে হিরোশিমায় ফেলা পরমাণু বোমার পাঁচ গুণেরও বেশি। চলতি শতাব্দীতেই ১৯০৮ সালে সাইবেরিয়ায় ঘটেছিল এ ধরনের সবচেয়ে বড় অঘটনটি। অরণ্যের প্রায় ১০ কিলোমিটার ওপরে ঘটেছিল ২০ মেগাটনের সমান শক্তিশালী বিস্ফোরণ। সম্প্রতি ইতালীয় গবেষকদের একটি দল সাইবেরিয়ায় চেকো হ্রদের নিচে উল্কাপিণ্ডের অংশটিকে সাক্ষ্য হিসেবে পেয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সাইবেরিয়ার তাঙ্গুসকায় ১০০ মিটারের বরফাচ্ছাদিত উল্কাখণ্ড এবং ১০ কিলোমিটার ব্যাসের উল্কাটিও সূর্যের চারদিকে ঘুরতে থাকা মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যে অবস্থানকারী গ্রহাণু বেষ্টনী থেকে আসা। ওই গ্রহাণু বেষ্টনীতে রয়েছে কিছু শিলা, কিছু ধাতব, কিছু তুষারাবৃত কণা, কিছু জৈব অণুর যৌগ।
গ্রহাণু, উল্কা ও ধূমকেতু যেগুলো ভবিষ্যতে পৃথিবীকে আঘাত হানতে পারে, সেগুলোকে বলা হয় পৃথিবীর নিকটবর্তী বস্তু বা নিওস। আর এই নিওস আবিষ্কারে নিয়োজিত রয়েছেন একদল মহাকাশ বিজ্ঞানী। তাঁদের মধ্যে লিনিয়ার, নিট ও স্পেসওয়াচের কথা উল্লেখ করা যায়। এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি নিওস সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া গেছে, যেগুলোর কোনোটির আয়তন ১০ ঘনকিলোমিটারের বেশি।
মনে রাখতে হবে, ৪০ মিটারের মতো একটি গ্রহাণু একটি মহানগরীর সমান এলাকা ধ্বংস করে ফেলতে সক্ষম। এখনো হাজার হাজার নিওস অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। মার্কিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক ‘সেপসগতি’ প্রোগ্রাম সার্বক্ষণিকভাবে আশঙ্কাযুক্ত নিওস পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। তবে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রহাণু শনাক্তকরণ এবং ট্র্যাকিং করা গ্রহাণুর আঘাত থেকে বাঁচার জন্য মানবসভ্যতার বড় ধরনের পদক্ষেপ হতে পারে।
পর্যবেক্ষণ ও যুক্তি বলে, এ ধরনের ব্যাপার মানুষ যতটা ভাবে, তার চেয়েও বেশি ঘটে। ফলে কেবল জীবন নয়, বিলুপ্তি ঘটে সভ্যতারও। বিজ্ঞানী ক্লাব বলেন, ‘এ ধরনের ব্যাপার আনুমানিক ৩০০ বছর পরপর ঘটে। আমরা বেশ কয়েক শ বছর যাবৎ কিছু ঘটতে দেখছি না। সে জন্যই আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে এতটা অজ্ঞ। অবশ্য ঘটনাটি এমন নয় যে আগামী ১০ বা ১০০ বছরের মধ্যে ঘটবে না। কিন্তু আপনারা যদি যুক্তিবাদী হন, তাহলে বুঝবেন যে এক জীবনে এ ধরনের ঘটনা ঘটার এক-চতুর্থাংশ সম্ভাবনা থেকেই যায়। এ পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই শতাব্দীতে পৃথিবীকে আঘাতের তেমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে বড় ধরনের গ্রহাণুর আঘাত যে আসবে, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত। তার আগেই মানবপ্রজাতিকে তা মোকাবিলায় সক্ষম হয়ে উঠতে হবে।
আর প্রতিবছর আকাশে ধূমকেতু বা উল্কাপিণ্ড মহাজাগতিক আনন্দের বর্ণচ্ছটা হিসেবে আসে। সবগুলো নিরাপদ না-ও হতে পারে, সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েই যায়। বিজ্ঞানের জ্ঞানই এর সমাধান দিতে পারে।
আসিফ, বিজ্ঞান বক্তা ও সম্পাদক, মহাবৃত্ত
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে