আজাদুল আদনান, ঢাকা
কোভিডে আক্রান্ত মো. মোশারফ হোসেন সুফেলকে গত বছরের ৪ এপ্রিল ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল দুই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে। ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থেকে তিনি মারা যান। এর জন্য দুই চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ আনে সুফেলের পরিবার। সে বছরের ২৯ জুন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো তা নিষ্পত্তি হয়নি। সুফেলের মেয়ে সানজিদা হোসেন পিউ বলেন, ‘অভিযোগ দিয়েছি দেড় বছর হয়। বিএমডিসি আমাদের ও অভিযুক্তদের কয়েক দফা ডেকেছে। কিন্তু এখনো কোনো ফল হয়নি।’
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ বাড়লেও বিএমডিসি অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শাস্তি দিতে উৎসাহ দেখায় না। এমন অভিযোগ অনেক ভুক্তভোগীর। অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ হলেও নিষ্পত্তিতে গতি নেই। ফলে অভিযোগ দিতে ভুক্তভোগীদের উৎসাহও কমছে। বিএমডিসি সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে বিএমডিসিতে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার ৭৬ শতাংশই ঝুলে আছে। মাত্র ২৪ শতাংশ নিষ্পত্তি হয়েছে। চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগেও সর্বোচ্চ শাস্তির (নিবন্ধন বাতিল) নজির নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিএমডিসির পক্ষ থেকে অভিযোগকারীকে সমঝোতার জন্য প্রভাবিত করারও অভিযোগ আছে।
বিএমডিসির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. লিয়াকত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিএমডিসি সর্বোচ্চ নিবন্ধন বাতিল করতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্থায়ীভাবে কোনো চিকিৎসকের নিবন্ধন বাতিল করা হয়নি। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে বিভিন্ন মেয়াদে নিবন্ধন স্থগিত করা হয়।
একজন চিকিৎসকের এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কী হতে পারে? অনেক সময় ঘটনা আদালতে গড়ায়। সেখানে অভিযুক্ত চিকিৎসক শাস্তি কমানোর আবেদন করে মাফ পেয়ে যান।’
শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক ও পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ডা. সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে গত ২৫ আগস্ট চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ আনে এক রোগীর পরিবার। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ অক্টোবর রোগীর বাবা শেখ জসিমউদ্দিন কবির এবং অভিযুক্ত চিকিৎসককে ডাকা হয় বিএমডিসিতে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের মুখোমুখি হতে রাজি হননি ডা. সামসুল আরেফিন। পরে বিএমডিসি আলাদাভাবে দুই পক্ষের বক্তব্য শোনে। এরপর আর কোনো অগ্রগতি নেই।
শেখ জসিমউদ্দিন কবির গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএমডিসিতে অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে সমঝোতার জন্য চাপ দিয়েছে। এমনকি বিএমডিসির যে প্যানেল এই বিচার করবে, সেখানকার একজন এ কাজে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি আমাকে দমাতে চেয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘শেষমেশ উচ্চ আদালতে রিট করেছি। ইতিমধ্যে রুল জারি হয়েছে।’
এ বিষয়ে ডা. সামসুল আরেফিনের মন্তব্য জানতে ফোনে চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল এমরান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ছুটিতে থাকার কথা বলে ফোন কেটে দেন।
পাঁচ বছরে অভিযোগ ১২৭, নিষ্পত্তি ৩১
বিএমডিসি সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চিকিৎসায় অবহেলা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ বা শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই চিকিৎসা দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধে গত পাঁচ বছরে ১২৭টি অভিযোগ জমা পড়ে বিএমডিসিতে। মাত্র ৩১টির নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে ৭টির। তাতে শাস্তি হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসকের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। মাঝপথে টাকার বিনিময়ে সমঝোতা হয়েছে ১৪টির। অভিযোগ আছে, বিএমডিসির শৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সদস্যের উৎসাহে এসব সমঝোতা হয়।
সমঝোতার জন্য প্রভাবিত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার বলেন, ‘একেবারে যে হয় না সেটি বলা যাবে না। তবে বিএমডিসি অর্থের মাধ্যমে কোনো ধরনের সমঝোতা করে না। এসব কাজে তৃতীয় পক্ষ জড়িত। আবার বিএমডিসিতে অভিযোগ দিলেও আলাদাভাবে চিকিৎসক ও ভুক্তভোগীর মধ্যে সমঝোতা হচ্ছে। তখন তো আমাদের কিছুই করার থাকে না।’
উচ্চতর ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণ ছাড়াই সার্জন ও অ্যানেসথেটিস্ট হিসেবে অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসব করান শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মা ও শিশু ডায়াবেটিক হাসপাতালের চিকিৎসক মো. মনোয়ার হোসেন। গত বছরের ৬ মে এই চিকিৎসকের অধীনে সন্তান প্রসবকালে প্রাণ হারান এক নারী। ওই ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় তদন্ত শেষে ডা. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ২৪ মে বিএমডিসিতে চিঠি দেয়। তবে বিএমডিসি এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ডা. মনোয়ার হোসেন অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে আমি চাকরি করতাম। কিন্তু যে অপারেশনের কথা বলা হয়েছে, সেটি আমি করিনি।
এ জন্য বিএমডিসি একবার যোগাযোগ করলেও যাইনি।’
বিচার চাইতে আগ্রহ কমছে
মিরপুরের বেসরকারি আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত ৩০ নভেম্বর চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রাণ হারায় কুড়িগ্রামের ছয় বছরের শিশু মাইশা। ওই ঘটনায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও বিএমডিসিতে অভিযোগ পড়েনি। এ বিষয়ে মাইশার বাবা মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবু বলেছেন যখন বিএমডিসিতেও অভিযোগ দেব।’
অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ধীরগতি প্রসঙ্গে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার বলেন, ‘চাইলেই অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারি না। অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। দুই পক্ষকে চিঠি দেওয়া, তদন্ত করাসহ নানা জটিলতায় দীর্ঘ সময় লেগে যায়। পর্যাপ্ত লোকবলও নেই। তাই বেছে বেছে গুরুত্ব বুঝে তদন্ত করা হয়।’
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএমডিসি তো আইনের বাইরে গিয়ে শাস্তি দিতে পারে না। কোনো চিকিৎসক শাস্তির মুখে পড়লেও আদালতে গিয়ে ক্ষমা পেয়ে বেরিয়ে আসেন। এখানেই বিএমডিসির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। এখনো কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা করতে পারে না প্রতিষ্ঠানটি। এ ব্যাপারে সরকারকে বিষয়টি আমলে নিতে হবে।’
দ্রুত নিষ্পত্তির তাগিদ
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো অপরাধই হোক না কেন, বিএমডিসি তার আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিবন্ধন বাতিল করতে পারে। ভুক্তভোগী তাতে সন্তুষ্ট না হলে ক্ষতিপূরণের জন্য আদালতে যেতে পারেন। তবে অভিযোগের নিষ্পত্তিতে জোর দিতে হবে। এর জন্য বিএমডিসিকে আরও শক্তিশালী করার বিকল্প নেই।’
কোভিডে আক্রান্ত মো. মোশারফ হোসেন সুফেলকে গত বছরের ৪ এপ্রিল ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল দুই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে। ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থেকে তিনি মারা যান। এর জন্য দুই চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ আনে সুফেলের পরিবার। সে বছরের ২৯ জুন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো তা নিষ্পত্তি হয়নি। সুফেলের মেয়ে সানজিদা হোসেন পিউ বলেন, ‘অভিযোগ দিয়েছি দেড় বছর হয়। বিএমডিসি আমাদের ও অভিযুক্তদের কয়েক দফা ডেকেছে। কিন্তু এখনো কোনো ফল হয়নি।’
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ বাড়লেও বিএমডিসি অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শাস্তি দিতে উৎসাহ দেখায় না। এমন অভিযোগ অনেক ভুক্তভোগীর। অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ হলেও নিষ্পত্তিতে গতি নেই। ফলে অভিযোগ দিতে ভুক্তভোগীদের উৎসাহও কমছে। বিএমডিসি সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে বিএমডিসিতে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার ৭৬ শতাংশই ঝুলে আছে। মাত্র ২৪ শতাংশ নিষ্পত্তি হয়েছে। চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগেও সর্বোচ্চ শাস্তির (নিবন্ধন বাতিল) নজির নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিএমডিসির পক্ষ থেকে অভিযোগকারীকে সমঝোতার জন্য প্রভাবিত করারও অভিযোগ আছে।
বিএমডিসির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. লিয়াকত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিএমডিসি সর্বোচ্চ নিবন্ধন বাতিল করতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্থায়ীভাবে কোনো চিকিৎসকের নিবন্ধন বাতিল করা হয়নি। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে বিভিন্ন মেয়াদে নিবন্ধন স্থগিত করা হয়।
একজন চিকিৎসকের এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কী হতে পারে? অনেক সময় ঘটনা আদালতে গড়ায়। সেখানে অভিযুক্ত চিকিৎসক শাস্তি কমানোর আবেদন করে মাফ পেয়ে যান।’
শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক ও পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ডা. সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে গত ২৫ আগস্ট চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ আনে এক রোগীর পরিবার। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ অক্টোবর রোগীর বাবা শেখ জসিমউদ্দিন কবির এবং অভিযুক্ত চিকিৎসককে ডাকা হয় বিএমডিসিতে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের মুখোমুখি হতে রাজি হননি ডা. সামসুল আরেফিন। পরে বিএমডিসি আলাদাভাবে দুই পক্ষের বক্তব্য শোনে। এরপর আর কোনো অগ্রগতি নেই।
শেখ জসিমউদ্দিন কবির গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএমডিসিতে অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে সমঝোতার জন্য চাপ দিয়েছে। এমনকি বিএমডিসির যে প্যানেল এই বিচার করবে, সেখানকার একজন এ কাজে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি আমাকে দমাতে চেয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘শেষমেশ উচ্চ আদালতে রিট করেছি। ইতিমধ্যে রুল জারি হয়েছে।’
এ বিষয়ে ডা. সামসুল আরেফিনের মন্তব্য জানতে ফোনে চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল এমরান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ছুটিতে থাকার কথা বলে ফোন কেটে দেন।
পাঁচ বছরে অভিযোগ ১২৭, নিষ্পত্তি ৩১
বিএমডিসি সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চিকিৎসায় অবহেলা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ বা শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই চিকিৎসা দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধে গত পাঁচ বছরে ১২৭টি অভিযোগ জমা পড়ে বিএমডিসিতে। মাত্র ৩১টির নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে ৭টির। তাতে শাস্তি হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসকের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। মাঝপথে টাকার বিনিময়ে সমঝোতা হয়েছে ১৪টির। অভিযোগ আছে, বিএমডিসির শৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সদস্যের উৎসাহে এসব সমঝোতা হয়।
সমঝোতার জন্য প্রভাবিত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার বলেন, ‘একেবারে যে হয় না সেটি বলা যাবে না। তবে বিএমডিসি অর্থের মাধ্যমে কোনো ধরনের সমঝোতা করে না। এসব কাজে তৃতীয় পক্ষ জড়িত। আবার বিএমডিসিতে অভিযোগ দিলেও আলাদাভাবে চিকিৎসক ও ভুক্তভোগীর মধ্যে সমঝোতা হচ্ছে। তখন তো আমাদের কিছুই করার থাকে না।’
উচ্চতর ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণ ছাড়াই সার্জন ও অ্যানেসথেটিস্ট হিসেবে অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসব করান শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মা ও শিশু ডায়াবেটিক হাসপাতালের চিকিৎসক মো. মনোয়ার হোসেন। গত বছরের ৬ মে এই চিকিৎসকের অধীনে সন্তান প্রসবকালে প্রাণ হারান এক নারী। ওই ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় তদন্ত শেষে ডা. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ২৪ মে বিএমডিসিতে চিঠি দেয়। তবে বিএমডিসি এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ডা. মনোয়ার হোসেন অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে আমি চাকরি করতাম। কিন্তু যে অপারেশনের কথা বলা হয়েছে, সেটি আমি করিনি।
এ জন্য বিএমডিসি একবার যোগাযোগ করলেও যাইনি।’
বিচার চাইতে আগ্রহ কমছে
মিরপুরের বেসরকারি আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত ৩০ নভেম্বর চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রাণ হারায় কুড়িগ্রামের ছয় বছরের শিশু মাইশা। ওই ঘটনায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও বিএমডিসিতে অভিযোগ পড়েনি। এ বিষয়ে মাইশার বাবা মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবু বলেছেন যখন বিএমডিসিতেও অভিযোগ দেব।’
অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ধীরগতি প্রসঙ্গে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার বলেন, ‘চাইলেই অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারি না। অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। দুই পক্ষকে চিঠি দেওয়া, তদন্ত করাসহ নানা জটিলতায় দীর্ঘ সময় লেগে যায়। পর্যাপ্ত লোকবলও নেই। তাই বেছে বেছে গুরুত্ব বুঝে তদন্ত করা হয়।’
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএমডিসি তো আইনের বাইরে গিয়ে শাস্তি দিতে পারে না। কোনো চিকিৎসক শাস্তির মুখে পড়লেও আদালতে গিয়ে ক্ষমা পেয়ে বেরিয়ে আসেন। এখানেই বিএমডিসির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। এখনো কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা করতে পারে না প্রতিষ্ঠানটি। এ ব্যাপারে সরকারকে বিষয়টি আমলে নিতে হবে।’
দ্রুত নিষ্পত্তির তাগিদ
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো অপরাধই হোক না কেন, বিএমডিসি তার আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিবন্ধন বাতিল করতে পারে। ভুক্তভোগী তাতে সন্তুষ্ট না হলে ক্ষতিপূরণের জন্য আদালতে যেতে পারেন। তবে অভিযোগের নিষ্পত্তিতে জোর দিতে হবে। এর জন্য বিএমডিসিকে আরও শক্তিশালী করার বিকল্প নেই।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৮ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে