নূরে আলম সিদ্দিকী
৭ মার্চ সকাল ১০টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় চরম উত্তেজনা। উত্তেজনা ছিল বঙ্গবন্ধু আজ তাঁর বক্তৃতায় কী বলবেন, তা নিয়ে। বাংলাদেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীই স্বাধীনতার প্রত্যয়ে সুদৃঢ় থাকলেও মূল রাজনীতির স্রোতোধারায় তিনটি অভিমত তখনো কমবেশি সক্রিয় ছিল। আওয়ামী লীগের একটি ভাগ তখনো ধারণা পোষণ করতেন, ২৩ বছর পর সরকার গঠনের সুযোগ যখন পেয়েছি, তখন সরকার গঠনের পর সব শোষণের হিসাব পাই পাই করে বুঝে নিয়ে ওদের আমরা নিজেরাই খোদা হাফেজ দিয়ে দেব। এই চিন্তা উৎসারিত হয় দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার কাছ থেকে। তাঁরই সহকর্মী এবং চেতনার উত্তরসূরি, বঙ্গবন্ধুর বাল্যবন্ধু সিরাজুদ্দীন হোসেন এ ধারণাটির সরব প্রবক্তা ছিলেন। প্রবীণ ও রক্ষণশীল আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব প্রত্যয়ের অংশ হিসেবেই ওই মতটিতে বিশ্বাস করতেন। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং তাঁর ভাবাদর্শ ও চেতনার উত্তরসূরি সিরাজুদ্দীন হোসেনকে অনেকের সঙ্গে আমরাও সাংবাদিক হিসেবে নয়; বরং ভাবতাম আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চেতনার দার্শনিক।
আরেক দল ছিলেন, যাঁরা কোনো অবস্থাতেই গণতান্ত্রিক ধারার আন্দোলন যে সফলতার সৈকতে পৌঁছাতে পারে, এ চেতনাটিতে বিশ্বাস করতেন না; বরং সত্তরের নির্বাচনের ম্যান্ডেট আদায়ের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে উচ্চকিত কণ্ঠে আওয়াজ তুলতেন। বলতেন, ‘ভোটের কথা বলে যারা, ইয়াহিয়া খানের দালাল তারা’, ‘বাংলার অপর নাম, ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম’, ‘মুক্তির একই পথ, সশস্ত্র বিপ্লব’, ‘ভোটের বাক্সে লাথি মার, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘নির্বাচন নির্বাচন, প্রহসন প্রহসন’। তাঁরা চেয়েছিলেন, ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু একতরফাভাবে জনগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা করেননি।
তৃতীয়ত, ছিলাম আমরা, যাঁরা বন্দুকের নলকে শক্তির উৎস হিসেবে কোনো দিনই বিশ্বাস করিনি। আমরা আমাদের শক্তির উৎস হিসেবে পেন্টাগন, ক্রেমলিন অথবা দিল্লির দুর্গকে কোনো দিনই ভাবিনি। মানুষের বুকনিঃসৃত সমর্থনকেই আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের মূল শক্তি মনে করেছি। মানুষের হৃদয়নিংড়ানো আশীর্বাদই আমাদের সত্তরের নির্বাচনের সপক্ষে ম্যান্ডেট এনে দিতে পারবে—এই প্রত্যয়ে আমরা উজ্জীবিত ছিলাম। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আমাদের বিশ্বাসটি সগৌরবে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু উল্লিখিত তিনটি শক্তিকেই অত্যন্ত সুকৌশলে পোষ মানিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
মানিক মিয়ার চিন্তার উত্তরাধিকারিত্ব নিয়ে সিরাজুদ্দীন হোসেনসহ আওয়ামী লীগের বেশ কিছু প্রবীণ নেতা বঙ্গবন্ধুকে বুঝিয়েছিলেন, ক্ষমতার পথ ব্যবহার করাই হচ্ছে বাংলার কল্যাণের এবং শোষণের প্রতিশোধের একমাত্র উপায়।
জনগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ঘোষণা এবং সশস্ত্র বিপ্লবের প্রতি যাঁদের প্রতীতি ও প্রত্যয় ছিল অবিচল, তাঁদের মধ্যে প্রধান ছিলেন সিরাজুল আলম খান।
আমাদের চেতনার আঙ্গিকে যারা আমার অগ্রজ শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন, এনায়েতুর রহমান, সৈয়দ মাযাহারুল হক বাকী, আবদুর রাজ্জাক, ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী, আবদুর রউফ, বন্ধুবর তোফায়েল আহমেদ, বন্ধুবর কবি আল মুজাহিদী, বন্ধুবর খালেদ মাহমুদ আলী, স্নেহাস্পদ আবদুল কুদ্দুস মাখন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, রাফিয়া আক্তার ডলি, মোস্তফা মহসীন মন্টু, কাজী ফিরোজ, এম এ রেজা, কে এম সাইফুদ্দিন, মফিজ, রাজিউদ্দিন আহমেদ, শেখ শহীদ, এম এ রশীদ প্রমুখ নেতা ও লাখ লাখ নিবেদিত, উজ্জীবিত ও উৎসর্গিতপ্রাণ কর্মী বিশ্বাস করতেন স্বাধীনতাই শেষ লক্ষ্য।
৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, শাসকদের কূটকৌশলগুলোকে বিবেচনায় রেখেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে স্বাধীনতার প্রত্যয়দীপ্ত ঘোষণা না দিলে আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়বে। ওরাও আমাদের ওপর হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে। এখানে আত্মপ্রচারের স্বার্থে নয়, ইতিহাসের দায়মোচনের জন্যই বলতে হচ্ছে, আমাদের মতটির প্রতিনিধিত্ব আমাকেই করতে হতো। এটা অন্য কোনো কারণে নয়, আমার প্রতি বঙ্গবন্ধুর অপত্য স্নেহ, কারাগারে দীর্ঘ ১৭ মাস তাঁর একমাত্র সান্নিধ্যে তাঁর মানসিকতাকে উপলব্ধি করার একটা বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী ছিলাম আমি। বঙ্গবন্ধু সেদিন সবার কথাই ধৈর্য ধরে শুনেছিলেন।
৩২ নম্বর থেকে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আমরা চারজন, সঙ্গে সিরাজুল আলম খান এবং সম্ভবত তোফায়েল আহমেদ একই গাড়িতে রেসকোর্স ময়দানে পৌঁছাই। আমরা মঞ্চে উঠে গেলাম (সিরাজ ভাই তাঁর স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যেই মঞ্চে ওঠেননি)। আমরা মাইকের দখল নিলাম। এই বিশাল জনসমুদ্রকে স্লোগানে স্লোগানে শুধু মুখরিত করিনি, মানুষকে উদ্বেলিত করেছি, উচ্ছ্বসিত করেছি। আমি বিনীতভাবে জানাতে চাই, বঙ্গবন্ধু যখন ধীর পদক্ষেপে মঞ্চের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠছিলেন, তখন বঙ্গবন্ধুকে শুনিয়েই আমি রেসকোর্সের উদ্বেলিত জনতাকে বললাম, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, তোমরা তো স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিজ্ঞায় উজ্জীবিত, প্রদীপ্ত সূর্যরশ্মির মতো ভাস্বর। তোমাদের শক্তি কোথায়? সামর্থ্য কতটুকু? আমরা বঙ্গবন্ধুকে বলেছি, আমাদের শক্তির উৎস এই উদ্বেলিত জনতা। একেই আমরা গণসমুদ্রের ফেনিল চূড়ায় বিসুভিয়াসের মতো জ্বালাব। একেই আমরা আগ্নেয়গিরির গলিত লাভার মতো বিস্ফোরিত করে ওদের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে ছিন্নভিন্ন করে স্বাধীনতার প্রদীপ্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনব। তাঁকে দুই হাত তুলে দেখিয়ে বললাম, ‘ওই যে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠছেন। তাঁর নির্দেশে স্বাধীনতার জন্য বুকের শেষ রক্তবিন্দু প্রদান করতে আপনারা প্রস্তুত আছেন কি না?’ সারা রেসকোর্স ময়দানভরা জনতা দুই হাত উত্তোলন করে বজ্রনির্ঘোষে গর্জে উঠল, ‘জয় বাংলা’। বঙ্গবন্ধু ধীর পদক্ষেপে এসে মাইকের সামনে দাঁড়ালেন। তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণটি শুরু করলেন।
ভাষাশৈলী, প্রকাশভঙ্গি, শব্দচয়ন, অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ—সবকিছু মিলিয়ে একটা অদ্ভুত রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে স্বাধীনতার পূর্ণ ঘোষণাই প্রদত্ত হয়েছিল ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটিতে। অতিসতর্কতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শব্দচয়নের যে কুশলী পারদর্শিতা দেখিয়েছেন, তাতে বিচ্ছিন্নতার অভিযোগে অভিযুক্ত করার কোনো সুযোগ তিনি রাখেননি। আমি তাঁর নিজের প্রদত্ত শতাধিক ভাষণ নিজ কানে শোনার সৌভাগ্যের অধিকারী। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তো বটেই, তাঁর নির্দেশ-নির্দেশনাকে উপলব্ধি ও মননশীলতায় পরিণত করার জন্য এবং তাঁর বাগ্মিতাকে জ্ঞানপিপাসু ঋষিবালকের মতো অনুশীলন করার জন্য আমি একান্তচিত্তে তাঁর বক্তৃতা শুধু শ্রবণই করিনি, অনুধাবন করেছি, উপলব্ধি করেছি, আত্মস্থ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টাও চালিয়েছি। সত্যতার খাতিরে স্বীকার করতেই হবে, তাঁর নিজের প্রদত্ত কোনো ভাষণের তুলনা ৭ মার্চের ভাষণের সঙ্গে হতে পারে না।
তিনি তেজস্বী বক্তা ছিলেন, বাগ্মী ছিলেন। এটা অস্বীকার করা না গেলেও ৭ মার্চে শব্দচয়ন থেকে শুরু করে তাঁর প্রয়োগ এতই কার্যকর ছিল যে ওই সভায় উপস্থিত সবার মন ও মননশীলতাকে প্রচণ্ড আবেগে শুধু অভিভূতই করেনি, স্বাধীনতার চেতনাকে প্রত্যয় ও প্রতীতিতে পরিণতই করেনি, বরং নিজ আঙ্গিকে সবাই এ প্রত্যয় ও প্রতিজ্ঞা নিয়ে ফিরেছে যে একসাগর রক্তের বিনিময়ে হলেও পরাধীনতার বক্ষ বিদীর্ণ করে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে।
ভাষণটি গোটা জাতিকে এমনভাবে উদ্বেলিত করেছিল যে পৃথিবীর কোনো একক বক্তৃতায় এরূপ দৃষ্টান্ত আদৌ খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেকেই আবেগ আপ্লুত হৃদয়ে, অভিভূত চিত্তে ৭ মার্চের ভাষণটিকে গ্যাটিসবার্গে আব্রাহাম লিংকনের বক্তৃতার সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। আমি এই তুলনাটি করতে নারাজ। কারণ, দুটি বক্তৃতার প্রেক্ষাপট এবং আঙ্গিক ছিল ভিন্নতর। গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী আমেরিকার গৌরবদীপ্ত মঞ্চে দাঁড়িয়ে আব্রাহাম লিংকন ওই ভাষণটি দিয়েছিলেন। সামাজিক দুর্যোগের মেঘ সরে গিয়ে যখন আমেরিকার পূর্ব দিগন্তে হাস্যোজ্জ্বল সূর্য উদ্ভাসিত, তখন আমেরিকার বিজয়ী নেতা সারা বিশ্বের জন্য জগৎখ্যাত ভাষণটি দেন।
কিন্তু ৭ মার্চের প্রেক্ষাপটটি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলার দিগন্তবিস্তৃত আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা। একদিকে নিদারুণ অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে বুকভরা প্রত্যাশা। স্বাধীনতার উচ্ছ্বাস ও আকাঙ্ক্ষা তখন পরাধীনতার বক্ষ বিদীর্ণ করার জন্য উদ্গ্রীব। বাংলার মানুষের এই প্রত্যাশাকে সামনে রেখেই ৭ মার্চের ভাষণটি প্রদত্ত।
শুধু বঙ্গবন্ধুই নন, আমরাও সমস্ত সত্তা দিয়ে বিশ্বাস করতাম, জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য সংসদ স্থগিত ঘোষণা থেকে শুরু করে সামরিক জান্তার সহায়তায় যে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিলেন, তাতে কোনো অবস্থাতেই ছয় দফাকে সংবিধানে সন্নিবেশিত হতে তিনি দেবেন না। কিন্তু আমাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে অপপ্রচার করার উপকরণের জন্য তাঁর এবং সামরিক জান্তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল, যাতে পৃথিবীর কাছে একতরফাভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এই চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই ভাষণটি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। সেখানে তিনি যখন চারটি শর্ত জুড়ে দিলেন ইয়াহিয়া খানের সামনে, তখন ভুট্টোর কূটকৌশল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।
৭ মার্চের ভাষণটি স্বাধীনতার সুস্পষ্ট ঘোষণা ছিল। ১ মার্চ, ২ মার্চ, ৩ মার্চ; বিশেষ করে ৭ মার্চের পুরো সময়টুকু আমরা ব্যবহার করেছি গোটা জাতিকে একটি মোহনায়, একটি স্রোতোধারায় দাঁড় করাতে। স্রোতোধারাটি হলো স্বাধীনতার আন্দোলন; মোহনাটি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব। এর একটি অপরটির সম্পূরক। ৭ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলো। তার ব্যাপ্তি ও বিকাশ এতই গভীর থেকে গভীরতর হলো যে প্রশাসন, পুলিশ, বাঙালি সামরিক শক্তি, ছাত্র-শিক্ষক-জনতা, জনৈতিক কর্মী সবাই যেন একাকার হয়ে গেল। আক্রমণের সময় তাই তারা রাজনৈতিক অঙ্গনকে বিভাজিত করতে পারেনি। হিংস্র হায়েনার মতো গোটা জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, গুলি চালায়, রাজারবাগ-পিলখানায় আক্রমণ করে, হলগুলোতে কামান দাগায়। রাস্তায় নিরীহ মানুষগুলোর ওপর ট্যাংক চালায়। ইতিহাস আজ সাক্ষ্য দেয়, আমাদের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও কলাকৌশল নেওয়ার ফলে বাংলাদেশের সময় স্বাধীনতা আন্দোলনের পতাকায় শতকরা ৯৮ জন মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছিল।
আর বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণটিতেই ছিল তাঁর দিকনির্দেশনা।
নূরে আলম সিদ্দিকী, স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি
৭ মার্চ সকাল ১০টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় চরম উত্তেজনা। উত্তেজনা ছিল বঙ্গবন্ধু আজ তাঁর বক্তৃতায় কী বলবেন, তা নিয়ে। বাংলাদেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীই স্বাধীনতার প্রত্যয়ে সুদৃঢ় থাকলেও মূল রাজনীতির স্রোতোধারায় তিনটি অভিমত তখনো কমবেশি সক্রিয় ছিল। আওয়ামী লীগের একটি ভাগ তখনো ধারণা পোষণ করতেন, ২৩ বছর পর সরকার গঠনের সুযোগ যখন পেয়েছি, তখন সরকার গঠনের পর সব শোষণের হিসাব পাই পাই করে বুঝে নিয়ে ওদের আমরা নিজেরাই খোদা হাফেজ দিয়ে দেব। এই চিন্তা উৎসারিত হয় দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার কাছ থেকে। তাঁরই সহকর্মী এবং চেতনার উত্তরসূরি, বঙ্গবন্ধুর বাল্যবন্ধু সিরাজুদ্দীন হোসেন এ ধারণাটির সরব প্রবক্তা ছিলেন। প্রবীণ ও রক্ষণশীল আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব প্রত্যয়ের অংশ হিসেবেই ওই মতটিতে বিশ্বাস করতেন। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং তাঁর ভাবাদর্শ ও চেতনার উত্তরসূরি সিরাজুদ্দীন হোসেনকে অনেকের সঙ্গে আমরাও সাংবাদিক হিসেবে নয়; বরং ভাবতাম আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চেতনার দার্শনিক।
আরেক দল ছিলেন, যাঁরা কোনো অবস্থাতেই গণতান্ত্রিক ধারার আন্দোলন যে সফলতার সৈকতে পৌঁছাতে পারে, এ চেতনাটিতে বিশ্বাস করতেন না; বরং সত্তরের নির্বাচনের ম্যান্ডেট আদায়ের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে উচ্চকিত কণ্ঠে আওয়াজ তুলতেন। বলতেন, ‘ভোটের কথা বলে যারা, ইয়াহিয়া খানের দালাল তারা’, ‘বাংলার অপর নাম, ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম’, ‘মুক্তির একই পথ, সশস্ত্র বিপ্লব’, ‘ভোটের বাক্সে লাথি মার, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘নির্বাচন নির্বাচন, প্রহসন প্রহসন’। তাঁরা চেয়েছিলেন, ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু একতরফাভাবে জনগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা করেননি।
তৃতীয়ত, ছিলাম আমরা, যাঁরা বন্দুকের নলকে শক্তির উৎস হিসেবে কোনো দিনই বিশ্বাস করিনি। আমরা আমাদের শক্তির উৎস হিসেবে পেন্টাগন, ক্রেমলিন অথবা দিল্লির দুর্গকে কোনো দিনই ভাবিনি। মানুষের বুকনিঃসৃত সমর্থনকেই আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের মূল শক্তি মনে করেছি। মানুষের হৃদয়নিংড়ানো আশীর্বাদই আমাদের সত্তরের নির্বাচনের সপক্ষে ম্যান্ডেট এনে দিতে পারবে—এই প্রত্যয়ে আমরা উজ্জীবিত ছিলাম। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আমাদের বিশ্বাসটি সগৌরবে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু উল্লিখিত তিনটি শক্তিকেই অত্যন্ত সুকৌশলে পোষ মানিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
মানিক মিয়ার চিন্তার উত্তরাধিকারিত্ব নিয়ে সিরাজুদ্দীন হোসেনসহ আওয়ামী লীগের বেশ কিছু প্রবীণ নেতা বঙ্গবন্ধুকে বুঝিয়েছিলেন, ক্ষমতার পথ ব্যবহার করাই হচ্ছে বাংলার কল্যাণের এবং শোষণের প্রতিশোধের একমাত্র উপায়।
জনগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ঘোষণা এবং সশস্ত্র বিপ্লবের প্রতি যাঁদের প্রতীতি ও প্রত্যয় ছিল অবিচল, তাঁদের মধ্যে প্রধান ছিলেন সিরাজুল আলম খান।
আমাদের চেতনার আঙ্গিকে যারা আমার অগ্রজ শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন, এনায়েতুর রহমান, সৈয়দ মাযাহারুল হক বাকী, আবদুর রাজ্জাক, ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী, আবদুর রউফ, বন্ধুবর তোফায়েল আহমেদ, বন্ধুবর কবি আল মুজাহিদী, বন্ধুবর খালেদ মাহমুদ আলী, স্নেহাস্পদ আবদুল কুদ্দুস মাখন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, রাফিয়া আক্তার ডলি, মোস্তফা মহসীন মন্টু, কাজী ফিরোজ, এম এ রেজা, কে এম সাইফুদ্দিন, মফিজ, রাজিউদ্দিন আহমেদ, শেখ শহীদ, এম এ রশীদ প্রমুখ নেতা ও লাখ লাখ নিবেদিত, উজ্জীবিত ও উৎসর্গিতপ্রাণ কর্মী বিশ্বাস করতেন স্বাধীনতাই শেষ লক্ষ্য।
৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, শাসকদের কূটকৌশলগুলোকে বিবেচনায় রেখেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে স্বাধীনতার প্রত্যয়দীপ্ত ঘোষণা না দিলে আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়বে। ওরাও আমাদের ওপর হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে। এখানে আত্মপ্রচারের স্বার্থে নয়, ইতিহাসের দায়মোচনের জন্যই বলতে হচ্ছে, আমাদের মতটির প্রতিনিধিত্ব আমাকেই করতে হতো। এটা অন্য কোনো কারণে নয়, আমার প্রতি বঙ্গবন্ধুর অপত্য স্নেহ, কারাগারে দীর্ঘ ১৭ মাস তাঁর একমাত্র সান্নিধ্যে তাঁর মানসিকতাকে উপলব্ধি করার একটা বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী ছিলাম আমি। বঙ্গবন্ধু সেদিন সবার কথাই ধৈর্য ধরে শুনেছিলেন।
৩২ নম্বর থেকে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আমরা চারজন, সঙ্গে সিরাজুল আলম খান এবং সম্ভবত তোফায়েল আহমেদ একই গাড়িতে রেসকোর্স ময়দানে পৌঁছাই। আমরা মঞ্চে উঠে গেলাম (সিরাজ ভাই তাঁর স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যেই মঞ্চে ওঠেননি)। আমরা মাইকের দখল নিলাম। এই বিশাল জনসমুদ্রকে স্লোগানে স্লোগানে শুধু মুখরিত করিনি, মানুষকে উদ্বেলিত করেছি, উচ্ছ্বসিত করেছি। আমি বিনীতভাবে জানাতে চাই, বঙ্গবন্ধু যখন ধীর পদক্ষেপে মঞ্চের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠছিলেন, তখন বঙ্গবন্ধুকে শুনিয়েই আমি রেসকোর্সের উদ্বেলিত জনতাকে বললাম, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, তোমরা তো স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিজ্ঞায় উজ্জীবিত, প্রদীপ্ত সূর্যরশ্মির মতো ভাস্বর। তোমাদের শক্তি কোথায়? সামর্থ্য কতটুকু? আমরা বঙ্গবন্ধুকে বলেছি, আমাদের শক্তির উৎস এই উদ্বেলিত জনতা। একেই আমরা গণসমুদ্রের ফেনিল চূড়ায় বিসুভিয়াসের মতো জ্বালাব। একেই আমরা আগ্নেয়গিরির গলিত লাভার মতো বিস্ফোরিত করে ওদের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে ছিন্নভিন্ন করে স্বাধীনতার প্রদীপ্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনব। তাঁকে দুই হাত তুলে দেখিয়ে বললাম, ‘ওই যে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠছেন। তাঁর নির্দেশে স্বাধীনতার জন্য বুকের শেষ রক্তবিন্দু প্রদান করতে আপনারা প্রস্তুত আছেন কি না?’ সারা রেসকোর্স ময়দানভরা জনতা দুই হাত উত্তোলন করে বজ্রনির্ঘোষে গর্জে উঠল, ‘জয় বাংলা’। বঙ্গবন্ধু ধীর পদক্ষেপে এসে মাইকের সামনে দাঁড়ালেন। তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণটি শুরু করলেন।
ভাষাশৈলী, প্রকাশভঙ্গি, শব্দচয়ন, অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ—সবকিছু মিলিয়ে একটা অদ্ভুত রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে স্বাধীনতার পূর্ণ ঘোষণাই প্রদত্ত হয়েছিল ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটিতে। অতিসতর্কতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শব্দচয়নের যে কুশলী পারদর্শিতা দেখিয়েছেন, তাতে বিচ্ছিন্নতার অভিযোগে অভিযুক্ত করার কোনো সুযোগ তিনি রাখেননি। আমি তাঁর নিজের প্রদত্ত শতাধিক ভাষণ নিজ কানে শোনার সৌভাগ্যের অধিকারী। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তো বটেই, তাঁর নির্দেশ-নির্দেশনাকে উপলব্ধি ও মননশীলতায় পরিণত করার জন্য এবং তাঁর বাগ্মিতাকে জ্ঞানপিপাসু ঋষিবালকের মতো অনুশীলন করার জন্য আমি একান্তচিত্তে তাঁর বক্তৃতা শুধু শ্রবণই করিনি, অনুধাবন করেছি, উপলব্ধি করেছি, আত্মস্থ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টাও চালিয়েছি। সত্যতার খাতিরে স্বীকার করতেই হবে, তাঁর নিজের প্রদত্ত কোনো ভাষণের তুলনা ৭ মার্চের ভাষণের সঙ্গে হতে পারে না।
তিনি তেজস্বী বক্তা ছিলেন, বাগ্মী ছিলেন। এটা অস্বীকার করা না গেলেও ৭ মার্চে শব্দচয়ন থেকে শুরু করে তাঁর প্রয়োগ এতই কার্যকর ছিল যে ওই সভায় উপস্থিত সবার মন ও মননশীলতাকে প্রচণ্ড আবেগে শুধু অভিভূতই করেনি, স্বাধীনতার চেতনাকে প্রত্যয় ও প্রতীতিতে পরিণতই করেনি, বরং নিজ আঙ্গিকে সবাই এ প্রত্যয় ও প্রতিজ্ঞা নিয়ে ফিরেছে যে একসাগর রক্তের বিনিময়ে হলেও পরাধীনতার বক্ষ বিদীর্ণ করে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে।
ভাষণটি গোটা জাতিকে এমনভাবে উদ্বেলিত করেছিল যে পৃথিবীর কোনো একক বক্তৃতায় এরূপ দৃষ্টান্ত আদৌ খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেকেই আবেগ আপ্লুত হৃদয়ে, অভিভূত চিত্তে ৭ মার্চের ভাষণটিকে গ্যাটিসবার্গে আব্রাহাম লিংকনের বক্তৃতার সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। আমি এই তুলনাটি করতে নারাজ। কারণ, দুটি বক্তৃতার প্রেক্ষাপট এবং আঙ্গিক ছিল ভিন্নতর। গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী আমেরিকার গৌরবদীপ্ত মঞ্চে দাঁড়িয়ে আব্রাহাম লিংকন ওই ভাষণটি দিয়েছিলেন। সামাজিক দুর্যোগের মেঘ সরে গিয়ে যখন আমেরিকার পূর্ব দিগন্তে হাস্যোজ্জ্বল সূর্য উদ্ভাসিত, তখন আমেরিকার বিজয়ী নেতা সারা বিশ্বের জন্য জগৎখ্যাত ভাষণটি দেন।
কিন্তু ৭ মার্চের প্রেক্ষাপটটি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলার দিগন্তবিস্তৃত আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা। একদিকে নিদারুণ অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে বুকভরা প্রত্যাশা। স্বাধীনতার উচ্ছ্বাস ও আকাঙ্ক্ষা তখন পরাধীনতার বক্ষ বিদীর্ণ করার জন্য উদ্গ্রীব। বাংলার মানুষের এই প্রত্যাশাকে সামনে রেখেই ৭ মার্চের ভাষণটি প্রদত্ত।
শুধু বঙ্গবন্ধুই নন, আমরাও সমস্ত সত্তা দিয়ে বিশ্বাস করতাম, জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য সংসদ স্থগিত ঘোষণা থেকে শুরু করে সামরিক জান্তার সহায়তায় যে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিলেন, তাতে কোনো অবস্থাতেই ছয় দফাকে সংবিধানে সন্নিবেশিত হতে তিনি দেবেন না। কিন্তু আমাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে অপপ্রচার করার উপকরণের জন্য তাঁর এবং সামরিক জান্তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল, যাতে পৃথিবীর কাছে একতরফাভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এই চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই ভাষণটি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। সেখানে তিনি যখন চারটি শর্ত জুড়ে দিলেন ইয়াহিয়া খানের সামনে, তখন ভুট্টোর কূটকৌশল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।
৭ মার্চের ভাষণটি স্বাধীনতার সুস্পষ্ট ঘোষণা ছিল। ১ মার্চ, ২ মার্চ, ৩ মার্চ; বিশেষ করে ৭ মার্চের পুরো সময়টুকু আমরা ব্যবহার করেছি গোটা জাতিকে একটি মোহনায়, একটি স্রোতোধারায় দাঁড় করাতে। স্রোতোধারাটি হলো স্বাধীনতার আন্দোলন; মোহনাটি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব। এর একটি অপরটির সম্পূরক। ৭ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলো। তার ব্যাপ্তি ও বিকাশ এতই গভীর থেকে গভীরতর হলো যে প্রশাসন, পুলিশ, বাঙালি সামরিক শক্তি, ছাত্র-শিক্ষক-জনতা, জনৈতিক কর্মী সবাই যেন একাকার হয়ে গেল। আক্রমণের সময় তাই তারা রাজনৈতিক অঙ্গনকে বিভাজিত করতে পারেনি। হিংস্র হায়েনার মতো গোটা জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, গুলি চালায়, রাজারবাগ-পিলখানায় আক্রমণ করে, হলগুলোতে কামান দাগায়। রাস্তায় নিরীহ মানুষগুলোর ওপর ট্যাংক চালায়। ইতিহাস আজ সাক্ষ্য দেয়, আমাদের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও কলাকৌশল নেওয়ার ফলে বাংলাদেশের সময় স্বাধীনতা আন্দোলনের পতাকায় শতকরা ৯৮ জন মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছিল।
আর বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণটিতেই ছিল তাঁর দিকনির্দেশনা।
নূরে আলম সিদ্দিকী, স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে