মুফতি বুরহান উদ্দিন
সন্তানের প্রতি বাবার দায়িত্ব অনেক। তাদের সুষ্ঠুভাবে লালন-পালনের প্রধান দায়িত্ব বাবার ওপরই বর্তায়। সন্তানকে ছোট থেকে বড় করে তোলার সময় তাদের জন্য যে অর্থ খরচ হয়, ইসলাম তা বাবাকেই বহন করতে বলে। তবে কেবল ভরণপোষণের খরচ দিয়েই সন্তান থেকে দায়মুক্তি পাওয়া যায় না; বরং সন্তানের মানসিক বিকাশ, শিক্ষাদীক্ষা ও নীতি-নৈতিকতার যত্ন নেওয়া বাবার প্রধান দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বিভিন্নভাবে বাবার দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
সন্তানকে লুকমান (আ.)-এর উপদেশ
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা হজরত লুকমান (আ.)-কে বাবার সামনে উত্তম আদর্শ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পেশ করেছেন। সন্তানকে ভালো মানুষ ও ভালো মুসলমান হিসেবে গড়ে তুলতে যে জ্ঞান, বিশ্বাস ও নৈতিকতা শেখানো দরকার, তা তিনি তাঁর ছেলেকে শিখিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে তাঁর সম্মানে একটি স্বতন্ত্র সুরাও নাজিল করা হয়েছে। সুরা লুকমানে আল্লাহ তাআলা সন্তানকে দেওয়া লুকমান (আ.)-এর কয়েকটি উপদেশের কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রথমেই তিনি ছেলেকে মহান সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এর পরই বাবা-মায়ের আনুগত্যের প্রসঙ্গ এনে সন্তানের সামাজিক জীবনের মূল সূত্র শিখিয়েছেন। তারপর পরকালের জবাবদিহির বিশ্বাসের কথা তুলে ধরে সন্তানের দুনিয়ার জীবনে লাগাম টেনেছেন।
লুকমান (আ.) বলেন, ‘ছেলে আমার, আল্লাহর সঙ্গে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা মহা অন্যায়।’ (সুরা লুকমান: ১৩) এরপর বলেছেন, ‘ছেলে আমার, কোনো বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, এরপর তা যদি পাথরের ভেতরে বা আকাশে বা ভূগর্ভে থাকে, আল্লাহ তা-ও উপস্থিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ গোপন রহস্য জানেন, সবকিছুর খবর রাখেন।’ (সুরা লুকমান: ১৬)
লুকমান (আ.) সন্তানকে নামাজের আদেশ করেছেন। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার কথা শিখিয়েছেন। সত্যের কথা বলতে গিয়ে বিপদ এলে তা ধৈর্য ধরে মোকাবিলা করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘ছেলে আমার, নামাজ কায়েম করো। সৎ কাজে আদেশ দাও, মন্দ কাজে নিষেধ করো। বিপদাপদে ধৈর্য ধরো। নিশ্চয়ই এটি সাহসের কাজ।’ (সুরা লুকমান: ১৭)
লুকমান (আ.) ঘৃণা, অবজ্ঞা ও অহংকারের মতো মন্দ গুণগুলো পরিহার করে বিনয়, ভালোবাসা ও আন্তরিকতার পথে চলার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অহংকার করে মানুষকে অবজ্ঞা কোরো না। পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক-অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণে মধ্যপন্থা অবলম্বন করো। নিচু স্বরে কথা বলো। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সবচেয়ে বেশি অপ্রীতিকর।’ (সুরা লুকমান: ১৮-১৯)
সন্তানকে নুহ (আ.)-এর ইমান আনার অনুরোধ
একজন মুসলমান কখনোই সন্তানের পরকাল নিয়ে না ভেবে থাকতে পারেন না। তাই সন্তানদের ধর্মের দীক্ষা দেওয়া বাবাদের প্রথম দায়িত্ব। যেমন আল্লাহর নবী নুহ (আ.) ৯৫০ বছর মানুষকে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের দাওয়াত দিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে যখন তিনি নৌকায় উঠছিলেন, তখনো তাঁর এক সন্তান অবিশ্বাসী ছিল। তিনি তাঁকে তখনো বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং আল্লাহর আজাবের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
নুহ (আ.) বললেন, ‘নৌকা তাদের বয়ে নিয়ে চলল পাহাড় সমান ঢেউয়ের মধ্যে, নুহ তার ছেলেকে ডাকল—সে সরে দাঁড়িয়েছিল। বলল, ছেলে আমার, এসো, আমাদের সঙ্গে আরোহণ করো আর কাফেরদের সঙ্গে থেকো না।’ (সুরা হুদ: ৪১-৪৩)
সন্তানের জন্য ইবরাহিম (আ.) এর দোয়া
আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.) নিজের ও সন্তানের জন্য বিশেষভাবে দোয়া করেছেন। সন্তানের ইহকাল-পরকালের জন্য কল্যাণ কামনা করেছেন। যেমন তিনি বলেন, ‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের দুজনকে (বাবা-ছেলে) আপনার কাছে সমর্পিত বানিয়ে দিন এবং আমাদের বংশধরদের থেকে একটি সমর্পিত দল তৈরি করে দিন। আমাদের ইবাদতের রীতিনীতি বলে দিন। আমাদের ক্ষমা করুন। আপনি তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (সুরা বাকারা: ১২৮)
সন্তানদের ইমানের ওয়াদা করিয়েছেন ইয়াকুব (আ.)
নবী ইয়াকুব (আ.) সন্তানদের জীবনের কঠিন মুহূর্তেও আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস নিয়ে পথ চলা শিখিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর ইবরাহিম ও ইয়াকুব (আ.) তাদের সন্তানদের এই অসিয়তই করেছেন। বলেছেন, ‘আমার সন্তানেরা, আল্লাহই তোমাদের জন্য এই ধর্ম মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ কোরো না।’ (সুরা বাকারা: ১৩২)
এমনকি ইয়াকুব (আ.) মৃত্যুর সময় সন্তানদের ইমানের ওপর অবিচল থাকার ওয়াদা করিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘ইয়াকুবের মৃত্যুর সময় তোমরা কি উপস্থিত ছিলে, যখন সে সন্তানদের জিজ্ঞেস করেছিল, আমার পরে তোমরা কার ইবাদত করবে? তারা বলছিল, আমরা আপনার রব, আপনার পিতৃপুরুষ ইবরাহিম, ইসমাইল ও ইসহাকের রবেরই ইবাদত করব। তিনিই কেবল রব; আর আমরা তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকারী।’ (সুরা বাকারা: ১৩৩)
সন্তানদের ইমান শেখানো বাবাদের দায়িত্ব
জন্মের সময় প্রতিটি শিশুই মহান আল্লাহর আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। তবে পরে বাবা-মা, পরিবার ও সমাজের প্রভাবে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। তাই সন্তানের প্রতি বাবাদের প্রথম দায়িত্বই হলো, তাদের মহান আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘একনিষ্ঠভাবে নিজেকে ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত রেখো। এটাই আল্লাহর রীতি—এর ওপরই তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম: ৩০)
শুধু ইমানই নয়, নীতি-নৈতিকতা, আয়-রোজগারের পথ, সামাজিকতা—সব ক্ষেত্রেই বাবাদের দিকনির্দেশকের ভূমিকা পালন করতে হবে। নৈতিকতা শেখানোর প্রতি জোর দিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘বাবার পক্ষ থেকে সন্তানকে উত্তম চরিত্র শেখানোর চেয়ে শ্রেষ্ঠ উত্তরাধিকার আর হয় না।’ (তিরমিজি)
সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা না দেওয়ার পরিণতি
সন্তানকে ধর্মের জ্ঞান শেখানো যেহেতু বাবার প্রধান দায়িত্ব, তাই এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে হাশরের ময়দানে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘জেনে রেখো, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, অধীনস্থদের সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে। অতএব ইমাম, যিনি জনগণের দায়িত্বশীল—তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ গৃহকর্তা তার পরিবারের দায়িত্বশীল; সে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। …’ (বুখারি)
সন্তানকে ইমান, ইসলাম, ধর্মীয় বিধান সম্পর্কে না জানালে পরকালে তারাই আল্লাহর দরবারে বাবার বিরুদ্ধে নালিশ করবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আমাদের রব, আমরা নিজেদের প্রশাসক ও গুরুজনদের কথা মেনেছিলাম, পরে এরাই তো আমাদের বিপথে পরিচালিত করেছিলেন। হে আমাদের রব, তাঁদের দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং ভয়ানক অভিশাপ করুন। (সুরা আহযাব: ৬৭-৬৮)
লেখক: খতিব, ডিসি জামে মসজিদ, নেত্রকোনা
সন্তানের প্রতি বাবার দায়িত্ব অনেক। তাদের সুষ্ঠুভাবে লালন-পালনের প্রধান দায়িত্ব বাবার ওপরই বর্তায়। সন্তানকে ছোট থেকে বড় করে তোলার সময় তাদের জন্য যে অর্থ খরচ হয়, ইসলাম তা বাবাকেই বহন করতে বলে। তবে কেবল ভরণপোষণের খরচ দিয়েই সন্তান থেকে দায়মুক্তি পাওয়া যায় না; বরং সন্তানের মানসিক বিকাশ, শিক্ষাদীক্ষা ও নীতি-নৈতিকতার যত্ন নেওয়া বাবার প্রধান দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বিভিন্নভাবে বাবার দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
সন্তানকে লুকমান (আ.)-এর উপদেশ
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা হজরত লুকমান (আ.)-কে বাবার সামনে উত্তম আদর্শ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পেশ করেছেন। সন্তানকে ভালো মানুষ ও ভালো মুসলমান হিসেবে গড়ে তুলতে যে জ্ঞান, বিশ্বাস ও নৈতিকতা শেখানো দরকার, তা তিনি তাঁর ছেলেকে শিখিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে তাঁর সম্মানে একটি স্বতন্ত্র সুরাও নাজিল করা হয়েছে। সুরা লুকমানে আল্লাহ তাআলা সন্তানকে দেওয়া লুকমান (আ.)-এর কয়েকটি উপদেশের কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রথমেই তিনি ছেলেকে মহান সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এর পরই বাবা-মায়ের আনুগত্যের প্রসঙ্গ এনে সন্তানের সামাজিক জীবনের মূল সূত্র শিখিয়েছেন। তারপর পরকালের জবাবদিহির বিশ্বাসের কথা তুলে ধরে সন্তানের দুনিয়ার জীবনে লাগাম টেনেছেন।
লুকমান (আ.) বলেন, ‘ছেলে আমার, আল্লাহর সঙ্গে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা মহা অন্যায়।’ (সুরা লুকমান: ১৩) এরপর বলেছেন, ‘ছেলে আমার, কোনো বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, এরপর তা যদি পাথরের ভেতরে বা আকাশে বা ভূগর্ভে থাকে, আল্লাহ তা-ও উপস্থিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ গোপন রহস্য জানেন, সবকিছুর খবর রাখেন।’ (সুরা লুকমান: ১৬)
লুকমান (আ.) সন্তানকে নামাজের আদেশ করেছেন। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার কথা শিখিয়েছেন। সত্যের কথা বলতে গিয়ে বিপদ এলে তা ধৈর্য ধরে মোকাবিলা করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘ছেলে আমার, নামাজ কায়েম করো। সৎ কাজে আদেশ দাও, মন্দ কাজে নিষেধ করো। বিপদাপদে ধৈর্য ধরো। নিশ্চয়ই এটি সাহসের কাজ।’ (সুরা লুকমান: ১৭)
লুকমান (আ.) ঘৃণা, অবজ্ঞা ও অহংকারের মতো মন্দ গুণগুলো পরিহার করে বিনয়, ভালোবাসা ও আন্তরিকতার পথে চলার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অহংকার করে মানুষকে অবজ্ঞা কোরো না। পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক-অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণে মধ্যপন্থা অবলম্বন করো। নিচু স্বরে কথা বলো। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সবচেয়ে বেশি অপ্রীতিকর।’ (সুরা লুকমান: ১৮-১৯)
সন্তানকে নুহ (আ.)-এর ইমান আনার অনুরোধ
একজন মুসলমান কখনোই সন্তানের পরকাল নিয়ে না ভেবে থাকতে পারেন না। তাই সন্তানদের ধর্মের দীক্ষা দেওয়া বাবাদের প্রথম দায়িত্ব। যেমন আল্লাহর নবী নুহ (আ.) ৯৫০ বছর মানুষকে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের দাওয়াত দিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে যখন তিনি নৌকায় উঠছিলেন, তখনো তাঁর এক সন্তান অবিশ্বাসী ছিল। তিনি তাঁকে তখনো বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং আল্লাহর আজাবের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
নুহ (আ.) বললেন, ‘নৌকা তাদের বয়ে নিয়ে চলল পাহাড় সমান ঢেউয়ের মধ্যে, নুহ তার ছেলেকে ডাকল—সে সরে দাঁড়িয়েছিল। বলল, ছেলে আমার, এসো, আমাদের সঙ্গে আরোহণ করো আর কাফেরদের সঙ্গে থেকো না।’ (সুরা হুদ: ৪১-৪৩)
সন্তানের জন্য ইবরাহিম (আ.) এর দোয়া
আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.) নিজের ও সন্তানের জন্য বিশেষভাবে দোয়া করেছেন। সন্তানের ইহকাল-পরকালের জন্য কল্যাণ কামনা করেছেন। যেমন তিনি বলেন, ‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের দুজনকে (বাবা-ছেলে) আপনার কাছে সমর্পিত বানিয়ে দিন এবং আমাদের বংশধরদের থেকে একটি সমর্পিত দল তৈরি করে দিন। আমাদের ইবাদতের রীতিনীতি বলে দিন। আমাদের ক্ষমা করুন। আপনি তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (সুরা বাকারা: ১২৮)
সন্তানদের ইমানের ওয়াদা করিয়েছেন ইয়াকুব (আ.)
নবী ইয়াকুব (আ.) সন্তানদের জীবনের কঠিন মুহূর্তেও আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস নিয়ে পথ চলা শিখিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর ইবরাহিম ও ইয়াকুব (আ.) তাদের সন্তানদের এই অসিয়তই করেছেন। বলেছেন, ‘আমার সন্তানেরা, আল্লাহই তোমাদের জন্য এই ধর্ম মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ কোরো না।’ (সুরা বাকারা: ১৩২)
এমনকি ইয়াকুব (আ.) মৃত্যুর সময় সন্তানদের ইমানের ওপর অবিচল থাকার ওয়াদা করিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘ইয়াকুবের মৃত্যুর সময় তোমরা কি উপস্থিত ছিলে, যখন সে সন্তানদের জিজ্ঞেস করেছিল, আমার পরে তোমরা কার ইবাদত করবে? তারা বলছিল, আমরা আপনার রব, আপনার পিতৃপুরুষ ইবরাহিম, ইসমাইল ও ইসহাকের রবেরই ইবাদত করব। তিনিই কেবল রব; আর আমরা তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকারী।’ (সুরা বাকারা: ১৩৩)
সন্তানদের ইমান শেখানো বাবাদের দায়িত্ব
জন্মের সময় প্রতিটি শিশুই মহান আল্লাহর আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। তবে পরে বাবা-মা, পরিবার ও সমাজের প্রভাবে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। তাই সন্তানের প্রতি বাবাদের প্রথম দায়িত্বই হলো, তাদের মহান আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘একনিষ্ঠভাবে নিজেকে ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত রেখো। এটাই আল্লাহর রীতি—এর ওপরই তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম: ৩০)
শুধু ইমানই নয়, নীতি-নৈতিকতা, আয়-রোজগারের পথ, সামাজিকতা—সব ক্ষেত্রেই বাবাদের দিকনির্দেশকের ভূমিকা পালন করতে হবে। নৈতিকতা শেখানোর প্রতি জোর দিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘বাবার পক্ষ থেকে সন্তানকে উত্তম চরিত্র শেখানোর চেয়ে শ্রেষ্ঠ উত্তরাধিকার আর হয় না।’ (তিরমিজি)
সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা না দেওয়ার পরিণতি
সন্তানকে ধর্মের জ্ঞান শেখানো যেহেতু বাবার প্রধান দায়িত্ব, তাই এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে হাশরের ময়দানে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘জেনে রেখো, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, অধীনস্থদের সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে। অতএব ইমাম, যিনি জনগণের দায়িত্বশীল—তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ গৃহকর্তা তার পরিবারের দায়িত্বশীল; সে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। …’ (বুখারি)
সন্তানকে ইমান, ইসলাম, ধর্মীয় বিধান সম্পর্কে না জানালে পরকালে তারাই আল্লাহর দরবারে বাবার বিরুদ্ধে নালিশ করবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আমাদের রব, আমরা নিজেদের প্রশাসক ও গুরুজনদের কথা মেনেছিলাম, পরে এরাই তো আমাদের বিপথে পরিচালিত করেছিলেন। হে আমাদের রব, তাঁদের দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং ভয়ানক অভিশাপ করুন। (সুরা আহযাব: ৬৭-৬৮)
লেখক: খতিব, ডিসি জামে মসজিদ, নেত্রকোনা
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে