স্বরোচিষ সরকার
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এসব বই থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখতে পারবে আর কী শিখতে পারবে না, তা নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা চিন্তিত। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের নেতিবাচক কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে তাঁদের চিন্তার মাত্রাও বেড়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যপুস্তক থেকে শিক্ষার্থীরা আসলে কী শিখবে আর কী শিখতে পারবে না, তা কেউ ভালোভাবে যাচাই করে দেখছেন না।
মাঝে মাঝে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আসাটা জরুরি। কারণ সময়ের ব্যবধানে জ্ঞানবিজ্ঞানের অগ্রগতি হয়, নতুন নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটে, এমনকি মূল্যবোধেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। এগুলোর সঙ্গে শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তককে মানিয়ে নিতে গিয়ে পাঠপদ্ধতিতে ও পাঠ্য বিষয়ে পরিবর্তন না এনে পারা যায় না। ফলে পাঠ্যপুস্তকে নতুন বিষয় যুক্ত হয়, আবার বহু পুরোনো বিষয় বাদ পড়ে। এটাই স্বাভাবিক। মাধ্যমিকের নতুন বাংলা বইগুলোর দিকে তাকিয়ে এই পরিবর্তনের প্রকৃতি উপলব্ধি করা যাক।
প্রযুক্তির পরিবর্তনের ফলে পাঠ্য বিষয়ের পরিবর্তন কতটা অপরিহার্য, বাংলা রচনা শেখানোর ছোট একটা উদাহরণ দিয়ে তা বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেমন আগেকার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ে পিতার কাছে টাকা চেয়ে পুত্রের চিঠি লেখা শেখানো হতো, তাই সেখানে খামের ছবি থাকত, থাকত ঠিকানা লেখার জায়গা। কিন্তু প্রযুক্তির পরিবর্তনে ডাকঘরের প্রয়োজনীয়তা কমে যাওয়ায় এখনকার পুত্ররা তার প্রয়োজনের কথা মোবাইলের মাধ্যমে জানায়। আর্থসামাজিক বাস্তবতার পরিবর্তন ঘটায় কন্যারও টাকার দরকার হয়, মাতার কাছেও টাকা চাইতে হয়। তাই পুত্র বা কন্যাকে এখন পিতা বা মাতা টাকা পাঠান বিকাশ-নগদের মাধ্যমে। নতুন এই প্রজন্মের কাছে তাই পিতার কাছে টাকা চেয়ে পুত্রের চিঠি লেখা শেখানোর কোনো মানে হয় না।
নতুন পাঠ্যপুস্তক রচনার সময়ে এই সমকালীনতার পাশাপাশি আরও অনেক কিছুই হয়তো খেয়াল রাখতে হয়। যেমন অন্তর্ভুক্তি; অর্থাৎ পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব শিশু যেন সমানভাবে একাত্মতা অনুভব করতে পারে। আবার ছেলে বা মেয়ে কেউ যেন মনে না করে তাকে কম গুরুত্ব দেওয়া হলো। নানাভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীও যেন এই শিক্ষাক্রমে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, সেদিকে খেয়াল রাখাও অন্তর্ভুক্তির কাজ। বাংলা বইগুলো রচনার সময়ে এই অন্তর্ভুক্তিকে দেখতে গিয়ে অনেক বিষয়কে নতুনভাবে যোগ করতে হয় এবং অনেক বিষয়কে বাদ দিতে হয়, সেটাই স্বাভাবিক।
পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের সময়ে এসব কথা আগে কখনো ভেবে দেখা হয়েছে, তা মনে হয় না। শুধু এই অন্তর্ভুক্তিই নয়, এবারের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের আগে দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, কোন শ্রেণিতে কী পড়ানো হবে, একেক শ্রেণিতে শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ার পরে পাঠ্য বিষয়ে কী কী পরিবর্তন আসবে এবং প্রতিটি শ্রেণি সমাপ্ত করার পরে শিক্ষার্থী ঠিক কী কী যোগ্যতা অর্জন করবে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এমন সাতটি যোগ্যতার উল্লেখ বইগুলোর ভূমিকায় করা হয়েছে। এসব যোগ্যতা পূরণ করা সম্ভব হলে দশম শ্রেণির মধ্যেই শিক্ষার্থীর ভাষাদক্ষতা এমন অবস্থায় পৌঁছাবে, যাতে মাতৃভাষা বাংলায় সব ধরনের যোগাযোগ করতে শিক্ষার্থীরা সক্ষম হবে। সাহিত্যও যে যোগাযোগের একটা মাধ্যম, এই মাধ্যম লেখকের সঙ্গে পাঠককে যুক্ত করে, এবারের পাঠ্যপুস্তক থেকে সেটাও ভালো বোঝা যাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, এতগুলো যোগ্যতা পূরণের জন্য প্রতিটি শ্রেণিতে মাত্র একটা বাংলা বই কি যথেষ্ট; যেখানে পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমে প্রতিটি শ্রেণিতে তিন-তিনটি বাংলা বই ছিল? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে আগেকার কোনো একটি শ্রেণির তিনটি বইয়ের সঙ্গে বর্তমান শিক্ষাক্রমের ওই শ্রেণির বাংলা বইটির তুলনা করে দেখা যেতে পারে।
আগের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রতিটি শ্রেণিতে একটি ব্যাকরণ, একটি সাহিত্য পাঠ এবং একটি আনন্দ পাঠ পড়ানো হতো। মনে হতে পারে, বাংলা ভাষাদক্ষতাকে ভালোভাবে শেখাতে ব্যাকরণের কোনো বিকল্প নেই। ব্যাকরণের একটা সংজ্ঞাও ছিল এমন: যে বই পাঠ করলে শুদ্ধভাবে লিখতে পড়তে বলতে পারা যায়। কিন্তু ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত যেসব ব্যাকরণ পাঠ্য হিসেবে চালু ছিল, তা থেকে ওই উদ্দেশ্য পূরণ হতো না। সেখানে ভাষাতত্ত্বের বিভিন্ন জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা ছিল। ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব, অর্থতত্ত্বের বহু ধারণা সেখানে দেওয়া হতো।
এসব জ্ঞান শিক্ষার্থীর ভাষাদক্ষতা কীভাবে বাড়াতে পারে, তা নিয়ে কেউ ভাবেননি। এমনকি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ভাষা শেখানোর জন্য কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হয়, তার সঙ্গে তুলনা করে দেখার চেষ্টাও কেউ করেননি। তাই এই ব্যাকরণ থেকে শিক্ষার্থীকে বহু ধরনের সূত্র মুখস্থ করতে হতো। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই আবার বাংলা ভাষার সূত্রও নয়। ধরা যাক ণ-ত্ব, ষ-ত্ব, সন্ধি—এর কোনোটাই বাংলা ভাষার নিয়ম নয়, সংস্কৃত ভাষার নিয়ম। বাংলা ভাষা শেখাতে কেন সংস্কৃত ভাষার নিয়ম শেখাতে হবে, তা নিয়ে আগেকার শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ভাবিত ছিল না। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ব্যাকরণের একঘেয়ে পুনরুক্তির বিষয়টিও বিরক্তি সৃষ্টি করত। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণিতেও যেসব বিষয় থাকত, অষ্টম শ্রেণিতেও তা থাকত, আবার নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণও এর চেয়ে আলাদা কিছু ছিল না।
এ ছাড়া আগেকার শিক্ষাক্রমে সাহিত্যবিষয়ক পাঠ্যপুস্তকে সংকলিত হতো বাংলা সাহিত্যের কিছু ধ্রুপদি নমুনা। মধ্যযুগের সাহিত্য থেকে হাল আমলের সাহিত্যিকের প্রধান প্রধান রচনা সেখানে স্থান পেত। এসব সাহিত্যে ব্যবহৃত শব্দরূপ বিচিত্র, এগুলোর বাক্যগঠন বহুমাত্রিক, উপস্থাপনশৈলীও আলাদা। যে ভাষা দিয়ে এই সব সাহিত্য রচিত, তা সমীহ করার মতো হলেও অনুসরণীয় নয়। তাই সেই ভাষাকে সবাই শ্রদ্ধা করত, ভয় করত, কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগের কথা কেউ ভাবত না। ভুল করে কেউ যদি তা অনুসরণের চেষ্টা করত, তা হয়ে উঠত হাস্যরসের উপাদান।
পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমের তৃতীয় বাংলা বইটি হলো আনন্দপাঠ। এটিকে বলা যেতে পারে সাহিত্য সংকলনেরই একটি প্রলম্বিত অংশ। দুটি বইয়ের মধ্যে বিশেষ কোনো তফাত নেই। বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীর পরিচয় ঘটানোই দুটি বইয়ের মূল উদ্দেশ্য, সেটি হয়তো খানিকটা সফল হয়। কিন্তু সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার গঠন নিয়ে কোনো আলোচনা না থাকায়, এসব রচনা শিক্ষার্থীর মনে বিশেষ কোনো ছাপ ফেলে না।
এ তিনটি বইয়ের বিপরীতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন বাংলা বইটির তুলনা করা যাক। নতুন বইটির অভিনবত্ব এর উপস্থাপন কৌশলে এবং পাঠ নির্বাচনে। এখানে সুপরিকল্পিতভাবে অধ্যায়গুলো বিন্যস্ত, এখানে একেকটি যোগ্যতা পূরণের লক্ষ্যে একেকটি অধ্যায়। প্রয়োজনে অধ্যায়ের মধ্যে আলাদা আলাদা পরিচ্ছেদ। ধরা যাক একটি যোগ্যতা হলো: প্রমিত ভাষায় যোগাযোগদক্ষতার উন্নয়ন। নতুন বইয়ের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ের একাধিক পরিচ্ছেদে ধাপে ধাপে এই যোগ্যতা অর্জনের কৌশল ও পাঠ ঠিক করা হয়েছে। যেমন ষষ্ঠ শ্রেণিতে দেওয়া হয়েছে প্রমিত ভাষায় কথা বলার জন্য উচ্চারণের ব্যাকরণিক কিছু দিক, যার মধ্যে রয়েছে কাছাকাছি উচ্চারণের শব্দ এবং শব্দগুলোর মধ্যে ধ্বনির তফাত নির্ধারণ, আবার শিক্ষার্থীকে ধ্বনিসচেতন করার জন্য রাখা হয়েছে একটি কবিতা ও একটি নাটিকা।
কবিতা ও নাটিকার অনুশীলনীর মধ্যেও মূল যোগ্যতার বিষয়টি মনে রাখা হয়েছে। একই যোগ্যতার জন্য সপ্তম শ্রেণিতে রাখা হয়েছে ধ্বনির ঘোষ-অঘোষ পার্থক্য এবং আঞ্চলিকতার বিষয়। সেখানেও একটি কবিতা এবং একটি গল্পকে সহায়ক পাঠ হিসেবে রাখা হয়েছে। অভিন্ন যোগ্যতা নিয়ে প্রণীত অষ্টম শ্রেণির সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে ধ্বনির অল্পপ্রাণতা-মহাপ্রাণতার পাশাপাশি ধ্বনির সঙ্গে বাক্প্রত্যঙ্গের সম্পর্ক এবং লেখ্য প্রমিত রীতির পাঠ। এ জন্য এই শ্রেণিতে প্রয়োজন হয়েছে তিনটি সাহিত্যিক নমুনা: একটি কবিতা এবং দুটি গল্প। প্রমিত ভাষায় দক্ষ করে তুলতে নবম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের এই অংশে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে স্বরধ্বনি উচ্চারণ এবং প্রমিত ভাষার একাধিক স্তর ও সাধুভাষারীতির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি। এ জন্য এই শ্রেণিতে প্রয়োজন হয়েছে একটি কবিতা, একটি আঞ্চলিক ভাষাসমৃদ্ধ গল্পের পাঠ এবং একটি সাধুভাষারীতিতে লিখিত সাহিত্যের পাঠ।
নতুন পাঠ্যপুস্তকে এভাবে প্রতিটি যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে শ্রেণি অনুযায়ী ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবকিছুই এখানে পরিকল্পিত, কোনো রচনাই এখানে অপ্রয়োজনে আনা হয়নি, আবার বাংলাদেশের বা বাংলা সাহিত্যের প্রতিনিধিত্বশীল প্রায় সব লেখকের লেখার সঙ্গে যাতে শিক্ষার্থীর পরিচয় ঘটে, সে চেষ্টাও করা হয়েছে।
এভাবে মাধ্যমিকের নতুন বাংলা পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সেই সব বিষয় শেখানোর চেষ্টা আছে, যেগুলো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনে সব ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে, আবার শেখানোর বিষয় থেকে সেগুলোকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যেগুলো তার ভবিষ্যৎ জীবনের প্রায়োগিক ক্ষেত্রে কাজে আসবে না। নতুন এই পাঠ্যপুস্তকে সাহিত্যকে আনা হয়েছে দুইভাবে: সাহিত্য নিজেই একটা যোগাযোগমাধ্যম, সেই যুক্তিতে; আবার ভাষাদক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রায়োগিক উদাহরণ হিসেবে।
এবারের অষ্টম শ্রেণির বাংলা বইয়ে শামসুর রাহমানের ‘পণ্ডশ্রম’ নামের একটি কবিতা পাঠ্য করা হয়েছে। কবিতাটির মূল কথা: কোনো কিছু ঠিকমতো যাচাই না করে সিদ্ধান্ত নিতে নেই; চোখ দিয়ে দেখে, কান দিয়ে শুনে, বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্তে আসতে হয়। নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে যাঁরা নেতিবাচক প্রচারণা করছেন, তাঁদের হয়তো কোনো মিশন আছে, কিন্তু যাঁরা এগুলো শুনছেন বা শুনতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের কাছে বিশেষ অনুরোধ: নতুন পাঠ্যপুস্তককে আগেকার পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে একটু তুলনা করে দেখুন। নতুন বইয়ে কী কী শেখানো হচ্ছে, তা যুক্তিযুক্ত এবং সমকালের প্রয়োজনে হচ্ছে কি না, ভাবুন। আবার যেগুলো শেখানো হচ্ছে না, সেগুলোর পরিহার যৌক্তিক কি না, তা নিয়েও চিন্তা করুন। এই বিবেচনায় নতুন পাঠ্যপুস্তকের মধ্যেও যদি কোনো ঘাটতি থাকে, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে তা অবগত করিয়ে বর্তমান প্রক্রিয়ার সহযোগী হয়ে উঠুন। নতুন বইগুলোর সূচনা বক্তব্যে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডও এমন আহ্বান জানিয়েছে।
লেখক: স্বরোচিষ সরকার, অধ্যাপক, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এসব বই থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখতে পারবে আর কী শিখতে পারবে না, তা নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা চিন্তিত। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের নেতিবাচক কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে তাঁদের চিন্তার মাত্রাও বেড়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যপুস্তক থেকে শিক্ষার্থীরা আসলে কী শিখবে আর কী শিখতে পারবে না, তা কেউ ভালোভাবে যাচাই করে দেখছেন না।
মাঝে মাঝে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আসাটা জরুরি। কারণ সময়ের ব্যবধানে জ্ঞানবিজ্ঞানের অগ্রগতি হয়, নতুন নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটে, এমনকি মূল্যবোধেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। এগুলোর সঙ্গে শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তককে মানিয়ে নিতে গিয়ে পাঠপদ্ধতিতে ও পাঠ্য বিষয়ে পরিবর্তন না এনে পারা যায় না। ফলে পাঠ্যপুস্তকে নতুন বিষয় যুক্ত হয়, আবার বহু পুরোনো বিষয় বাদ পড়ে। এটাই স্বাভাবিক। মাধ্যমিকের নতুন বাংলা বইগুলোর দিকে তাকিয়ে এই পরিবর্তনের প্রকৃতি উপলব্ধি করা যাক।
প্রযুক্তির পরিবর্তনের ফলে পাঠ্য বিষয়ের পরিবর্তন কতটা অপরিহার্য, বাংলা রচনা শেখানোর ছোট একটা উদাহরণ দিয়ে তা বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেমন আগেকার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ে পিতার কাছে টাকা চেয়ে পুত্রের চিঠি লেখা শেখানো হতো, তাই সেখানে খামের ছবি থাকত, থাকত ঠিকানা লেখার জায়গা। কিন্তু প্রযুক্তির পরিবর্তনে ডাকঘরের প্রয়োজনীয়তা কমে যাওয়ায় এখনকার পুত্ররা তার প্রয়োজনের কথা মোবাইলের মাধ্যমে জানায়। আর্থসামাজিক বাস্তবতার পরিবর্তন ঘটায় কন্যারও টাকার দরকার হয়, মাতার কাছেও টাকা চাইতে হয়। তাই পুত্র বা কন্যাকে এখন পিতা বা মাতা টাকা পাঠান বিকাশ-নগদের মাধ্যমে। নতুন এই প্রজন্মের কাছে তাই পিতার কাছে টাকা চেয়ে পুত্রের চিঠি লেখা শেখানোর কোনো মানে হয় না।
নতুন পাঠ্যপুস্তক রচনার সময়ে এই সমকালীনতার পাশাপাশি আরও অনেক কিছুই হয়তো খেয়াল রাখতে হয়। যেমন অন্তর্ভুক্তি; অর্থাৎ পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব শিশু যেন সমানভাবে একাত্মতা অনুভব করতে পারে। আবার ছেলে বা মেয়ে কেউ যেন মনে না করে তাকে কম গুরুত্ব দেওয়া হলো। নানাভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীও যেন এই শিক্ষাক্রমে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, সেদিকে খেয়াল রাখাও অন্তর্ভুক্তির কাজ। বাংলা বইগুলো রচনার সময়ে এই অন্তর্ভুক্তিকে দেখতে গিয়ে অনেক বিষয়কে নতুনভাবে যোগ করতে হয় এবং অনেক বিষয়কে বাদ দিতে হয়, সেটাই স্বাভাবিক।
পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের সময়ে এসব কথা আগে কখনো ভেবে দেখা হয়েছে, তা মনে হয় না। শুধু এই অন্তর্ভুক্তিই নয়, এবারের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের আগে দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, কোন শ্রেণিতে কী পড়ানো হবে, একেক শ্রেণিতে শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ার পরে পাঠ্য বিষয়ে কী কী পরিবর্তন আসবে এবং প্রতিটি শ্রেণি সমাপ্ত করার পরে শিক্ষার্থী ঠিক কী কী যোগ্যতা অর্জন করবে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এমন সাতটি যোগ্যতার উল্লেখ বইগুলোর ভূমিকায় করা হয়েছে। এসব যোগ্যতা পূরণ করা সম্ভব হলে দশম শ্রেণির মধ্যেই শিক্ষার্থীর ভাষাদক্ষতা এমন অবস্থায় পৌঁছাবে, যাতে মাতৃভাষা বাংলায় সব ধরনের যোগাযোগ করতে শিক্ষার্থীরা সক্ষম হবে। সাহিত্যও যে যোগাযোগের একটা মাধ্যম, এই মাধ্যম লেখকের সঙ্গে পাঠককে যুক্ত করে, এবারের পাঠ্যপুস্তক থেকে সেটাও ভালো বোঝা যাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, এতগুলো যোগ্যতা পূরণের জন্য প্রতিটি শ্রেণিতে মাত্র একটা বাংলা বই কি যথেষ্ট; যেখানে পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমে প্রতিটি শ্রেণিতে তিন-তিনটি বাংলা বই ছিল? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে আগেকার কোনো একটি শ্রেণির তিনটি বইয়ের সঙ্গে বর্তমান শিক্ষাক্রমের ওই শ্রেণির বাংলা বইটির তুলনা করে দেখা যেতে পারে।
আগের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রতিটি শ্রেণিতে একটি ব্যাকরণ, একটি সাহিত্য পাঠ এবং একটি আনন্দ পাঠ পড়ানো হতো। মনে হতে পারে, বাংলা ভাষাদক্ষতাকে ভালোভাবে শেখাতে ব্যাকরণের কোনো বিকল্প নেই। ব্যাকরণের একটা সংজ্ঞাও ছিল এমন: যে বই পাঠ করলে শুদ্ধভাবে লিখতে পড়তে বলতে পারা যায়। কিন্তু ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত যেসব ব্যাকরণ পাঠ্য হিসেবে চালু ছিল, তা থেকে ওই উদ্দেশ্য পূরণ হতো না। সেখানে ভাষাতত্ত্বের বিভিন্ন জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা ছিল। ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব, অর্থতত্ত্বের বহু ধারণা সেখানে দেওয়া হতো।
এসব জ্ঞান শিক্ষার্থীর ভাষাদক্ষতা কীভাবে বাড়াতে পারে, তা নিয়ে কেউ ভাবেননি। এমনকি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ভাষা শেখানোর জন্য কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হয়, তার সঙ্গে তুলনা করে দেখার চেষ্টাও কেউ করেননি। তাই এই ব্যাকরণ থেকে শিক্ষার্থীকে বহু ধরনের সূত্র মুখস্থ করতে হতো। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই আবার বাংলা ভাষার সূত্রও নয়। ধরা যাক ণ-ত্ব, ষ-ত্ব, সন্ধি—এর কোনোটাই বাংলা ভাষার নিয়ম নয়, সংস্কৃত ভাষার নিয়ম। বাংলা ভাষা শেখাতে কেন সংস্কৃত ভাষার নিয়ম শেখাতে হবে, তা নিয়ে আগেকার শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক ভাবিত ছিল না। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ব্যাকরণের একঘেয়ে পুনরুক্তির বিষয়টিও বিরক্তি সৃষ্টি করত। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণিতেও যেসব বিষয় থাকত, অষ্টম শ্রেণিতেও তা থাকত, আবার নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণও এর চেয়ে আলাদা কিছু ছিল না।
এ ছাড়া আগেকার শিক্ষাক্রমে সাহিত্যবিষয়ক পাঠ্যপুস্তকে সংকলিত হতো বাংলা সাহিত্যের কিছু ধ্রুপদি নমুনা। মধ্যযুগের সাহিত্য থেকে হাল আমলের সাহিত্যিকের প্রধান প্রধান রচনা সেখানে স্থান পেত। এসব সাহিত্যে ব্যবহৃত শব্দরূপ বিচিত্র, এগুলোর বাক্যগঠন বহুমাত্রিক, উপস্থাপনশৈলীও আলাদা। যে ভাষা দিয়ে এই সব সাহিত্য রচিত, তা সমীহ করার মতো হলেও অনুসরণীয় নয়। তাই সেই ভাষাকে সবাই শ্রদ্ধা করত, ভয় করত, কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগের কথা কেউ ভাবত না। ভুল করে কেউ যদি তা অনুসরণের চেষ্টা করত, তা হয়ে উঠত হাস্যরসের উপাদান।
পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমের তৃতীয় বাংলা বইটি হলো আনন্দপাঠ। এটিকে বলা যেতে পারে সাহিত্য সংকলনেরই একটি প্রলম্বিত অংশ। দুটি বইয়ের মধ্যে বিশেষ কোনো তফাত নেই। বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীর পরিচয় ঘটানোই দুটি বইয়ের মূল উদ্দেশ্য, সেটি হয়তো খানিকটা সফল হয়। কিন্তু সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার গঠন নিয়ে কোনো আলোচনা না থাকায়, এসব রচনা শিক্ষার্থীর মনে বিশেষ কোনো ছাপ ফেলে না।
এ তিনটি বইয়ের বিপরীতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন বাংলা বইটির তুলনা করা যাক। নতুন বইটির অভিনবত্ব এর উপস্থাপন কৌশলে এবং পাঠ নির্বাচনে। এখানে সুপরিকল্পিতভাবে অধ্যায়গুলো বিন্যস্ত, এখানে একেকটি যোগ্যতা পূরণের লক্ষ্যে একেকটি অধ্যায়। প্রয়োজনে অধ্যায়ের মধ্যে আলাদা আলাদা পরিচ্ছেদ। ধরা যাক একটি যোগ্যতা হলো: প্রমিত ভাষায় যোগাযোগদক্ষতার উন্নয়ন। নতুন বইয়ের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ের একাধিক পরিচ্ছেদে ধাপে ধাপে এই যোগ্যতা অর্জনের কৌশল ও পাঠ ঠিক করা হয়েছে। যেমন ষষ্ঠ শ্রেণিতে দেওয়া হয়েছে প্রমিত ভাষায় কথা বলার জন্য উচ্চারণের ব্যাকরণিক কিছু দিক, যার মধ্যে রয়েছে কাছাকাছি উচ্চারণের শব্দ এবং শব্দগুলোর মধ্যে ধ্বনির তফাত নির্ধারণ, আবার শিক্ষার্থীকে ধ্বনিসচেতন করার জন্য রাখা হয়েছে একটি কবিতা ও একটি নাটিকা।
কবিতা ও নাটিকার অনুশীলনীর মধ্যেও মূল যোগ্যতার বিষয়টি মনে রাখা হয়েছে। একই যোগ্যতার জন্য সপ্তম শ্রেণিতে রাখা হয়েছে ধ্বনির ঘোষ-অঘোষ পার্থক্য এবং আঞ্চলিকতার বিষয়। সেখানেও একটি কবিতা এবং একটি গল্পকে সহায়ক পাঠ হিসেবে রাখা হয়েছে। অভিন্ন যোগ্যতা নিয়ে প্রণীত অষ্টম শ্রেণির সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে ধ্বনির অল্পপ্রাণতা-মহাপ্রাণতার পাশাপাশি ধ্বনির সঙ্গে বাক্প্রত্যঙ্গের সম্পর্ক এবং লেখ্য প্রমিত রীতির পাঠ। এ জন্য এই শ্রেণিতে প্রয়োজন হয়েছে তিনটি সাহিত্যিক নমুনা: একটি কবিতা এবং দুটি গল্প। প্রমিত ভাষায় দক্ষ করে তুলতে নবম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের এই অংশে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে স্বরধ্বনি উচ্চারণ এবং প্রমিত ভাষার একাধিক স্তর ও সাধুভাষারীতির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি। এ জন্য এই শ্রেণিতে প্রয়োজন হয়েছে একটি কবিতা, একটি আঞ্চলিক ভাষাসমৃদ্ধ গল্পের পাঠ এবং একটি সাধুভাষারীতিতে লিখিত সাহিত্যের পাঠ।
নতুন পাঠ্যপুস্তকে এভাবে প্রতিটি যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে শ্রেণি অনুযায়ী ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবকিছুই এখানে পরিকল্পিত, কোনো রচনাই এখানে অপ্রয়োজনে আনা হয়নি, আবার বাংলাদেশের বা বাংলা সাহিত্যের প্রতিনিধিত্বশীল প্রায় সব লেখকের লেখার সঙ্গে যাতে শিক্ষার্থীর পরিচয় ঘটে, সে চেষ্টাও করা হয়েছে।
এভাবে মাধ্যমিকের নতুন বাংলা পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সেই সব বিষয় শেখানোর চেষ্টা আছে, যেগুলো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনে সব ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে, আবার শেখানোর বিষয় থেকে সেগুলোকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যেগুলো তার ভবিষ্যৎ জীবনের প্রায়োগিক ক্ষেত্রে কাজে আসবে না। নতুন এই পাঠ্যপুস্তকে সাহিত্যকে আনা হয়েছে দুইভাবে: সাহিত্য নিজেই একটা যোগাযোগমাধ্যম, সেই যুক্তিতে; আবার ভাষাদক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রায়োগিক উদাহরণ হিসেবে।
এবারের অষ্টম শ্রেণির বাংলা বইয়ে শামসুর রাহমানের ‘পণ্ডশ্রম’ নামের একটি কবিতা পাঠ্য করা হয়েছে। কবিতাটির মূল কথা: কোনো কিছু ঠিকমতো যাচাই না করে সিদ্ধান্ত নিতে নেই; চোখ দিয়ে দেখে, কান দিয়ে শুনে, বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্তে আসতে হয়। নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে যাঁরা নেতিবাচক প্রচারণা করছেন, তাঁদের হয়তো কোনো মিশন আছে, কিন্তু যাঁরা এগুলো শুনছেন বা শুনতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের কাছে বিশেষ অনুরোধ: নতুন পাঠ্যপুস্তককে আগেকার পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে একটু তুলনা করে দেখুন। নতুন বইয়ে কী কী শেখানো হচ্ছে, তা যুক্তিযুক্ত এবং সমকালের প্রয়োজনে হচ্ছে কি না, ভাবুন। আবার যেগুলো শেখানো হচ্ছে না, সেগুলোর পরিহার যৌক্তিক কি না, তা নিয়েও চিন্তা করুন। এই বিবেচনায় নতুন পাঠ্যপুস্তকের মধ্যেও যদি কোনো ঘাটতি থাকে, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে তা অবগত করিয়ে বর্তমান প্রক্রিয়ার সহযোগী হয়ে উঠুন। নতুন বইগুলোর সূচনা বক্তব্যে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডও এমন আহ্বান জানিয়েছে।
লেখক: স্বরোচিষ সরকার, অধ্যাপক, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে