কামরুল হাসান, ঢাকা
চিত্রনায়ক ফেরদৌসের সঙ্গে আমার কস্মিনকালেও আলাপ-পরিচয় ছিল না। হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে। আমন্ত্রিত নক্ষত্রেরা সেই অনুষ্ঠানে ঝলমলে পোশাকে আবির্ভূত হন, এরপর আলোয় ভাসতে ভাসতে বিশাল প্রাঙ্গণের ভেতরে চলে যান। আমার সেখানে দায়িত্ব ছিল ‘চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে ভেতরের রাস উৎসব’ দেখার। কাজেই অনুষ্ঠানে আসা নক্ষত্রদের সঙ্গে আমার মতো অনেক উটকো লোকের আলাপ-পরিচয় হয়তো কখনো হয়েছে, কিন্তু সেটা মনে রাখার মতো কিছু নয়।
স্বাভাবিকভাবেই সেই আলাপের সূত্রে ফেরদৌস আমাকে চিনতে পারলেন না। তবু ভদ্রতাসুলভ কথাবার্তা আর নাম-পরিচয় জানাজানি। প্রথম আলাপেই মনে হলো মানুষটি খুবই আত্মবিশ্বাসী, কথায় চনমনে।গতকা
ল বৃহস্পতিবার সকালে গিয়েছিলাম ধানমন্ডিতে ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের নির্বাচনী প্রচার দেখতে; সঙ্গে ফটোসাংবাদিক হাসান রাজা। ফেরদৌস থাকেন বনানীতে। আমাদের ইচ্ছা ছিল সেখান থেকেই শুরু করার। কিন্তু আগের দিন তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট জানালেন, সকালে বাসা থেকে তিনি সোজা আসবেন ধানমন্ডি ৪/এ সড়কের নির্বাচনী কার্যালয়ে, সেখান থেকেই প্রচার শুরু। শেষ পর্যন্ত সকালে আমরা ফেরদৌসকে পেলাম ধানমন্ডি পুরোনো ১৫ নম্বরের ডায়মন্ড গলিতে। হালকা সাদা পাঞ্জাবির ওপরে কালো মুজিব কোট। পায়ে হাওয়াই চপ্পল। পেছনের দিকে মেলে ধরা কালো চুল বাতাসে দোল খাচ্ছে।
আমাদের পরিকল্পনা ছিল সারা দিন ফেরদৌসের সঙ্গে কাটাব। দেখব তাঁর ভোটের প্রচার। জনপ্রিয় চিত্রনায়ক কীভাবে জনতার নেতা হবেন, তারই প্রাথমিক প্রস্তুতির সাক্ষী থাকব।
এবারের নির্বাচনে বিএনপি নেই, স্বাভাবিকভাবেই মাঠও একরকম ফাঁকা। তার ওপর ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ফেরদৌস। কাজেই তাঁকে শাসন এবং শাসানোর কোনো শঙ্কা নেই। তারপর ভোটে লড়তে তো বিরাট লোকবল লাগে। তা কি আছে ফেরদৌসের? ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মঞ্জুরুল আলম অশ্রুর কথায় মিলল এর জবাব। বললেন, ‘ফেরদৌসকে নেপথ্যে থেকে সহায়তা করছেন মেয়র ফজলে নূর তাপস। ফেরদৌসের সঙ্গে যে লোকবল দেখছেন, সবাই তাপসের।’ অশ্রুর জবাবের সত্যতাও মিলল। প্রচারে ফেরদৌস একা নন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতা কাজী মোরশেদ হোসেন গামাসহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা-কর্মী তাঁর সঙ্গে আছেন। তিনি যেখানে যাচ্ছেন, সবাই দল বেঁধে তাঁকে অনুসরণ করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়া ফেরদৌস দুই কন্যাসন্তানের বাবা। স্ত্রী তানিয়া ফেরদৌস পেশায় বৈমানিক। ফেরদৌসের ঝুলিতে আছে পাঁচ-পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার। ছোটবেলায় তাঁর ইচ্ছা ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু ১৯৯৭ সালে হঠাৎ করেই ‘বুকের ভেতর আগুন’ নিয়ে চলচ্চিত্রে আসেন। এরপর ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ করে হইচই ফেলে দেন। তারপর আর থেমে থাকতে হয়নি। ২৫ বছর ধরে দুই বাংলা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। সেই অর্থে ফেরদৌসকে ‘হার্টথ্রব’ নায়ক বলা যেতেই পারে।
কিন্তু এত দিনের ক্যারিয়ার শেষে ৪৯ বছরের নায়ক ফেরদৌস কি কখনো ভেবেছিলেন, রাজনীতিতে আসবেন? ফেরদৌস বললেন, ‘আমি তো নায়ক হওয়ার কথা ভাবিওনি। আসলে মানুষের জীবনে নানা বাঁক থাকে; ধরে নিন, এটাও সে রকম একটি বাঁক।’
নির্বাচনী প্রচারে নেমে কথা বলার দুদণ্ড ফুরসত নেই ফেরদৌসের। উৎসুক জনতা আর গণমাধ্যমকর্মীরা সারাক্ষণ তাঁকে ঘিরে আছেন। এরই ফাঁকে ফেরদৌস বললেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) আমার নির্বাচনী প্রচারের দ্বিতীয় দিন।’ জানালেন, তালিকায় আছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড তথা ধানমন্ডি ২ নম্বর থেকে ২৭ নম্বর হয়ে মধুবাগের পুরো এলাকা। এখানে ৫৫ হাজারের বেশি ভোট। সারা দিন প্রচার শেষে সন্ধ্যায় গিয়ে বসবেন নির্বাচনী অফিসে। আগের দিনও এভাবে নিউমার্কেট এলাকা চষে বেড়িয়েছেন।
ফেরদৌস যেখানে যাচ্ছেন, সেখানেই মানুষের ভিড়। কোনো কোনো বাসার একটি ফ্ল্যাটে ঢুকলেই পুরো অ্যাপার্টমেন্টের লোকজন ভেঙে পড়ছে সেখানে। ভোট চাওয়ার সুযোগ না দিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে উঠছেন সেলফি তুলতে। কেউ হাত ধরছেন, কেউ এটা-সেটা খেতে বলছেন। বাড়িতে নায়ক আসায় সবাই যেন খুশিতে আটখানা।
৮/এ সড়কের একটি গলিতে হাবিব হেরিটেজের নিচে অপেক্ষা করছি আমরা। ভেতরে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত ফেরদৌস। বাড়ির লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরেছেন। তিনি সেখান থেকে বেরোতেই পারছেন না। পাশের ড্রিম ওয়ার্ল্ডের এক বয়স্ক ব্যক্তি তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘আমার সৌভাগ্য, আপনাকে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেলাম।’ ফেরদৌস কোনো কথা না বলে তাঁর সেই ভুবনভোলানো হাসি দিয়ে প্রত্যুত্তর দিলেন।
ঈদগাহ রোডে টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছিলেন কিছু মানুষ। নায়ককে দেখতেই লাইন ছত্রখান। ফেরদৌস নিজেই তাঁদের কাছে গিয়ে কথা বললেন, ভোট চাইলেন। ১৫ নম্বর স্টাফ কোয়ার্টারের মমতাজ বেগমের মুখে মধুর হাসি। খুশি তাঁর সারা মুখে ছড়িয়ে। প্রিয় নায়কের সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ পেয়েছেন। ছবি তোলা শেষে মমতাজ বললেন, ‘জীবনে আর কিছু না হলেও চলবে ভাই।’
মানুষের ভোট পাওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী? ফেরদৌস বললেন, ‘আগে আমি ছিলাম সাধারণ মানুষ থেকে দূরে, পর্দার ওপারের মানুষ। এখন আমি মানুষের সামনে। তাঁরা আমাকে চেনেন, কেবল তাঁদের কাছে যাওয়া বাকি ছিল। এখন সেটাই করছি। আমি আশাবাদী।’
যত সামনে এগোচ্ছি, মানুষের ভিড় তত বাড়ছে। উৎসুক নারী-পুরুষ বারান্দায় হুমড়ি খেয়ে প্রিয় নায়ককে একঝলক দেখছেন। কেউ হাত নেড়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন। নিচ থেকে তার জবাবও দিচ্ছেন ফেরদৌস। তিনিও হাত নাড়ছেন। দুই পাশের বারান্দায় দাঁড়ানো প্রায় সবার হাতেই মোবাইল ফোন। তাঁরা নায়কের সাধারণের কাতারে নেমে আসার স্মৃতি ধরে রাখছেন।
একফাঁকে ফেরদৌসের কাছে জানতে চাইলাম, ভোট চাইতে গেলে লোকজন কি তাঁদের সমস্যার কথা বলছেন? ফেরদৌস বললেন, ‘এই এলাকার সমস্যাগুলো জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী। এসব সমস্যা হয়তো এক দিনে সমাধান করা যাবে না। কিন্তু আমি মানুষকে বোঝাতে এসেছি, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।’
ফেরদৌসকে সামনে পেয়ে লোকে ছবি তুলছেন, হইহুল্লোড় করছেন, কিন্তু তাঁরা কি ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন? দু-একজনের কাছে সে প্রশ্ন করতে একজন কোনো উত্তরই দিলেন না। আরেকজন বললেন, ‘দেখি, সময় আসুক।’
৩০০ নম্বর পানাম ভবনের দুই তরুণীর হঠাৎ চিৎকার। তাঁদের বাড়িতে নায়ক। ফেরদৌসের সঙ্গে ছবি তুলে দুই বোন মহাখুশি। সে খুশি আর ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না।
রাস্তায় কাউকে দেখলেই ফেরদৌস এগিয়ে যাচ্ছেন। সালাম দিয়ে হাত মেলাচ্ছেন। আর মুখে থাকছে সেই নাছোড় হাসি। এতক্ষণ চলতে চলতে আমরাও ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এবার অফিসে ফিরতে হবে। বিদায় নেব বলে সামনে যেতেই ভোটার ভেবে আমার দিকেও হাত বাড়ালেন ফেরদৌস। বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমার জন্য দোয়া করবেন।’
জবাবে বললাম, ওয়ালাইকুম আসসালাম।
চিত্রনায়ক ফেরদৌসের সঙ্গে আমার কস্মিনকালেও আলাপ-পরিচয় ছিল না। হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে। আমন্ত্রিত নক্ষত্রেরা সেই অনুষ্ঠানে ঝলমলে পোশাকে আবির্ভূত হন, এরপর আলোয় ভাসতে ভাসতে বিশাল প্রাঙ্গণের ভেতরে চলে যান। আমার সেখানে দায়িত্ব ছিল ‘চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে ভেতরের রাস উৎসব’ দেখার। কাজেই অনুষ্ঠানে আসা নক্ষত্রদের সঙ্গে আমার মতো অনেক উটকো লোকের আলাপ-পরিচয় হয়তো কখনো হয়েছে, কিন্তু সেটা মনে রাখার মতো কিছু নয়।
স্বাভাবিকভাবেই সেই আলাপের সূত্রে ফেরদৌস আমাকে চিনতে পারলেন না। তবু ভদ্রতাসুলভ কথাবার্তা আর নাম-পরিচয় জানাজানি। প্রথম আলাপেই মনে হলো মানুষটি খুবই আত্মবিশ্বাসী, কথায় চনমনে।গতকা
ল বৃহস্পতিবার সকালে গিয়েছিলাম ধানমন্ডিতে ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের নির্বাচনী প্রচার দেখতে; সঙ্গে ফটোসাংবাদিক হাসান রাজা। ফেরদৌস থাকেন বনানীতে। আমাদের ইচ্ছা ছিল সেখান থেকেই শুরু করার। কিন্তু আগের দিন তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট জানালেন, সকালে বাসা থেকে তিনি সোজা আসবেন ধানমন্ডি ৪/এ সড়কের নির্বাচনী কার্যালয়ে, সেখান থেকেই প্রচার শুরু। শেষ পর্যন্ত সকালে আমরা ফেরদৌসকে পেলাম ধানমন্ডি পুরোনো ১৫ নম্বরের ডায়মন্ড গলিতে। হালকা সাদা পাঞ্জাবির ওপরে কালো মুজিব কোট। পায়ে হাওয়াই চপ্পল। পেছনের দিকে মেলে ধরা কালো চুল বাতাসে দোল খাচ্ছে।
আমাদের পরিকল্পনা ছিল সারা দিন ফেরদৌসের সঙ্গে কাটাব। দেখব তাঁর ভোটের প্রচার। জনপ্রিয় চিত্রনায়ক কীভাবে জনতার নেতা হবেন, তারই প্রাথমিক প্রস্তুতির সাক্ষী থাকব।
এবারের নির্বাচনে বিএনপি নেই, স্বাভাবিকভাবেই মাঠও একরকম ফাঁকা। তার ওপর ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ফেরদৌস। কাজেই তাঁকে শাসন এবং শাসানোর কোনো শঙ্কা নেই। তারপর ভোটে লড়তে তো বিরাট লোকবল লাগে। তা কি আছে ফেরদৌসের? ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মঞ্জুরুল আলম অশ্রুর কথায় মিলল এর জবাব। বললেন, ‘ফেরদৌসকে নেপথ্যে থেকে সহায়তা করছেন মেয়র ফজলে নূর তাপস। ফেরদৌসের সঙ্গে যে লোকবল দেখছেন, সবাই তাপসের।’ অশ্রুর জবাবের সত্যতাও মিলল। প্রচারে ফেরদৌস একা নন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতা কাজী মোরশেদ হোসেন গামাসহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা-কর্মী তাঁর সঙ্গে আছেন। তিনি যেখানে যাচ্ছেন, সবাই দল বেঁধে তাঁকে অনুসরণ করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়া ফেরদৌস দুই কন্যাসন্তানের বাবা। স্ত্রী তানিয়া ফেরদৌস পেশায় বৈমানিক। ফেরদৌসের ঝুলিতে আছে পাঁচ-পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার। ছোটবেলায় তাঁর ইচ্ছা ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু ১৯৯৭ সালে হঠাৎ করেই ‘বুকের ভেতর আগুন’ নিয়ে চলচ্চিত্রে আসেন। এরপর ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ করে হইচই ফেলে দেন। তারপর আর থেমে থাকতে হয়নি। ২৫ বছর ধরে দুই বাংলা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। সেই অর্থে ফেরদৌসকে ‘হার্টথ্রব’ নায়ক বলা যেতেই পারে।
কিন্তু এত দিনের ক্যারিয়ার শেষে ৪৯ বছরের নায়ক ফেরদৌস কি কখনো ভেবেছিলেন, রাজনীতিতে আসবেন? ফেরদৌস বললেন, ‘আমি তো নায়ক হওয়ার কথা ভাবিওনি। আসলে মানুষের জীবনে নানা বাঁক থাকে; ধরে নিন, এটাও সে রকম একটি বাঁক।’
নির্বাচনী প্রচারে নেমে কথা বলার দুদণ্ড ফুরসত নেই ফেরদৌসের। উৎসুক জনতা আর গণমাধ্যমকর্মীরা সারাক্ষণ তাঁকে ঘিরে আছেন। এরই ফাঁকে ফেরদৌস বললেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) আমার নির্বাচনী প্রচারের দ্বিতীয় দিন।’ জানালেন, তালিকায় আছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড তথা ধানমন্ডি ২ নম্বর থেকে ২৭ নম্বর হয়ে মধুবাগের পুরো এলাকা। এখানে ৫৫ হাজারের বেশি ভোট। সারা দিন প্রচার শেষে সন্ধ্যায় গিয়ে বসবেন নির্বাচনী অফিসে। আগের দিনও এভাবে নিউমার্কেট এলাকা চষে বেড়িয়েছেন।
ফেরদৌস যেখানে যাচ্ছেন, সেখানেই মানুষের ভিড়। কোনো কোনো বাসার একটি ফ্ল্যাটে ঢুকলেই পুরো অ্যাপার্টমেন্টের লোকজন ভেঙে পড়ছে সেখানে। ভোট চাওয়ার সুযোগ না দিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে উঠছেন সেলফি তুলতে। কেউ হাত ধরছেন, কেউ এটা-সেটা খেতে বলছেন। বাড়িতে নায়ক আসায় সবাই যেন খুশিতে আটখানা।
৮/এ সড়কের একটি গলিতে হাবিব হেরিটেজের নিচে অপেক্ষা করছি আমরা। ভেতরে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত ফেরদৌস। বাড়ির লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরেছেন। তিনি সেখান থেকে বেরোতেই পারছেন না। পাশের ড্রিম ওয়ার্ল্ডের এক বয়স্ক ব্যক্তি তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘আমার সৌভাগ্য, আপনাকে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেলাম।’ ফেরদৌস কোনো কথা না বলে তাঁর সেই ভুবনভোলানো হাসি দিয়ে প্রত্যুত্তর দিলেন।
ঈদগাহ রোডে টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছিলেন কিছু মানুষ। নায়ককে দেখতেই লাইন ছত্রখান। ফেরদৌস নিজেই তাঁদের কাছে গিয়ে কথা বললেন, ভোট চাইলেন। ১৫ নম্বর স্টাফ কোয়ার্টারের মমতাজ বেগমের মুখে মধুর হাসি। খুশি তাঁর সারা মুখে ছড়িয়ে। প্রিয় নায়কের সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ পেয়েছেন। ছবি তোলা শেষে মমতাজ বললেন, ‘জীবনে আর কিছু না হলেও চলবে ভাই।’
মানুষের ভোট পাওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী? ফেরদৌস বললেন, ‘আগে আমি ছিলাম সাধারণ মানুষ থেকে দূরে, পর্দার ওপারের মানুষ। এখন আমি মানুষের সামনে। তাঁরা আমাকে চেনেন, কেবল তাঁদের কাছে যাওয়া বাকি ছিল। এখন সেটাই করছি। আমি আশাবাদী।’
যত সামনে এগোচ্ছি, মানুষের ভিড় তত বাড়ছে। উৎসুক নারী-পুরুষ বারান্দায় হুমড়ি খেয়ে প্রিয় নায়ককে একঝলক দেখছেন। কেউ হাত নেড়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন। নিচ থেকে তার জবাবও দিচ্ছেন ফেরদৌস। তিনিও হাত নাড়ছেন। দুই পাশের বারান্দায় দাঁড়ানো প্রায় সবার হাতেই মোবাইল ফোন। তাঁরা নায়কের সাধারণের কাতারে নেমে আসার স্মৃতি ধরে রাখছেন।
একফাঁকে ফেরদৌসের কাছে জানতে চাইলাম, ভোট চাইতে গেলে লোকজন কি তাঁদের সমস্যার কথা বলছেন? ফেরদৌস বললেন, ‘এই এলাকার সমস্যাগুলো জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী। এসব সমস্যা হয়তো এক দিনে সমাধান করা যাবে না। কিন্তু আমি মানুষকে বোঝাতে এসেছি, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।’
ফেরদৌসকে সামনে পেয়ে লোকে ছবি তুলছেন, হইহুল্লোড় করছেন, কিন্তু তাঁরা কি ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন? দু-একজনের কাছে সে প্রশ্ন করতে একজন কোনো উত্তরই দিলেন না। আরেকজন বললেন, ‘দেখি, সময় আসুক।’
৩০০ নম্বর পানাম ভবনের দুই তরুণীর হঠাৎ চিৎকার। তাঁদের বাড়িতে নায়ক। ফেরদৌসের সঙ্গে ছবি তুলে দুই বোন মহাখুশি। সে খুশি আর ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না।
রাস্তায় কাউকে দেখলেই ফেরদৌস এগিয়ে যাচ্ছেন। সালাম দিয়ে হাত মেলাচ্ছেন। আর মুখে থাকছে সেই নাছোড় হাসি। এতক্ষণ চলতে চলতে আমরাও ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এবার অফিসে ফিরতে হবে। বিদায় নেব বলে সামনে যেতেই ভোটার ভেবে আমার দিকেও হাত বাড়ালেন ফেরদৌস। বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমার জন্য দোয়া করবেন।’
জবাবে বললাম, ওয়ালাইকুম আসসালাম।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে