অরুণ কর্মকার
এত দিনে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে বলা যায়। বিষয়টি হলো, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যে অনিশ্চয়তা বা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, অক্টোবরেই হতে পারে তার অবসান। রাজনৈতিক মহল থেকে যেসব আভাস-ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ঘটনাবলি যেভাবে এবং যেদিকে এগোচ্ছে, তাতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া কারও হাতেই আর সময়ও নেই অপেক্ষা কিংবা কালক্ষেপণ করার মতো। সুতরাং ফয়সালা তো একটা এই সময়ের মধ্যেই হতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, ফয়সালাটা হবে কীভাবে? আন্দোলনের মাধ্যমে নাকি সমঝোতার পথে? বিএনপি এবং তার সরকারবিরোধী রাজনৈতিক মিত্ররা অবশ্য আন্দোলনেই আছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায় করার কথাও তারা জোরেশোরেই বলেও যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রায় এক বছর ধরে তারা যে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, তাতে তাদের দাবি আদায় বা লক্ষ্য পূরণ হতে পারে—এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন।
প্রকৃতপক্ষে বিএনপি ও তার মিত্রদের রাজপথের আন্দোলন গতানুগতিক কর্মসূচির একটা বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে গত এক বছরে এই আন্দোলনের গতিও বাড়েনি, প্রকৃতিও বদলায়নি। তাই সরকারও এই আন্দোলন নিয়ে খুব একটা মাথা না ঘামিয়েই পেরেছে ও পারছে। এক দফার আন্দোলন ছাড়াও বিএনপির কাছে এখন একটা বড় ও স্পর্শকাতর ইস্যু হলো গুরুতর অসুস্থ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসা। এই ইস্যুতে দলটি সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার এক আলটিমেটামও দিয়েছিল। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার পর তারা বলল, এখন তারা কী পদক্ষেপ নেবে, তা ভেবে নির্ধারণ করবে।
কী আশ্চর্য ব্যাপার! আলটিমেটাম (নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া) দেওয়ার আগেই তো চূড়ান্ত করে রাখার কথা যে সরকার সাড়া না দিলে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। আলটিমেটাম তো তখনই দেওয়া হয়, যখন তার পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে কঠোরতম কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ভাবতে বসার মতো আলটিমেটাম বোধ হয় এই প্রথম দেখা গেল। পাশাপাশি এক দফার আন্দোলনের অবস্থাও তথৈবচ। আজ গাবতলীতে সমাবেশ, কাল আমিনবাজারে। পরশু ধোলাইখালে। আরেকদিন পুলিশ অনুমতি দিল না বলে কর্মসূচি স্থগিত। এই দিয়ে কখনো এক দফা দাবি আদায় হতে পারে না।
এই যখন অবস্থা, তখন আন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা করার ভাবনা মোটেই বাস্তবানুগ নয়। তবে সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের নানামুখী চাপ বিএনপিকে আশাবাদী করে রেখেছিল। কিন্তু সেই চাপেও এখন পর্যন্ত যে ফল হয়েছে তাতেও সরকার খুব একটা বিচলিত নয়। অন্তত বিএনপির এক দফা দাবি মেনে সেই অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করার মতো কোনো কিছু সরকারের ভাবনাতেই নেই। এত দিনে বিএনপিও হয়তো তা অনুধাবন করতে পেরেছে। তাই সমঝোতার পথে হাঁটার একটা বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার ইস্যুটি সরকার এবং বিএনপি উভয়ের কাছে একটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
সেই সুযোগের সদ্ব্যবহারও শুরু হয়েছে। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এসকান্দার ২৫ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ আবেদনটি সরকারের কাছে (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে) করেছেন। সরকারের সবুজ সংকেত না পেয়ে যে তিনি এই আবেদন করেছেন—এমনটি ভাবার কোনো কারণ দেখি না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও খুব দ্রুততার সঙ্গেই আবেদনটির প্রক্রিয়াকরণ শুরু করে দিয়েছে। সেটি ইতিমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য চলে গেছে। এখন শুরু হবে আলোচনা। লক্ষ্য হবে সমঝোতা।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা। তার সঙ্গে নিশ্চিতভাবে যুক্ত হবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়ে সমঝোতা। আশা করা যায়, পারস্পরিক আলোচনায় উভয় পক্ষের অবস্থান গ্রহণযোগ্যভাবে যৌক্তিক হলে সব বিষয়েই সমঝোতা হবে।
আসলে সমঝোতা হতেই হবে। কারণ বিএনপি আন্দোলন করে সরকারকে পিছু হটাতে বা তাদের দাবি আদায় করতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের নানামুখী চাপ থাকা সত্ত্বেও। আবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে যে রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, সরকারও বেশি দিন তা উপেক্ষা করে চলতে পারবে না। আর শুধু তো রাজনীতি নয়, দেশের অর্থনীতিও এক সংকটাপন্ন অবস্থায় উপনীত হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে চলেছে। সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগতভাবে কমছে। প্রবাসী আয় নিম্নমুখী। রপ্তানি আয়েও ইতিবাচক ধারা আছে, তেমনটি বলা যাবে না। মাস দুয়েক ধরে আমাদের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র তার সবচেয়ে অস্ত্র হিসেবে ডলার ব্যবহারের নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে। আমাদের মতো দেশের অর্থনীতির জন্য মার্কিন ডলার পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী অস্ত্র। এই অস্ত্র মোকাবিলা করার কৌশল ও সামর্থ্য এখনো আমরা অর্জন করতে পারিনি। এ অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হলে দেশ গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে, যা কোনো রাজনৈতিক দলেরই কাম্য হতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র তার ভূরাজনৈতিক স্বার্থে এগুলো করেই যাবে। মুখে যতই বাংলাদেশের গণতন্ত্র-মানবাধিকারের জন্য ফেনা তুলে ফেলুক, তাদের আসল উদ্দেশ্য ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা। সে জন্য তারা পৃথিবীর এমন অনেক দেশের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলছে, যেখানে গণতন্ত্র কিংবা মানবাধিকারের সামান্যই টিকে আছে। আমাদের চোখের সামনেই এমন নজিরও আছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোনো সরকারপ্রধানকে রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে অভূতপূর্ব সংবর্ধনা-সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এর একমাত্র কারণ তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় যে দলই থাকুক, তাদেরই যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বিচারিতা মোকাবিলা করতে হবে।
এখন থেকেই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার নামের অস্ত্রের প্রয়োগ। কাজেই এসব ক্ষেত্রে আমাদের দরকার একটা জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জাতীয় নীতি অনুসরণ করা। এমন নীতি অনুসরণ করে চলার পথকে যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই কঠিন করে তুলতে চেষ্টা করবে। দেশের ভেতরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমঝোতা থাকলে, তাদের ওই অপচেষ্টা মোকাবিলা করে অগ্রসর হওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ হতে পারে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অচলাবস্থা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে জাতীয় সমঝোতা সৃষ্টির একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়েছে। আমাদের উচিত তার সদ্ব্যবহার করা। নির্বাচনের পরও আমাদের অগ্রযাত্রার পথ মসৃণ করতে পারে সেই সমঝোতাই।
এত দিনে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে বলা যায়। বিষয়টি হলো, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যে অনিশ্চয়তা বা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, অক্টোবরেই হতে পারে তার অবসান। রাজনৈতিক মহল থেকে যেসব আভাস-ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ঘটনাবলি যেভাবে এবং যেদিকে এগোচ্ছে, তাতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া কারও হাতেই আর সময়ও নেই অপেক্ষা কিংবা কালক্ষেপণ করার মতো। সুতরাং ফয়সালা তো একটা এই সময়ের মধ্যেই হতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, ফয়সালাটা হবে কীভাবে? আন্দোলনের মাধ্যমে নাকি সমঝোতার পথে? বিএনপি এবং তার সরকারবিরোধী রাজনৈতিক মিত্ররা অবশ্য আন্দোলনেই আছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায় করার কথাও তারা জোরেশোরেই বলেও যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রায় এক বছর ধরে তারা যে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, তাতে তাদের দাবি আদায় বা লক্ষ্য পূরণ হতে পারে—এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন।
প্রকৃতপক্ষে বিএনপি ও তার মিত্রদের রাজপথের আন্দোলন গতানুগতিক কর্মসূচির একটা বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে গত এক বছরে এই আন্দোলনের গতিও বাড়েনি, প্রকৃতিও বদলায়নি। তাই সরকারও এই আন্দোলন নিয়ে খুব একটা মাথা না ঘামিয়েই পেরেছে ও পারছে। এক দফার আন্দোলন ছাড়াও বিএনপির কাছে এখন একটা বড় ও স্পর্শকাতর ইস্যু হলো গুরুতর অসুস্থ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসা। এই ইস্যুতে দলটি সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার এক আলটিমেটামও দিয়েছিল। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার পর তারা বলল, এখন তারা কী পদক্ষেপ নেবে, তা ভেবে নির্ধারণ করবে।
কী আশ্চর্য ব্যাপার! আলটিমেটাম (নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া) দেওয়ার আগেই তো চূড়ান্ত করে রাখার কথা যে সরকার সাড়া না দিলে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে। আলটিমেটাম তো তখনই দেওয়া হয়, যখন তার পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে কঠোরতম কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ভাবতে বসার মতো আলটিমেটাম বোধ হয় এই প্রথম দেখা গেল। পাশাপাশি এক দফার আন্দোলনের অবস্থাও তথৈবচ। আজ গাবতলীতে সমাবেশ, কাল আমিনবাজারে। পরশু ধোলাইখালে। আরেকদিন পুলিশ অনুমতি দিল না বলে কর্মসূচি স্থগিত। এই দিয়ে কখনো এক দফা দাবি আদায় হতে পারে না।
এই যখন অবস্থা, তখন আন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা করার ভাবনা মোটেই বাস্তবানুগ নয়। তবে সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের নানামুখী চাপ বিএনপিকে আশাবাদী করে রেখেছিল। কিন্তু সেই চাপেও এখন পর্যন্ত যে ফল হয়েছে তাতেও সরকার খুব একটা বিচলিত নয়। অন্তত বিএনপির এক দফা দাবি মেনে সেই অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করার মতো কোনো কিছু সরকারের ভাবনাতেই নেই। এত দিনে বিএনপিও হয়তো তা অনুধাবন করতে পেরেছে। তাই সমঝোতার পথে হাঁটার একটা বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার ইস্যুটি সরকার এবং বিএনপি উভয়ের কাছে একটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
সেই সুযোগের সদ্ব্যবহারও শুরু হয়েছে। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এসকান্দার ২৫ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ আবেদনটি সরকারের কাছে (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে) করেছেন। সরকারের সবুজ সংকেত না পেয়ে যে তিনি এই আবেদন করেছেন—এমনটি ভাবার কোনো কারণ দেখি না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও খুব দ্রুততার সঙ্গেই আবেদনটির প্রক্রিয়াকরণ শুরু করে দিয়েছে। সেটি ইতিমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য চলে গেছে। এখন শুরু হবে আলোচনা। লক্ষ্য হবে সমঝোতা।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা। তার সঙ্গে নিশ্চিতভাবে যুক্ত হবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়ে সমঝোতা। আশা করা যায়, পারস্পরিক আলোচনায় উভয় পক্ষের অবস্থান গ্রহণযোগ্যভাবে যৌক্তিক হলে সব বিষয়েই সমঝোতা হবে।
আসলে সমঝোতা হতেই হবে। কারণ বিএনপি আন্দোলন করে সরকারকে পিছু হটাতে বা তাদের দাবি আদায় করতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের নানামুখী চাপ থাকা সত্ত্বেও। আবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে যে রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, সরকারও বেশি দিন তা উপেক্ষা করে চলতে পারবে না। আর শুধু তো রাজনীতি নয়, দেশের অর্থনীতিও এক সংকটাপন্ন অবস্থায় উপনীত হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে চলেছে। সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগতভাবে কমছে। প্রবাসী আয় নিম্নমুখী। রপ্তানি আয়েও ইতিবাচক ধারা আছে, তেমনটি বলা যাবে না। মাস দুয়েক ধরে আমাদের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র তার সবচেয়ে অস্ত্র হিসেবে ডলার ব্যবহারের নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে। আমাদের মতো দেশের অর্থনীতির জন্য মার্কিন ডলার পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী অস্ত্র। এই অস্ত্র মোকাবিলা করার কৌশল ও সামর্থ্য এখনো আমরা অর্জন করতে পারিনি। এ অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হলে দেশ গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে, যা কোনো রাজনৈতিক দলেরই কাম্য হতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র তার ভূরাজনৈতিক স্বার্থে এগুলো করেই যাবে। মুখে যতই বাংলাদেশের গণতন্ত্র-মানবাধিকারের জন্য ফেনা তুলে ফেলুক, তাদের আসল উদ্দেশ্য ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা। সে জন্য তারা পৃথিবীর এমন অনেক দেশের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলছে, যেখানে গণতন্ত্র কিংবা মানবাধিকারের সামান্যই টিকে আছে। আমাদের চোখের সামনেই এমন নজিরও আছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোনো সরকারপ্রধানকে রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে অভূতপূর্ব সংবর্ধনা-সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এর একমাত্র কারণ তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় যে দলই থাকুক, তাদেরই যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বিচারিতা মোকাবিলা করতে হবে।
এখন থেকেই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার নামের অস্ত্রের প্রয়োগ। কাজেই এসব ক্ষেত্রে আমাদের দরকার একটা জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জাতীয় নীতি অনুসরণ করা। এমন নীতি অনুসরণ করে চলার পথকে যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই কঠিন করে তুলতে চেষ্টা করবে। দেশের ভেতরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমঝোতা থাকলে, তাদের ওই অপচেষ্টা মোকাবিলা করে অগ্রসর হওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ হতে পারে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অচলাবস্থা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে জাতীয় সমঝোতা সৃষ্টির একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়েছে। আমাদের উচিত তার সদ্ব্যবহার করা। নির্বাচনের পরও আমাদের অগ্রযাত্রার পথ মসৃণ করতে পারে সেই সমঝোতাই।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ ঘণ্টা আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ ঘণ্টা আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ ঘণ্টা আগে