পঞ্চাশের দশকে ঢাকা শহর ছিল সবুজে সবুজময়। সে সময় জিআইএস স্যাটেলাইট ম্যাপিংয়ের সুযোগ ছিল না। থাকলে হয়তো আমরা দেখতে পেতাম সেকালের ঢাকা শহরে বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ হংকং শহরের চেয়ে কম ছিল না। তখন রমনা এলাকা ছিল সেই সবুজ শহরের কেন্দ্রস্থল। পুরান ঢাকার গর্ব ছিল বলধা গার্ডেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ উদ্যানসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, স্বামীবাগের রোজ গার্ডেন, গভর্নর হাউজ উদ্যান, হাইকোর্ট-সংলগ্ন হর্টিকালচারাল গার্ডেন, দিলকুশা গার্ডেন, গ্রিন রোড ও কাঁঠালবাগানের জঙ্গল, ঢাকা কৃষি কলেজ এলাকার ফসলের মাঠ ও বৃক্ষরাজি ইত্যাদি প্রিয় ঢাকা শহরকে শ্যামলিমায় ভরে রেখেছিল।
অথচ নব্বইয়ের দশকে এসে ড. নওয়াজেশ আহমদ তাঁর ‘মহাবনস্পতির পদাবলী’ বইয়ে কুঞ্জলতার গুঞ্জরণ নিবন্ধে লিখেছেন, ‘পুরান ঢাকার বিরাট এলাকায়—লালবাগ থেকে সূত্রাপুর, গাছগাছালির সবুজ ছাউনি প্রায় চোখেই পড়ে না। অলিগলি কংক্রিটের জঙ্গলে ভর্তি, তার ওপর নোংরা রাস্তাঘাট, বসতি, খোলা নর্দমা আর পায়খানা, ধুলোবালি—এককথায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এর মধ্যে এক খণ্ড সবুজ দ্বীপের বিশেষ প্রয়োজন।’
শুধু পুরান ঢাকা নয়, সমগ্র ঢাকা শহরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশজুড়েই এমন সবুজ দ্বীপের আজ বড় বেশি প্রয়োজন। এসব সবুজ দ্বীপ বা উপবন গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা কমিয়ে নগরীকে সুশীতল করতে পারে, অন্যদিকে শীতকালে শীতের হিমেল বাতাস থেকে রক্ষা করে নগরীকে উষ্ণ রাখতে পারে। এ ছাড়া নিবিড় ঘন সবুজ শ্যামলিমা মানুষের দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, নগরে ফিরিয়ে আনতে পারে নগরবাসী পাখিদেরও। সেই সব পাখির কলকাকলীতে কিছুটা শান্তি আসতে পারে শব্দদূষণের যন্ত্রণা থেকে। এতে নগরবাসী স্বস্তি পাবে।
শহরকে সবুজ করার অনেকগুলো সুবিধা আছে। এতে শহরের বায়ুদূষণের দূষক কণাগুলো গাছপালা শুষে নেয়, শহরের বাতাসে গাছপালা যে জলীয় বাষ্প ছাড়ে, তাতে শহর কিছুটা ঠান্ডা হয়। ঢাকা শহরে যেভাবে দিনে দিনে গাছপালা লাগানোর জায়গা কমে আসছে, তাতে এখন শহরকে সবুজময় রাখতে অন্য পরিকল্পনা করার কথা ভাবতে হচ্ছে। শুধু জমিতে গাছপালা লাগিয়ে নয়, অন্য দেশের শহরের মতো বিভিন্ন ভবনের ছাদে, দেয়ালেও গাছপালা রাখার কথা চিন্তা করতে হচ্ছে। হংকং শহরে কয়েক বছর আগেও সবুজ আচ্ছাদনের পরিমাণ ছিল শহরের আয়তনের প্রায় ৩২ শতাংশ। কিন্তু গাছপালা সেভাবে আর না লাগানোর কারণে বর্তমানে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশে। তাই শহরের সবুজ বাড়াতে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে বাড়ির সীমানাপ্রাচীরগুলোতে ছোট ছোট বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে সবুজ করা, রাস্তার ধারে ও স্কুল প্রাঙ্গণে গাছ লাগানোর।
ঢাকা শহরের সবুজ অংশ হলো সেখানকার উদ্যান, মাঠ, সড়কের গাছপালা, কৃষিজমি, বসতবাড়ি ও কলকারখানার মধ্যে থাকা গাছপালা, জলাশয়ের ধারের গাছ ইত্যাদি। যেকোনো শহরের সৌন্দর্য ও সুস্থ পরিবেশের জন্য শহরের এই সবুজায়ন খুব দরকার। আগে আকাশ থেকে ঢাকা শহরকে দেখলে প্রাণটা ভরে যেত, মুখ থেকে অস্ফুটভাবে বেরিয়ে আসত—এত সবুজ আমাদের দেশটা! কিন্তু মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই ঢাকা শহর সেই শ্যামল লাবণ্য হারিয়েছে। সম্প্রতি নওশিন নাওয়ার ও তাঁর সঙ্গীদের এক গবেষণায় সেই বেদনার কথা উঠে এসেছে। তাঁরা ১৯৮৯ থেকে ২০২০ সাল (৩০ বছর) পর্যন্ত এ নিয়ে জিআইএস ও রিমোট সেন্সিং পদ্ধতিতে স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে গবেষণায় দেখেছেন যে, ঢাকা শহরে সবুজ আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ কমেছে ৫৬ শতাংশ। ১৯৮৯ সালে ঢাকা শহরে সবুজের পরিমাণ যেখানে ছিল মোট আয়তনের ১৭ শতাংশ, সেখানে ২০২০ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ শতাংশে। তার মানে, এই তিন দশকে ঢাকা শহরের সবুজ কমেছে ৮৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। এর অর্থ, ঢাকা শহর খুব দ্রুত সবুজ হারাচ্ছে, ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনায় আমাদের প্রিয় ঢাকা শহর এখন বৃক্ষের বদলে ইমারতের জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। কমে গেছে জলাভূমি ও জলাশয়। ফলে নগরীর তাপমাত্রা বাড়ছে। এই চিত্র অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ঢাকা নগরীর পরিকল্পনাবিদ ও উভয় সিটি করপোরেশনের নগরকর্তাদের জরুরিভাবে এখনই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা শহরের সবুজাঞ্চল বাড়াতে সুপরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। পরিকল্পনায় অবশ্যই দেশি গাছ লাগানোর ওপর জোর দিতে হবে।
ঢাকা শহরে খোলা জমি খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তাই পরিকল্পনায় রাখতে হচ্ছে সেই সব জমিকে, যেখানে সাধারণত কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হবে না। এরূপ স্থানের মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকা শহরের বড় বড় রাস্তার ধার ও বিভাজক, শিল্প ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাম্পাস, বেড়িবাঁধ। বর্তমানে ঢাকা শহরে প্রায় ৯০ প্রজাতির পথবৃক্ষ রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে অনেক বিদেশি বৃক্ষও রয়েছে, যেমন—বকুল, দেবদারু, মেহগনি, রেইনট্রি, আকাশমণি, কাঠবাদাম, শিশু, ইউক্যালিপটাস, কনকচূড়া, কৃষ্ণচূড়া ইত্যাদি। উদ্ভিদ বৈচিত্র্য, সৌন্দর্য, পাখিদের আবাসস্থল ও পরিবেশের জন্য এসব বৃক্ষ ততটা মঙ্গলজনক নয়। বিদেশি গাছের আগ্রাসনে ঢাকা শহরের পথ থেকে আমাদের অনেক দেশি প্রজাতির গাছ দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। দেশি প্রজাতির গাছগুলো আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। তাই পথতরু হিসেবে আমরা আমাদের দেশি প্রজাতির গাছ যেমন—পলাশ, শিমুল, শাল, গন্ধি গজারি, ছাতিম, উদাল, কদম, নিম, হরীতকী, বহেড়া, অর্জুন, জাম, আমলকী, তেঁতুল, দেশি গাব, তুন, মেন্দা বা খারাজোড়া, জগডুমুর, বরুণ ইত্যাদি গাছ পথের ধারে লাগানো উচিত। বড় খোলা স্থান, মাঠ বা মোড়ে বট, অশ্বত্থ ও পাকুড়ের মতো পরিবেশবান্ধব বৃক্ষ আর নেই।
গ্রীষ্মকালে যে বটের সুশীতল ছায়া অনুভব না করেছে, সে আসলে বুঝবে না তার মিত্রতা কতখানি। একটা বড় বটগাছ শহরের বাতাস থেকে যে পরিমাণ দূষক দ্রব্য অপসারণ ও অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে, তা অন্য কোনো গাছ পারে না। তাই বলে ঢাকার কোনো কোনো সড়ক বিভাজকে যেভাবে এসব গাছ লাগানো হয়েছে, তা আমাদের অপরিকল্পনারই সাক্ষ্য দেয়। এসব গাছের বৃদ্ধির জন্য যে স্থান দরকার, তা সেখানে তারা পায় না, প্রবল ঝড়-বাতাসে নরম স্বভাবের এসব গাছের ডালপালা ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও থাকে। সড়ক বিভাজকে তাই বৃহৎ বৃক্ষ লাগানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে।
ঢাকা শহরের গাছপালা দ্রুত অনেক বেশি কমলেও আমাদের মধ্যে যেন কোনো উদ্বেগ নেই। দুই সিটি করপোরেশন কিছু উদ্যোগ নিলেও তা যথেষ্ট নয়। নাগরিক অংশগ্রহণ ছাড়া ব্যাপকভাবে দ্রুত সবুজায়ন সম্ভব নয়।
লেখক: কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
পঞ্চাশের দশকে ঢাকা শহর ছিল সবুজে সবুজময়। সে সময় জিআইএস স্যাটেলাইট ম্যাপিংয়ের সুযোগ ছিল না। থাকলে হয়তো আমরা দেখতে পেতাম সেকালের ঢাকা শহরে বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ হংকং শহরের চেয়ে কম ছিল না। তখন রমনা এলাকা ছিল সেই সবুজ শহরের কেন্দ্রস্থল। পুরান ঢাকার গর্ব ছিল বলধা গার্ডেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ উদ্যানসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, স্বামীবাগের রোজ গার্ডেন, গভর্নর হাউজ উদ্যান, হাইকোর্ট-সংলগ্ন হর্টিকালচারাল গার্ডেন, দিলকুশা গার্ডেন, গ্রিন রোড ও কাঁঠালবাগানের জঙ্গল, ঢাকা কৃষি কলেজ এলাকার ফসলের মাঠ ও বৃক্ষরাজি ইত্যাদি প্রিয় ঢাকা শহরকে শ্যামলিমায় ভরে রেখেছিল।
অথচ নব্বইয়ের দশকে এসে ড. নওয়াজেশ আহমদ তাঁর ‘মহাবনস্পতির পদাবলী’ বইয়ে কুঞ্জলতার গুঞ্জরণ নিবন্ধে লিখেছেন, ‘পুরান ঢাকার বিরাট এলাকায়—লালবাগ থেকে সূত্রাপুর, গাছগাছালির সবুজ ছাউনি প্রায় চোখেই পড়ে না। অলিগলি কংক্রিটের জঙ্গলে ভর্তি, তার ওপর নোংরা রাস্তাঘাট, বসতি, খোলা নর্দমা আর পায়খানা, ধুলোবালি—এককথায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এর মধ্যে এক খণ্ড সবুজ দ্বীপের বিশেষ প্রয়োজন।’
শুধু পুরান ঢাকা নয়, সমগ্র ঢাকা শহরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশজুড়েই এমন সবুজ দ্বীপের আজ বড় বেশি প্রয়োজন। এসব সবুজ দ্বীপ বা উপবন গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা কমিয়ে নগরীকে সুশীতল করতে পারে, অন্যদিকে শীতকালে শীতের হিমেল বাতাস থেকে রক্ষা করে নগরীকে উষ্ণ রাখতে পারে। এ ছাড়া নিবিড় ঘন সবুজ শ্যামলিমা মানুষের দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, নগরে ফিরিয়ে আনতে পারে নগরবাসী পাখিদেরও। সেই সব পাখির কলকাকলীতে কিছুটা শান্তি আসতে পারে শব্দদূষণের যন্ত্রণা থেকে। এতে নগরবাসী স্বস্তি পাবে।
শহরকে সবুজ করার অনেকগুলো সুবিধা আছে। এতে শহরের বায়ুদূষণের দূষক কণাগুলো গাছপালা শুষে নেয়, শহরের বাতাসে গাছপালা যে জলীয় বাষ্প ছাড়ে, তাতে শহর কিছুটা ঠান্ডা হয়। ঢাকা শহরে যেভাবে দিনে দিনে গাছপালা লাগানোর জায়গা কমে আসছে, তাতে এখন শহরকে সবুজময় রাখতে অন্য পরিকল্পনা করার কথা ভাবতে হচ্ছে। শুধু জমিতে গাছপালা লাগিয়ে নয়, অন্য দেশের শহরের মতো বিভিন্ন ভবনের ছাদে, দেয়ালেও গাছপালা রাখার কথা চিন্তা করতে হচ্ছে। হংকং শহরে কয়েক বছর আগেও সবুজ আচ্ছাদনের পরিমাণ ছিল শহরের আয়তনের প্রায় ৩২ শতাংশ। কিন্তু গাছপালা সেভাবে আর না লাগানোর কারণে বর্তমানে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশে। তাই শহরের সবুজ বাড়াতে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে বাড়ির সীমানাপ্রাচীরগুলোতে ছোট ছোট বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে সবুজ করা, রাস্তার ধারে ও স্কুল প্রাঙ্গণে গাছ লাগানোর।
ঢাকা শহরের সবুজ অংশ হলো সেখানকার উদ্যান, মাঠ, সড়কের গাছপালা, কৃষিজমি, বসতবাড়ি ও কলকারখানার মধ্যে থাকা গাছপালা, জলাশয়ের ধারের গাছ ইত্যাদি। যেকোনো শহরের সৌন্দর্য ও সুস্থ পরিবেশের জন্য শহরের এই সবুজায়ন খুব দরকার। আগে আকাশ থেকে ঢাকা শহরকে দেখলে প্রাণটা ভরে যেত, মুখ থেকে অস্ফুটভাবে বেরিয়ে আসত—এত সবুজ আমাদের দেশটা! কিন্তু মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই ঢাকা শহর সেই শ্যামল লাবণ্য হারিয়েছে। সম্প্রতি নওশিন নাওয়ার ও তাঁর সঙ্গীদের এক গবেষণায় সেই বেদনার কথা উঠে এসেছে। তাঁরা ১৯৮৯ থেকে ২০২০ সাল (৩০ বছর) পর্যন্ত এ নিয়ে জিআইএস ও রিমোট সেন্সিং পদ্ধতিতে স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে গবেষণায় দেখেছেন যে, ঢাকা শহরে সবুজ আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ কমেছে ৫৬ শতাংশ। ১৯৮৯ সালে ঢাকা শহরে সবুজের পরিমাণ যেখানে ছিল মোট আয়তনের ১৭ শতাংশ, সেখানে ২০২০ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ শতাংশে। তার মানে, এই তিন দশকে ঢাকা শহরের সবুজ কমেছে ৮৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। এর অর্থ, ঢাকা শহর খুব দ্রুত সবুজ হারাচ্ছে, ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনায় আমাদের প্রিয় ঢাকা শহর এখন বৃক্ষের বদলে ইমারতের জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। কমে গেছে জলাভূমি ও জলাশয়। ফলে নগরীর তাপমাত্রা বাড়ছে। এই চিত্র অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ঢাকা নগরীর পরিকল্পনাবিদ ও উভয় সিটি করপোরেশনের নগরকর্তাদের জরুরিভাবে এখনই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা শহরের সবুজাঞ্চল বাড়াতে সুপরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। পরিকল্পনায় অবশ্যই দেশি গাছ লাগানোর ওপর জোর দিতে হবে।
ঢাকা শহরে খোলা জমি খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তাই পরিকল্পনায় রাখতে হচ্ছে সেই সব জমিকে, যেখানে সাধারণত কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হবে না। এরূপ স্থানের মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকা শহরের বড় বড় রাস্তার ধার ও বিভাজক, শিল্প ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাম্পাস, বেড়িবাঁধ। বর্তমানে ঢাকা শহরে প্রায় ৯০ প্রজাতির পথবৃক্ষ রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে অনেক বিদেশি বৃক্ষও রয়েছে, যেমন—বকুল, দেবদারু, মেহগনি, রেইনট্রি, আকাশমণি, কাঠবাদাম, শিশু, ইউক্যালিপটাস, কনকচূড়া, কৃষ্ণচূড়া ইত্যাদি। উদ্ভিদ বৈচিত্র্য, সৌন্দর্য, পাখিদের আবাসস্থল ও পরিবেশের জন্য এসব বৃক্ষ ততটা মঙ্গলজনক নয়। বিদেশি গাছের আগ্রাসনে ঢাকা শহরের পথ থেকে আমাদের অনেক দেশি প্রজাতির গাছ দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। দেশি প্রজাতির গাছগুলো আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। তাই পথতরু হিসেবে আমরা আমাদের দেশি প্রজাতির গাছ যেমন—পলাশ, শিমুল, শাল, গন্ধি গজারি, ছাতিম, উদাল, কদম, নিম, হরীতকী, বহেড়া, অর্জুন, জাম, আমলকী, তেঁতুল, দেশি গাব, তুন, মেন্দা বা খারাজোড়া, জগডুমুর, বরুণ ইত্যাদি গাছ পথের ধারে লাগানো উচিত। বড় খোলা স্থান, মাঠ বা মোড়ে বট, অশ্বত্থ ও পাকুড়ের মতো পরিবেশবান্ধব বৃক্ষ আর নেই।
গ্রীষ্মকালে যে বটের সুশীতল ছায়া অনুভব না করেছে, সে আসলে বুঝবে না তার মিত্রতা কতখানি। একটা বড় বটগাছ শহরের বাতাস থেকে যে পরিমাণ দূষক দ্রব্য অপসারণ ও অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে, তা অন্য কোনো গাছ পারে না। তাই বলে ঢাকার কোনো কোনো সড়ক বিভাজকে যেভাবে এসব গাছ লাগানো হয়েছে, তা আমাদের অপরিকল্পনারই সাক্ষ্য দেয়। এসব গাছের বৃদ্ধির জন্য যে স্থান দরকার, তা সেখানে তারা পায় না, প্রবল ঝড়-বাতাসে নরম স্বভাবের এসব গাছের ডালপালা ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও থাকে। সড়ক বিভাজকে তাই বৃহৎ বৃক্ষ লাগানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে।
ঢাকা শহরের গাছপালা দ্রুত অনেক বেশি কমলেও আমাদের মধ্যে যেন কোনো উদ্বেগ নেই। দুই সিটি করপোরেশন কিছু উদ্যোগ নিলেও তা যথেষ্ট নয়। নাগরিক অংশগ্রহণ ছাড়া ব্যাপকভাবে দ্রুত সবুজায়ন সম্ভব নয়।
লেখক: কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে