অজয় দাশগুপ্ত
আমার বয়স এখন ৬৪। আমরা সেই প্রজন্মের মানুষ, যখন দোয়াতের কালি আর কলম ছিল ভরসা। প্রাইমারি ক্লাসে চক-খড়ি, পরে পেনসিল। অতঃপর কলমে উন্নতি। এই ছিল আমাদের জীবন। দিনে দিনে দোয়াতের কালির জমানা শেষ হয়ে এল বলপেনের যুগ। কলমের নাম হয়ে গেল বলপেন। এখন এই ওয়ান টাইম বলপেনও তার বাজার হারিয়েছে। আমি যখন সিডনিতে এসে থিতু হই, তখন আমার লেখালেখির বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কাগজ-কলম আর ফ্যাক্সের খরচ। দিস্তা দিস্তা কাগজ লাগত। সবাই যখন বিদেশে বড় টিভি সেট, দামি গাড়ি কিনতে ব্যস্ত, তখন আমি কম করে হলেও তিনখানা ফ্যাক্স মেশিন কিনে ফেলেছিলাম, যাতে আমার লেখা পাঠানোর কাজ হয়।
এরপর এল সামাজিক মাধ্যমের যুগ। আমার স্ত্রী দীপা এসব বিষয় ভালো বোঝে। আমি সব সময় বলি, সে প্রকৌশলী হলেই ভালো করত। সে-ই আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছিল। তারপর শুরু হলো বিপত্তি। রোমান হরফে টাইপ করি বটে, মানুষ তার কিছুই বুঝত না। পারত না পাঠোদ্ধার করতে।
আমার কিছু বিজ্ঞ বন্ধু আছে সারা দুনিয়ায়। তাদের একজন ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন। কানাডাপ্রবাসী রিটনের সঙ্গে প্রায়ই কথা হয় আমার। সে-ই মূলত আমাকে একরকম বাধ্য করে বাংলা টাইপ শিখতে। তার একটাই কথা ছিল তখন, ‘দোস্ত, তুমি পারবা। অভ্র ডাউনলোড করো, তারপর শুরু করো।’ বলা বাহুল্য, এর আগে যে কিবোর্ডে চেষ্টা করেছিলাম, তা যেমন ছিল কষ্টসাধ্য, তেমনি জটিল। অভ্র ডাউনলোডের পর থেকে আমাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
আচ্ছা, এত বছর পর কেন এই অভ্র নিয়ে লিখছি, এর কারণ কী? কারণ আপনারা সবাই জানেন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কিবোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসংক্রান্ত বিষয়ে আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ব্যবহারের লক্ষ্যে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল সরবরাহ করা হবে।
আরও বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন কমিশন থেকে বাজারজাতকরণের অনুমতি গ্রহণের আগে বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ইনস্টল করে কমিশনে তা প্রদর্শন করতে হবে। তা না হলে বাজারজাতকরণের অনাপত্তি প্রদান করা হবে না। এতেই স্পষ্ট—বিজয়কে পপুলার করার এটা একটা সরকারি চেষ্টা। বহু বছর ধরে বিজয় প্রতিযোগিতা করেও পারেনি। কারণ মানুষের মনে, মানুষের মগজে আর হাতের আঙুলে জায়গা করে নিয়েছে মেহেদীর অভ্র। তাঁর সম্পর্কে নতুন কিছু বলার নেই। নিচে তার কাজ ও অভ্র আবিষ্কারের যে ঘটনা তুলে ধরলাম, তার সূত্র বিভিন্ন লেখায় উঠে আসা অভ্র ও তার জনকের কাহিনি। এই উদ্ধৃত অংশের জন্য কুম্ভিলকবৃত্তির দায় নিতে রাজি নয় এই লেখা।
অভ্রর আবিষ্কারক মেহেদী হাসান। তাঁর আবিষ্কৃত সফটওয়্যার যত সহজে কম্পিউটারে বাংলা লেখার দীর্ঘ ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মুক্তি দিয়েছে, অভ্র তৈরির পথটা কিন্তু ততটা সহজ আর মসৃণ ছিল না। ২০০৩ সাল। বাংলা একাডেমিতে চলছে বইমেলা। সেই বইমেলায় বাংলা ইনভেনশ থ্রু ওপেন সোর্স, সংক্ষেপে বায়োস নামের একটি সংগঠন অংশ নিয়েছিল। সংস্থাটি বইমেলায় এসেছিল একটি প্রদর্শনী করতে। এই সংগঠনের সদস্যরা মেলায় বাংলায় লোকালাইজ করা একটি বাংলা লিনাক্স ডিস্ট্রোর প্রদর্শনী করেছিল। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল কম্পিউটারে বাংলা লেখাসহ টাইটেল মেন্যু ও ট্যাবের নামকরণ বাংলায় লেখা। ওই সিস্টেম নজর কাড়ে সবার, পরিচিতি পায় বায়োস।
সেদিন সেই প্রদর্শনীতে একজন খুদে দর্শনার্থী ছিলেন মেহেদী। বায়োসের প্রদর্শনী দেখে তাঁর মাথায় আসে এক অন্যরকম চিন্তা—কীভাবে এমন একটি সহজ সমাধান বের করা যায়, যার মাধ্যমে কম্পিউটারে কোনো ঝামেলা ছাড়াই বাংলা লেখা যাবে। ২০০৩-এর বইমেলার সেই ছোট্ট ছেলেটিই ২০১৪ সালে অভ্র সফটওয়্যারের আবিষ্কারক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র মেহেদী হাসান।
অভ্র আবিষ্কারে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মেহেদী হাসানকে। তাঁর কম্পিউটার উইনডোজ বেজড হওয়ায় লিনাক্স নিয়ে কাজ করাটা তাঁর জন্য দুরূহ হয়ে ওঠে। বাংলা লিনাক্সের ওই ফন্ট ইনস্টল করেন তিনি। এ সময়ই তাঁর চোখে পড়ল অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কিবোর্ডের ইনসার্ট ক্যারেক্টারের মাধ্যমে ওই ফন্টের ক্যারেক্টারগুলো বেশ ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এটি খুবই যন্ত্রণাদায়ক এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আরও কষ্টকর ছিল যুক্তাক্ষর লেখা।
এবার তিনি ভাবলেন, একটি কিবোর্ড এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে। তিনি ভেবেছিলেন, কোথাও থেকে একটি কিবোর্ড নামিয়ে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তা আর হলো না। তিনি বুঝতে পারলেন, এমন কিবোর্ড পেতে হলে তাঁকে কিবোর্ড তৈরি করতে হবে। কিন্তু কীভাবে সম্ভব সেটা? সমস্যার সমাধানে তিনি ক্ল্যাসিক ভিজুয়ালের ওপর ভিত্তি করে নতুন আরও একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করলেন। ফলে ক্রাশের হাত থেকে মুক্তি পেল প্রোটোটাইপটি। সার্থক হলো তাঁর সেই বইমেলায় বায়োসের তৈরি ফন্ট দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে শুরু করা দীর্ঘ যাত্রা।
অভ্রর যাত্রায় শুরুতে মেহেদী একা থাকলেও শেষে ধাপে ধাপে যুক্ত হয়েছেন অনেকেই, তৈরি হয়েছিল অভ্র টিম। অভ্রর ম্যাক ভার্সন প্রস্তুতকারী রিফাত উন নবী, অভ্রর কালপুরুষ ও সিয়াম রুপালী ফন্টের জনক সিয়াম, অভ্রর বর্তমান ওয়েবসাইট ও লিনাক্স ভার্সন প্রস্তুতকারী সারিম, ভারতের নিপন এবং মেহেদীর সহধর্মিণী সুমাইয়া নাজমুনসহ অনেকের কষ্টের ফসল আজকের অভ্র।
আমরা এমন এক দেশ ও সমাজের মানুষ, যেখানে কেউ কাউকে সম্মান করি না। এই লেখা যখন লিখছি, তখন পাঠ্যবইয়ের ভুলভ্রান্তির দায়ে জাতি হামলে পড়েছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর। যেন সব দোষ তাঁর। অন্যদিকে অভ্রের জয়রথ থামানোর চেষ্টা যদি ফলবতী হয়, তো আমরা হারাব মেহেদী হাসানের মতো প্রতিভাবান তরুণের জয়গাথা। মেহেদীকে আমি কখনো দেখিনি। চিনিও না। কিন্তু তাঁর আবিষ্কৃত কিবোর্ড খোলার সময় প্রতিবার যখন দেখি ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’ শিরোনামটি, তখন আমার মন ভরে যায়।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে লিখেছেন—
‘উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে ঐ যে তিনি ঐ যে বাহির পথে...’
অভ্রভেদী বাঙালি আবিষ্কারক মেহেদী হাসানের অভ্র বেঁচে থাকুক। মেহেদী ও তাঁর অভ্র হোক পুরস্কৃত।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
আমার বয়স এখন ৬৪। আমরা সেই প্রজন্মের মানুষ, যখন দোয়াতের কালি আর কলম ছিল ভরসা। প্রাইমারি ক্লাসে চক-খড়ি, পরে পেনসিল। অতঃপর কলমে উন্নতি। এই ছিল আমাদের জীবন। দিনে দিনে দোয়াতের কালির জমানা শেষ হয়ে এল বলপেনের যুগ। কলমের নাম হয়ে গেল বলপেন। এখন এই ওয়ান টাইম বলপেনও তার বাজার হারিয়েছে। আমি যখন সিডনিতে এসে থিতু হই, তখন আমার লেখালেখির বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কাগজ-কলম আর ফ্যাক্সের খরচ। দিস্তা দিস্তা কাগজ লাগত। সবাই যখন বিদেশে বড় টিভি সেট, দামি গাড়ি কিনতে ব্যস্ত, তখন আমি কম করে হলেও তিনখানা ফ্যাক্স মেশিন কিনে ফেলেছিলাম, যাতে আমার লেখা পাঠানোর কাজ হয়।
এরপর এল সামাজিক মাধ্যমের যুগ। আমার স্ত্রী দীপা এসব বিষয় ভালো বোঝে। আমি সব সময় বলি, সে প্রকৌশলী হলেই ভালো করত। সে-ই আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছিল। তারপর শুরু হলো বিপত্তি। রোমান হরফে টাইপ করি বটে, মানুষ তার কিছুই বুঝত না। পারত না পাঠোদ্ধার করতে।
আমার কিছু বিজ্ঞ বন্ধু আছে সারা দুনিয়ায়। তাদের একজন ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন। কানাডাপ্রবাসী রিটনের সঙ্গে প্রায়ই কথা হয় আমার। সে-ই মূলত আমাকে একরকম বাধ্য করে বাংলা টাইপ শিখতে। তার একটাই কথা ছিল তখন, ‘দোস্ত, তুমি পারবা। অভ্র ডাউনলোড করো, তারপর শুরু করো।’ বলা বাহুল্য, এর আগে যে কিবোর্ডে চেষ্টা করেছিলাম, তা যেমন ছিল কষ্টসাধ্য, তেমনি জটিল। অভ্র ডাউনলোডের পর থেকে আমাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
আচ্ছা, এত বছর পর কেন এই অভ্র নিয়ে লিখছি, এর কারণ কী? কারণ আপনারা সবাই জানেন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কিবোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসংক্রান্ত বিষয়ে আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ব্যবহারের লক্ষ্যে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল সরবরাহ করা হবে।
আরও বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন কমিশন থেকে বাজারজাতকরণের অনুমতি গ্রহণের আগে বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ইনস্টল করে কমিশনে তা প্রদর্শন করতে হবে। তা না হলে বাজারজাতকরণের অনাপত্তি প্রদান করা হবে না। এতেই স্পষ্ট—বিজয়কে পপুলার করার এটা একটা সরকারি চেষ্টা। বহু বছর ধরে বিজয় প্রতিযোগিতা করেও পারেনি। কারণ মানুষের মনে, মানুষের মগজে আর হাতের আঙুলে জায়গা করে নিয়েছে মেহেদীর অভ্র। তাঁর সম্পর্কে নতুন কিছু বলার নেই। নিচে তার কাজ ও অভ্র আবিষ্কারের যে ঘটনা তুলে ধরলাম, তার সূত্র বিভিন্ন লেখায় উঠে আসা অভ্র ও তার জনকের কাহিনি। এই উদ্ধৃত অংশের জন্য কুম্ভিলকবৃত্তির দায় নিতে রাজি নয় এই লেখা।
অভ্রর আবিষ্কারক মেহেদী হাসান। তাঁর আবিষ্কৃত সফটওয়্যার যত সহজে কম্পিউটারে বাংলা লেখার দীর্ঘ ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মুক্তি দিয়েছে, অভ্র তৈরির পথটা কিন্তু ততটা সহজ আর মসৃণ ছিল না। ২০০৩ সাল। বাংলা একাডেমিতে চলছে বইমেলা। সেই বইমেলায় বাংলা ইনভেনশ থ্রু ওপেন সোর্স, সংক্ষেপে বায়োস নামের একটি সংগঠন অংশ নিয়েছিল। সংস্থাটি বইমেলায় এসেছিল একটি প্রদর্শনী করতে। এই সংগঠনের সদস্যরা মেলায় বাংলায় লোকালাইজ করা একটি বাংলা লিনাক্স ডিস্ট্রোর প্রদর্শনী করেছিল। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল কম্পিউটারে বাংলা লেখাসহ টাইটেল মেন্যু ও ট্যাবের নামকরণ বাংলায় লেখা। ওই সিস্টেম নজর কাড়ে সবার, পরিচিতি পায় বায়োস।
সেদিন সেই প্রদর্শনীতে একজন খুদে দর্শনার্থী ছিলেন মেহেদী। বায়োসের প্রদর্শনী দেখে তাঁর মাথায় আসে এক অন্যরকম চিন্তা—কীভাবে এমন একটি সহজ সমাধান বের করা যায়, যার মাধ্যমে কম্পিউটারে কোনো ঝামেলা ছাড়াই বাংলা লেখা যাবে। ২০০৩-এর বইমেলার সেই ছোট্ট ছেলেটিই ২০১৪ সালে অভ্র সফটওয়্যারের আবিষ্কারক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র মেহেদী হাসান।
অভ্র আবিষ্কারে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মেহেদী হাসানকে। তাঁর কম্পিউটার উইনডোজ বেজড হওয়ায় লিনাক্স নিয়ে কাজ করাটা তাঁর জন্য দুরূহ হয়ে ওঠে। বাংলা লিনাক্সের ওই ফন্ট ইনস্টল করেন তিনি। এ সময়ই তাঁর চোখে পড়ল অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কিবোর্ডের ইনসার্ট ক্যারেক্টারের মাধ্যমে ওই ফন্টের ক্যারেক্টারগুলো বেশ ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এটি খুবই যন্ত্রণাদায়ক এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আরও কষ্টকর ছিল যুক্তাক্ষর লেখা।
এবার তিনি ভাবলেন, একটি কিবোর্ড এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে। তিনি ভেবেছিলেন, কোথাও থেকে একটি কিবোর্ড নামিয়ে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তা আর হলো না। তিনি বুঝতে পারলেন, এমন কিবোর্ড পেতে হলে তাঁকে কিবোর্ড তৈরি করতে হবে। কিন্তু কীভাবে সম্ভব সেটা? সমস্যার সমাধানে তিনি ক্ল্যাসিক ভিজুয়ালের ওপর ভিত্তি করে নতুন আরও একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করলেন। ফলে ক্রাশের হাত থেকে মুক্তি পেল প্রোটোটাইপটি। সার্থক হলো তাঁর সেই বইমেলায় বায়োসের তৈরি ফন্ট দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে শুরু করা দীর্ঘ যাত্রা।
অভ্রর যাত্রায় শুরুতে মেহেদী একা থাকলেও শেষে ধাপে ধাপে যুক্ত হয়েছেন অনেকেই, তৈরি হয়েছিল অভ্র টিম। অভ্রর ম্যাক ভার্সন প্রস্তুতকারী রিফাত উন নবী, অভ্রর কালপুরুষ ও সিয়াম রুপালী ফন্টের জনক সিয়াম, অভ্রর বর্তমান ওয়েবসাইট ও লিনাক্স ভার্সন প্রস্তুতকারী সারিম, ভারতের নিপন এবং মেহেদীর সহধর্মিণী সুমাইয়া নাজমুনসহ অনেকের কষ্টের ফসল আজকের অভ্র।
আমরা এমন এক দেশ ও সমাজের মানুষ, যেখানে কেউ কাউকে সম্মান করি না। এই লেখা যখন লিখছি, তখন পাঠ্যবইয়ের ভুলভ্রান্তির দায়ে জাতি হামলে পড়েছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর। যেন সব দোষ তাঁর। অন্যদিকে অভ্রের জয়রথ থামানোর চেষ্টা যদি ফলবতী হয়, তো আমরা হারাব মেহেদী হাসানের মতো প্রতিভাবান তরুণের জয়গাথা। মেহেদীকে আমি কখনো দেখিনি। চিনিও না। কিন্তু তাঁর আবিষ্কৃত কিবোর্ড খোলার সময় প্রতিবার যখন দেখি ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’ শিরোনামটি, তখন আমার মন ভরে যায়।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে লিখেছেন—
‘উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে ঐ যে তিনি ঐ যে বাহির পথে...’
অভ্রভেদী বাঙালি আবিষ্কারক মেহেদী হাসানের অভ্র বেঁচে থাকুক। মেহেদী ও তাঁর অভ্র হোক পুরস্কৃত।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
১৩ ঘণ্টা আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
১৩ ঘণ্টা আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
১৩ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
১৪ ঘণ্টা আগে