আজ মঙ্গলবার খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভা নির্বাচন। প্রথমবারের মতো এ পৌরসভায় ব্যালটের বদলে ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোটাররা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তাঁদের পছন্দের প্রার্থী বাছাই করবেন আজ।

এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় ভোটের উত্তাপ কিছুটা কমে এসেছিলো। তবে শেষ মুহূর্তে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারে ভোটারদের আগ্রহ কিছুটা বাড়ে।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বেসরকারিভাবে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল আলম কামাল নির্বাচিত হয়েছে। এ ছাড়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে মোহাম্মদ শামীমকেও বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

এবার ৮টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯ জন নির্বাচন করবেন। গত রোববার প্রচারের শেষ দিনেও এলাকা চষে বেড়িয়েছেন প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের আস্থা অর্জনে দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়িয়ে চায়ের দোকানেও চলছে প্রার্থীদের প্রচার। তবে উন্নয়নের স্বার্থে যোগ্য প্রার্থী বেঁচে নেবেন বলে জানান ভোটাররা।

উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা দেবাশীষ দাস জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ইতিমধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। রামগড় পৌরসভায় মোট ভোটারসংখ্যা ২০ হাজার ৮৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৮৬১ জন ও নারী ভোটার ১০ হাজার ২৫ জন।

রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুজ্জামান জানান, প্রচার-প্রচারণায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে পুলিশি টহল বাড়ানোৎ হয়েছে। ভোটের সময় প্রতি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। তা ছাড়া প্রতি কেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে বিজিবি এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।

ওসি মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আরও জানান, রামগড় পৌরসভা নির্বাচনে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বল্টুরামটিলা, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গর্জনতলী, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়া এবং ৮ নম্বরের সোনাইপুল এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। এই ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মজুমদার বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে। কয়েক প্লাটুন বিজিবি, আনসার, পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন আছে।

রামগড় ১ নম্বর ওয়ার্ড বল্টুরামটিলা এলাকার কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল হক জানান, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ আগে থেকে অনেক সচেতন। মাদক এবং শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে তিনি সবার সহায়তা চান। নির্বাচিত হলে জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

রামগড় সদর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ আফছার জানান, নির্বাচিত হলে গরিব এবং অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চান। ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থে পুরো এলাকায় সড়কবাতি এবং শৌচাগারের সুবিধা নিশ্চিত করবেন। সন্ত্রাস, মাদক, ইভ টিজিং ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন বলে জানান তিনি।

রামগড় পৌরসভার ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার বেগম জানান, অধিকার আদায়ে জনগণের পাশে থাকবেন। তিনি দাবি করেন, ভোটাররা তাঁকে কর্ম গুণেই ভোট দেবেন। বিগত দুইবারের মতো এবারও তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

রামগড় সদর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার কংচাইরী মারমা বলেন, নির্বাচন এলে প্রার্থীরা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেড়ান। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তাঁদের খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বিপদে পাশে থাকবেন এমন একজন যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে জানান তিনি।