নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে (নাসিক) দূষণমুক্ত নগরী গড়ে তুলতে প্লাস্টিক বাজার স্থাপন করা হয়েছে। শহরের মণ্ডলপাড়া পুল এলাকার এ বাজারে পলিথিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য কেনা হবে। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কর্ডএইডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও ক্রয় করবে নাসিক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে বসবাস করেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ভোটার ৫ লাখ। বাকিরা কর্মসূত্রে থাকছেন। ঘনবসতিপূর্ণ এ শহরে প্লাস্টিকদূষণ রোধে সঠিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেনি সিটি করপোরেশন। এ জন্যই এই উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে যাচ্ছে এ বাজার। এ বাজারের প্রধান লক্ষ্য শহরের রাস্তাঘাট এবং খাল-নালায় পরে থাকা প্লাস্টিক সংগ্রহ।
মণ্ডলপাড়া পুলের উত্তর প্রান্তে ডিপিডিসি অফিসসংলগ্ন সিটি করপোরেশনের পুরোনো গ্যারেজে সংগ্রহ করা হবে প্লাস্টিক। ফলে যেকোনো ব্যক্তি তাঁর দৈনন্দিন ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে সঠিক দামে বিক্রি করতে পারবেন। ইতিপূর্বে প্রায় একই ধরনের প্রকল্প চালু করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য।
প্লাস্টিক বর্জ্যের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। যেগুলো হচ্ছে পিপি, এসডিপি, পিএলডি এবং এলডি প্লাস্টিক। তবে সহজে বোঝার জন্য স্বচ্ছ পলিথিন, আবর্জনাপূর্ণ পলিথিন, স্বচ্ছ বোতল, সাদা অস্বচ্ছ বোতল, ভাঙাচোরা ড্রাম, বালতি ইত্যাদি সংগ্রহ করা হবে।
প্রকল্পের ফোকাল পারসন পলাশ বলেন, ‘প্লাস্টিক ভেদে কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৪২ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে। সাপ্তাহিক কর্মদিবসে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এই সময়ের মধ্যে সাধারণ নগরবাসী কিংবা বর্জ্য সংগ্রাহকেরা প্লাস্টিক বিক্রি করতে পারবেন।’
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘প্লাস্টিকদূষণ বা প্লাস্টিক বর্জ্য সারা দুনিয়াতেই বড় সমস্যা। বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদাভাবে সংরক্ষণ করে তা নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির কারণেই আমাদের সেই প্রক্রিয়া গড়ে ওঠেনি। তাই নগরবাসী যেন নিজ উদ্যোগে দৈনন্দিন ব্যবহৃত প্লাস্টিক, পলিথিন যত্রতত্র না ফেলে নির্ধারিত স্থানে বিক্রি করে সে জন্য এ প্লাস্টিক বাজার।’
সবুজ নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্লাস্টিকদূষণ বন্ধের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী ইশতেহারে সবুজ, বাসযোগ্য এবং দূষণমুক্ত সিটি উপহার দেওয়ার কথা বলেছি। সেই লক্ষ্যে কাজ করলেও মানুষের অসচেতনতার কারণে প্লাস্টিকদূষণ থেকে মুক্তি মিলছে না। প্লাস্টিকদূষণ রোধের অংশ হিসেবে প্লাস্টিক বাজার স্থাপন করতে যাচ্ছি। বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং মানুষকে সচেতন করা এই বাজারের অন্যতম উদ্দেশ্য। ভবিষ্যতে আরও একাধিক এলাকায় প্লাস্টিক বাজার করা হবে।’