জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
এ কথা সত্য যে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার ব্যাপারে ২০ ফেব্রুয়ারি (১৯৫২) রাতে ফজলুল হক হলের পুকুরপাড়ে ১১ জন ছাত্রনেতার বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভাষা আন্দোলনের গবেষকদের কেউ কেউ অবশ্য বলার চেষ্টা করেন, সে সময় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন; তাই ওই ১১ জনের বৈঠক না হলেও কিছু আসত-যেত না। কিন্তু ইতিহাসের দিকে নিরপেক্ষ দৃষ্টি রাখলে এ কথা স্পষ্ট হবে যে সেই বৈঠক প্রকৃত অর্থেই ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ওই বৈঠকে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁদের কয়েকজনের ভূমিকা নিয়ে কথা বললেই বৈঠকটির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ২১ ফেব্রুয়ারির সভার সভাপতি ছিলেন গাজীউল হক। তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন এম আর আখতার মুকুল, সমর্থন করেছিলেন কমরুদ্দীন শহুদ।
১৪৪ ধারা ভঙ্গকারী প্রথম মিছিলটির নেতৃত্বে ছিলেন হাবিবুর রহমান শেলী। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে এগিয়ে যাওয়া মিছিলগুলোর শিক্ষার্থীদের তালিকা করার দায়িত্ব পালন করেছিলেন মোহাম্মদ সুলতান।
ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক লিখেছেন, ‘সেদিন রাতে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সিদ্ধান্ত ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে না—এ সংবাদটুকু পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন হলে যোগাযোগ করা হলো। রাত প্রায় বারোটার দিকে ফজলুল হক হল আর ঢাকা হলের মাঝখানে যে পুকুর আছে, তার পূর্বধারের সিঁড়িতে বিভিন্ন হলের যারা নেতৃত্ব দেন, তাদের নিয়ে ১৪৪ ধারা ভাঙার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এবং একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি স্থির করার জন্য আমরা এক বৈঠকে মিলিত হই। এ বৈঠকে হাবিবুর রহমান শেলী (সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান), মোহাম্মদ সুলতান (যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক), জিল্লুর রহমান (আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী), আবদুল মমিন, এস এ বারী এটি (ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক, মশিউর রহমান গ্রুপ), এম আর আখতার মুকুল, কমরুদ্দীন শহুদ, আনোয়ারুল হক খান এবং আনোয়ার হোসেনসহ খুলনা থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার একজন ছাত্রসহ আমরা ১১ জন উপস্থিত ছিলাম।...বৈঠকে প্রথমেই স্থির করা হলো, আমাকেই আমতলার সভায় সভাপতিত্ব করতে হবে। কিন্তু সভা অনুষ্ঠানের আগেই যদি আমি গ্রেপ্তার হয়ে যাই, তবে সভাপতিত্ব করবেন এম আর আখতার মুকুল এবং তারও গ্রেপ্তারজনিত অপারগতায় সভাপতিত্ব করবেন কমরুদ্দীন শহুদ।’
মোহাম্মদ সুলতান লিখেছেন, ‘২১শে কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন এবং এ আন্দোলনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করার জন্য আমরা কয়েকজন ছাত্র ২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে কতকগুলি সিদ্ধান্ত নিই।...আমরা ১১ জন ছাত্র ঢাকা হলের পুকুরের ঘাটে (বর্তমানে শহীদুল্লাহ হল) এবং ফজলুল হক হলের মাঝখানে যে পুকুরটি আছে—সেখানেই...১৪৪ ধারা ভাঙার জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।’
জিল্লুর রহমান লিখেছেন, ‘২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে ফজলুল হক হল আর ঢাকা হল এর মাঝখানকার পুকুরের পূর্বপাড়ে যে বাঁধানো সিঁড়ি আছে, সেখানে গাজীউল হক, ন্যাপের এককালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সুলতান, আজকের বিচারপতি হাবিবুর রহমান শেলী, আব্দুল মোমেন প্রমুখ আমরা ৮ থেকে ১১ জন বসেছিলাম আলোচনার জন্য। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত আলাপ-আলোচনা করে আমরা ঠিক করেছিলাম যে ১৪৪ ধারা ভাঙতেই হবে।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান লিখেছেন, ‘২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যাটা আমার কাছে খুব থমথমে মনে হচ্ছিল। কি রকম একটা বিপদ সংকেতের মতো শোনাচ্ছিল সরকারি গাড়ি থেকে ১৪৪ ধারা জারির সংবাদ পরিবেশনটি। যখন শুনলাম সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ ১৪৪ ধারা ভঙ্গের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন আমরা ক্ষুব্ধ হই। মনে হয়েছিল আমাদের আন্দোলনকে কারা যেন বানচাল করে দেয়ার চেষ্টা করছে। রাত নটা-দশটার সময় আমরা সাত-আটজন বন্ধুবান্ধব মিলিত হই ফজলুল হক হলের পুকুরের পূর্ব পাড়ে।...সেদিন রাতে অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, ১৪৪ ধারা ভাঙতে হবে এবং আন্দোলন বন্ধ করা চলবে না।’
এই স্মৃতিচারণাগুলো বুঝিয়ে দেয়, পুকুরপাড়ের বৈঠকটিকে গুরুত্বহীন বা কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবা ঠিক নয়।
এ কথা সত্য যে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার ব্যাপারে ২০ ফেব্রুয়ারি (১৯৫২) রাতে ফজলুল হক হলের পুকুরপাড়ে ১১ জন ছাত্রনেতার বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভাষা আন্দোলনের গবেষকদের কেউ কেউ অবশ্য বলার চেষ্টা করেন, সে সময় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন; তাই ওই ১১ জনের বৈঠক না হলেও কিছু আসত-যেত না। কিন্তু ইতিহাসের দিকে নিরপেক্ষ দৃষ্টি রাখলে এ কথা স্পষ্ট হবে যে সেই বৈঠক প্রকৃত অর্থেই ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ওই বৈঠকে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁদের কয়েকজনের ভূমিকা নিয়ে কথা বললেই বৈঠকটির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ২১ ফেব্রুয়ারির সভার সভাপতি ছিলেন গাজীউল হক। তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন এম আর আখতার মুকুল, সমর্থন করেছিলেন কমরুদ্দীন শহুদ।
১৪৪ ধারা ভঙ্গকারী প্রথম মিছিলটির নেতৃত্বে ছিলেন হাবিবুর রহমান শেলী। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে এগিয়ে যাওয়া মিছিলগুলোর শিক্ষার্থীদের তালিকা করার দায়িত্ব পালন করেছিলেন মোহাম্মদ সুলতান।
ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক লিখেছেন, ‘সেদিন রাতে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সিদ্ধান্ত ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে না—এ সংবাদটুকু পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন হলে যোগাযোগ করা হলো। রাত প্রায় বারোটার দিকে ফজলুল হক হল আর ঢাকা হলের মাঝখানে যে পুকুর আছে, তার পূর্বধারের সিঁড়িতে বিভিন্ন হলের যারা নেতৃত্ব দেন, তাদের নিয়ে ১৪৪ ধারা ভাঙার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এবং একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি স্থির করার জন্য আমরা এক বৈঠকে মিলিত হই। এ বৈঠকে হাবিবুর রহমান শেলী (সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান), মোহাম্মদ সুলতান (যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক), জিল্লুর রহমান (আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী), আবদুল মমিন, এস এ বারী এটি (ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক, মশিউর রহমান গ্রুপ), এম আর আখতার মুকুল, কমরুদ্দীন শহুদ, আনোয়ারুল হক খান এবং আনোয়ার হোসেনসহ খুলনা থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার একজন ছাত্রসহ আমরা ১১ জন উপস্থিত ছিলাম।...বৈঠকে প্রথমেই স্থির করা হলো, আমাকেই আমতলার সভায় সভাপতিত্ব করতে হবে। কিন্তু সভা অনুষ্ঠানের আগেই যদি আমি গ্রেপ্তার হয়ে যাই, তবে সভাপতিত্ব করবেন এম আর আখতার মুকুল এবং তারও গ্রেপ্তারজনিত অপারগতায় সভাপতিত্ব করবেন কমরুদ্দীন শহুদ।’
মোহাম্মদ সুলতান লিখেছেন, ‘২১শে কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন এবং এ আন্দোলনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করার জন্য আমরা কয়েকজন ছাত্র ২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে কতকগুলি সিদ্ধান্ত নিই।...আমরা ১১ জন ছাত্র ঢাকা হলের পুকুরের ঘাটে (বর্তমানে শহীদুল্লাহ হল) এবং ফজলুল হক হলের মাঝখানে যে পুকুরটি আছে—সেখানেই...১৪৪ ধারা ভাঙার জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।’
জিল্লুর রহমান লিখেছেন, ‘২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে ফজলুল হক হল আর ঢাকা হল এর মাঝখানকার পুকুরের পূর্বপাড়ে যে বাঁধানো সিঁড়ি আছে, সেখানে গাজীউল হক, ন্যাপের এককালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সুলতান, আজকের বিচারপতি হাবিবুর রহমান শেলী, আব্দুল মোমেন প্রমুখ আমরা ৮ থেকে ১১ জন বসেছিলাম আলোচনার জন্য। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত আলাপ-আলোচনা করে আমরা ঠিক করেছিলাম যে ১৪৪ ধারা ভাঙতেই হবে।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান লিখেছেন, ‘২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যাটা আমার কাছে খুব থমথমে মনে হচ্ছিল। কি রকম একটা বিপদ সংকেতের মতো শোনাচ্ছিল সরকারি গাড়ি থেকে ১৪৪ ধারা জারির সংবাদ পরিবেশনটি। যখন শুনলাম সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ ১৪৪ ধারা ভঙ্গের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন আমরা ক্ষুব্ধ হই। মনে হয়েছিল আমাদের আন্দোলনকে কারা যেন বানচাল করে দেয়ার চেষ্টা করছে। রাত নটা-দশটার সময় আমরা সাত-আটজন বন্ধুবান্ধব মিলিত হই ফজলুল হক হলের পুকুরের পূর্ব পাড়ে।...সেদিন রাতে অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, ১৪৪ ধারা ভাঙতে হবে এবং আন্দোলন বন্ধ করা চলবে না।’
এই স্মৃতিচারণাগুলো বুঝিয়ে দেয়, পুকুরপাড়ের বৈঠকটিকে গুরুত্বহীন বা কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবা ঠিক নয়।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে