চার বছর আগেও যে জমিতে ধান চাষ হতো সে জমিতে এখন কমলার বাগান। এ থেকে বছরে আয় হচ্ছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। বাগানটি জৈন্তাপুরের ৩ নম্বর চারিকাটা ইউনিয়নের সরুখেলপূর্ব গ্রামে। আর এর উদ্যোক্তা বাবা জহির উদ্দিন ও তাঁর ছেলে রুবেল আহমদ।

২০১৭ সালে ৫০ শতক জমিতে বারী কমলা-১ এর চারা লাগান তাঁরা। বাবা–ছেলের প্রচেষ্টা ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় চারাগাছ বাড়তে থাকে। বাবা জহির উদ্দিন কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাই বাবা কারিগরি সহায়তার ব্যবস্থা করলেও সরেজমিন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পড়ে ছেলের ওপর।

রুবেল আহমদ বলেন, ‘বাবার বন্ধু জৈন্তাপুর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নূরুল ইসলামের পরামর্শে ও তাঁর দপ্তরের সহায়তায় আমরা কমলা চাষে আগ্রহী হই। গত বছর থেকে বাগানে ফল আসা শুরু করেছে। বাগানের কমলার আকার ভালো ও মিষ্টি।’

জৈন্তাপুরের এলাকার মাটি কমলা ও মাল্টা চাষের উপযোগী। রুবেলদের কমলা বাগান তৈরিতে উপজেলা কৃষি অফিস প্রশিক্ষণ, চারা, সার ও কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। চলিত বছর নতুন করে দুই বিঘা জমিতে কমলা ও এক বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করার পরিকল্পনার কথাও জানান রুবেল।

রুবেল জানান, গত বছর থেকেই বাণিজ্যিক ভাবে বারী কমলা-১ জাতের কমলা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। স্থানীয় বাজারে ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগও করেন তিনি। অপর দিকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে উৎপাদিত কমলা দ্রুত সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে পারছেন বলে জানান।

উপজেলার বর্তমান উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুনাংশু দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, রুবেল আহমদের সাফল্যে এলাকায় অনেক কৃষক পরিবারের মধ্যে কমলা ও মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস কমলা চাষিদের সহযোগিতা, পরামর্শ, প্রশিক্ষণ, চারা ও সার সরবরাহ করছে। এতে কৃষক সঠিক পরিচর্যা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ২০১৭ সালে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মরহুম মো. নূরুল ইসলামের প্রচেষ্টায় বাগানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০২০ সাল থেকে জহির উদ্দিন ও তাঁর ছেলে রুবেল আহমদ বাগান থেকে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস তাঁদের চারা, সার, কীটনাশক, প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কারণেই তাঁরা সফল হয়েছেন। জৈন্তাপুর অঞ্চলে আরও বাগান প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ চলছে।