লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে হঠাৎ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত পাঁচ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ১৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এ ছাড়া শয্যাসংকটে শতাধিক রোগীকে চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অনেকে আবার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধিতে উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ৩২ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৭ জন। যেভাবে রোগী আসা শুরু হয়েছে, তাতে সারা দিনে এ সংখ্যা ৪০ জন ছাড়াবে বলে জরুরি বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা।

এ ছাড়া শহরের বেসরকারি মেহেরুননেছা হাসপাতালে ৫ জন, জনসেবা জেনারেল হাসপাতালে ৪, মাতৃছায়া হাসপাতালে ১, ম্যাক্স কেয়ার হাসপাতালে ৫, মেঘনা হাসপাতালে ১০, রায়পুর মডার্ন হসপিটালে ১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।

উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া। এর মধ্যে পৌর এলাকা থেকেই আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে বলে জানা গেছে।

উপজেলা পরিষদে চিকিৎসাধীন টিসি সড়কের পাশের বাসিন্দা তাহেরা বেগম (৫৫), মুক্তা (২৫), মিছির আলী (৬০) ও স্বপ্না বেগমের (২৮) সঙ্গে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের কারণ নিয়ে কথা হয়। তাঁরা আক্রান্ত হওয়ার সঠিক কারণ জানাতে পারেননি। তবে পৌরসভা সরবরাহকৃত পানি পান করে ডায়রিয়া হতে পারে বলে তাঁদের ধারণা। একই এলাকার বাসিন্দা আবু সাঈদ হিরণ বলেন, ‘ডায়রিয়ার প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে আতঙ্ক দূর করার দাবি জানাচ্ছি।’

রায়পুর পৌরসভার ওয়াটার সুপার (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আতঙ্কিত হয়ে শত শত পৌরবাসী ফোন করে আমাদের কাছে বিষয়টি জানতে চাচ্ছেন। তাঁদের আতঙ্ক কাটাতে আমরা পানির ট্যাংকগুলো পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছি। ডায়রিয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও শুধু পৌরসভার পানি নিয়ে একটি মহল আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।’

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. বাহারুল আলম বলেন, ‘৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ছয়টি শয্যা নির্ধারিত রয়েছে। শয্যাসংকটে সাধারণ ওয়ার্ডে রেখেই আমরা তাঁদের চিকিৎসা দিচ্ছি। যাঁদের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে, তাঁদের চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে পাঠাচ্ছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন বলেন, ‘উপজেলায় বিক্ষিপ্তভাবে লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছি। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো খুঁজে পাইনি। এর প্রকোপে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আমরা আতঙ্ক দূর করে চিকিৎসা নিতে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করছি।’